ঢাকা ০৮:১৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দীর্ঘ এক যুগের কোন্দলের অবসান কুলাউড়া বিএনপির

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৮:১০:০৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ ডিসেম্বর ২০২৪
  • / ২৪৬ বার পড়া হয়েছে

দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি দিন ধরে কোন্দলে বিপর্যস্ত হয়ে পরা কুলাউড়া বিএনপির বিরোধ নিষ্পত্তি করলেন জেলা বিএনপির আহবায়ক ফয়জুল করিম ময়ূন।

রোববার (১ ডিসেম্বর) সকালে মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির আহবায়ক ফয়জুল করিম ময়ূন বিবদমান দুটি অংশকে নিয়ে তাঁর বাসভবনে দীর্ঘ বৈঠকে বসেন । চারঘন্টাব্যাপী এ বৈঠকটি গড়ায় সকাল ১১ টা থেকে বিকেল তিনটা পর্যন্ত। দীর্ঘ সময় চলা এ বৈঠকে বিএনপির বিবদমান দুটি অংশের নেতৃবৃন্দের বক্তব্য একে একে তিনি ধৈর্য্যসহকারে শুনেন। এবং দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাংগঠনিক নির্দেশনা যথাযথ ভাবে মেনে চলার জন্য তিনি নেতৃবৃন্দের প্রতি আহবান জানান। ওই বৈঠকে অংশ নেন -জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান, এডভোকেট আবেদ রাজা,শওকতুল ইসলাম শকু,কুলাউড়া উপজেলা বিএনপির প্রধান সমন্বয়ক মোশাররফ হোসেন বাদশা,সমন্বয়ক মো.হেলু মিয়া,আনিসুজ্জামান বায়েস,কুলাউড়া উপজেলা বিএনপির রেদোয়ান খান,শামীম আহমেদ চৌধুরী, আব্দুল মন্নান,বদরুজ্জামান সজল,ফাতু মিয়া,আলমগীর ভুঁইয়া, ফারুক আহমেদ পান্না,দেলোয়ার হোসেন,শামীম আহমেদ, আকদ্দস আলী,বদরুল হোসেন,আব্দুল জলিল জামাল,মুক্তা মিয়া,আজিজুর রহমান মনির,রফিক আহমেদ, শহীদুল হক প্রমুখ। বৈঠকে জেলা আহবায়কের প্রতি আস্থা রেখে নেতৃবৃন্দরা বলেন- জেলা বিএনপির বিভক্তির কারণে আমরা উপজেলাও বিভক্ত ছিলাম । দীর্ঘ দিন রাজনৈতিক মতভেদের কারণে কুলাউড়ায় আমরা একে অন্যের সাথে একসাথে বসতে পারিনি। দলকে তৃণমূলে সংগঠিত করা যায়নি। এমনকি সামাজিক ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানেও আমরা একে অন্যের সাথে খোলামেলা বসতে পারিনি। অথচ আমরা একদল করি কিন্তু দলের বিভক্তির এ দুরত্বের কারণে আমরা এক সাথে দলকে তৃণমূল পর্যায়ে সাজাতে বা সংগঠিত করতে পারিনি। আজকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান জেলা বিএনপির নতুন আহ্বায়ক কমিটি গঠন করে দেয়ায় আমাদের সুযোগ হয়েছে খোলা মেলা কথা বলার। যা অতীতে এ সুযোগ আমরা পাইনি। নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, দলে জেলার ঐক্য বিনষ্ট হলে উপজেলা বিনষ্ট হয়,উপজেলা বিনষ্ট হলে এর প্রভাব ইউনিয়ন থেকে ওয়ার্ড পর্যায়ে ছড়িয়ে পড়ে। এতে দলের নেতাকর্মী সমর্থকদের মধ্যেও বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়। যা সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে ঠিকমতো দল পরিচালনা করা যায় না। এর ফলে দল তৃণমূলে দুর্বল হয়।
নেতৃবৃন্দের উদ্দেশ্যে জেলা বিএনপির আহবায়ক ফয়জুল করিম ময়ুন বলেন- তারেক রহমান সাহেবের নির্দেশ হচ্ছে- দলে কোনো বিভেদ ও মতভেদ রাখা যাবে না। দল করতে হলে আমরা সবাই দলের হাই কমান্ডের নির্দেশনা যথাযথ ভাবে মেনে চলতে হবে। এবার সুযোগ হয়েছে দলকে তৃণমূল থেকে জেলা পর্যন্ত শক্তিশালী করার। এরই মধ্যে আমরা সাংগঠনিক কার্যক্রম শুরু করেছি। ওয়ার্ড থেকে ইউনিয়ন। ইউনিয়ন থেকে উপজেলা। উপজেলা থেকে জেলা পর্যায়ে প্রতিটি স্তরে সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করেছি । এখন থেকে দলে আর কোনো পকেটে কমিটি করা হবে না। স্বজনপ্রীতি চলবে না।দলের তারেক রহমান এর সাংগঠনিক নির্দেশনা কঠোর ভাবে মেনে চলা হবে। এর কোনো ব্যতিক্রম হবে না। ময়ূন বলেন – বিগত ফ্যাসিষ্ট হাসিনা পতনের আন্দোলন সংগ্রামে যেসকল নেতৃবৃন্দ জেল জুলুম নির্যাতনের শিকার হয়েছেন তাদেরকে প্রাধান্য দিয়েই কমিটি গঠন করা হবে। সে জন্য জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সভায় প্রতিটি উপজেলার সমন্বয়কারীদের টিমদের এরই মধ্যে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এখন দলকে সুন্দর সুষ্ঠু ভাবে কর্মীসভা করে প্রতিটি স্তরে সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি গঠনে সহযোগিতা করার জন্য নেতৃবৃন্দের প্রতি আহবান জানান তিনি।
বৈঠক শেষে খুশীতে কুলাউড়া বিএনপির বিবদমান দুটি অংশের নেতৃবৃন্দ একে অপরকে বুকে জড়িয়ে ধরে কোলাকুলি করেন এবং কুলাউড়া উপজেলায় ঐক্য বদ্ধ ভাবে দলকে তৃণমূল থেকে শক্তি শালী করার ঘোষণা দেন।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

দীর্ঘ এক যুগের কোন্দলের অবসান কুলাউড়া বিএনপির

আপডেট সময় ০৮:১০:০৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ ডিসেম্বর ২০২৪

দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি দিন ধরে কোন্দলে বিপর্যস্ত হয়ে পরা কুলাউড়া বিএনপির বিরোধ নিষ্পত্তি করলেন জেলা বিএনপির আহবায়ক ফয়জুল করিম ময়ূন।

রোববার (১ ডিসেম্বর) সকালে মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির আহবায়ক ফয়জুল করিম ময়ূন বিবদমান দুটি অংশকে নিয়ে তাঁর বাসভবনে দীর্ঘ বৈঠকে বসেন । চারঘন্টাব্যাপী এ বৈঠকটি গড়ায় সকাল ১১ টা থেকে বিকেল তিনটা পর্যন্ত। দীর্ঘ সময় চলা এ বৈঠকে বিএনপির বিবদমান দুটি অংশের নেতৃবৃন্দের বক্তব্য একে একে তিনি ধৈর্য্যসহকারে শুনেন। এবং দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাংগঠনিক নির্দেশনা যথাযথ ভাবে মেনে চলার জন্য তিনি নেতৃবৃন্দের প্রতি আহবান জানান। ওই বৈঠকে অংশ নেন -জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান, এডভোকেট আবেদ রাজা,শওকতুল ইসলাম শকু,কুলাউড়া উপজেলা বিএনপির প্রধান সমন্বয়ক মোশাররফ হোসেন বাদশা,সমন্বয়ক মো.হেলু মিয়া,আনিসুজ্জামান বায়েস,কুলাউড়া উপজেলা বিএনপির রেদোয়ান খান,শামীম আহমেদ চৌধুরী, আব্দুল মন্নান,বদরুজ্জামান সজল,ফাতু মিয়া,আলমগীর ভুঁইয়া, ফারুক আহমেদ পান্না,দেলোয়ার হোসেন,শামীম আহমেদ, আকদ্দস আলী,বদরুল হোসেন,আব্দুল জলিল জামাল,মুক্তা মিয়া,আজিজুর রহমান মনির,রফিক আহমেদ, শহীদুল হক প্রমুখ। বৈঠকে জেলা আহবায়কের প্রতি আস্থা রেখে নেতৃবৃন্দরা বলেন- জেলা বিএনপির বিভক্তির কারণে আমরা উপজেলাও বিভক্ত ছিলাম । দীর্ঘ দিন রাজনৈতিক মতভেদের কারণে কুলাউড়ায় আমরা একে অন্যের সাথে একসাথে বসতে পারিনি। দলকে তৃণমূলে সংগঠিত করা যায়নি। এমনকি সামাজিক ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানেও আমরা একে অন্যের সাথে খোলামেলা বসতে পারিনি। অথচ আমরা একদল করি কিন্তু দলের বিভক্তির এ দুরত্বের কারণে আমরা এক সাথে দলকে তৃণমূল পর্যায়ে সাজাতে বা সংগঠিত করতে পারিনি। আজকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান জেলা বিএনপির নতুন আহ্বায়ক কমিটি গঠন করে দেয়ায় আমাদের সুযোগ হয়েছে খোলা মেলা কথা বলার। যা অতীতে এ সুযোগ আমরা পাইনি। নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, দলে জেলার ঐক্য বিনষ্ট হলে উপজেলা বিনষ্ট হয়,উপজেলা বিনষ্ট হলে এর প্রভাব ইউনিয়ন থেকে ওয়ার্ড পর্যায়ে ছড়িয়ে পড়ে। এতে দলের নেতাকর্মী সমর্থকদের মধ্যেও বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়। যা সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে ঠিকমতো দল পরিচালনা করা যায় না। এর ফলে দল তৃণমূলে দুর্বল হয়।
নেতৃবৃন্দের উদ্দেশ্যে জেলা বিএনপির আহবায়ক ফয়জুল করিম ময়ুন বলেন- তারেক রহমান সাহেবের নির্দেশ হচ্ছে- দলে কোনো বিভেদ ও মতভেদ রাখা যাবে না। দল করতে হলে আমরা সবাই দলের হাই কমান্ডের নির্দেশনা যথাযথ ভাবে মেনে চলতে হবে। এবার সুযোগ হয়েছে দলকে তৃণমূল থেকে জেলা পর্যন্ত শক্তিশালী করার। এরই মধ্যে আমরা সাংগঠনিক কার্যক্রম শুরু করেছি। ওয়ার্ড থেকে ইউনিয়ন। ইউনিয়ন থেকে উপজেলা। উপজেলা থেকে জেলা পর্যায়ে প্রতিটি স্তরে সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করেছি । এখন থেকে দলে আর কোনো পকেটে কমিটি করা হবে না। স্বজনপ্রীতি চলবে না।দলের তারেক রহমান এর সাংগঠনিক নির্দেশনা কঠোর ভাবে মেনে চলা হবে। এর কোনো ব্যতিক্রম হবে না। ময়ূন বলেন – বিগত ফ্যাসিষ্ট হাসিনা পতনের আন্দোলন সংগ্রামে যেসকল নেতৃবৃন্দ জেল জুলুম নির্যাতনের শিকার হয়েছেন তাদেরকে প্রাধান্য দিয়েই কমিটি গঠন করা হবে। সে জন্য জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সভায় প্রতিটি উপজেলার সমন্বয়কারীদের টিমদের এরই মধ্যে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এখন দলকে সুন্দর সুষ্ঠু ভাবে কর্মীসভা করে প্রতিটি স্তরে সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি গঠনে সহযোগিতা করার জন্য নেতৃবৃন্দের প্রতি আহবান জানান তিনি।
বৈঠক শেষে খুশীতে কুলাউড়া বিএনপির বিবদমান দুটি অংশের নেতৃবৃন্দ একে অপরকে বুকে জড়িয়ে ধরে কোলাকুলি করেন এবং কুলাউড়া উপজেলায় ঐক্য বদ্ধ ভাবে দলকে তৃণমূল থেকে শক্তি শালী করার ঘোষণা দেন।