ঢাকা ০২:৫৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এমপি-মন্ত্রীদের সন্তান ও আত্মীয়রা প্রার্থী হতে পারবেন না উপজেলা নির্বাচনে

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৭:৪৬:৪৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪
  • / ৩৬৫ বার পড়া হয়েছে

মৌলভীবাজার২৪ ডেস্ক: দেশের উপজেলা পরিষদ নির্বাচন স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীদের প্রভাবমুক্ত রাখতে ফের কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তারা যেন নির্বাচনে প্রভাব সৃষ্টির মাধ্যমে মাইম্যান তৈরি করতে না পারে-একই সাথে এমপি-মন্ত্রীদের নিকট আত্মীয় ও পরিবারের সদস্যরা প্রার্থী হতে না পারে সে বিষয়েও নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি। এসব নির্দেশনা উপেক্ষিত হলেই তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন দলীয় প্রধান।

বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগের সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের বিভাগীয় দায়িত্ব প্রাপ্ত নেতাদের সাথে অনির্ধারিত বৈঠক এসব নির্দেশনা দিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। আওয়ামী লীগের দপ্তর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলীয় মনোনয়ন দিচ্ছে না। এটা দলীয় সিদ্ধান্ত। নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিযোগিতাপূর্ণতা করতে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কেউ যেন নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করতে না পারে-সে বিষয়ে শুরু থেকে কঠোর বার্তা দেওয়া হচ্ছে দলের পক্ষ থেকে।

কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে দলের প্রভাবশালী নেতারা ও স্থানীয় এমপি-মন্ত্রী স্ব স্ব নির্বাচন এলাকায় তাদের আত্মীয়-স্বজন পরিবারের সদস্যদের প্রার্থী করছেন। এ কারণে দলের তৃণমূলে চেইন অফ কমান্ড ভেঙে পড়েছে। দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে বিভক্তি দেখা দিয়েছে। সংঘাত সহিংসতা হচ্ছে। এমপি-মন্ত্রী প্রশাসনের উপর খবরদারি করছে। সে কারণে দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশনা দিয়েছেন, যে সকল এমপি-মন্ত্রী পরিবারের সদস্যরা নির্বাচন করছেন-তারা নির্বাচন করতে পারবে না। এ বিষয়ে নেত্রী দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে নির্দেশনা দিয়েছেন।

দলের দপ্তর সূত্রে জানা যায়, আজ বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগের সভানেত্রীরর রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক অনির্ধারিত বৈঠক করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এতে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, আফজাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, উপ দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ।

এ সময় দলের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা বিভাগীয় দায়িত্ব প্রাপ্ত নেতাদের কাছে তুলে ধরেন ওবায়দুল কাদের। তিনি জানান, যেসব এমপি-মন্ত্রীরা নির্বাচনে প্রভাব সৃষ্টি করছেন এবং পরিবার ও নিকট আত্মীয়দের প্রার্থী করছে-তাদের তালিকা তৈরি করতে হবে।

বৈঠকে থাকা একাধিক নেতা জানান, নির্বাচনে হস্তক্ষেপ না করার জন্য দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রাজ্জাক, শাহাজান খান, নোয়াখালীর এমপি একরাম সহ বেশ কয়েকজনকে তাৎক্ষণিক বৈঠক থেকে সতর্ক বার্তা দেওয়া হয়।

বৈঠক সূত্র আরও বলছে, উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় অধিকাংশ নেতাদের অভিমত ছিল-প্রতীক বরাদ্দের কারণে দলের তৃণমূল গ্রুপিং বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ কারণে প্রতীক বাদ দেওয়া হয়েছে। সে কারণে আওয়ামী প্রতীক রাখেনি। আমরা স্থানীয় পর্যায়ের রাজনীতিতে ভারসাম্য রাখতে চাই, ঐক্যবদ্ধ রাখতে চাই। আমরা চাই না নির্বাচন কেন্দ্র করে দলের মধ্যে কোন্দলের সৃষ্টি হোক, দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে এমপি-মন্ত্রী দূরত্ব সৃষ্টি হোক।

কিন্তু বাস্তব চিত্র ভিন্ন। যেখানে দল মনোনয়ন দিচ্ছে না, সেখানে তারা খবরদারি করছে। আধিপত্য বিস্তার ও মাইম্যান সৃষ্টির চেষ্টা করছে। এমপি-মন্ত্রীরা নিজের প্রভাব বৃদ্ধির জন্য ও আধিপত্য বিস্তারের জন্য যে রাজনীতি আওয়ামী লীগ তা পছন্দ করছে না। এটা নিয়ন্ত্রণে জন্য ইতোমধ্যে সাংগঠনিক সম্পাদকদের নির্দেশনা দিয়েছেন।

তাই নির্বাচনে এমপি-মন্ত্রীরা হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। মাইম্যান সৃষ্টি করতে পারবে না। যারা নিকট আত্মীয়দের দিয়ে নির্বাচন করাচ্ছেন, তাদের তালিকা করা হচ্ছে। প্রয়োজনে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। কেউ যদি দলীয় নির্দেশনা না মানেন, তাদের বিরুদ্ধে সংগঠনের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানা গেছে।

 

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

এমপি-মন্ত্রীদের সন্তান ও আত্মীয়রা প্রার্থী হতে পারবেন না উপজেলা নির্বাচনে

আপডেট সময় ০৭:৪৬:৪৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪

মৌলভীবাজার২৪ ডেস্ক: দেশের উপজেলা পরিষদ নির্বাচন স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীদের প্রভাবমুক্ত রাখতে ফের কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তারা যেন নির্বাচনে প্রভাব সৃষ্টির মাধ্যমে মাইম্যান তৈরি করতে না পারে-একই সাথে এমপি-মন্ত্রীদের নিকট আত্মীয় ও পরিবারের সদস্যরা প্রার্থী হতে না পারে সে বিষয়েও নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি। এসব নির্দেশনা উপেক্ষিত হলেই তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন দলীয় প্রধান।

বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগের সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের বিভাগীয় দায়িত্ব প্রাপ্ত নেতাদের সাথে অনির্ধারিত বৈঠক এসব নির্দেশনা দিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। আওয়ামী লীগের দপ্তর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলীয় মনোনয়ন দিচ্ছে না। এটা দলীয় সিদ্ধান্ত। নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিযোগিতাপূর্ণতা করতে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কেউ যেন নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করতে না পারে-সে বিষয়ে শুরু থেকে কঠোর বার্তা দেওয়া হচ্ছে দলের পক্ষ থেকে।

কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে দলের প্রভাবশালী নেতারা ও স্থানীয় এমপি-মন্ত্রী স্ব স্ব নির্বাচন এলাকায় তাদের আত্মীয়-স্বজন পরিবারের সদস্যদের প্রার্থী করছেন। এ কারণে দলের তৃণমূলে চেইন অফ কমান্ড ভেঙে পড়েছে। দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে বিভক্তি দেখা দিয়েছে। সংঘাত সহিংসতা হচ্ছে। এমপি-মন্ত্রী প্রশাসনের উপর খবরদারি করছে। সে কারণে দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশনা দিয়েছেন, যে সকল এমপি-মন্ত্রী পরিবারের সদস্যরা নির্বাচন করছেন-তারা নির্বাচন করতে পারবে না। এ বিষয়ে নেত্রী দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে নির্দেশনা দিয়েছেন।

দলের দপ্তর সূত্রে জানা যায়, আজ বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগের সভানেত্রীরর রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক অনির্ধারিত বৈঠক করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এতে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, আফজাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, উপ দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ।

এ সময় দলের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা বিভাগীয় দায়িত্ব প্রাপ্ত নেতাদের কাছে তুলে ধরেন ওবায়দুল কাদের। তিনি জানান, যেসব এমপি-মন্ত্রীরা নির্বাচনে প্রভাব সৃষ্টি করছেন এবং পরিবার ও নিকট আত্মীয়দের প্রার্থী করছে-তাদের তালিকা তৈরি করতে হবে।

বৈঠকে থাকা একাধিক নেতা জানান, নির্বাচনে হস্তক্ষেপ না করার জন্য দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রাজ্জাক, শাহাজান খান, নোয়াখালীর এমপি একরাম সহ বেশ কয়েকজনকে তাৎক্ষণিক বৈঠক থেকে সতর্ক বার্তা দেওয়া হয়।

বৈঠক সূত্র আরও বলছে, উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় অধিকাংশ নেতাদের অভিমত ছিল-প্রতীক বরাদ্দের কারণে দলের তৃণমূল গ্রুপিং বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ কারণে প্রতীক বাদ দেওয়া হয়েছে। সে কারণে আওয়ামী প্রতীক রাখেনি। আমরা স্থানীয় পর্যায়ের রাজনীতিতে ভারসাম্য রাখতে চাই, ঐক্যবদ্ধ রাখতে চাই। আমরা চাই না নির্বাচন কেন্দ্র করে দলের মধ্যে কোন্দলের সৃষ্টি হোক, দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে এমপি-মন্ত্রী দূরত্ব সৃষ্টি হোক।

কিন্তু বাস্তব চিত্র ভিন্ন। যেখানে দল মনোনয়ন দিচ্ছে না, সেখানে তারা খবরদারি করছে। আধিপত্য বিস্তার ও মাইম্যান সৃষ্টির চেষ্টা করছে। এমপি-মন্ত্রীরা নিজের প্রভাব বৃদ্ধির জন্য ও আধিপত্য বিস্তারের জন্য যে রাজনীতি আওয়ামী লীগ তা পছন্দ করছে না। এটা নিয়ন্ত্রণে জন্য ইতোমধ্যে সাংগঠনিক সম্পাদকদের নির্দেশনা দিয়েছেন।

তাই নির্বাচনে এমপি-মন্ত্রীরা হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। মাইম্যান সৃষ্টি করতে পারবে না। যারা নিকট আত্মীয়দের দিয়ে নির্বাচন করাচ্ছেন, তাদের তালিকা করা হচ্ছে। প্রয়োজনে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। কেউ যদি দলীয় নির্দেশনা না মানেন, তাদের বিরুদ্ধে সংগঠনের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানা গেছে।