মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন,নিয়োগ বঞ্চিত প্রার্থীর পিতা ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান,কুশনা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ইসরাফিল হোসেন,লিটন হোসেন। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন নিয়োগ বঞ্চিত প্রার্থী ও তাদের স্বজনরা।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, নিয়োগ বঞ্চিত প্রার্থী শিহাব হোসেন,সেলিম রেজা ও রোকন হোসেন, তারা বলেন,চাকুরী দেবার কথা বলে কুশনা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি আব্দুর রশিদ আমাদের কাছ থেকে ৮/১০ লাখ টাকা করে নেন। পরে অন্য প্রার্থীরা আমাদের থেকে বেশি টাকা দেওয়ায় তাদের চাকুরী দিয়েছেন।
তারা অভিযোগ করে বলেন,যারা নিয়োগ বোর্ডের মাধ্যমে নিয়োগ পাবেন,তারা আগের রাতে কমিটির সভাপতির কাছ থেকে প্রশ্নপত্র হাতে পান। পরে ওই প্রার্থীরা সারারাত পড়ে বোর্ডে ভাল পরিক্ষা দিয়েছেন। তারা আরো বলেন, বোর্ডের কর্মকর্তারা এখানে এসে কোন প্রশ্ন করেননি। কমিটির দেয়া প্রশ্নেই তারা পরিক্ষা নিয়েছেন। তা না হলে আগের রাতে কমিটির পছন্দের প্রার্থীরা কিভাবে প্রশ্নপত্র হাতে পান,এমন দাবি তাদের। তারা অবিলম্বে এ নিয়োগ বোর্ড বাতিল ও তাদের টাকা ফেরতেও দাবি করেছেন।
ওই কমিটির সদস্য ইসরাফিল হোসেন,লিটন হোসেন বলেন,নিয়োগ দেয়ার জন্য অনেকের কাছ থেকে সভাপতি টাকা নিয়েছেন আমরা জানি। তবে এখন কেন তাদের টাকা কেন ফেরত দিচ্ছেন না, তা আমাদের জানা নাই।
ওই দুই সদস্য বলেন, এছাড়া আমরা চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নানের ছেলে টাকা ও শিহাবের টাকা হাতে করে তাকে দিয়ে ছিলাম।
নিয়োগ বঞ্চিতদের স্বজন আছিয়া বেগম বলেন, আমার নাতিনের চাকুরির জন্য,কিস্তি তুলে,মানুষের কাছ থেকে চেয়ে এনে সভাপতির হাতে টাকা দিয়ে ছিলাম। তিনি অন্য প্রার্থীর কাছ থেকে আরো বেশি টাকা নিয়ে তাকে নিয়োগ দিয়েছেন। তিনি হয় টাকা চান,না হলে তাঁর নাতিনের চাকুরির দাবি করেছেন মানববন্ধন থেকে।
কুশনা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান বলেন,আমার ছেলে সহ ১০ জনের কাছ থেকে বিদ্যালয়ের সভাপতি আব্দুর রশিদ কোটি টাকা নিয়োগ বানিজ্য করেছেন। তিনি নিয়োগ বোর্ড বাতিল ও টাকা ফেরতের দাবি করছেন। অন্যথায় তিনি নিয়োগ বঞ্চিতদের নিয়ে আরো কঠিন কর্মসুচী দিবেন বলেও হুশিয়ারি দিয়েছেন।
রবিবার সকালে কোটচাঁদপুরের কুশনা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনের সড়কে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। ঘন্টা ব্যাপী চলে মানববন্ধন। এ মানববন্ধনে উপরোক্ত দাবি জানান তারা।
জানা যায়,কোটচাঁদপুরের কুশনা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৫ টি পদে নিয়োগ পরিক্ষা ছিল শুক্রবার (২৮-০৬-২৪) তারিখে। যার মধ্যে ছিল অফিস সহকারি, অফিস সহায়ক,নৈশ্য প্রহরী,পরিছন্ন কর্মী,আয়া। এ সব পদে চাকুরীর জন্য ৭৭ জন আবেদন করেন। তবে পরিক্ষায় অংশ গ্রহন করেন ৪৩ জন।
পরিক্ষা সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন হলেও ফল ঘোষণার পর দফায় দফায় চলে নিয়োগ বঞ্চিতদের হামলা ওই বিদ্যালয়ের সভাপতি ও কৃষক লীগ নেতা আব্দুর রশিদ ও শিক্ষক গোলাম কিবরিয়া বিপ্লবের উপর। বিষয়টি নিয়ে ওইদিন দিবাগত রাতে উভয় পক্ষ কোটচাঁদপুর থানায় অভিযোগ করেন বলে জানিয়েছেন থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) সৈয়দ আল- মামুন।
এ ব্যাপারে কুশনা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি আব্দুর রশিদ বলেন, বিদ্যালয়ের সভাপতি ও কৃষকলীগ নেতা আব্দুর রশিদ বলেন, নিয়োগ স্বচ্চ হয়েছে। আমি কারোর কাছ থেকে কোন টাকা নেয়নি। পরিক্ষায় যারা ভাল করেছেন,তারা চাকুরী পেয়েছেন।
তবে আপনার উপর হামলা কেন,এমন প্রশ্নে তিনি বলেন,যারা নিয়োগ পাননি তারা আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন। এবং হামলাও চালিয়েছেন। তিনি আরো বলেন,আমি কারোর কাছ থেকে কোন টাকাই নেয়নি। তারা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ ও অপপ্রচার চালাচ্ছেন।