ঢাকা ০৪:৪৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কমলগঞ্জ প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ; নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৩:২৮:৩০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৯ অক্টোবর ২০২২
  • / ৪৩১ বার পড়া হয়েছে

কমলগঞ্জ সংবাদদাতা: কমলগঞ্জ উপজেলার দয়াময় সিংহ উচ্চ বিদ্যালয়ে অফিস সহায়ক পদের জন্য দাবিকৃত টাকা দিতে অসম্মতি প্রকাশ করায় আবেদনকারীর আবেদনপত্র বাতিল করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে দুই প্রার্থী প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অর্থ বাণিজ্যের লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। পরবর্তীতে নির্ধারিত তারিখে বিদ্যালয়ের নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করে বিষয়টি তদন্তের জন্য মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের কাছে দেয়া হয়। গত ২৩ ও ২৪ অক্টোবর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পৃথক দু’টি লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়।

অভিযোগ সূত্র ও স্থানীয়ভাবে জানা যায়, গত ২ সেপ্টেম্বর জাতীয় একটি দৈনিকে দয়াময় সিংহ উচ্চ বিদ্যালয়ে শুন্য পদে একজন নিরাপত্তা কর্মী, সৃষ্ট পদে কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর, একজন অফিস সহায়ক, একজন পরিচ্ছন্নতা কর্মী ও একজন আয়া পদে লোক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেখা যায়। এই বিজ্ঞপ্তির পর পাঁচটি পদে ৪২টি আবেদন জমা হয়। এর মধ্যে বিভিন্ন কারণে ১৬টি আবেদনপত্র বাতিল করা হয় এবং গত ২৬ অক্টোবর নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। পরবর্তীতে অফিস সহায়ক পদের প্রার্থী মো. শের আলী ও কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর পদের প্রার্থী রুমা সিনহা’র আবেদনপত্র বাতিল বলে জানতে পারেন।

এব্যাপারে অবৈধভাবে আবেদনপত্র বাতিলের সুনির্দিষ্ট কারণ উল্লেখ করে ওই দুই প্রার্থী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। তবে প্রধান শিক্ষক ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার যোগসাজসে এসব ষড়যন্ত্র চক্রান্ত হচ্ছে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য ও দু’জন শিক্ষক বলেন, এই শিক্ষা কর্মকর্তা দীর্ঘ ৫ বছর ধরে বহাল তবিয়তে আছেন। তিনি বিভিন্ন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের সাথে যোগসাজর করে অনিয়ম-দুর্ণীতি করছেন।
অফিস সহায়ক পদের প্রার্থী মো. শের আলী বলেন, আমি বিজ্ঞপ্তি দেখে আবেদনপত্র লিখে যা যা প্রয়োজন তা সংযুক্ত করে আবেদন করি এবং প্রধান শিক্ষকের কাছে বিষয়টি জানতে যাই। এসময়ে প্রধান শিক্ষক বলেন এই পদের জন্য দরদাম হচ্ছে। তুমি এতো টাকা দিতে পারবে কি? ৫ লক্ষ টাকা শুনে দিতে পারবো না বলে আসার কারণেই আমার প্রবেশপত্র বাতিল করা হয়। পরে গত ২৩ জুলাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দেই।

একইভাবে ২৪ অক্টোবর ইউএনও’র কাছে লিখিত অভিযোগে কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর পদের প্রার্থী রুমা সিনহা উল্লেখ করেন বিজ্ঞান বিভাগ ছিল না বলে আমার আবেদনপত্র বাতিল করা হয়। অথচ বিজ্ঞপ্তিতে বিজ্ঞান বিভাগ উল্লেখ ছিল না। উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে প্রধান শিক্ষকের আপন ভাতিজি অথবা ভাগ্নিকে নিয়োগ দিতে বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী বাছাই করে পরিকল্পিতভাবে আবেদন করানো হয়। নিয়োগটি আত্মীয়করণের লক্ষ্যে আমার আবেদনপত্রটি বাতিল করা হয়েছে এবং তদন্তক্রমে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন জানায়।

অভিযোগ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক প্রভাত কুমার সিংহ বলেন, টাকা দাবির অভিযোগটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র না থাকায় নিয়োগ কমিটি যাচাই বাছাইকালে তাদের আবেদন বাতিল করা হয়েছে। তবে আগামী ৯ নভেম্বর নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নবকুমার সিংহ বলেন, আসলে যথাযথভাবে তাদের আবেদনপত্র না থাকায় বাতিল হয়েছে। আর প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে টাকা দাবির সুনির্দিষ্ট তথ্যপ্রমাণ পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এব্যাপারে কমলগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শামসুন্নাহার পারভীন বলেন, নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত হয়েছে এবং বিষয়টি তদন্তাধীন আছে।

কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিফাত উদ্দীন বলেন, দয়াময় সিংহ স্কুলের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

কমলগঞ্জ প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ; নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত

আপডেট সময় ০৩:২৮:৩০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৯ অক্টোবর ২০২২

কমলগঞ্জ সংবাদদাতা: কমলগঞ্জ উপজেলার দয়াময় সিংহ উচ্চ বিদ্যালয়ে অফিস সহায়ক পদের জন্য দাবিকৃত টাকা দিতে অসম্মতি প্রকাশ করায় আবেদনকারীর আবেদনপত্র বাতিল করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে দুই প্রার্থী প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অর্থ বাণিজ্যের লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। পরবর্তীতে নির্ধারিত তারিখে বিদ্যালয়ের নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করে বিষয়টি তদন্তের জন্য মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের কাছে দেয়া হয়। গত ২৩ ও ২৪ অক্টোবর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পৃথক দু’টি লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়।

অভিযোগ সূত্র ও স্থানীয়ভাবে জানা যায়, গত ২ সেপ্টেম্বর জাতীয় একটি দৈনিকে দয়াময় সিংহ উচ্চ বিদ্যালয়ে শুন্য পদে একজন নিরাপত্তা কর্মী, সৃষ্ট পদে কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর, একজন অফিস সহায়ক, একজন পরিচ্ছন্নতা কর্মী ও একজন আয়া পদে লোক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেখা যায়। এই বিজ্ঞপ্তির পর পাঁচটি পদে ৪২টি আবেদন জমা হয়। এর মধ্যে বিভিন্ন কারণে ১৬টি আবেদনপত্র বাতিল করা হয় এবং গত ২৬ অক্টোবর নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। পরবর্তীতে অফিস সহায়ক পদের প্রার্থী মো. শের আলী ও কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর পদের প্রার্থী রুমা সিনহা’র আবেদনপত্র বাতিল বলে জানতে পারেন।

এব্যাপারে অবৈধভাবে আবেদনপত্র বাতিলের সুনির্দিষ্ট কারণ উল্লেখ করে ওই দুই প্রার্থী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। তবে প্রধান শিক্ষক ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার যোগসাজসে এসব ষড়যন্ত্র চক্রান্ত হচ্ছে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য ও দু’জন শিক্ষক বলেন, এই শিক্ষা কর্মকর্তা দীর্ঘ ৫ বছর ধরে বহাল তবিয়তে আছেন। তিনি বিভিন্ন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের সাথে যোগসাজর করে অনিয়ম-দুর্ণীতি করছেন।
অফিস সহায়ক পদের প্রার্থী মো. শের আলী বলেন, আমি বিজ্ঞপ্তি দেখে আবেদনপত্র লিখে যা যা প্রয়োজন তা সংযুক্ত করে আবেদন করি এবং প্রধান শিক্ষকের কাছে বিষয়টি জানতে যাই। এসময়ে প্রধান শিক্ষক বলেন এই পদের জন্য দরদাম হচ্ছে। তুমি এতো টাকা দিতে পারবে কি? ৫ লক্ষ টাকা শুনে দিতে পারবো না বলে আসার কারণেই আমার প্রবেশপত্র বাতিল করা হয়। পরে গত ২৩ জুলাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দেই।

একইভাবে ২৪ অক্টোবর ইউএনও’র কাছে লিখিত অভিযোগে কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর পদের প্রার্থী রুমা সিনহা উল্লেখ করেন বিজ্ঞান বিভাগ ছিল না বলে আমার আবেদনপত্র বাতিল করা হয়। অথচ বিজ্ঞপ্তিতে বিজ্ঞান বিভাগ উল্লেখ ছিল না। উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে প্রধান শিক্ষকের আপন ভাতিজি অথবা ভাগ্নিকে নিয়োগ দিতে বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী বাছাই করে পরিকল্পিতভাবে আবেদন করানো হয়। নিয়োগটি আত্মীয়করণের লক্ষ্যে আমার আবেদনপত্রটি বাতিল করা হয়েছে এবং তদন্তক্রমে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন জানায়।

অভিযোগ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক প্রভাত কুমার সিংহ বলেন, টাকা দাবির অভিযোগটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র না থাকায় নিয়োগ কমিটি যাচাই বাছাইকালে তাদের আবেদন বাতিল করা হয়েছে। তবে আগামী ৯ নভেম্বর নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নবকুমার সিংহ বলেন, আসলে যথাযথভাবে তাদের আবেদনপত্র না থাকায় বাতিল হয়েছে। আর প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে টাকা দাবির সুনির্দিষ্ট তথ্যপ্রমাণ পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এব্যাপারে কমলগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শামসুন্নাহার পারভীন বলেন, নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত হয়েছে এবং বিষয়টি তদন্তাধীন আছে।

কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিফাত উদ্দীন বলেন, দয়াময় সিংহ স্কুলের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।