ঢাকা ০৬:৩২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সম্পত্তির লোভে ভাতিজাকে খুন,অব্যাহত মিথ্যা মামলা ও প্রাণনাশের হুমকি

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৮:১৭:১০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ মে ২০২৩
  • / ৬৮৯ বার পড়া হয়েছে

স্টাফ রিপোর্টার॥ সম্পত্তির লোভে নিজের তিন পুত্রসন্তানকে সাথে নিয়ে আপন বড় ভাইয়ের ছেলেকে হত্যা করেছেন। এখন জামিনে বেরিয়ে এসে অন্যদেরকেও প্রাণে হত্যার হুমকি ছাড়াও হেনেস্তা করতে একের পর এক মিথ্যা মামলা দায়ের করছেন। আর হত্যা মামলার চার্যশীট থেকে নিজেকে বাদ দিতে প্রভাবশালী ও প্রশাসনের দারস্ত হয়ে নানা কুট কৌশল করছেন। সন্তান হারা ওই পরিবারটি এখন চরম অসায় ও নিরাপত্তাহীনতায় উদ্বেগ উৎকন্ঠায় দিনাতিপাত করছেন।

 

নিজেদের জানমাল হারানোর ভয় ও সন্তান হত্যার ন্যায় বিচার প্রাপ্তি নিয়ে পরিবারের দুশ্চিন্তার কথা জানিয়ে পরিবারের সদস্যদের পক্ষে (মঙ্গলবার) দুপুরে মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন জেলার রাজনগর উপজেলার পাঁচগাঁও ইউনিয়নের সারামপুর গ্রামের মৃত বশির আহমদের ছেলে আতিকুর রহমান সুয়েব।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সুয়েব বলেন আমার বাবা ২০১২ সালে মারা যান। আমরা ৩ ভাই ৩ বোন ছিলাম। ২ বোন ও ১ ভাই প্রবাসে থাকেন। আমি,আমার ছোট বোন এবং ছোট ভাই মৃত সাদিকুর রহমান জুবের (২৩) ও আমার মাসহ সবাই গ্রামের বাড়িতেই বসবাস করছি।

আমার চাচা আমার বাবার আপন ছোট ভাই আনছার আলী রুশন মিয়া তার পরিবার নিয়ে কুয়েতে থাকতেন। প্রায় ৩০ বছর আগে উনি উনার চাচাতো ভাইকে (নানু মিয়া) খুন করার জের ধরে কুয়েতের পুলিশ তদন্ত শুরু করলে এবং চাচার ছেলেদের উগ্র চলাফেরার কারনে পুলিশি ঝামেলা এড়াতে তার পরিবার নিয়ে তিনি দেশে গ্রামের বাড়িতে চলে আসেন। দেশে আশার পর থেকেই আমার পিতা ও আমাদের ক্রয়কৃত ব্যক্তিগত জায়গা সম্পত্তিসহ পৈত্রিক জায়গা সম্পত্তিও আমিসহ আমার আম্মা,বোন এবং আমার ভাই (ওদের হাতে খুন হওয়া) মৃত সাদিকুর রহমান জুবেরকে বিভিন্ন ভাবে জায়গা সম্পত্তি উনার নামে লিখে দেওয়ার জোর জবরদস্তি চালান। পৈত্রিক সম্পত্তির বিভিন্ন জায়গা জমিন আমার মা ভাই বোনদের কাছ থেকে কৌশলে রেজিস্ট্রার করে নিয়েও ক্রান্ত হননি। আমি তার এমন অন্যায় ও অত্যাচার দেখে ধৈর্য ধরতে না পেরে এবং তার সাথে বিরোধ তৈরির ভয়ে অস্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য সিলেটে চলে যাই। সেখানে প্রায় ১ বছর থাকার পর আমার ছোট ভাই,মা ও বোনের সাথে ওদের খারাপ আচরণ আর নানা হুমকি ধমকিতে পরিবারের নিরাপত্তা জনিত কারণে বাড়িতে চলে আসি।
আমার ভাই মৃত সাদিকুর রহমান জুবেরকে আমার চাচা ও তার ছেলেরা প্রতিনিয়তই বাড়ি থেকে বের হওয়ার জন্য নানা হুমকি দিতে থাকে। আমার ভাই ভয়ে কোন প্রতিবাদ না করে নীরব থাকে। হটাৎ ১৮/১১/২০২২ ইং তারিখ শুক্রবার সকালে আমার ভাই সাদিকুর রহমান জুবের জুম্মার নামাজে যাওয়ার জন্য গোসল করে ঘরে প্রবেশ করার সময় আমার চাচা আনছার আলী রুশন তার পায়ের জুতা দিয়ে তাকে পেটান। এবং সেই সাথে গালিগালাজ করে চিৎকার চেচামেচি করে বলেন এতো দিন থেকে বলার পরও বাড়ি থেকে কেন বেরিয়ে গেলে না। তখন আমার ভাই বলে আমার বাপ দাদার বাড়িতে আমি থাকবো। ওই বসত ভিটা ছেড়ে পরিবারে সদস্যদের নিয়ে আমরা কোথায় যাবো। আর কোথায় থাকবো। এই বলে সে নিজ ঘরে চলে যায় জুম্মার নামাজের জন্য প্রস্তুত হতে। তখন আমার চাচা আনছার আলী রুশন ক্ষিপ্ত হয়ে উনার ছেলেদের ডেকে গরু জবাই করার ছুরি হাতে দিয়ে বলেন এই ছুরি (ধার) শান দে। আমার ভাই তা টের না পেয়ে জুমার নামাজের জন্য রওয়ানা হয়। বাড়ির মেইন গ্রেইটের বাইরে পা রাখতেই আমার চাচা তার ছেলে রাকিন আহমদ বাবু, ফাহাদ আহমদ ও রাকিম আহমদ মিলে আমার ভাইকে ঝাপটে ধরে মাটিতে ফেলে চেপে রাখে। ওই সময় আমাদের জমিনে কাজ করছিল মদরিছ মিয়া এবং আরকান মিয়া। তারা ওই দৃশ্য দেখে চিৎকার দিয়ে আগাতে থাকে। চিৎকার শুনে আমার চাচা মার মার বলতে থাকেন এবং গরু জবাই করার ছুরি দিয়ে উনার ছেলে রাকিন আহমেদ বাবু আমার ভাইয়ের পিঠে (ছেদ) ঘা মারে। ফাহাদ আহমদ বাম হাতে ঘা দেয় (ছেদ মারে)। আর অন্য দুইজন তাকে মাটিতে চেপে ধরে। এমতাবস্তায় আমার ভাইয়ের চিৎকার শুনে লোকজন ও আমার পরিবারের সদস্যরা চলে আসলে তাকে রক্তাক্ত জখম অবস্থায় মাটিতে ফেলে ওরা চলে যায়। আমি ও আমার পরিবারের সদস্যসহ প্রত্যক্ষদর্শীদের সহায়তায় আমার ভাইকে চিকিৎসার জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ওই খুনের ঘটনায় চাচা এবং তার ছেলেদের গ্রেপ্তার করে র‌্যাব ও পুলিশ। আমি আমার ভাইয়ের খুনের ঘটনায় চাচাকে প্রধান আসামী করে তার ৩ ছেলেসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে রাজনগর থানায় মামলা করি। মামলা নং ১১/২৩৮। আমার প্রতিবেশী,জনপ্রতিনিধি,সালিশ বিচারকসহ আমার বড় ভাই,ফুফু এবং লন্ডনে বসবাসরত চাচাদের অনুরোধে ও তাদের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ন্যায় বিচারের প্রত্যাশায় মিমাংসার জন্য আমার চাচাকে আমি আপোষে জামিন করাই। জামিনে বের হয়ে পরিবারের সবাই আত্মীয়স্বজনসহ সকলের এই সিদ্ধান্ত হয়,আমরা বাড়িতে এবং আমার চাচা শহরে বসবাস করবেন। সে মোতাবেক আমাদের অংশের বাসার জায়গা ১শতক ৬০ পয়েন্ট ২৯॥১॥২০২২ ইংরেজি তারিখে চাচাকে রেজিস্ট্রার করে দেই। বিনিময়ে চাচা বাড়ির অংশ আমাদেরকে দিবেন। কিন্তু ৩১॥১॥২০২২ ইংরেজি বাড়ির জায়গার অংশ আমাদের নামে দিতে গিয়ে দলিল সম্পাদন করা শেষ হলেও,সাব রেজিস্ট্রার এর সামনে যাওয়ার আগে প্রসাব করে আসছি বলে পালিয়ে যান। কয়দিন পরে বলেন আর বাড়ির জায়গা ও বাসার জায়গা কোনোটাই দিবেন না। যদি না আমি আমার ভাইয়ের মার্ডার মামলা আপোষ না করি। আমি আমার ভাইয়ের মামলা আপোষ করতে রাজি না হলে বিভিন্ন ভাবে আমার চাচা আমাকে এবং আমার আশপাশের মানুষদের ফোনের মাধ্যমে প্রাণ নাশের হুমকি দিতে থাকেন। হুমকির ভয়ে আমি এলাকাবাসিদের আমার আশঙ্কার কথা জানালে তারা তার সাথে এবিষয়ে কথা বললে এলাকাবাসিদেরকেও তিনি মামলা হামলার হুমকি দেন। বলেন “বশিরের পুয়ারে তার ভাইয়ের লাখান তারেও দুনিয়া থাকি তুলিদিমু। তুমরা মাতলে তুমরারেও হাত পাও কাটিলিমু”। প্রাণনাশের ভয়ে আমি রাজনগর থানায় জিডি করতে গেলে তদন্ত করে জিডি নিবেন বলে আশ^স্ত করলেও দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও এখনো জিডি নেননি।

এই ঘটনার পর থেকে আমার চাচা চুরি ছিনতাইসহ নানা নাটক সাজিয়ে আমাকে হেনেস্তা ও অপমানিত করার নিমিত্তে আমার বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা,বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা দায়ের করেই চলেছেন। এই পর্যন্ত ৩ টা মামলা দায়ের করেছেন। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা স্বাক্ষী দিতে অনেকেই অপারগতা প্রকাশ করলে তাদেও বিরুদ্ধেও মিথ্যা মামলা দিচ্ছেন। মামলা নং ১৪/১৬৬ ৭মে ১২:০৫ মিনিট এ ঘটনা দেখিয়ে মৌলভীবাজার মডেল থানায় আনছার আলী রুশন একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। কিন্তু ওই দিন আমি আমার পাঁচগাঁও ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম ছানা মহোদয় এবং আমার ওয়ার্ড এর মেম্বার জুনেদ হুসেন কুটিসহ আরও মুরব্বিগণদের সাথে পাঁচগাঁও গ্রামে একটি বাড়িতে বিচার শালিসে সকাল ১১টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত উপস্থিত ছিলাম। ওই দিন আমি মৌলভীবাজার শহরেই যাইনি। এই মিথ্যা মামলা গুলোতে যাদের সাক্ষী দিয়েছেন তারা মিথ্যা সাক্ষী দিবে না বলে জানিয়ে এটাযে মিথ্যা মামলা সে বিষয়ে তারা এফিডেভিট এর মাধ্যমে জানান। এবং সাক্ষী দিবে না বলে তারা অপারগতা জানালে তিনি সাক্ষীদের মেরে ফেলার হুমকি এবং তাদের উপর মিথ্যা মামলা ভয় দেখান। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা স্বাক্ষী দিতে অনেকেই অপারগতা প্রকাশ করলে তাদের বিরুদ্ধেও মিথ্যা মামলা দিচ্ছেন। বলে বেড়াচ্ছেন প্রশাসন ও প্রভাবশালীমহলকে নাকি তিনি টাকা দিয়ে ম্যানেজ করে তার পকেটস্ত করেছেন। দম্ব করে বলছেন আমার দায়েরকৃত হত্যা মামলায় তার কিছুই হবে না। উল্টো বলছেন আমার ভাইকে হত্যা করেছেন। ঝঞ্জালমুক্ত করতে আমাকেও প্রাণে মারবেন। সেই সাথে নানা ভাবে আমাকে ও আমার পরিবারে সদস্যদের প্রাণে হত্যার পরিকল্পনায় লিপ্ত রয়েছেন। বিগত ১৫,০৪,২০২৩ ইং তারিখ রাত ৮টায় ইফতার পার্টি শেষ করে বাড়িতে ফেরার সময় মৌলভীবাজার-কুলাউড়া সড়কের মহলাল এলপিজি গ্যাস পাম্প পার হতেই আমার পথরোধ করে আমার দিকে আনছার আলী রুশন রামদা নিয়ে তাড়া করেন। ওই সময় আমার সাথে থাকা আমার এলাকার কয়েক জন ছোট ভাইয়ের সহায়তায় ওই সময় প্রাণে রক্ষা পাই। এবং আনছার আলী রুশন গাড়িতে উঠার সময় চিৎকার দিয়ে বলেন আমার ভাইয়ের হত্যা মামলা না তুললে আমার ভাইয়ের মত আমাকেও জানে মেরে ফেলবেন।

আমি ও আমার পরিবার আমার প্রাণপ্রিয় কনিষ্ঠ ভাইকে হারিয়েছি। অনেক জায়গা জমিনও হারিয়েছি। এখন আমাদের জীবন নিয়েও চরম উদ্বেগ উৎকন্ঠায় দিন কাটাচ্ছি। আমরা এখন অসহায়। তবে আমরা রাষ্ট্রীয় আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ও আস্তাশীল। আমরা প্রশাসন ও আদালতের কাছে আমাদের জায়গা সম্পত্তি দখলের জন্য জুলুমবাজ,খুনী,মামলাবাজদের ও আমার ভাইয়ের চিহ্নিত হত্যাকারীদের বিষয়ে দৃষ্ঠান্তমূলক শাস্তি ও ন্যায় বিচার পাওয়ার প্রত্যাশা রাখছি। সেই সাথে আশঙ্কা করছি এই মামলার প্রধান আসামীসহ অন্যান্য আসামীদের মামলার চার্যশীট থেকে বাদ দেওয়ার নানা পায়তারা চলছে। নানা ভাবে ম্যানেজ করে একটি প্রভাবশালী মহলের মাধ্যমে প্রশাসনকে প্রভাবিত করার অপচেষ্ঠায় আমার চাচা মত্ত রয়েছেন। আমরা রাষ্ট্রীয় আইনে ন্যায় বিচার থেকে যাতে বঞ্চিত না হই এজন্য এবিষয়টি সচেতন মহল,সাংবাদিক,প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সকলের নিকট বিনীত প্রত্যাশা করছি।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

সম্পত্তির লোভে ভাতিজাকে খুন,অব্যাহত মিথ্যা মামলা ও প্রাণনাশের হুমকি

আপডেট সময় ০৮:১৭:১০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ মে ২০২৩

স্টাফ রিপোর্টার॥ সম্পত্তির লোভে নিজের তিন পুত্রসন্তানকে সাথে নিয়ে আপন বড় ভাইয়ের ছেলেকে হত্যা করেছেন। এখন জামিনে বেরিয়ে এসে অন্যদেরকেও প্রাণে হত্যার হুমকি ছাড়াও হেনেস্তা করতে একের পর এক মিথ্যা মামলা দায়ের করছেন। আর হত্যা মামলার চার্যশীট থেকে নিজেকে বাদ দিতে প্রভাবশালী ও প্রশাসনের দারস্ত হয়ে নানা কুট কৌশল করছেন। সন্তান হারা ওই পরিবারটি এখন চরম অসায় ও নিরাপত্তাহীনতায় উদ্বেগ উৎকন্ঠায় দিনাতিপাত করছেন।

 

নিজেদের জানমাল হারানোর ভয় ও সন্তান হত্যার ন্যায় বিচার প্রাপ্তি নিয়ে পরিবারের দুশ্চিন্তার কথা জানিয়ে পরিবারের সদস্যদের পক্ষে (মঙ্গলবার) দুপুরে মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন জেলার রাজনগর উপজেলার পাঁচগাঁও ইউনিয়নের সারামপুর গ্রামের মৃত বশির আহমদের ছেলে আতিকুর রহমান সুয়েব।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সুয়েব বলেন আমার বাবা ২০১২ সালে মারা যান। আমরা ৩ ভাই ৩ বোন ছিলাম। ২ বোন ও ১ ভাই প্রবাসে থাকেন। আমি,আমার ছোট বোন এবং ছোট ভাই মৃত সাদিকুর রহমান জুবের (২৩) ও আমার মাসহ সবাই গ্রামের বাড়িতেই বসবাস করছি।

আমার চাচা আমার বাবার আপন ছোট ভাই আনছার আলী রুশন মিয়া তার পরিবার নিয়ে কুয়েতে থাকতেন। প্রায় ৩০ বছর আগে উনি উনার চাচাতো ভাইকে (নানু মিয়া) খুন করার জের ধরে কুয়েতের পুলিশ তদন্ত শুরু করলে এবং চাচার ছেলেদের উগ্র চলাফেরার কারনে পুলিশি ঝামেলা এড়াতে তার পরিবার নিয়ে তিনি দেশে গ্রামের বাড়িতে চলে আসেন। দেশে আশার পর থেকেই আমার পিতা ও আমাদের ক্রয়কৃত ব্যক্তিগত জায়গা সম্পত্তিসহ পৈত্রিক জায়গা সম্পত্তিও আমিসহ আমার আম্মা,বোন এবং আমার ভাই (ওদের হাতে খুন হওয়া) মৃত সাদিকুর রহমান জুবেরকে বিভিন্ন ভাবে জায়গা সম্পত্তি উনার নামে লিখে দেওয়ার জোর জবরদস্তি চালান। পৈত্রিক সম্পত্তির বিভিন্ন জায়গা জমিন আমার মা ভাই বোনদের কাছ থেকে কৌশলে রেজিস্ট্রার করে নিয়েও ক্রান্ত হননি। আমি তার এমন অন্যায় ও অত্যাচার দেখে ধৈর্য ধরতে না পেরে এবং তার সাথে বিরোধ তৈরির ভয়ে অস্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য সিলেটে চলে যাই। সেখানে প্রায় ১ বছর থাকার পর আমার ছোট ভাই,মা ও বোনের সাথে ওদের খারাপ আচরণ আর নানা হুমকি ধমকিতে পরিবারের নিরাপত্তা জনিত কারণে বাড়িতে চলে আসি।
আমার ভাই মৃত সাদিকুর রহমান জুবেরকে আমার চাচা ও তার ছেলেরা প্রতিনিয়তই বাড়ি থেকে বের হওয়ার জন্য নানা হুমকি দিতে থাকে। আমার ভাই ভয়ে কোন প্রতিবাদ না করে নীরব থাকে। হটাৎ ১৮/১১/২০২২ ইং তারিখ শুক্রবার সকালে আমার ভাই সাদিকুর রহমান জুবের জুম্মার নামাজে যাওয়ার জন্য গোসল করে ঘরে প্রবেশ করার সময় আমার চাচা আনছার আলী রুশন তার পায়ের জুতা দিয়ে তাকে পেটান। এবং সেই সাথে গালিগালাজ করে চিৎকার চেচামেচি করে বলেন এতো দিন থেকে বলার পরও বাড়ি থেকে কেন বেরিয়ে গেলে না। তখন আমার ভাই বলে আমার বাপ দাদার বাড়িতে আমি থাকবো। ওই বসত ভিটা ছেড়ে পরিবারে সদস্যদের নিয়ে আমরা কোথায় যাবো। আর কোথায় থাকবো। এই বলে সে নিজ ঘরে চলে যায় জুম্মার নামাজের জন্য প্রস্তুত হতে। তখন আমার চাচা আনছার আলী রুশন ক্ষিপ্ত হয়ে উনার ছেলেদের ডেকে গরু জবাই করার ছুরি হাতে দিয়ে বলেন এই ছুরি (ধার) শান দে। আমার ভাই তা টের না পেয়ে জুমার নামাজের জন্য রওয়ানা হয়। বাড়ির মেইন গ্রেইটের বাইরে পা রাখতেই আমার চাচা তার ছেলে রাকিন আহমদ বাবু, ফাহাদ আহমদ ও রাকিম আহমদ মিলে আমার ভাইকে ঝাপটে ধরে মাটিতে ফেলে চেপে রাখে। ওই সময় আমাদের জমিনে কাজ করছিল মদরিছ মিয়া এবং আরকান মিয়া। তারা ওই দৃশ্য দেখে চিৎকার দিয়ে আগাতে থাকে। চিৎকার শুনে আমার চাচা মার মার বলতে থাকেন এবং গরু জবাই করার ছুরি দিয়ে উনার ছেলে রাকিন আহমেদ বাবু আমার ভাইয়ের পিঠে (ছেদ) ঘা মারে। ফাহাদ আহমদ বাম হাতে ঘা দেয় (ছেদ মারে)। আর অন্য দুইজন তাকে মাটিতে চেপে ধরে। এমতাবস্তায় আমার ভাইয়ের চিৎকার শুনে লোকজন ও আমার পরিবারের সদস্যরা চলে আসলে তাকে রক্তাক্ত জখম অবস্থায় মাটিতে ফেলে ওরা চলে যায়। আমি ও আমার পরিবারের সদস্যসহ প্রত্যক্ষদর্শীদের সহায়তায় আমার ভাইকে চিকিৎসার জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ওই খুনের ঘটনায় চাচা এবং তার ছেলেদের গ্রেপ্তার করে র‌্যাব ও পুলিশ। আমি আমার ভাইয়ের খুনের ঘটনায় চাচাকে প্রধান আসামী করে তার ৩ ছেলেসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে রাজনগর থানায় মামলা করি। মামলা নং ১১/২৩৮। আমার প্রতিবেশী,জনপ্রতিনিধি,সালিশ বিচারকসহ আমার বড় ভাই,ফুফু এবং লন্ডনে বসবাসরত চাচাদের অনুরোধে ও তাদের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ন্যায় বিচারের প্রত্যাশায় মিমাংসার জন্য আমার চাচাকে আমি আপোষে জামিন করাই। জামিনে বের হয়ে পরিবারের সবাই আত্মীয়স্বজনসহ সকলের এই সিদ্ধান্ত হয়,আমরা বাড়িতে এবং আমার চাচা শহরে বসবাস করবেন। সে মোতাবেক আমাদের অংশের বাসার জায়গা ১শতক ৬০ পয়েন্ট ২৯॥১॥২০২২ ইংরেজি তারিখে চাচাকে রেজিস্ট্রার করে দেই। বিনিময়ে চাচা বাড়ির অংশ আমাদেরকে দিবেন। কিন্তু ৩১॥১॥২০২২ ইংরেজি বাড়ির জায়গার অংশ আমাদের নামে দিতে গিয়ে দলিল সম্পাদন করা শেষ হলেও,সাব রেজিস্ট্রার এর সামনে যাওয়ার আগে প্রসাব করে আসছি বলে পালিয়ে যান। কয়দিন পরে বলেন আর বাড়ির জায়গা ও বাসার জায়গা কোনোটাই দিবেন না। যদি না আমি আমার ভাইয়ের মার্ডার মামলা আপোষ না করি। আমি আমার ভাইয়ের মামলা আপোষ করতে রাজি না হলে বিভিন্ন ভাবে আমার চাচা আমাকে এবং আমার আশপাশের মানুষদের ফোনের মাধ্যমে প্রাণ নাশের হুমকি দিতে থাকেন। হুমকির ভয়ে আমি এলাকাবাসিদের আমার আশঙ্কার কথা জানালে তারা তার সাথে এবিষয়ে কথা বললে এলাকাবাসিদেরকেও তিনি মামলা হামলার হুমকি দেন। বলেন “বশিরের পুয়ারে তার ভাইয়ের লাখান তারেও দুনিয়া থাকি তুলিদিমু। তুমরা মাতলে তুমরারেও হাত পাও কাটিলিমু”। প্রাণনাশের ভয়ে আমি রাজনগর থানায় জিডি করতে গেলে তদন্ত করে জিডি নিবেন বলে আশ^স্ত করলেও দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও এখনো জিডি নেননি।

এই ঘটনার পর থেকে আমার চাচা চুরি ছিনতাইসহ নানা নাটক সাজিয়ে আমাকে হেনেস্তা ও অপমানিত করার নিমিত্তে আমার বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা,বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা দায়ের করেই চলেছেন। এই পর্যন্ত ৩ টা মামলা দায়ের করেছেন। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা স্বাক্ষী দিতে অনেকেই অপারগতা প্রকাশ করলে তাদেও বিরুদ্ধেও মিথ্যা মামলা দিচ্ছেন। মামলা নং ১৪/১৬৬ ৭মে ১২:০৫ মিনিট এ ঘটনা দেখিয়ে মৌলভীবাজার মডেল থানায় আনছার আলী রুশন একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। কিন্তু ওই দিন আমি আমার পাঁচগাঁও ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম ছানা মহোদয় এবং আমার ওয়ার্ড এর মেম্বার জুনেদ হুসেন কুটিসহ আরও মুরব্বিগণদের সাথে পাঁচগাঁও গ্রামে একটি বাড়িতে বিচার শালিসে সকাল ১১টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত উপস্থিত ছিলাম। ওই দিন আমি মৌলভীবাজার শহরেই যাইনি। এই মিথ্যা মামলা গুলোতে যাদের সাক্ষী দিয়েছেন তারা মিথ্যা সাক্ষী দিবে না বলে জানিয়ে এটাযে মিথ্যা মামলা সে বিষয়ে তারা এফিডেভিট এর মাধ্যমে জানান। এবং সাক্ষী দিবে না বলে তারা অপারগতা জানালে তিনি সাক্ষীদের মেরে ফেলার হুমকি এবং তাদের উপর মিথ্যা মামলা ভয় দেখান। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা স্বাক্ষী দিতে অনেকেই অপারগতা প্রকাশ করলে তাদের বিরুদ্ধেও মিথ্যা মামলা দিচ্ছেন। বলে বেড়াচ্ছেন প্রশাসন ও প্রভাবশালীমহলকে নাকি তিনি টাকা দিয়ে ম্যানেজ করে তার পকেটস্ত করেছেন। দম্ব করে বলছেন আমার দায়েরকৃত হত্যা মামলায় তার কিছুই হবে না। উল্টো বলছেন আমার ভাইকে হত্যা করেছেন। ঝঞ্জালমুক্ত করতে আমাকেও প্রাণে মারবেন। সেই সাথে নানা ভাবে আমাকে ও আমার পরিবারে সদস্যদের প্রাণে হত্যার পরিকল্পনায় লিপ্ত রয়েছেন। বিগত ১৫,০৪,২০২৩ ইং তারিখ রাত ৮টায় ইফতার পার্টি শেষ করে বাড়িতে ফেরার সময় মৌলভীবাজার-কুলাউড়া সড়কের মহলাল এলপিজি গ্যাস পাম্প পার হতেই আমার পথরোধ করে আমার দিকে আনছার আলী রুশন রামদা নিয়ে তাড়া করেন। ওই সময় আমার সাথে থাকা আমার এলাকার কয়েক জন ছোট ভাইয়ের সহায়তায় ওই সময় প্রাণে রক্ষা পাই। এবং আনছার আলী রুশন গাড়িতে উঠার সময় চিৎকার দিয়ে বলেন আমার ভাইয়ের হত্যা মামলা না তুললে আমার ভাইয়ের মত আমাকেও জানে মেরে ফেলবেন।

আমি ও আমার পরিবার আমার প্রাণপ্রিয় কনিষ্ঠ ভাইকে হারিয়েছি। অনেক জায়গা জমিনও হারিয়েছি। এখন আমাদের জীবন নিয়েও চরম উদ্বেগ উৎকন্ঠায় দিন কাটাচ্ছি। আমরা এখন অসহায়। তবে আমরা রাষ্ট্রীয় আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ও আস্তাশীল। আমরা প্রশাসন ও আদালতের কাছে আমাদের জায়গা সম্পত্তি দখলের জন্য জুলুমবাজ,খুনী,মামলাবাজদের ও আমার ভাইয়ের চিহ্নিত হত্যাকারীদের বিষয়ে দৃষ্ঠান্তমূলক শাস্তি ও ন্যায় বিচার পাওয়ার প্রত্যাশা রাখছি। সেই সাথে আশঙ্কা করছি এই মামলার প্রধান আসামীসহ অন্যান্য আসামীদের মামলার চার্যশীট থেকে বাদ দেওয়ার নানা পায়তারা চলছে। নানা ভাবে ম্যানেজ করে একটি প্রভাবশালী মহলের মাধ্যমে প্রশাসনকে প্রভাবিত করার অপচেষ্ঠায় আমার চাচা মত্ত রয়েছেন। আমরা রাষ্ট্রীয় আইনে ন্যায় বিচার থেকে যাতে বঞ্চিত না হই এজন্য এবিষয়টি সচেতন মহল,সাংবাদিক,প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সকলের নিকট বিনীত প্রত্যাশা করছি।