ঢাকা ০৬:০৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নির্ধারিত সময়েই সম্মেলন

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৫:৪১:১৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ মার্চ ২০২২
  • / ৫৪৬ বার পড়া হয়েছে

নির্ধারিত সময়েই অনুষ্ঠিত হবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলন। এ জন্য জোর প্রস্তুতি শুরু করেছেন দলটির শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সাংগঠনিক পরিকল্পনার অংশ হিসেবে নির্ধারিত সময়েই সম্মেলনের টাগের্ট আওয়ামী লীগের। এ জন্য দলটির বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা জেলা-উপজেলা সম্মেলন শেষ করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

সূত্রে জনা গেছে, ২০১৯ সালের ২০-২১ ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত হয় আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলন। এতে সভাপতি পদে নবমবারের মতো নির্বাচিত হন বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার সঙ্গে দ্বিতীয়বারের মতো সাধারণ সম্পাদক হন ওবায়দুল কাদের। তিন বছরমেয়াদি এ সম্মেলনের মেয়াদ শেষ হবে চলতি বছরের ডিসেম্বরে।

আওয়ামী লীগের একটি সূত্র জানিয়েছে, ডিসেম্বরে জাতীয় সম্মেলনের নির্ধারিত সময় পার হচ্ছে না। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে আগেভাগেই জাতীয় সম্মেলনের মাধ্যমে দলকে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা আওয়ামী লীগের। এরপর এক বছর নির্বাচনকেন্দ্রিক কার্যক্রম চালানোর পরিকল্পনাও ক্ষমতাসীনদের। সে কারণে আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনটা এ বছর ডিসেম্বরের আগেও হয়ে যেতে পারে।

আ.লীগ সূত্রে জানা যায়, আগামী বছর অনুষ্ঠিত হবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। ওই নির্বাচনে মাঠে ফের নিরঙ্কুুশ বিজয় অর্জনের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসতে চায় আওয়ামী লীগ। এজন্য চলতি বছরে দল গোছানোর কাজ শেষ করতে চায় তারা। বিশেষ করে মেয়াদোত্তীর্ণ জেলা-উপজেলাসহ বিভিন্ন ইউনিটের সম্মেলন, দলের অভ্যন্তরে সৃষ্ট দ্বন্দ্ব নিরসন, ত্যাগীদের মূল্যায়ন এবং বিতর্কিতদের দল থেকে বাদ দিতে সাংগঠনিকভাবে আরও শক্তিশালী হতে চান ক্ষমতাসীনরা।

তৃণমূলে সৃষ্ট এসব সমস্যার সমাধান ও মেয়াদোত্তীর্ণ ইউনিটের সম্মেলন শেষ করতে ইতোমধ্যে দলের শীর্ষ নেতাদের কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দলের বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের তিন মাস সময় বেঁধেও দিয়েছেন তিনি। নেত্রীর নির্দেশনার পর সাংগঠনিক কর্মযজ্ঞে ব্যস্ত বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্তরা। তারা সারা দেশের দ্বন্দ্ব নিরসনের পাশাপাশি বিভিন্ন ইউনিটের সম্মেলন করছেন।

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রহমান আমার সংবাদকে বলেন, সারা দেশের বিভিন্ন ইউনিটে আওয়ামী লীগের সম্মেলন হচ্ছে। ওইসব সম্মেলনের মধ্য দিয়ে দলের দুর্দিনের ত্যাগীদের দায়িত্বশীল পদ-পদবিতে নিয়ে আশা হচ্ছে। আশা করি অল্প সময়ের মধ্যেই মেয়াদোত্তীর্ণ সব ইউনিটের সম্মেলন শেষ হয়ে যাবে।

তিনি বলেন, বিগত দিনের ধারাবাহিকতায় নির্ধারিত সময়েই আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। তবে করোনার পরিবেশ-পরিস্থিতি যদি ভালো না থাকে, সেক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে সিদ্ধান্ত নেবেন, সে সিদ্ধান্তই বহাল থাকবে। তবে নির্দিষ্ট সময়ে সম্মেলন করাই আওয়ামী লীগের রেওয়াজ বলে জানান তিনি।

আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, নতুন বছরের শুরু থেকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করতে চায় আওয়ামী লীগ। বিশেষ করে দলটির নেতৃত্বে বিগত দিনে দেশের যেসব উন্নয়ন-অগ্রযাত্রা হয়েছে, তা দলের পক্ষে থেকে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের কাছে তুলে ধরা হবে। একই সাথে বিএনপি-জামায়াতসহ সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর অপপ্রচার, মিথ্যাচার, গুজব ও সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্র শক্ত হাতে মোকাবিলা করতে চায় আওয়ামী লীগ।

এছাড়াও জাতীয় নির্বাচনের আগে সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো নোংরা রাজনীতিতে ব্যস্ত থাকে। তারা ছোট ছোট ইস্যুকে কেন্দ্র করে সরকারবিরোধী আন্দোলন গড়ে তোলার অপচেষ্টা করে। হরতাল, মিছিল-মিটিং, সভা-সমাবেশের নামে ক্ষমতা দখলের পাঁয়তারা করে। তবে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে বিএনপি-জামায়াতসহ সরকারবিরোধী রাজনৈতিক নেতারা যেন অপরাজনীতি করতে না পারে, সে জন্য সাংগঠনিকভাবে আওয়ামী লীগকে আরও শক্তিশালী করা হবে। নির্বাচনের বিষয়বস্তু মাথায় রেখে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই জাতীয় সম্মেলন হয়ে যেতে পারে বলে জানান তিনি।

আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য লে. কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান আমার সংবাদকে বলেন, এখন তৃণমূলের সাংগঠনিক কার্যক্রমে জোর দেয়া হয়েছে। করোনার সংক্রমণ সহনীয় পর্যায়ে থাকায় চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে তৃণমূলের সব ইউনিটের সম্মেলন শেষ করার টার্গেট রয়েছে। সে লক্ষ্য সামনে রেখে আওয়ামী লীগ কাজ করছে।

খোঁজ-খবর নিয়ে জানা যায়, দীর্ঘদিন রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগের বিষফোঁড়া দলের অন্তর্কোন্দল। জেলা-উপজেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের সাথে দূরত্ব বেড়েছে স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীদের। নিজেদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মাঝেমধ্যেই তারা হামলা-সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ছেন। দীর্ঘদিনের এমন দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এসেছে সদ্যসমাপ্ত ইউপি নির্বাচনে। বিশেষ করে নৌকার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে ভোটের মাঠে ডুবিয়েছেন অনেক সাংসদ ও প্রভাবশালী। অনেক জেলা-উপজেলা সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক এবং স্থানীয় এমপিদের ব্যক্তিগত কর্মকাণ্ডে ক্ষুব্ধ তৃণমূলের ত্যাগীরা।

অভিমানে দূরে সরে গেছেন কেউ কেউ। প্রায় প্রতিদিন দেশের কোথাও না কোথাও প্রকাশ্যে মারামারি হচ্ছে। এমন অবস্থায় আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে বড় ধরনের পরীক্ষায় ফেলতে পারে। এ দুশ্চিন্তা থেকেই দলীয় নেতারা কোন্দল নিরসনে গুরুত্ব দিচ্ছেন। অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিরসনে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা জেলা-উপজেলায় গিয়ে বৈঠক করছেন। একইসঙ্গে বেশি কোন্দলপূর্ণ জেলা-উপজেলার নেতাদের ঢাকায় ডেকে উভয়পক্ষকে নিয়ে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা হচ্ছে।

আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ আমার সংবাদকে বলেন, করোনার মতো ভাইরাসে যদি বড় ধরনের সংকট তৈরি না হয়, তাহলে নির্ধারিত সময়েই আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সেভাবেই আওয়ামী লীগের পক্ষে থেকে প্রস্তুতি গ্রহণ করা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, বিগত দিনে সম্মেলন করতে অনেক সময় লেগে যেত। কিন্তু সর্বশেষ কয়েকটি সম্মেলন আমরা কিন্তু নির্ধারিত সময়েই শেষ করেছি। এ সম্মেলনের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সাংগঠনিকভাবে আরও শক্তিশালী হবে এবং দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে নিরঙ্কুুশ বিজয় অর্জন করবে।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

নির্ধারিত সময়েই সম্মেলন

আপডেট সময় ০৫:৪১:১৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ মার্চ ২০২২

নির্ধারিত সময়েই অনুষ্ঠিত হবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলন। এ জন্য জোর প্রস্তুতি শুরু করেছেন দলটির শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সাংগঠনিক পরিকল্পনার অংশ হিসেবে নির্ধারিত সময়েই সম্মেলনের টাগের্ট আওয়ামী লীগের। এ জন্য দলটির বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা জেলা-উপজেলা সম্মেলন শেষ করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

সূত্রে জনা গেছে, ২০১৯ সালের ২০-২১ ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত হয় আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলন। এতে সভাপতি পদে নবমবারের মতো নির্বাচিত হন বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার সঙ্গে দ্বিতীয়বারের মতো সাধারণ সম্পাদক হন ওবায়দুল কাদের। তিন বছরমেয়াদি এ সম্মেলনের মেয়াদ শেষ হবে চলতি বছরের ডিসেম্বরে।

আওয়ামী লীগের একটি সূত্র জানিয়েছে, ডিসেম্বরে জাতীয় সম্মেলনের নির্ধারিত সময় পার হচ্ছে না। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে আগেভাগেই জাতীয় সম্মেলনের মাধ্যমে দলকে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা আওয়ামী লীগের। এরপর এক বছর নির্বাচনকেন্দ্রিক কার্যক্রম চালানোর পরিকল্পনাও ক্ষমতাসীনদের। সে কারণে আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনটা এ বছর ডিসেম্বরের আগেও হয়ে যেতে পারে।

আ.লীগ সূত্রে জানা যায়, আগামী বছর অনুষ্ঠিত হবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। ওই নির্বাচনে মাঠে ফের নিরঙ্কুুশ বিজয় অর্জনের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসতে চায় আওয়ামী লীগ। এজন্য চলতি বছরে দল গোছানোর কাজ শেষ করতে চায় তারা। বিশেষ করে মেয়াদোত্তীর্ণ জেলা-উপজেলাসহ বিভিন্ন ইউনিটের সম্মেলন, দলের অভ্যন্তরে সৃষ্ট দ্বন্দ্ব নিরসন, ত্যাগীদের মূল্যায়ন এবং বিতর্কিতদের দল থেকে বাদ দিতে সাংগঠনিকভাবে আরও শক্তিশালী হতে চান ক্ষমতাসীনরা।

তৃণমূলে সৃষ্ট এসব সমস্যার সমাধান ও মেয়াদোত্তীর্ণ ইউনিটের সম্মেলন শেষ করতে ইতোমধ্যে দলের শীর্ষ নেতাদের কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দলের বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের তিন মাস সময় বেঁধেও দিয়েছেন তিনি। নেত্রীর নির্দেশনার পর সাংগঠনিক কর্মযজ্ঞে ব্যস্ত বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্তরা। তারা সারা দেশের দ্বন্দ্ব নিরসনের পাশাপাশি বিভিন্ন ইউনিটের সম্মেলন করছেন।

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রহমান আমার সংবাদকে বলেন, সারা দেশের বিভিন্ন ইউনিটে আওয়ামী লীগের সম্মেলন হচ্ছে। ওইসব সম্মেলনের মধ্য দিয়ে দলের দুর্দিনের ত্যাগীদের দায়িত্বশীল পদ-পদবিতে নিয়ে আশা হচ্ছে। আশা করি অল্প সময়ের মধ্যেই মেয়াদোত্তীর্ণ সব ইউনিটের সম্মেলন শেষ হয়ে যাবে।

তিনি বলেন, বিগত দিনের ধারাবাহিকতায় নির্ধারিত সময়েই আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। তবে করোনার পরিবেশ-পরিস্থিতি যদি ভালো না থাকে, সেক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে সিদ্ধান্ত নেবেন, সে সিদ্ধান্তই বহাল থাকবে। তবে নির্দিষ্ট সময়ে সম্মেলন করাই আওয়ামী লীগের রেওয়াজ বলে জানান তিনি।

আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, নতুন বছরের শুরু থেকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করতে চায় আওয়ামী লীগ। বিশেষ করে দলটির নেতৃত্বে বিগত দিনে দেশের যেসব উন্নয়ন-অগ্রযাত্রা হয়েছে, তা দলের পক্ষে থেকে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের কাছে তুলে ধরা হবে। একই সাথে বিএনপি-জামায়াতসহ সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর অপপ্রচার, মিথ্যাচার, গুজব ও সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্র শক্ত হাতে মোকাবিলা করতে চায় আওয়ামী লীগ।

এছাড়াও জাতীয় নির্বাচনের আগে সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো নোংরা রাজনীতিতে ব্যস্ত থাকে। তারা ছোট ছোট ইস্যুকে কেন্দ্র করে সরকারবিরোধী আন্দোলন গড়ে তোলার অপচেষ্টা করে। হরতাল, মিছিল-মিটিং, সভা-সমাবেশের নামে ক্ষমতা দখলের পাঁয়তারা করে। তবে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে বিএনপি-জামায়াতসহ সরকারবিরোধী রাজনৈতিক নেতারা যেন অপরাজনীতি করতে না পারে, সে জন্য সাংগঠনিকভাবে আওয়ামী লীগকে আরও শক্তিশালী করা হবে। নির্বাচনের বিষয়বস্তু মাথায় রেখে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই জাতীয় সম্মেলন হয়ে যেতে পারে বলে জানান তিনি।

আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য লে. কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান আমার সংবাদকে বলেন, এখন তৃণমূলের সাংগঠনিক কার্যক্রমে জোর দেয়া হয়েছে। করোনার সংক্রমণ সহনীয় পর্যায়ে থাকায় চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে তৃণমূলের সব ইউনিটের সম্মেলন শেষ করার টার্গেট রয়েছে। সে লক্ষ্য সামনে রেখে আওয়ামী লীগ কাজ করছে।

খোঁজ-খবর নিয়ে জানা যায়, দীর্ঘদিন রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগের বিষফোঁড়া দলের অন্তর্কোন্দল। জেলা-উপজেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের সাথে দূরত্ব বেড়েছে স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীদের। নিজেদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মাঝেমধ্যেই তারা হামলা-সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ছেন। দীর্ঘদিনের এমন দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এসেছে সদ্যসমাপ্ত ইউপি নির্বাচনে। বিশেষ করে নৌকার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে ভোটের মাঠে ডুবিয়েছেন অনেক সাংসদ ও প্রভাবশালী। অনেক জেলা-উপজেলা সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক এবং স্থানীয় এমপিদের ব্যক্তিগত কর্মকাণ্ডে ক্ষুব্ধ তৃণমূলের ত্যাগীরা।

অভিমানে দূরে সরে গেছেন কেউ কেউ। প্রায় প্রতিদিন দেশের কোথাও না কোথাও প্রকাশ্যে মারামারি হচ্ছে। এমন অবস্থায় আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে বড় ধরনের পরীক্ষায় ফেলতে পারে। এ দুশ্চিন্তা থেকেই দলীয় নেতারা কোন্দল নিরসনে গুরুত্ব দিচ্ছেন। অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিরসনে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা জেলা-উপজেলায় গিয়ে বৈঠক করছেন। একইসঙ্গে বেশি কোন্দলপূর্ণ জেলা-উপজেলার নেতাদের ঢাকায় ডেকে উভয়পক্ষকে নিয়ে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা হচ্ছে।

আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ আমার সংবাদকে বলেন, করোনার মতো ভাইরাসে যদি বড় ধরনের সংকট তৈরি না হয়, তাহলে নির্ধারিত সময়েই আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সেভাবেই আওয়ামী লীগের পক্ষে থেকে প্রস্তুতি গ্রহণ করা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, বিগত দিনে সম্মেলন করতে অনেক সময় লেগে যেত। কিন্তু সর্বশেষ কয়েকটি সম্মেলন আমরা কিন্তু নির্ধারিত সময়েই শেষ করেছি। এ সম্মেলনের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সাংগঠনিকভাবে আরও শক্তিশালী হবে এবং দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে নিরঙ্কুুশ বিজয় অর্জন করবে।