ঢাকা ১০:৪২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রতিবেশী দেশ ভারত আমাদের পরীক্ষিত বন্ধু

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ১০:০৫:৫৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২২
  • / ২৬৯ বার পড়া হয়েছে

মৌলভীবাজার২৪ ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, প্রতিবেশী দেশ ভারত আমাদের পরীক্ষিত বন্ধু। আমাদের মতপার্থক্য থাকতে পারে, তবে আলোচনার মাধ্যমে এগুলোর সমাধান সম্ভব। বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রেই ভারত ও বাংলাদেশ সেটিই করেছে।ভারত সফরে যাওয়ার একদিন আগে এশিয়ান নিউজ ইন্টারন্যাশনালে (এএনআই) দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন তিনি।

রোববার (৪ সেপ্টেম্বর) প্রধানমন্ত্রীর এ সাক্ষাৎকারটি এএনআই প্রকাশ করে। আগামী ৫ সেপ্টেম্বর চারদিনের রাষ্ট্রীয় সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরকে কেন্দ্র করেই সাক্ষাৎকারটি নিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম এএনআই।এ সময় ইউক্রেন যুদ্ধের শুরুতে সেখানে আটকেপড়া শিক্ষার্থীদের ফেরাতে ভারতের সহযোগিতার জন্য প্রধানমন্ত্রী মোদির প্রশংসা করেন শেখ হাসিনা। পাশাপাশি করোনাভাইরাস মহামারি রোধে টিকা দিয়ে মোদি সরকারের সহযোগিতার কথাও উল্লেখ করেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, আমি ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। কারণ, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সময় আমাদের অনেক ছাত্রই আটকে পড়েছিল। পরে তারা ভারতের সহায়তায় পোল্যান্ডে আশ্রয় নিতে সমর্থ্য হয়। এর মধ্য দিয়ে ভারত বন্ধুত্বের প্রমাণ রেখেছে।

মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীরা বাংলাদেশের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গার এখন নিজ দেশ মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন অনিশ্চিত। আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে বিষয়টি তুলে ধরেছি। এই সমস্যা সমাধানে প্রতিবেশী ভারত মুখ্য ভূমিকা রাখতে পারে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার মানবিক দিকটি বিবেচনা করে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গার যত্ন নিচ্ছে। বর্তমানে রোহিঙ্গার আমাদের জন্য বড় একটি বোঝা। ভারত বড় একটি দেশ, সেখানে থাকার জায়গা অনেক হলেও কিন্তু দেশটিতে খুব বেশি রোহিঙ্গা নেই। আর আমাদের দেশে ১১ লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয়ে আছে। এই সমস্যাটি সমাধানে ভারত ভূমিকা রাখতে পারে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা শুধু মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিই। তাদের সব ধরনের সহায়তা দিয়ে যাচ্ছি। বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে করোনা মহামারির সময়ে টিকার আওতায় এনেছি। কিন্তু তারা আর কতদিন এখানে থাকবে? তারা এখন ক্যাম্পে অবস্থান করছে। আমাদের পরিবেশকে বিপজ্জনক করে তুলছে। রোহিঙ্গাদের কিছু অংশ মাদকপাচার, অস্ত্র ব্যবসা, নারী পাচারসহ নানান সহিংসতায় জড়িয়ে পরিবেশকে অস্থিতিশীল করে তুলছে। তারা যত দ্রুত দেশে ফিরবে আমাদের এবং মিয়ানমারের জন্য মঙ্গলজনক। আমাদের দিক থেকে যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছি। তাদের প্রত্যাবাসনে আসিয়ান, ইউএনওসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। এ ক্ষেত্রে ভারত বড় ধরনের ভূমিকা রাখতে পারে।

তিস্তা নদীর পানিবণ্টন প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, এটা খুবই দুঃখজনক যে, এখনও এটি ঝুলে আছে। আমাদের এখানে ভারত থেকে পানি আসে, তাই ভারতের আরও উদারতা দেখাতে হবে। কারণ, এতে উভয় দেশই লাভবান হবে। কখনও কখনও পানির অভাবে আমাদের জনগণও অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিশেষ করে তিস্তায় পানি না পেয়ে আমরা ফসল রোপণ করতে পারিনি এবং আরও অনেক সমস্যা দেখা দিয়েছে। তাই আমি মনে করি এর সমাধান হওয়া উচিত। অবশ্য আমরা দেখেছি, ভারতের প্রধানমন্ত্রী এই সমস্যাটি সমাধাসে আগ্রহী, কিন্তু সমস্যাটি আপনাদের দেশেই। তবু আমরা আশা করি এটি সমাধান হবে এবং এটি সমাধান করা উচিত।’তিনি আরও বলেন, দুই দেশ গঙ্গা নদীর পানি ভাগ করে নিয়েছে। কিন্তু শুধু গঙ্গার পানিই আমরা ভাগাভাগি করেছি। এই পানির বিষয়ে আমরা চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছি। কিন্তু আমাদের আরও ৫৪টি নদী আছে। এগুলো নিঃসন্দেহে দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা, তাই এসবের সমাধান হওয়া উচিত।

দৈনিক আমার সংবাদ

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

প্রতিবেশী দেশ ভারত আমাদের পরীক্ষিত বন্ধু

আপডেট সময় ১০:০৫:৫৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২২

মৌলভীবাজার২৪ ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, প্রতিবেশী দেশ ভারত আমাদের পরীক্ষিত বন্ধু। আমাদের মতপার্থক্য থাকতে পারে, তবে আলোচনার মাধ্যমে এগুলোর সমাধান সম্ভব। বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রেই ভারত ও বাংলাদেশ সেটিই করেছে।ভারত সফরে যাওয়ার একদিন আগে এশিয়ান নিউজ ইন্টারন্যাশনালে (এএনআই) দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন তিনি।

রোববার (৪ সেপ্টেম্বর) প্রধানমন্ত্রীর এ সাক্ষাৎকারটি এএনআই প্রকাশ করে। আগামী ৫ সেপ্টেম্বর চারদিনের রাষ্ট্রীয় সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরকে কেন্দ্র করেই সাক্ষাৎকারটি নিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম এএনআই।এ সময় ইউক্রেন যুদ্ধের শুরুতে সেখানে আটকেপড়া শিক্ষার্থীদের ফেরাতে ভারতের সহযোগিতার জন্য প্রধানমন্ত্রী মোদির প্রশংসা করেন শেখ হাসিনা। পাশাপাশি করোনাভাইরাস মহামারি রোধে টিকা দিয়ে মোদি সরকারের সহযোগিতার কথাও উল্লেখ করেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, আমি ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। কারণ, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সময় আমাদের অনেক ছাত্রই আটকে পড়েছিল। পরে তারা ভারতের সহায়তায় পোল্যান্ডে আশ্রয় নিতে সমর্থ্য হয়। এর মধ্য দিয়ে ভারত বন্ধুত্বের প্রমাণ রেখেছে।

মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীরা বাংলাদেশের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গার এখন নিজ দেশ মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন অনিশ্চিত। আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে বিষয়টি তুলে ধরেছি। এই সমস্যা সমাধানে প্রতিবেশী ভারত মুখ্য ভূমিকা রাখতে পারে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার মানবিক দিকটি বিবেচনা করে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গার যত্ন নিচ্ছে। বর্তমানে রোহিঙ্গার আমাদের জন্য বড় একটি বোঝা। ভারত বড় একটি দেশ, সেখানে থাকার জায়গা অনেক হলেও কিন্তু দেশটিতে খুব বেশি রোহিঙ্গা নেই। আর আমাদের দেশে ১১ লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয়ে আছে। এই সমস্যাটি সমাধানে ভারত ভূমিকা রাখতে পারে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা শুধু মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিই। তাদের সব ধরনের সহায়তা দিয়ে যাচ্ছি। বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে করোনা মহামারির সময়ে টিকার আওতায় এনেছি। কিন্তু তারা আর কতদিন এখানে থাকবে? তারা এখন ক্যাম্পে অবস্থান করছে। আমাদের পরিবেশকে বিপজ্জনক করে তুলছে। রোহিঙ্গাদের কিছু অংশ মাদকপাচার, অস্ত্র ব্যবসা, নারী পাচারসহ নানান সহিংসতায় জড়িয়ে পরিবেশকে অস্থিতিশীল করে তুলছে। তারা যত দ্রুত দেশে ফিরবে আমাদের এবং মিয়ানমারের জন্য মঙ্গলজনক। আমাদের দিক থেকে যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছি। তাদের প্রত্যাবাসনে আসিয়ান, ইউএনওসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। এ ক্ষেত্রে ভারত বড় ধরনের ভূমিকা রাখতে পারে।

তিস্তা নদীর পানিবণ্টন প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, এটা খুবই দুঃখজনক যে, এখনও এটি ঝুলে আছে। আমাদের এখানে ভারত থেকে পানি আসে, তাই ভারতের আরও উদারতা দেখাতে হবে। কারণ, এতে উভয় দেশই লাভবান হবে। কখনও কখনও পানির অভাবে আমাদের জনগণও অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিশেষ করে তিস্তায় পানি না পেয়ে আমরা ফসল রোপণ করতে পারিনি এবং আরও অনেক সমস্যা দেখা দিয়েছে। তাই আমি মনে করি এর সমাধান হওয়া উচিত। অবশ্য আমরা দেখেছি, ভারতের প্রধানমন্ত্রী এই সমস্যাটি সমাধাসে আগ্রহী, কিন্তু সমস্যাটি আপনাদের দেশেই। তবু আমরা আশা করি এটি সমাধান হবে এবং এটি সমাধান করা উচিত।’তিনি আরও বলেন, দুই দেশ গঙ্গা নদীর পানি ভাগ করে নিয়েছে। কিন্তু শুধু গঙ্গার পানিই আমরা ভাগাভাগি করেছি। এই পানির বিষয়ে আমরা চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছি। কিন্তু আমাদের আরও ৫৪টি নদী আছে। এগুলো নিঃসন্দেহে দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা, তাই এসবের সমাধান হওয়া উচিত।

দৈনিক আমার সংবাদ