ব্রেকিং নিউজ
বীর মুক্তিযোদ্ধা আজিজুর রহমানের ৩য় মৃত্যু বার্ষিকী শুক্রবার
নিজস্ব সংবাদ :
- আপডেট সময় ০৪:৩০:২৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৩
- / ৪০১ বার পড়া হয়েছে
মৌলভীবাজার২৪ ডেস্ক: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহচর বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম আজিজুর রহমানের ৩য় মৃত্যু বার্ষিকী আগামী ১৮ আগস্ট শুক্রবার।
৩য় মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে গুজারাইয়ে তাঁর নিজ বাসভবন প্রাঙ্গনে স্বরণসভা,শিক্ষাবৃত্তি ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করেছে বীর মুক্তিযোদ্ধা আজিজুর রহমান ফাউন্ডেশন।
বাদ জুম্মা গুজারাঐ হাজি শাহ কমাল উদ্দিন (র:) মোকাম মসজিদ ও চাঁদনীঘাট জামে মসজিদ এ মিলাদ দোয়া
বীর মুক্তিযোদ্ধা আজিজুর রহমান ফাউন্ডেশনের উদ্যেগে পৌর মিলনায়তনে (১৮ আগষ্ট)বিকেল ৪ ঘটিকায় স্বরণসভা ও শিক্ষাবৃত্তি অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।
উক্ত অনুষ্ঠানে ফাউন্ডেশন এর আহবায়ক মৌলভীবাজারের সাবেক জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. জামাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন,মৌলভীবাজার রাজনগর ৩ আসনের সংসদ সদস্য নেছার আহমদ এমপি।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন, মহিলা সংসদ সদস্য সৈয়দা জোহরা আলাউদ্দিন,জেলা প্রশাসক ড. উর্মি বিনতে সালাম , জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান,আলহাজ্ব মিছবাহুর রহমান,পুলিশ সুপার মোঃ মনজুরর রহমান (পিপিএম বার), পৌর মেয়র আলহাজ্ব মো: ফজলুর রহমান, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মো: কামাল হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা দেওয়ান আবদুল ওয়াহাব চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখবেন আবদুল খালিক,সদস্য, বীর মুক্তিযোদ্ধা আজিজুল রহমান ফাউন্ডেশ
বীর মুক্তিযোদ্ধা বর্ষিয়ান রাজনীতিবিদ মরহুম আজিজুর রহমান ব্যক্তিজীবনে সদা হাস্যজ্জল সরল ও মিষ্টভাষী মানুষ ছিলেন। মৌলভীবাজার জেলার গুজারাই গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে ১৯৪৩ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মরহুম আব্দুল সত্তার, মাতা মরহুম কাঞ্চন বিবি। তিনি শ্রীনাথ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষাজীবন শুরু করেন।
মৌলভীবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় হতে মাধ্যমিক ও মৌলভীবাজার সরকারি কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা গ্রহণ করেন। উচ্চ শিক্ষার জন্য ঢাকা কলেজে ভর্তি হলেও শারীরিক অসুস্থতার কারণে হবিগঞ্জের বিখ্যাত বৃন্দাবন কলেজ হতে বিকম ডিগ্রী অর্জন করেন।
ছাত্রজীবন হতেই সক্রিয় রাজনীতির সাথে জড়িত আজিজুর রহমান। বঙ্গবন্ধুর সরাসরি নির্দেশনায় ১৯৭০ সালের ঐতিহাসিক সাধারণ নির্বাচনে প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন তিনি।
মুক্তিযুদ্ধের শুরুতেই ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ কারাবরণ করেন তিনি। এরপর একই বছরের ৭ এপ্রিল মুক্তিবাহিনী কর্তৃক জেল ভেঙ্গে সিলেট কারাগার থেকে তাঁকে মুক্ত করা হয়। ২ মে পুনরায় পাকবাহিনী মৌলভীবাজার শহরে প্রবেশ করে বর্বরোচিত দমন পীড়ন চালানোর পর ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধ সংগঠনে আত্মনিয়োগ করেন তিনি। এক পর্যায়ে মুজিবনগর সরকারের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি কর্তৃক আহুত পশ্চিমবঙ্গের বাগডুগায় (দার্জিলিং) প্রথম পার্লামেন্ট অধিবেশনে যোগদান করেন আজিজুর রহমান। প্রবাসী সরকার কর্তৃক আয়োজিত সামরিক প্রশিক্ষণে সিলেট বিভাগের একমাত্র প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য হিসেবে তিনি সামরিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে এবং ৪ নম্বর সেক্টরের রাজনৈতিক কো-অর্ডিনেটর ও কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে সক্রিয় মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন তিনি।
মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার এবং গণপরিষদ সদস্য হিসেবে ১৯৭১ সালের ৩ ডিসেম্বর শমসেরনগর, ৬ ডিসেম্বর রাজনগর এবং ৮ ডিসেম্বর মৌলভীবাজার মহকুমা প্রশাসকের কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে মৌলভীবাজারকে হানাদার মুক্ত ঘোষণা করেন আজিজুর রহমান।
গণপরিষদের এই সদস্য স্বাধীন বাংলাদেশের জন্য রচিত সংবিধানের একজন স্বাক্ষরকারী। তিনি ১৯৮৬ ও ১৯৯১ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯১ সালে জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় হুইপ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সে সময় সংবিধানের একাদশ ও দ্বাদশ সংশোধনীতে তিনি বিশেষ অবদান রাখেন। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মৌলভীবাজার জেলা শাখার দুই বারের সাধারণ সম্পাদক ও দুই বার সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও পরবর্তীতে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি মৌলভীবাজার জেলায় ১৪ দল ও মহাজোটের সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
২০১১ সালের ২০ ডিসেম্বর স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রজ্ঞাপনমূলে মৌলভীবাজারে প্রশাসক হিসেবে যোগদান করেন আজিজুর রহমান। পরবর্তীতে ২০১৬ সালের ২৮ ডিসেম্বর বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব পালন করেছেন। মৃত্যুকালীন সময় পর্যন্ত জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং দেশের সর্বোচ্চ রাস্ট্রীয় বেসামরিক স্বাধীনতা পুরস্কার প্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা আজিজুর রহমান।
ট্যাগস :