ঢাকা ১১:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১৮ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানের ৫৩তম শাহাদাত বার্ষিকী

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০১:৪৬:৫৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৪
  • / ৮০ বার পড়া হয়েছে

বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহী হামিদুর রহমানের ৫৩ তম শাহাদাতবার্ষিকী আজ। তিনি ১৯৭১ সালের ২৮ অক্টোবর মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের ধলইয়ে সম্মুখযুদ্ধে অসম সাহসীকতার সঙ্গে যুদ্ধ করে শহীদ হন।

এদিন ভোর ৪ টার দিকে লেফটেন্যান্ট আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী এবং লেফটেন্যান্ট নুরের নেতৃত্বে মুক্তিবাহিনীর ১২৫ জনের একটি দল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর দুর্ভেদ্য ধলই ঘাঁটির ওপর প্রচণ্ড আক্রমণ চালায়। এসময় প্রথম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট ও পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর ৩০এ ফ্রন্টিয়ার রেজিমেন্টের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এক পর্যায়ে মুক্তিবাহিনী পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর মেশিনগান পোস্টে গ্রেনেড হামলার সিদ্ধান্ত নেয়। গ্রেনেড ছোড়ার দায়িত্ব দেয়া হয় সিপাহী হামিদুর রহমানকে। তিনি পাহাড়ি খালের মধ্য দিয়ে বুকে হেঁটে গ্রেনেড নিয়ে আক্রমণ শুরু করেন। দুটি গ্রেনেড সফলভাবে মেশিনগান পোস্টে আঘাত হানে, কিন্তু তার পরপরই হামিদুর রহমান গুলিবিদ্ধ হন। শহীদ হন তিনি। ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের মুক্তিযোদ্ধারা সেদিন হানাদার বাহিনীকে পরাস্ত করে সীমানা ফাঁড়িটি দখল করতে সমর্থ হন। এই যুদ্ধে হাওলাদার মকবুল হোসেন ও সিপাহি আব্দুর রহমান অসামান্য বীরত্ব প্রদর্শন করেন।

মুক্তিযুদ্ধে বীরোচিত ভূমিকার জন্য তিনি সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা বীরশ্রেষ্ঠ খেতাবে ভূষিত হন। তাঁর স্মরণে ১৯৯২ সালে ধলই চা বাগানে নির্মিত হয়েছে স্মৃতিসৌধ। তৎকালীন অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী এম সাইফুর রহমানের উদ্যোগে কমলগঞ্জ পৌরসভার ভানুগাছ চৌমুহনা থেকে স্মৃতিসৌধ পর্যন্ত রাস্তার নামকরণ করা হয় বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী হামিদুর রহমান সড়ক। ভানুগাছ চৌমুহনায় বসানো হয় নামফলক। তাঁর নামফলক ভেঙে স্থানীয় এমপি আব্দুস শহীদের নাম সম্বলিত কমলগঞ্জ এলজিইডি রাস্তার উন্নয়ন কাজের উদ্বোধনী ফলক বসানো হয়।  পরে এই বীরশ্রেষ্ঠ’র নামফলকটি আর স্থাপন হয়নি। মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ কাজের পর নতুনফলক স্থাপন করে পরিবর্তন করা হয়েছে সড়কের নাম।

হামিদুর রহমান স্মৃতিসৌধে আসা পর্যটক শ‍্যামল রায় বলেন, দুর্ভাগ্যর বিষয় হলো একজন বীরশ্রেষ্ঠর স্মৃতিসৌধে আসার জন‍্য কোনো  নামফলক নেই। এখানে আসতে হলে বিভ্রান্তিতে পড়তে হয়।

দিপালী মাদ্রাজী নামে একজন নারী পর্যটক বলেন, এখানে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান হামিদুর রহমানের স্মৃতিসৌধ স্থাপন করা হয়েছে। এই স্পট দেখার জন‍্য প্রতিদিন এখানে অনেক লোক  আসেন। কিন্তু আসার পথে কোন নামফলক নেই। কোন অনুস্মারক চিহ্নও নেই। এতে দূর দূরান্ত থেকে আসা পর্যটকদের বেগ পেতে হয়।

কমলগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ি সিরাজুল ইসলাম বলেন, এখানে বীর শ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানের নামফলক স্থাপিত হয় ১৯৯২ সালে।ভানুগাছ বাজার পয়েন্ট থেকে ধলই চা বাগান পর্যন্ত সড়কের নামকরণ করা হয়েছিল বীর শ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান সড়ক। কিন্তু বিগত সরকারের আমলে আব্দুস শহীদ এমপি সড়ক উন্নয়নের নামে তার নামফলক লাগিয়ে দেন। এতে হামিদুর রহমানের নামফলক মুছে যায়।

কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার জয়নাল আবেদীন বলেন, কমলগঞ্জ উপজেলার ভানুগাছ চৌমহনায় বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানের নামফলক ছিল শুনেছি। সড়ক সংস্কারের সময় নামফলক সরানো হয়। আমরা এটা পুনঃস্থাপনের ব্যবস্থা করবো।

 

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানের ৫৩তম শাহাদাত বার্ষিকী

আপডেট সময় ০১:৪৬:৫৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৪

বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহী হামিদুর রহমানের ৫৩ তম শাহাদাতবার্ষিকী আজ। তিনি ১৯৭১ সালের ২৮ অক্টোবর মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের ধলইয়ে সম্মুখযুদ্ধে অসম সাহসীকতার সঙ্গে যুদ্ধ করে শহীদ হন।

এদিন ভোর ৪ টার দিকে লেফটেন্যান্ট আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী এবং লেফটেন্যান্ট নুরের নেতৃত্বে মুক্তিবাহিনীর ১২৫ জনের একটি দল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর দুর্ভেদ্য ধলই ঘাঁটির ওপর প্রচণ্ড আক্রমণ চালায়। এসময় প্রথম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট ও পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর ৩০এ ফ্রন্টিয়ার রেজিমেন্টের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এক পর্যায়ে মুক্তিবাহিনী পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর মেশিনগান পোস্টে গ্রেনেড হামলার সিদ্ধান্ত নেয়। গ্রেনেড ছোড়ার দায়িত্ব দেয়া হয় সিপাহী হামিদুর রহমানকে। তিনি পাহাড়ি খালের মধ্য দিয়ে বুকে হেঁটে গ্রেনেড নিয়ে আক্রমণ শুরু করেন। দুটি গ্রেনেড সফলভাবে মেশিনগান পোস্টে আঘাত হানে, কিন্তু তার পরপরই হামিদুর রহমান গুলিবিদ্ধ হন। শহীদ হন তিনি। ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের মুক্তিযোদ্ধারা সেদিন হানাদার বাহিনীকে পরাস্ত করে সীমানা ফাঁড়িটি দখল করতে সমর্থ হন। এই যুদ্ধে হাওলাদার মকবুল হোসেন ও সিপাহি আব্দুর রহমান অসামান্য বীরত্ব প্রদর্শন করেন।

মুক্তিযুদ্ধে বীরোচিত ভূমিকার জন্য তিনি সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা বীরশ্রেষ্ঠ খেতাবে ভূষিত হন। তাঁর স্মরণে ১৯৯২ সালে ধলই চা বাগানে নির্মিত হয়েছে স্মৃতিসৌধ। তৎকালীন অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী এম সাইফুর রহমানের উদ্যোগে কমলগঞ্জ পৌরসভার ভানুগাছ চৌমুহনা থেকে স্মৃতিসৌধ পর্যন্ত রাস্তার নামকরণ করা হয় বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী হামিদুর রহমান সড়ক। ভানুগাছ চৌমুহনায় বসানো হয় নামফলক। তাঁর নামফলক ভেঙে স্থানীয় এমপি আব্দুস শহীদের নাম সম্বলিত কমলগঞ্জ এলজিইডি রাস্তার উন্নয়ন কাজের উদ্বোধনী ফলক বসানো হয়।  পরে এই বীরশ্রেষ্ঠ’র নামফলকটি আর স্থাপন হয়নি। মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ কাজের পর নতুনফলক স্থাপন করে পরিবর্তন করা হয়েছে সড়কের নাম।

হামিদুর রহমান স্মৃতিসৌধে আসা পর্যটক শ‍্যামল রায় বলেন, দুর্ভাগ্যর বিষয় হলো একজন বীরশ্রেষ্ঠর স্মৃতিসৌধে আসার জন‍্য কোনো  নামফলক নেই। এখানে আসতে হলে বিভ্রান্তিতে পড়তে হয়।

দিপালী মাদ্রাজী নামে একজন নারী পর্যটক বলেন, এখানে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান হামিদুর রহমানের স্মৃতিসৌধ স্থাপন করা হয়েছে। এই স্পট দেখার জন‍্য প্রতিদিন এখানে অনেক লোক  আসেন। কিন্তু আসার পথে কোন নামফলক নেই। কোন অনুস্মারক চিহ্নও নেই। এতে দূর দূরান্ত থেকে আসা পর্যটকদের বেগ পেতে হয়।

কমলগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ি সিরাজুল ইসলাম বলেন, এখানে বীর শ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানের নামফলক স্থাপিত হয় ১৯৯২ সালে।ভানুগাছ বাজার পয়েন্ট থেকে ধলই চা বাগান পর্যন্ত সড়কের নামকরণ করা হয়েছিল বীর শ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান সড়ক। কিন্তু বিগত সরকারের আমলে আব্দুস শহীদ এমপি সড়ক উন্নয়নের নামে তার নামফলক লাগিয়ে দেন। এতে হামিদুর রহমানের নামফলক মুছে যায়।

কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার জয়নাল আবেদীন বলেন, কমলগঞ্জ উপজেলার ভানুগাছ চৌমহনায় বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানের নামফলক ছিল শুনেছি। সড়ক সংস্কারের সময় নামফলক সরানো হয়। আমরা এটা পুনঃস্থাপনের ব্যবস্থা করবো।