ফুটবলারদের জীবনের অজানা গল্প জানালেন সানজিদা
- আপডেট সময় ১১:৩৫:২৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২২
- / ৩৯২ বার পড়া হয়েছে
সানজিদা কী আগেই জানতেন বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হবে! হয়ত হ্যাঁ, ফুটবলার সানজিদা আক্তারের আত্মবিশ্বাসটা এতোই প্রখর ছিল যে সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জয়ের জন্য মাঠে নামার আগেই বড় হুংকার দিয়েছিলেন তিনি। সানজিদাই বলেছিলেন, বহুদিন পর সাফ পাবে নতুন কোন চ্যাম্পিয়ন দেশ। বাংলাদেশ ফুটবলের বড় সাফল্যের মহাকাব্যে উজ্জ্বলতম অংশ হিসেবে বিবেচিত হবে।
এবার ফাইনালে স্বাগতিক নেপালকে পেয়ে সানজিদা আক্তার ছিলেন দারুণ উল্লসিত, মাঠে নামার আগেই রোমাঞ্চকর এক ফাইনালের স্বপ্নের কথাও বলেছিলেন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে।
শিরোপা জয়ী সানজিদা বলেছিলেন, আলহামদুলিল্লাহ, আমরা এবার মাঠে দারুণ ছন্দে রয়েছি, ফাইনালে প্রতিপক্ষ স্বাগতিক নেপাল। স্বাগতিক হিসেবে ফাইনাল খেলা কিংবা স্বাগতিক দলের বিপক্ষে ফাইনাল খেলা সবসময় রোমাঞ্চকর। এ ছাড়াও এবারের ফাইনাল ম্যাচটি কিছুটা ভিন্ন। বহুদিন পর সাফ পাবে নতুন কোন চ্যাম্পিয়ন দেশ। আর তাই এবার রোমাঞ্চকর একটি ফাইনাল ম্যাচ হতে যাচ্ছে, এতে কোনো সন্দেহ নেই।সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে ২০১৬ সালে প্রথমবার ফাইনাল খেলেছি ২০১৬ সালে। সেবার ভারতের বিপক্ষে হেরে যায় বাংলাদেশ। পাঁচ বার সাফের মঞ্চে এসে এক বার রানার্সআপ, তিনবার সেমিফাইনাল এবং এক বার গ্রুপপর্ব থেকে বিদায় নিতে বাংলাদেশ দলকে। পুরুষ জাতীয় ফুটবল দলের হাত ধরে ২০০৩ সালে দক্ষিন এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্ব পেলেও অবশেষে ২০২২ সালে এসে বাংলাদেশকে সফল্য এনে দেয় নারী ফুটবল দল।
শক্তিশালী নেপালকে হারিয়ে বুধবার সাফ চ্যাম্পিয়নের ট্রফি নিয়েই দেশে ফিরেছে সানজিদা-সাবিনা-তহুরা-কৃষ্ণারা। ঢাকায় পা রেখেই ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত হয়েছেন এশিয়া জয়ী বাঘিনীরা। সেই সঙ্গে ছাদখোলা বাসে চড়ে সংবর্ধনা পাওয়ার ইচ্ছাও পূরণ হয়েছে সানজিদাদের।
নেপালের যুদ্ধে যাওয়ার আগে ছাদখোলা বাস নিয়ে সানজিদা বলেছিলেন, ছাদখোলা চ্যাম্পিয়ন বাসে ট্রফি নিয়ে না দাঁড়ালেও চলবে, সমাজের টিপ্পনী কে একপাশে রেখে যে মানুষগুলো আমাদের সবুজ ঘাস ছোঁয়াতে সাহায্য করেছে, তাদের জন্য এটি জিততে চাই। আমাদের এই সাফল্য হয়তো আরও নতুন কিছু সাবিনা-কৃষ্ণা-মারিয়া পেতে সাহায্য করবে। অনুজদের বন্ধুর এই রাস্তাটুকু কিছু হলেও সহজ করে দিয়ে যেতে চাই।
বাংলাদেশ ফুটবলে উঠে আসা নারী ফুটবলারদের জীবনের গল্পও জানান সানজিদা। পাহাড়ের কাছাকাছি স্থানে বাড়ি আমার। পাহাড়ী ভাই-বোনদের লড়াকু মানসিকতা, গ্রাম বাংলার দরিদ্র ও খেটে খাওয়া মানুষদের হার না মানা জীবনের প্রতি পরত খুব কাছাকাছি থেকে দেখা আমার। ফাইনালে আমরা একজন ফুটবলারের চরিত্রে মাঠে লড়বো এমন নয়, ১১ জনের যোদ্ধা দল মাঠে থাকবে, যে দলের অনেকে এই পর্যন্ত এসেছে বাবাকে হারিয়ে, মায়ের শেষ সম্বল নিয়ে, বোনের অলংকার বিক্রি করে, অনেকে পরিবারের একমাত্র আয়ের অবলম্বন হয়ে।
তিনি বলেন, আমরা জীবনযুদ্ধেই লড়ে অভ্যস্ত। দক্ষিন এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের জন্য শেষ মিনিট পর্যন্ত লড়ে যাবো। জয়-পরাজয় আল্লাহর হাতে। তবে বিশ্বাস রাখুন, আমরা আমাদের চেষ্ঠায় কোনো ত্রুটি রাখবো না ইনশাআল্লাহ। আমাদের জন্য দোয়া করবেন।