ঢাকা ১২:৪২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রেম করে বিয়ে, ঘরে তালা দিয়ে স্বামী উধাও,ঝুঁকি নিয়ে দিন কাটছে নববধূর

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৩:৩৮:১০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২২
  • / ৫১০ বার পড়া হয়েছে

বিশেষ প্রতিনিধি: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে প্রেমের সম্পর্কের পর এক তরুণীকে বাড়িতে এনে বিয়ে করেছিলেন যুবক। দুই মাস সংসারের পর অত্যাচার করে ঘর তালাবন্ধ করে পরিবারের সবাইকে নিয়ে উধাও হয়ে গেছেন স্বামী।এখন স্বামীর ঘরের বারান্দায় ঝুঁকি নিয়ে দিন কাটছে ওই নববধূর।

উপজেলার আদমপুর ইউনিয়নের কান্দিগাঁও গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।

বুধবার দুপুরে ওই বাড়িতে গিয়ে জানা যায়- কান্দিগাঁও গ্রামের কামরুজ্জামানের ছেলে আজাদুর রহমান আজাদ (২৫) দীর্ঘ প্রায় বছর আগে একই গ্রামের আহমদ আলীর মেয়ে ফারজানা বেগমের (১৯) সঙ্গে প্রেমের সর্ম্পক গড়ে তুলেন। দীর্ঘদিন প্রেমের পর গত ২০ জুলাই রাতে নিজ বাড়িতে প্রেমিকাকে ডেকে নিয়ে এলে দু’পক্ষের মুরুব্বিগণ মিলে তাদের বিয়ে পড়িয়ে দেন। তবে কাবিননামা অসম্পন্ন থাকে।

এদিকে, বিয়ের কিছুদিনের মধ্যেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়। দুই মাস সংসারের পর গত ১৯ সেপ্টেম্বর বিকালে স্বামী আজাদুর রহমান ঘরের দরজায় তালা দিয়ে নববধূ ফারজানাকে বাহিরে রেখে উধাও হয়ে যান। গত দুদিন ওই তালাবদ্ধ ঘরের বারান্দায়ই রাত কাটিয়েছেন ফরাজানা বেগম।

স্থানীয় ইউপি সদস্য কামরুজ্জামান এ বিষয়ে বলেন- দু’পক্ষের পঞ্চায়েতের উপস্থিতিতে তাদেরকে বিয়ে পড়ানো হয়। পরবর্তীতে বিরোধ দেখা দিলে গত ২১ আগস্ট দু’পক্ষের পঞ্চায়েতদের নিয়ে সালিশ বৈঠকের সিদ্ধান্তমতে এক লক্ষ এক হাজার টাকা দেনমোহর সাব্যস্ত করা হয় এবং পরদিন আদমপুর বাজারে কাজি অফিসে গিয়ে নিকাহ রেজিষ্ট্রারি সম্পন্ন করার সিদ্ধান্ত হয়। পরে কাবিন না হওয়ায় আবারও বিরোধ দেখা দিলে বিষয়টি চেয়ারম্যানকে জানানো হয়। তবে সমাধান হওয়ার আগেই ১৯ সেপ্টেম্বর স্ত্রীকে একা বাড়িতে ফেলে রেখে ঘর তালা মেরে পালিয়ে যান আজাদ।  মেয়েটি একা থাকতে দেখে পার্শ্ববর্তী বাড়িতে আপাতত থাকার জন্য ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। ফারজানা বেগম জানান, প্রায় ৫ বছর ধরে প্রেমের সম্পর্কের পর গত ২০ জুলাই রাতে আজাদুর রহমান আজাদ তাকে নিজের বাড়িতে নিয়ে আসেন। তারপর দুই পক্ষের পঞ্চায়েত মিলে তাদের বিয়ে পড়ান। কিছুদিন যাওয়ার পর থেকেই স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাকে নির্যাতন করা শুরু করেন এবং বলেন বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেতে। গত সোমবার স্বামীসহ বাড়ির সবাই আমাকে ঘর থেকে বের করে দরজা, জানালা বন্ধ করে তারা সবাই বাড়ি থেকে সবাই চলে যান। আমি নিরাপত্তাহীন ও অসহায় অবস্থায় গত দুদিন থেকে ঘরের বারান্দা-উঠানে দিন-রাত কাটাচ্ছি।

এ বিষয়ে আজাদুর রহমানের মামাতো ভাই সালাউদ্দিন ও কান্দিগাঁও গ্রামের পঞ্চায়েত নেতা মো. হান্নান বলেন- আজাদ মেয়েটিকে তার বাড়িতে আনার পর স্থানীয় হুজুর হাফেজ খোরশেদ আলী তাদের বিয়ে পড়িয়ে দেন। বিয়ের উকিল হিসাবে ছিলেন স্থানীয় হামিদুর রহমান, ইমদাদুল হক ও মহব্বত আলী। তবে বর্তমানে মেয়েটির উপর স্বামী ও স্বামীর বাড়ির লোকজন অমানবিক আচরণ শুরু করেছে। এখন মেয়েটি খুবই ঝুঁকির মধ্যে আছে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে আজাদুর রহমানকে পাওয়া না গেলেও আদমপুর বাজারে তার বড় ভাই নূর রহমানকে পাওয়া যায়। তিনি সিলেটভিউ-কে বলেন, মেয়েটি নিজে ইচ্ছে করে আমাদের বাড়িতে এসেছে। তারপর মেয়েকে আমার ভাইয়ের সাথে জোরপূর্বক বিয়ে দেয়া হয়েছে। বর্তমানে তিনদিন ধরে আমার ভাই নিখোঁজ রয়েছে।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

প্রেম করে বিয়ে, ঘরে তালা দিয়ে স্বামী উধাও,ঝুঁকি নিয়ে দিন কাটছে নববধূর

আপডেট সময় ০৩:৩৮:১০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২২

বিশেষ প্রতিনিধি: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে প্রেমের সম্পর্কের পর এক তরুণীকে বাড়িতে এনে বিয়ে করেছিলেন যুবক। দুই মাস সংসারের পর অত্যাচার করে ঘর তালাবন্ধ করে পরিবারের সবাইকে নিয়ে উধাও হয়ে গেছেন স্বামী।এখন স্বামীর ঘরের বারান্দায় ঝুঁকি নিয়ে দিন কাটছে ওই নববধূর।

উপজেলার আদমপুর ইউনিয়নের কান্দিগাঁও গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।

বুধবার দুপুরে ওই বাড়িতে গিয়ে জানা যায়- কান্দিগাঁও গ্রামের কামরুজ্জামানের ছেলে আজাদুর রহমান আজাদ (২৫) দীর্ঘ প্রায় বছর আগে একই গ্রামের আহমদ আলীর মেয়ে ফারজানা বেগমের (১৯) সঙ্গে প্রেমের সর্ম্পক গড়ে তুলেন। দীর্ঘদিন প্রেমের পর গত ২০ জুলাই রাতে নিজ বাড়িতে প্রেমিকাকে ডেকে নিয়ে এলে দু’পক্ষের মুরুব্বিগণ মিলে তাদের বিয়ে পড়িয়ে দেন। তবে কাবিননামা অসম্পন্ন থাকে।

এদিকে, বিয়ের কিছুদিনের মধ্যেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়। দুই মাস সংসারের পর গত ১৯ সেপ্টেম্বর বিকালে স্বামী আজাদুর রহমান ঘরের দরজায় তালা দিয়ে নববধূ ফারজানাকে বাহিরে রেখে উধাও হয়ে যান। গত দুদিন ওই তালাবদ্ধ ঘরের বারান্দায়ই রাত কাটিয়েছেন ফরাজানা বেগম।

স্থানীয় ইউপি সদস্য কামরুজ্জামান এ বিষয়ে বলেন- দু’পক্ষের পঞ্চায়েতের উপস্থিতিতে তাদেরকে বিয়ে পড়ানো হয়। পরবর্তীতে বিরোধ দেখা দিলে গত ২১ আগস্ট দু’পক্ষের পঞ্চায়েতদের নিয়ে সালিশ বৈঠকের সিদ্ধান্তমতে এক লক্ষ এক হাজার টাকা দেনমোহর সাব্যস্ত করা হয় এবং পরদিন আদমপুর বাজারে কাজি অফিসে গিয়ে নিকাহ রেজিষ্ট্রারি সম্পন্ন করার সিদ্ধান্ত হয়। পরে কাবিন না হওয়ায় আবারও বিরোধ দেখা দিলে বিষয়টি চেয়ারম্যানকে জানানো হয়। তবে সমাধান হওয়ার আগেই ১৯ সেপ্টেম্বর স্ত্রীকে একা বাড়িতে ফেলে রেখে ঘর তালা মেরে পালিয়ে যান আজাদ।  মেয়েটি একা থাকতে দেখে পার্শ্ববর্তী বাড়িতে আপাতত থাকার জন্য ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। ফারজানা বেগম জানান, প্রায় ৫ বছর ধরে প্রেমের সম্পর্কের পর গত ২০ জুলাই রাতে আজাদুর রহমান আজাদ তাকে নিজের বাড়িতে নিয়ে আসেন। তারপর দুই পক্ষের পঞ্চায়েত মিলে তাদের বিয়ে পড়ান। কিছুদিন যাওয়ার পর থেকেই স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাকে নির্যাতন করা শুরু করেন এবং বলেন বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেতে। গত সোমবার স্বামীসহ বাড়ির সবাই আমাকে ঘর থেকে বের করে দরজা, জানালা বন্ধ করে তারা সবাই বাড়ি থেকে সবাই চলে যান। আমি নিরাপত্তাহীন ও অসহায় অবস্থায় গত দুদিন থেকে ঘরের বারান্দা-উঠানে দিন-রাত কাটাচ্ছি।

এ বিষয়ে আজাদুর রহমানের মামাতো ভাই সালাউদ্দিন ও কান্দিগাঁও গ্রামের পঞ্চায়েত নেতা মো. হান্নান বলেন- আজাদ মেয়েটিকে তার বাড়িতে আনার পর স্থানীয় হুজুর হাফেজ খোরশেদ আলী তাদের বিয়ে পড়িয়ে দেন। বিয়ের উকিল হিসাবে ছিলেন স্থানীয় হামিদুর রহমান, ইমদাদুল হক ও মহব্বত আলী। তবে বর্তমানে মেয়েটির উপর স্বামী ও স্বামীর বাড়ির লোকজন অমানবিক আচরণ শুরু করেছে। এখন মেয়েটি খুবই ঝুঁকির মধ্যে আছে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে আজাদুর রহমানকে পাওয়া না গেলেও আদমপুর বাজারে তার বড় ভাই নূর রহমানকে পাওয়া যায়। তিনি সিলেটভিউ-কে বলেন, মেয়েটি নিজে ইচ্ছে করে আমাদের বাড়িতে এসেছে। তারপর মেয়েকে আমার ভাইয়ের সাথে জোরপূর্বক বিয়ে দেয়া হয়েছে। বর্তমানে তিনদিন ধরে আমার ভাই নিখোঁজ রয়েছে।