ঢাকা ০৫:৪৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫, ৩ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজ
মৌলভীবাজারে গণঅভ্যুত্থানে শহিদদের স্মরণে জেলা বিএনপির মৌণ মিছিল মৌলভীবাজার ৩টি আসনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা কেরেছে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস আমার বুকে গুলি করেন কাজী মনজুর ৩ মাছ শিকারীকে ধরে নিয়ে গেল বিএসএফ মৌলভীবাজার সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি জয়নাল হোসেন আর নেই চাঁদাবাজির মামলায় কারাগারে আটক বিএনপি নেতা শেখ জসিম এর দলীয় পদ স্থগিত শনিবার মৌলভীবাজার যে সব এলাকায় থাকবে না বিদ্যুৎ জুলাই গণঅভ্যুত্থান উদযাপনে মৌলভীবাজারে প্রতীকী ম্যারাথন জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের স্মরণে মৌলভীবাজার ছাত্রদলের স্মরণসভা মব সৃষ্টির নামে অপপ্রচার ও বিশৃঙ্খলার বিরুদ্ধে যুবদলের হুঁশিয়ারি

মৌলভীবাজার কাঁচাবাজারে আগুন,নাভিশ্বাস নিম্ন আয়ের মানুষ

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৬:১৫:৫৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৫ অগাস্ট ২০২২
  • / ৫৯৭ বার পড়া হয়েছে

বিশেষ প্রতিনিধি: চাকুরী করেন সরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে মাসে কেটেকুটে বেতন পান মাত্র ২০-২৫  হাজার টাকারর মতো। ৪ সন্তানের জনক। থাকেন শহরের একটি আবাসিক এলাকায়। ভোরে বাজার করতে এসেছেন শহরের পশ্চিম বাজারে। ইলিশ মাছের দাম জিজ্ঞেস করতেই বিক্রেতা জানালেন এগুলো চাঁদপুরের কাঁচা ইলিশ, একদম কাঁচা। এক কেজির গুলো ১৫০০ টাকা আর ছোট মানে সাড়ে ৬শ’  গ্রামেরগুলো ৯৫০ টাকা। দাম শুনেই মুজিবুর রহমানের চোখ কপালে। সোঝা চলে যাচ্ছেন সবজির গলিতে।

এই প্রতিবেদককে জানালেন, যে টাকা বেতন পাই তা দিয়ে ৪ ছেলে-মেয়ের লেখাপড়া চালাতে হয়। আছে কাপড়চোপড়, ওষুধপত্র। আবার নিজের যাতায়াত টিফিন। বাচ্ছাদের টিউশন ফি। কীভাবে যে কী করি?

এমনি অবস্থা মৌলভীবাজারের নিম্ন আয়ের হাজার হাজার মানুষের। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম এখন আকাশের চুড়ায়। এসব খাটো আয়ের লোকজন এর নাগাল পাচ্ছে না।

শুক্রবার (৫ আগস্ট) সকালে শহরের পশ্চিম বাজারে গেলে দেখা যায় মাছের বাজারে আগুন। ইলিশ ছাড়াও দেশী ফার্মের রুই ৩ কেজি ওজনেরগুলো ৫০০-৬০০ টাকা এবং দেড় কেজি ওজনেরগুলো ৩৫০ টাকা কেজি। হাকালুকি ও কাউয়া দিঘী হাওরের মাছ বলে প্রতি কেজি বালিয়া, গাগলা, রিটা, লাড়িয়া,চিংড়ি ১০০০ -১২০০ টাকা কেজি। আবার ছোট চিংড়ি ও  টেংরা ৮০০ টাকা। বড় আইড়, দেশী বোয়াল, গোজি আইড় ১২০০ টাকা এবং দেশী রুই, কালি বাউস, কাতল ৬০০ টাকা কে জি দরে বিক্রি হচ্ছে। বেড়েছে বয়লার, লেয়ার, সোনালী কক ও  ডিমের দাম। দেশী মুগ ও মশুর ডাল ১৩৫-৪০ টাকা। আর শুটলি ৪০০ থেকে প্রকার ভেদে ১৫/১৬০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

দিনমজুর সুমন মিয়া জানান, দিনে ৪/৫শ’ টাকার  টাকার বেশি রোজগার করতে পারি না। চালের কেজি ৫৫ টাকা। ৮ জনের সংসারে তিনি একমাত্র রোজগারি। ৪/৫ কেজি চাল কেনার পর অন্য বাজার। ৫০০ গ্রাম তেল ১০০ টাকা। শাক ৩০০ গ্রামের আটি ২৫ টাকা। পটল ৬০ টাকা, শশা ৫০-৬০ টাকা লাউ ছোট একটা  ৭০-৮০ টাকা । আলু ও পেঁয়াজ ৩৫-৪০ টাকা কেজি। কাঁচা মরিচের কেজি তো ডাবল সেঞ্চুরিতে। ২৪০ টাকা একদাম জানালেন বিক্রেতা রহিম উদ্দিন। আর ধনেপাতা উপড়ে তোলা গাছ ৪০০ টাকা কেজি।

বাজার করতে আসা একজন শিক্ষক জানালেন, ডিজিটাল বাংলাদেশে ইন্টানেট বিলও এখন নিত্যপ্রয়োজনীয়। প্রতিমাসে ৫৫০ থেকে ১২০০ পর্যন্ত আসে। এছাড়া বাসার ভাড়া, গ্যাস বিদ্যুৎ পানির বিল, কাজের বুয়ার বেতন সব মিলিয়ে বেতানের টাকায় এখন আর পনেরো দিনও চলে না। ধারকর্জ করতে করতে শেষ। সরকারি চাকুরীজীবরা জিপি ফান্ড এবং বিভিন্ন ব্যাংক থেকে সেলারির বিপরীতে অগ্রিম নিয়ে নিয়ে চলছেন। কেউ কেউ দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছেন।

 

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

মৌলভীবাজার কাঁচাবাজারে আগুন,নাভিশ্বাস নিম্ন আয়ের মানুষ

আপডেট সময় ০৬:১৫:৫৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৫ অগাস্ট ২০২২

বিশেষ প্রতিনিধি: চাকুরী করেন সরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে মাসে কেটেকুটে বেতন পান মাত্র ২০-২৫  হাজার টাকারর মতো। ৪ সন্তানের জনক। থাকেন শহরের একটি আবাসিক এলাকায়। ভোরে বাজার করতে এসেছেন শহরের পশ্চিম বাজারে। ইলিশ মাছের দাম জিজ্ঞেস করতেই বিক্রেতা জানালেন এগুলো চাঁদপুরের কাঁচা ইলিশ, একদম কাঁচা। এক কেজির গুলো ১৫০০ টাকা আর ছোট মানে সাড়ে ৬শ’  গ্রামেরগুলো ৯৫০ টাকা। দাম শুনেই মুজিবুর রহমানের চোখ কপালে। সোঝা চলে যাচ্ছেন সবজির গলিতে।

এই প্রতিবেদককে জানালেন, যে টাকা বেতন পাই তা দিয়ে ৪ ছেলে-মেয়ের লেখাপড়া চালাতে হয়। আছে কাপড়চোপড়, ওষুধপত্র। আবার নিজের যাতায়াত টিফিন। বাচ্ছাদের টিউশন ফি। কীভাবে যে কী করি?

এমনি অবস্থা মৌলভীবাজারের নিম্ন আয়ের হাজার হাজার মানুষের। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম এখন আকাশের চুড়ায়। এসব খাটো আয়ের লোকজন এর নাগাল পাচ্ছে না।

শুক্রবার (৫ আগস্ট) সকালে শহরের পশ্চিম বাজারে গেলে দেখা যায় মাছের বাজারে আগুন। ইলিশ ছাড়াও দেশী ফার্মের রুই ৩ কেজি ওজনেরগুলো ৫০০-৬০০ টাকা এবং দেড় কেজি ওজনেরগুলো ৩৫০ টাকা কেজি। হাকালুকি ও কাউয়া দিঘী হাওরের মাছ বলে প্রতি কেজি বালিয়া, গাগলা, রিটা, লাড়িয়া,চিংড়ি ১০০০ -১২০০ টাকা কেজি। আবার ছোট চিংড়ি ও  টেংরা ৮০০ টাকা। বড় আইড়, দেশী বোয়াল, গোজি আইড় ১২০০ টাকা এবং দেশী রুই, কালি বাউস, কাতল ৬০০ টাকা কে জি দরে বিক্রি হচ্ছে। বেড়েছে বয়লার, লেয়ার, সোনালী কক ও  ডিমের দাম। দেশী মুগ ও মশুর ডাল ১৩৫-৪০ টাকা। আর শুটলি ৪০০ থেকে প্রকার ভেদে ১৫/১৬০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

দিনমজুর সুমন মিয়া জানান, দিনে ৪/৫শ’ টাকার  টাকার বেশি রোজগার করতে পারি না। চালের কেজি ৫৫ টাকা। ৮ জনের সংসারে তিনি একমাত্র রোজগারি। ৪/৫ কেজি চাল কেনার পর অন্য বাজার। ৫০০ গ্রাম তেল ১০০ টাকা। শাক ৩০০ গ্রামের আটি ২৫ টাকা। পটল ৬০ টাকা, শশা ৫০-৬০ টাকা লাউ ছোট একটা  ৭০-৮০ টাকা । আলু ও পেঁয়াজ ৩৫-৪০ টাকা কেজি। কাঁচা মরিচের কেজি তো ডাবল সেঞ্চুরিতে। ২৪০ টাকা একদাম জানালেন বিক্রেতা রহিম উদ্দিন। আর ধনেপাতা উপড়ে তোলা গাছ ৪০০ টাকা কেজি।

বাজার করতে আসা একজন শিক্ষক জানালেন, ডিজিটাল বাংলাদেশে ইন্টানেট বিলও এখন নিত্যপ্রয়োজনীয়। প্রতিমাসে ৫৫০ থেকে ১২০০ পর্যন্ত আসে। এছাড়া বাসার ভাড়া, গ্যাস বিদ্যুৎ পানির বিল, কাজের বুয়ার বেতন সব মিলিয়ে বেতানের টাকায় এখন আর পনেরো দিনও চলে না। ধারকর্জ করতে করতে শেষ। সরকারি চাকুরীজীবরা জিপি ফান্ড এবং বিভিন্ন ব্যাংক থেকে সেলারির বিপরীতে অগ্রিম নিয়ে নিয়ে চলছেন। কেউ কেউ দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছেন।