ঢাকা ১০:০১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজ
মোবাইল চুরির অপবাদ সইতে না পেরে তরুণের আ*ত্ম*হ*ত্যা জুড়ীতে ধর্মীয় আচার-প্রার্থনা-আনন্দ-উৎসবের মধ্য দিয়ে বড়দিন উদযাপিত আ গু ন নেভাতে ট্রাকচাপায় প্রাণ গেল সিলেটে কর্মরত ফায়ার ফাইটারের সুবিধাবঞ্চিত শীতার্তদের পাশে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি সোশ্যাল সার্ভিসেস ক্লাব কম সরবরাহে বাড়ছে দাম জানুয়ারির প্রথমার্ধে লন্ডন যাচ্ছেন খালেদা জিয়া বৈষম্যহীন,দুর্নীতিমুক্ত,সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বন্ধনকে আরও মজবুত করার আহ্বান রাষ্ট্রপতির কোটচাঁদপুর বিএনপি থেকে দুই নেতাকে অব্যহতি সাংবাদিক তুরাব হ ত্যা : রি মা ন্ডে কী তথ্য দিলেন দস্তগীর? দলকে তৃণমুল পর্যায়ে আরো শক্তিশালী করতে হবে – জেলা বিএনপির আহবায়ক ময়ুন

আদালতে মামলা চালাতে গিয়ে বিয়ের পিড়িতে বসা হয়নি কোটচাঁদপুরে দুই বোনের 

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ১১:১১:১৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • / ৩৩৯ বার পড়া হয়েছে
মোঃ মঈন উদ্দিন খান : আদালতে  মামলা চালাতে গিয়ে বিয়ের পিড়িতে বসা হয়নি কোটচাঁদপুরে দুই বোনের। এ দুই বোনের মধ্যে  বড় রাবেয়া খাতুন আর  ছোট আমেনা খাতুন। এখন আদালত থেকে রায় পেয়েও জমি দখল পাচ্ছেন না তারা। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ওই দুই বোন।
জানা যায়,রাবেয়া খাতুন (৫৩) আর আমেনা খাতুন(৪৮)দুই বোন। তারা কোটচাঁদপুর রেলওয়ে স্টেশনের সাবেক ওয়াচম্যান মৃত বশির খাঁনের মেয়ে। যে সময় বিয়ে করে,স্বামী সংসার নিয়ে জীবন চালানোর কথা। সে সময় পিতার রেখে যাওয়া সম্পতি উদ্ধার করতে ছুটছেন আদালত আর থানার বারান্দায়। আর এ সব করতে গিয়ে বিয়ের পিড়িতে বসা হয়নি তাদের।
ওই দুই বোনের মধ্যে কথা হয় রাবেয়া খাতুনের সঙ্গে, তিনি বলেন,চাকুরীর সুত্রে আমার পিতা বশির খাঁন ছিলেন,কোটচাঁদপুরের বাসিন্দা।
সে কারনে ওই সময় তিনি শতাধিক বিঘা জমিও কিনে ছিলেন কোটচাঁদপুরে। দুই বোন,ভাই আর মাকে নিয়ে ছিল আমাদের সুখী সংসার। হঠাৎ করে ১৯৭১ সালের এক সন্ধ্যা রাতে আমার পিতা বশির খাঁনকে কারা ঢেকে নিয়ে যান।
এরপর তিনি আর ফিরে আসেনি। সংসারে নেমে আসে দুর্দিন। আত্মীয় – স্বজন বলতে তেমন কেউ ছিল না কোটচাঁদপুরে। আর আমাদের বসতবাড়িটি ছিল  বাগানের মধ্যে।
এ কারনে মা ভয়ে বাড়ি ঘর রেখে যশোর চলে যান আমাদের নিয়ে। লেখা-পড়া আর বেড়ে ওঠা আমাদের যশোরে। আমরা বুঝতে শেখার আগেই মারা যান মা। তার আগেই মারা যায় ভাইটি।
এরপর দুই বোন একা হয়ে গেলাম। জানতে পেলাম কোটচাঁদপুর বাবার রেখে যাওয়া এ সব সম্পত্তির কথা।
১৯৯৭ সাল,বোন আমেনার হাত ধরে চলে আসি কোটচাঁদপুরে। উঠি এক ভাড়ার বাসায়। এরপর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রস্তুত করে ১৯৯৮ সালে সাড়ে ৪ বিঘা নিয়ে মামলা করি আদালতে। ওই মামলাটি করা হয় স্থানীয় সালাহউদ্দিন আর রফি উদ্দিনের সঙ্গে। আর বাকি জমি থাকলেও কাগজপত্র প্রস্তুত করতে না পারায় তা,আজ ও পড়ে রয়েছে।
এ ছাড়া ২০১৪ সালে ৫ শতক জমি নিয়ে মামলা করা হয় রশিদের সঙ্গে। ওই মামলায় ২০২১ সালে আদালত আমাদের পক্ষে রায় দেন। এরপর রশিদ আদালতে আপিল করেন। ওই মামলায় আদালত আবারও ২৩ সালে আমার পক্ষে রায় দিয়েছেন। এরপরও আজ পর্যন্ত আমরা ওই জমি দখল নিতে পারেনি। এ ছাড়া বাকি জমিগুলো নিয়ে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে।
রাবেয়া খাতুন বলেন,এ সব মামলা চালাতে গিয়ে ভূলে গেছি বিয়ের পিড়িতে বসার কথা। এরপরও আমরা বিয়ে করতে চাইলেও, তেমন কেউ এগিয়ে আসেনি। কারন হিসেবে তিনি বলেন, আমরা গরীব মানুষ। আমাদের কিছু নাই। বিয়ে করলে কি পাবো এ ভাবে কেউ আসেনি।
মামলা খরচ চালান কিভাবে, জানতে চাইলে তিনি বলেন,আমরা যশোরে থাকাকালীন সময়ে যুব উন্নয়ন থেকে সেলাই মেশিনের কাজ শিখে ছিলাম। এখানে এসে মেশিন কিনে,মানুষের কাজ করে দিতাম।
ওই কাজ করে,যা আয় হত,সেটার কিছু টাকা দিয়ে দুই বোন তাদের সংসার চালায়,আর বাকি টাকা দিয়ে আদালতে মামলার খরচের যোগান দিই।
তিনি বলেন,দুই বোনের মধ্যে আমেনা খাতুন বাড়িতেই থাকেন। আর আমি আদালত আর থানা করে বেড়ায় পিতার রেখে যাওয়া সম্পতি উদ্ধারের জন্য। তাদের এ সম্পত্তি উদ্ধারে সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন,ওই দুই বোন রাবেয়া আর আমেনা।
ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আদালতে মামলা চালাতে গিয়ে বিয়ের পিড়িতে বসা হয়নি কোটচাঁদপুরে দুই বোনের 

আপডেট সময় ১১:১১:১৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩
মোঃ মঈন উদ্দিন খান : আদালতে  মামলা চালাতে গিয়ে বিয়ের পিড়িতে বসা হয়নি কোটচাঁদপুরে দুই বোনের। এ দুই বোনের মধ্যে  বড় রাবেয়া খাতুন আর  ছোট আমেনা খাতুন। এখন আদালত থেকে রায় পেয়েও জমি দখল পাচ্ছেন না তারা। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ওই দুই বোন।
জানা যায়,রাবেয়া খাতুন (৫৩) আর আমেনা খাতুন(৪৮)দুই বোন। তারা কোটচাঁদপুর রেলওয়ে স্টেশনের সাবেক ওয়াচম্যান মৃত বশির খাঁনের মেয়ে। যে সময় বিয়ে করে,স্বামী সংসার নিয়ে জীবন চালানোর কথা। সে সময় পিতার রেখে যাওয়া সম্পতি উদ্ধার করতে ছুটছেন আদালত আর থানার বারান্দায়। আর এ সব করতে গিয়ে বিয়ের পিড়িতে বসা হয়নি তাদের।
ওই দুই বোনের মধ্যে কথা হয় রাবেয়া খাতুনের সঙ্গে, তিনি বলেন,চাকুরীর সুত্রে আমার পিতা বশির খাঁন ছিলেন,কোটচাঁদপুরের বাসিন্দা।
সে কারনে ওই সময় তিনি শতাধিক বিঘা জমিও কিনে ছিলেন কোটচাঁদপুরে। দুই বোন,ভাই আর মাকে নিয়ে ছিল আমাদের সুখী সংসার। হঠাৎ করে ১৯৭১ সালের এক সন্ধ্যা রাতে আমার পিতা বশির খাঁনকে কারা ঢেকে নিয়ে যান।
এরপর তিনি আর ফিরে আসেনি। সংসারে নেমে আসে দুর্দিন। আত্মীয় – স্বজন বলতে তেমন কেউ ছিল না কোটচাঁদপুরে। আর আমাদের বসতবাড়িটি ছিল  বাগানের মধ্যে।
এ কারনে মা ভয়ে বাড়ি ঘর রেখে যশোর চলে যান আমাদের নিয়ে। লেখা-পড়া আর বেড়ে ওঠা আমাদের যশোরে। আমরা বুঝতে শেখার আগেই মারা যান মা। তার আগেই মারা যায় ভাইটি।
এরপর দুই বোন একা হয়ে গেলাম। জানতে পেলাম কোটচাঁদপুর বাবার রেখে যাওয়া এ সব সম্পত্তির কথা।
১৯৯৭ সাল,বোন আমেনার হাত ধরে চলে আসি কোটচাঁদপুরে। উঠি এক ভাড়ার বাসায়। এরপর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রস্তুত করে ১৯৯৮ সালে সাড়ে ৪ বিঘা নিয়ে মামলা করি আদালতে। ওই মামলাটি করা হয় স্থানীয় সালাহউদ্দিন আর রফি উদ্দিনের সঙ্গে। আর বাকি জমি থাকলেও কাগজপত্র প্রস্তুত করতে না পারায় তা,আজ ও পড়ে রয়েছে।
এ ছাড়া ২০১৪ সালে ৫ শতক জমি নিয়ে মামলা করা হয় রশিদের সঙ্গে। ওই মামলায় ২০২১ সালে আদালত আমাদের পক্ষে রায় দেন। এরপর রশিদ আদালতে আপিল করেন। ওই মামলায় আদালত আবারও ২৩ সালে আমার পক্ষে রায় দিয়েছেন। এরপরও আজ পর্যন্ত আমরা ওই জমি দখল নিতে পারেনি। এ ছাড়া বাকি জমিগুলো নিয়ে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে।
রাবেয়া খাতুন বলেন,এ সব মামলা চালাতে গিয়ে ভূলে গেছি বিয়ের পিড়িতে বসার কথা। এরপরও আমরা বিয়ে করতে চাইলেও, তেমন কেউ এগিয়ে আসেনি। কারন হিসেবে তিনি বলেন, আমরা গরীব মানুষ। আমাদের কিছু নাই। বিয়ে করলে কি পাবো এ ভাবে কেউ আসেনি।
মামলা খরচ চালান কিভাবে, জানতে চাইলে তিনি বলেন,আমরা যশোরে থাকাকালীন সময়ে যুব উন্নয়ন থেকে সেলাই মেশিনের কাজ শিখে ছিলাম। এখানে এসে মেশিন কিনে,মানুষের কাজ করে দিতাম।
ওই কাজ করে,যা আয় হত,সেটার কিছু টাকা দিয়ে দুই বোন তাদের সংসার চালায়,আর বাকি টাকা দিয়ে আদালতে মামলার খরচের যোগান দিই।
তিনি বলেন,দুই বোনের মধ্যে আমেনা খাতুন বাড়িতেই থাকেন। আর আমি আদালত আর থানা করে বেড়ায় পিতার রেখে যাওয়া সম্পতি উদ্ধারের জন্য। তাদের এ সম্পত্তি উদ্ধারে সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন,ওই দুই বোন রাবেয়া আর আমেনা।