কুশিয়ারার পাড়ে নয়নাভিরাম মুক্তানগর রিসোর্টে ছুঁয়ে যাবে মন
- আপডেট সময় ০১:৫৯:৩৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ জুলাই ২০২২
- / ১৩৮০ বার পড়া হয়েছে
মৌলভীবাজার২৪ ডেস্ক: সিলেট অঞ্চলের শত বছরের ঐতিহ্যবাহী কুশিয়ারা নদীর পাড়ে গড়ে উঠেছে মুক্তানগর রিসোর্ট।
প্রাকৃতিক আবেশে ভরা দর্শনীয় এই রিসোর্ট মন কেড়েছে সিলেট বিভাগের বিভিন্ন জেলার মানুষের। শোভা-সৌন্দর্যে নতুন মাত্রা যোগ করায় এই রিসোর্টটি দেশবাসীর কাছেও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
মুলত পর্যটন সম্ভবনাময় মৌলভীবাজার জেলাকে এগিয়ে নিতে ও কর্মসংস্থান তৈরীর লক্ষ্যে এই রিসোর্টটি গড়ে তুলেছেন শেখ রনি আহমেদ।
কয়েকবছর আগে ৭০ বিঘা জমির উপর বেসরকারি উদ্যোগে মুক্তানগর রিসোর্টের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। এখনো রিসোর্টের ৮০ ভাগ কাজ বাকি।
এরই মধ্যে ভ্রমণপিপাসু মানুষদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে এটি। এককালে কুশিয়ারা নদী ব্যবহৃত হতো নৌ যান চলাচলের অন্যতম রুট হিসেবে। আর এখন মুক্তানগর রিসোর্টে বদলে গেছে পুরো চিত্র। মৌলভীবাজার সদর উপজেলার শেরপুর এলাকা থেকে নাদামপুর (বাহাদুরপুর) এলাকায় এই রিসোর্টের অবস্থান।
রিসোর্টের নাম অনুসারে বদলে গেছে এই এলাকার নামও। মানুষ এখন এই এলাকাকে মুক্তানগর হিসেবেই চিনেন।
নয়নাভিরাম মুক্তানগর রিসোর্টের আকর্ষণ বিশাল বিশাল সুইমিং পুল। এর কাছে গিয়ে দাঁড়াতেই এর রূপ-সৌন্দর্য আর ঝরো ঝরো শব্দে সৃষ্টি হওয়া আবেশে মন ছুঁয়ে যাবে। দিনের চেয়ে রাতে এই সুইমিং পুল দেখতে বেশি ভালো লাগে। নানা রঙের আলোর ঝলকানিতে চোখ ভরে যাবে। এখানে এসে একটা ছবি বা সেলফি না তুলে ফিরে যাওয়া দর্শনার্থীর সংখ্যা খুবই নগণ্য। জল, জলাশয় আর জলজ সবকিছুকেই প্রাধান্য দিয়ে গড়ে তোলা হচ্ছে মুক্তানগর রিসোর্টকে।
বিভিন্ন নামের রয়েছে কটেজ। অন্যতম হচ্ছে রিভারভিউ, তারা কটেজ, লেইকভিউ, পুল ভিউ, মুক্তা কটেজ আর রায়হান প্লেস। আর রাজ প্লেসের কাজ প্রক্রিয়াধিন রয়েছে। তবে এসব কটেজের শতভাগ কক্ষই বুকিং হয়ে গেছে দীর্ঘমেয়াদের জন্য। তাই তৈরী করা হচ্ছে নতুন নতুন কটেজ।
নারী ও পুরুষের জন্য আছে আলাদা আলাদা সুইমিং পুল। বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে রয়েছে শিশুদের সুইমিং পুল। চাইলে স্পিড বোটেও ঘুরে দেখতে পারবেন কুশিয়ারা নদী। প্রকৃতির সঙ্গে হারিয়ে যেতে আছে গাছগাছালির সমাহার। আছে আলাদা আলাদা ৫টি সিটিং এরিয়ার রেস্টুরেন্ট। আছে জেট স্কিসহ নানা ওয়াটার রাইড, ওয়াটার ফলস, টয়মহ আরও নানা রাইড। এছাড় আছে এইট বল পুল খেলার সুযোগ। এখন পর্যন্ত মাত্র ২০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। তাতেই মুগ্ধ দর্শনার্থীরা। প্রতিদিনই শত শত দর্শনার্থীর পদচারণায় মুখর থাকে এই রিসোর্ট। এখনো অনেক কাজ বাকি থাকলেও যা আছে, তাই দেখে মুগ্ধ বিনোদনপ্রিয় মানুষজন। ছোট-বড় সববয়সী মানুষকে দেখা যাবে এই রিসোর্টে। কেউবা পরিবার-পরিজনসহ, কেউবা আবার প্রিয়জনের হাত ধরে নয়তো বন্ধু-বান্ধব এক হয়ে ঘুরে ঘুরে দেখছেন। চারদিকে আলোর ঝলকানি ও প্রচুর গাছপালা দিয়ে ঘেরা মুক্তানগর রিসোর্ট।
যেমন সুন্দর তেমনি পরিবেশবান্ধব। ছবির চেয়েও বেশি সুন্দর। আমরা ভীষণ মুগ্ধ। প্রচুর ছবি ও সেলফি তুলেছি। সেলফির জন্য তৈরী করা হয়েছে আলাদা সেলফি জোন।
মুক্তানগর রিসোর্টের মালিক শেখ রনি আহমেদ বলেন, আমি আমার বাড়িতে সুন্দর করতে গিয়ে এই রিসোর্ট করার পরিকল্পনা নেই। আমার প্রধান উদ্দেশ্য এই এলাকার মানুষের কর্মসংস্থান তৈরী করা। এই জেলার পর্যটনকে আরো সমৃদ্ধ করার জন্য আমরা কাজ করবো। মাত্র ২০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। যদি শতভাগ কাজ শেষ হয় তাহলে মুক্তানগর রিসোর্ট সিলেট অঞ্চলে পর্যটন শিল্পে বিপ্লব আনতে সক্ষম হবে। সিলেট বিভাগের চারটি জেলার মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত মুক্তানগর রিসোর্টে যেভাবে যাবেন: শেরপুর সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জ জেলার মধ্যবর্তী স্থান।
ঢাকা থেকে আসলে প্রথমে শেরপুর আসতে হবে। তারপর সেখান থেকে মৌলভীবাজার রোডে এসে নাদামপুর (বাহাদুরপুর) এলাকায় আসলেই মুক্তনগর রিসোর্টের অবস্থান। রিজার্ভ গাড়ি ছাড়া আসলে বাসে শেরপুর নামলে সেখানে কোন সিএনজিকে বললেই মুক্তানগর রিসোর্টে নিয়ে আসবে। শেরপুর থেকে আসতে সময় লাগবে মাত্র ১০ মিনিট। মৌলভীবাজার থেকে: মৌলভীবাজারের কুসুমবাগ থেকে শেরপুর সড়কের সরকার বাজার পারি দিলেই হাতের ডানপাশে নাদামপুর গ্রামের রাস্তা। সেই রাস্তা ধরে এগুলেই মুক্তানগর রিসোর্ট।
এছাড়া গুগলম্যাপস এর সাহায্যে যে কেউই আসতে পারবেন। খরচ: ঘুরে দেখার জন্য সুইমিংসহসম্পূর্ণ প্যাকেইজ ৬০০ টাকা, চার থেকে দশ বছর বয়সী শিশুদের জন্য ফুল প্যাকেইজ ২৫০/-। প্যাকেজের বাহিরে এনিট্র ফি, ২০০/- (জনপ্রতি),সুইমিং ৩০০/-, এইট বল পুল দুইশত টাকা (২-৪ জন), প্যাডেল বুট একশত টাকা।
প্রতিদিন সকাল ১০ টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত খুলা থাকে এই রিসোর্ট। হটলাইন +8801776436421।