মৌলভীবাজারে বরই চাষ লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা
- আপডেট সময় ০২:০৪:৪৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ মার্চ ২০২৩
- / ৫৭৪ বার পড়া হয়েছে
ষ্টাফ রিপোর্টারঃ দুটি পাতা একটি কুঁড়ির জেলা হিসেবে পরিচিত মৌলভীবাজার। সেই জেলায় বাণিজ্যিকভাবে লোভনীয় ফল বরই চাষ করে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে এখানকার উৎপাদিত বরই যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। অল্প সময়ে অধিক লাভজনক হওয়ায় প্রতিবছর বাড়ছে বরইয়ের আবাদ।
স্থানীয় কৃষিবিভাগ জানায়, জেলার সাতটি উপজেলায় বিছিন্নভাবে ৬৫৪ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন ধরনের বরইয়ের আবাদ করা হয়েছে। উৎপাদিত এসব বরইয়ের মধ্যে রয়েছে বাউকুল, আপেল কুল,নারকেল কুল, বিলাতি কুল, ঢাকা-৯০ ও মিষ্টি বরই। জেলার মাটি ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় কম খরচে অধিক লাভ হওয়ায় অনাবাদি জমিতে প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকদের কাছে বরই চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
জানা গেছে, জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগরে বেশ কয়েকজন চাষী বরই চাষ করে এলাকার চাহিদা পূরণের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে বাণিজ্যিক ভাবে সরবরাহ করছেন এ বরই।
সরেজমিনে শমশেরনগরের কয়েকটি বরই বাগানে দেখা যায়, বাগানে প্রতিটি গাছে গাছে বরই ছেয়ে আছে। ফলের ভারে গাছসহ ডালগুলো নিচের দিকে নুয়ে পড়েছে। বাঁশের খুঁটি দিয়ে আগলে রাখা হয়েছে প্রতিটি গাছ। পাখির হাত থেকে বরই রক্ষায় কোথাও কোথাও গাছে জাল দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে।
শমশেরনগরে বরই চাষ করে এলাকার মডেল হয়েছেন আজাদুর রহমান। তার দেখাদেখি এখন অনেকেই উদ্ধুদ্ধ হচ্ছেন, এতে তৈরী হয়েছে কর্মসংস্থানের।
জানা গেছে, ২০০১ সালের শুরুর দিকে শমশেরনগরের আজাদুর রহমান প্রায় ১০ একর জমিতে একটি নার্সারি গড়ে তোলেন। পর্যায়ক্রমে সেখানে কাশ্মীরি আপেল কুলসহ বিভিন্ন জাতের বরই চাষ শুরু করেন। কুমিল্লা ও যশোর থেকে চারা আনেন। প্রায় ৪ ফুট লম্বা আকারের লাগানো গাছে ১ বছরের মধ্যে ফল আসতে শুরু করে। প্রতি বছর ৩ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে ৫ লাখ টাকা আয় করেন। চলতি মৌসুমে আজাদুর ঢাকা-৯০ জাতের বরই চাষ করে বেশি লাভবান হচ্ছেন।
অল্প দিনে বরই চাষ করে লাভবান হওয়া যায় জানিয়ে আজাদুর রহমান বলেন, ‘প্রতি বছর বাগান থেকে ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা আয় হয়। বিক্রির পাশাপাশি কলম চারা তৈরি করছি। কাশ্মীরি আপেল কুল, বাউকুল, জাম্বুকুল বিক্রি প্রায় শেষ। এ মৌসুমে টক-মিষ্টি সমৃদ্ধ রসালো ঢাকা-৯০ জাতের বরই প্রতিকেজি ১০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। প্রতিদিন ১৫০ থেকে ২০০ কেজি বরই বাগান থেকে সংগ্রহ করা হয়।’
বরই কিনতে আসা স্থানীয় বাসিন্দা সুমন আলী বলেন, ‘আজাদুর রহমান হলেন এ এলাকার মডেল বরই চাষি। উনার দেখাদেখি শমশেরনগর এলাকায় বেশকয়েকটি বাগান গড়ে উঠেছে।’
প্রতি বছরই মতো এবারও বরই কিনতে মৌলভীবাজার থেকে এসেছেন ফল বিক্রেতা বাসিত মিয়া। তিনি বলেন, ‘শমশেরনগর এলাকার বরই খুব মজাদার। তাই অনেক দূর থেকে বরই কিনতে এলাম। ক্রেতাদের কাছে এখানকার বরইয়ের চাহিদা আছে।
আবহাওয়া ও মাটির বৈশিষ্ট্য অনুকূলে থাকায় কম খরচে অধিক লাভ হওয়ায় অনাবাদি জমিতে প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকদের কাছে বেশ বরই চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে জানিয়ে জেলা কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সামসুদ্দিন আহমদ বলেন, ‘জেলায় ৬৫৪ হেক্টর জমিতে বরই আবাদ হয়েছে। ভালো ফলনের জন্য কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে বাগান মালিকদের পরামর্শ ও সহযোগিতা করা হচ্ছে।