মৌলভীবাজার চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পুলিশ-ম্যাজিস্ট্রেসি কনফারেন্স অনুষ্ঠিত
- আপডেট সময় ০৯:৪৫:২৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২ এপ্রিল ২০২২
- / ৭৯৮ বার পড়া হয়েছে
বিশেষ প্রতিনিধি: মৌলভীবাজার জেলার চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের উদ্যোগে বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে পুলিশ-ম্যাজিস্ট্রেসি কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়।
শনিবার (২ এপ্রিল) সকালে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সম্মেলন কক্ষে বিজ্ঞ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুহম্মদ আলী আহসান-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়্
উক্ত কনফারেন্সে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাসান মোঃ নাছের রিকাবদার বিজ্ঞ অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সরকার হাসান শাহরিয়ার; বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জগলুল হক, বেগম মুমিন্নুসিনা খানম ও বেগম হোসনে আরা বেগম; বিজ্ঞ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এম. মিজবাহ উর রহমান; জেলা আইনজীবী সমিতির বিজ্ঞ সভাপতি এ.এস.এম আজাদুর রহমান আজাদ ও বিজ্ঞ সাধারণ সম্পাদক মোঃ বদরুল হোসেন ইকবাল; বিজ্ঞ পাবলিক প্রসিকিউটর রাধাপদ দেব সজল; আবাসিক মেডিকেল অফিসার, ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল; প্রবেশন কর্মকর্তা; সহকারী পরিচালক, পরিবেশ অধিদপ্তর; বিভাগীয় বন কর্মকর্তা, বন বিভাগ, সিলেট-এর প্রতিনিধি রেঞ্জ কর্মকর্তা; বিভাগীয় বন কর্মকর্তা, বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ, মৌলভীবাজার-এর প্রতিনিধি এসিএফ; কোম্পানি কমান্ডার, র্যাব-৯, শ্রীমঙ্গল ক্যাম্প-এর প্রতিনিধি ডিএডি; সেক্টর কমান্ডার, বিজিভি সদর দপ্তর, শ্রীমঙ্গল-এর প্রতিনিধি সহকারী পরিচালক; জেল সুপারের প্রতিনিধি জেলার; উপ-পরিচালক, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর-এর প্রতিনিধি পরিদর্শক, কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক; পুলিশ সুপার, পিবিআই-এর প্রতিনিধি ইন্সপেক্টর; বিশেষ পুলিশ সুপার, সিআইডি-এর প্রতিনিধি ইন্সপেক্টর; ট্র্যাফিক ইন্সপেক্টর এবং জেলার বিভিন্ন থানা ও গোয়েন্দা শাখার অফিসার ইনচার্জগণ উপস্থিত ছিলেন।
কনফারেন্সের শুরুতে বিজ্ঞ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুহম্মদ আলী আহসান-এর সদয় অনুমতিক্রমে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন বিজ্ঞ অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জনাব সরকার হাসান শাহরিয়ার। তিনি কনফারেন্সে উপস্থিত সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপনক্রমে আসন্ন পবিত্র মাহে রমজানের শুভেচ্ছা জানান। অত:পর তিনি তাঁর স্বাগত বক্তব্যে মৌলভীবাজার চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মামলার বিবরণ ও বিভিন্ন থানার মূলতবী পরোয়ানার বিবরণ তুলে ধরেন।
কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক ও থানার অফিসার ইনচার্জগণ মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালসহ জেলার অন্যান্য হাসপাতাল হতে যথাসময়ে পোস্ট মর্টেম রিপোর্ট ও মেডিকেল সার্টিফিকেট প্রাপ্ত হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং সিলেট এম.এ.জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল হতে যথাসময়ে পোস্ট মর্টেম রিপোর্ট ও মেডিকেল সার্টিফিকেট এবং সিআইডি’র ডিএনএ ফরেসিক ল্যাব হতে যথাসময়ে ডিএনএ প্রতিবেদন না পাওয়ায় অনেক মামলায় আইনের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পুলিশ প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা সম্ভব হয় না মর্মে উল্লেখ করে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জনাব হাসান মোঃ নাছের রিকাবদার তাঁর বক্তব্যে আদালতে সাক্ষী উপস্থাপন করার ও সাক্ষীর প্রতি ইস্যুকৃত প্রসেস জারীঅন্তে ঘঊজ প্রেরণের এবং যে সকল মামলায় তদন্তের সময়সীমা নির্ধারিত রয়েছে, যে সকল মামলার তদন্ত প্রতিবেদন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আদালতে দাখিলের জন্য জন্য অফিসার ইনচার্জগণকে নির্দেশ প্রদান করেন।
জেলা আইনজীবী সমিতির বিজ্ঞ সভাপতি এ.এস.এম আজাদুর রহমান আজাদ তাঁর বক্তব্যে বলেন, চালান ফরোয়ার্ডিং-এ আসামীকে গ্রেফতারের সময় ও স্থান সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করা হয় না। চালান ফরোয়ার্ডিং-এ আসামীকে গ্রেফতারের সময় ও স্থান সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করার জন্য তিনি তদন্তকারী কর্মকর্তা তথা থানার অফিসার ইনচার্জদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
বিজ্ঞ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুহম্মদ আলী আহসান পুলিশ বিভাগ ও স্বাস্থ্য বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিভাগের ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন এবং জেলার বিভিন্ন থানায় তদন্তাধীন থাকা মামলার তদন্ত কার্য দ্রæততা ও দক্ষতার সাথে আইনের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করে আদালতে প্রতিবেদন প্রেরণ, যথাসময়ে মামলার সাক্ষী উপস্থাপন নিশ্চিত করত: তাদের নিরাপত্তা বিধান, গ্রেফতারের পর আইনের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আদালতে সোপর্দ করার, পরোয়ানা জারির ক্ষেত্রে আরও তৎপর হওয়ার এবং মৌলভীবাজার চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বিচারাধীন মামলাসমূহের সুষ্ঠু বিচার প্রক্রিয়া দ্রæত সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা পালনের জন্য বিচারক ও থানার অফিসার ইনচার্জসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে বিভিন্ন ধরনের দিক নির্দেশনা প্রদান করেন।
এছাড়াও, বক্তাগণ দ্রæত গ্রেফতারী পরোয়ানা, হুলিয়া, ক্রোকী পরোয়ানা তামিল ও সমন জারির ব্যবস্থা গ্রহণ, তদন্ত কার্যে বিদ্যমান সমস্যা সমাধান, তদন্তে দীর্ঘসূত্রিতা পরিহার, হয়রানী বন্ধ, পোস্ট মর্টেম রিপোর্ট ও মেডিকেল সার্টিফিকেট প্রদানের ক্ষেত্রে সর্তকতা অবলম্বন, নকলখানা হতে স্বল্পতম সময়ে নকল সরবরাহের ব্যবস্থা করা, মামলার আলামত সংরক্ষণ ও সঠিক নিয়মে নিষ্পত্তি, মামলা দ্রæত নিষ্পত্তি ও নিষ্পত্তিকৃত নথি দ্রæত রেকর্ডরুমে প্রেরণ, আদালত ও বিচার সংশ্লিষ্ট সকলের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণসহ নানাবিধ বিষয়ে তাদের গুরুত্বপূর্ণ মতামতসমূহ কনফারেন্সে তুলে ধরেন।
বিভিন্ন থানা থেকে আগত থানার অফিসার ইনচার্জসহ অন্যান্য উপস্থিতি কর্র্তৃক উত্থাপিত বিভিন্ন সমস্যার আইনি সমাধান, প্রশ্নোত্তর প্রদান এবং পরবর্তী কর্মপন্থা নির্ধারণ করত: সমাপনী বক্তব্যে বিজ্ঞ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট জনাব মুহম্মদ আলী আহসান বলেন যে, ফৌজদারী বিচার ব্যবস্থায় বিচার প্রশাসন, নির্বাহী প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগ একে অপরের পরিপূরক। মানুষের শেষ আশ্রয়স্থল বিচার বিভাগের প্রতি জনগণের আস্থা বৃদ্ধি ও ন্যায় বিচার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আন্তরিকতা ও সৌহার্দপূর্ণ পরিবেশে সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগকে একযোগে ব্যক্তি স্বার্থের উর্ধ্বে উঠে বিচার প্রার্থী মানুষের কল্যাণে নিজ নিজ দায়িত্ব ও কর্তব্য সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে হবে। এক্ষেত্রে কারও অবহেলা কাম্য নয়। সামনের দিনগুলোতে সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর পারষ্পরিক সমন্বয়ের মাধ্যমে ফৌজদারী বিচার ব্যবস্থায় আরো গতিশীলতা আসবে মর্মে আশাবাদ ব্যক্ত করে আগত সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে কনফারেন্সের সমাপ্তি ঘোষণা করেন বিজ্ঞ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জনাব মুহম্মদ আলী আহসান।