বড়লেখায় অটোরিকশা উদ্ধার, চার ছিনতাইকারী গ্রেপ্তার
- আপডেট সময় ০৫:০৮:৫২ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ মার্চ ২০২৪
- / ৪২৬ বার পড়া হয়েছে
বড়লেখা প্রতিনিধি:: মৌলভীবাজারের বড়লেখায় এক চালককে মারধর করে ছিনিয়ে নেওয়া সিএনজি চালিত অটোরিকশা সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার সালুটিকর এলাকা থেকে উদ্ধার করেছে বড়লেখা থানা পুলিশ। এই ঘটনায় জড়িত চার ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে গাড়ি বিক্রির ২৪ হাজার টাকাও উদ্ধার করা হয়েছে।
রোববার (৩ মার্চ) দুপুরে বড়লেখা থানা পুলিশ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান কুলাউড়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দীপংকর ঘোষ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- বড়লেখা উপজেলার চন্ডিনগর (বড়গুল) গ্রামের আব্দুল মন্নানের ছেলে ইমন আহমদ (১৮), একই এলাকার নুরুল হকের ছেলে ইমরান আহমদ (১৯) ও আব্দুল মালিকের ছেলে এমরান আহমদ (২৪) এবং জিয়াদনগর (বিরাশী) গ্রামের ইছবর আলীর ছেলে মো. জসীম উদ্দিন (২৮)। এই ঘটনায় অটোরিকশাটির মালিক আব্দুস সহিদ বাদি হয়ে থানায় মামলা করেছেন।
এসময় বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সঞ্জয় চক্রবর্ত্তী, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) ফরিদ উদ্দিন, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আতাউর রহমান, এসআই স্বপন দাস ও জাহেদ আহমদ উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দীপংকর ঘোষ বলেন, গত ২৯ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় অটোরিকশা চালক লিলু মিয়া কুলাউড়ায় যাত্রী নামিয়ে বড়লেখা উপজেলার কাঠালতলীতে ফিরছিলেন। বড়লেখা-কুলাউড়া আঞ্চলিক মহাসড়কের মাধবগুল এলাকায় পৌঁছলে অজ্ঞাতনামা দুজন যাত্রী তাকে সিগন্যাল দেয়। এসময় লিলু মিয়া গাড়ি দাঁড় করলে যাত্রীরা বড়লেখার দক্ষিণ শাহবাজপুর ইউনিয়নের রাতিরপুল এলাকায় যাবে বলে জানায়। ৩০০ টাকা ভাড়া সাব্যস্থ্য করে লিলু মিয়া তাদেরকে নিয়ে রাতিরপুলের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন। গাড়িতে ওঠে এক যাত্রী মুঠোফোনে অপরপ্রান্তে থাকা ব্যক্তিকে বলে, ‘চাচা সিএনজি গাড়িতে উঠে গেছি। আপনি রাস্তায় থাকিয়েন।’ সন্ধ্যা অনুমানিক সাড়ে ছয়টার দিকে রাতিরপুল এলাকার জনৈক আব্দুল জব্বার চেয়ারম্যানের বাড়ি থেকে কিছু দূর যাওয়ার পর যাত্রীরা লিলু মিয়াকে গাড়ি থামাতে বলে। গাড়ি থামিয়ে চালক দেখতে পান ২৫ ও ৩০ বছর বয়সী দুইজন অপরিচিত লোক দৌঁড়ে আসছে। তখন চালকের সন্দেহ হলে তিনি দ্রুত গাড়ি ঘোরানোর চেষ্টা করলে তা বন্ধ হয়ে যায়। এসময় গাড়িতে থাকা দুজন এবং ঘটনাস্থলে আসা অপরিচিত দুজনসহ মোট চারজন লিলু মিয়াকে ঘিরে মারধর করে এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যার ভয়ভীতি দেখিয়ে তাকে রশি দিয়ে বেধে ফেলে। তখন তাদের মধ্যে দুজন অটোরিকশাটি নিয়ে চলে যায় এবং অপর দুজন লিলু মিয়াকে পাহাড়ি টিলায় নিয়ে হত্যার পরিকল্পনা করলে লিলু কান্নাকাটি করেন। পরে অভিযুক্তরা তাকে মারধর করে হাত-পা বেধে তার কাছ থেকে নগদ ২৮’শ টাকা এবং ১৮ হাজার টাকা মূল্যের একটি ফোন নিয়ে পালিয়ে যায়। প্রায় ঘন্টাখানেক চেষ্টার পর লিলু নিজেই নিজের হাতের বাধন খুলে টিলা থেকে নেমে একটি বাড়িতে আশ্রয় নেন। পরে তিনি বিষয়টি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও পুলিশকে জানান। খবর পেয়ে পুলিশ সুপার মহোদয়ের নির্দেশনায় ঘটনাটি তদন্তে নামে পুলিশ। পরে প্রযুক্তির সহায়তায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আতাউর রহমানের নেতৃত্বে এসআই জাহেদ আহমদ ও এএসআই আবু তালেবসহ পুলিশের একটি চৌকস দল গত ০১ মার্চ চন্ডিনগরে অভিযান চালিয়ে ছিনতাইকারী ইমন আহমদ ও ইমরান আহমদকে গ্রেপ্তার করেন। পরে তাদের দেওয়া তথ্যমতে ছিনতাইকারী এমরান আহমদ ও জসিম উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং সিলেটের গোয়াইনঘাট সালুটিকর এলাকায় অভিযান চালিয়ে ছিনতাই হওয়া অটোরিকশা (মৌলভীবাজার থ-১২-৮৩৫০) উদ্ধার করা হয়। একই সাথে তাদের কাছ থেকে অটোরিকশা বিক্রির ২৪ হাজার টাকাসহ আরও ৭’শ টাকা উদ্ধার করা হয়।