ঢাকা ১২:৫৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৫, ২ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজ
জুড়ী উপজেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন সম্পন্ন সভাপতি রেজা, সম্পাদক মতিউর সিলেটে জিপিস্টার পার্টনারদের স্বীকৃতি দিলো গ্রামীণফোন বিএনপি যদি রাস্ট্র ক্ষমতায় যায় তাহলে আমরা এই পুলিশ কে বিএনপির পুলিশ বানাবো না – জি কে গউছ সিলেটে পাথর লু ট,প্রশাসনের বি রু দ্ধে শুরু হচ্ছে অ্যাকশন ডাক্তারদের চেম্বারে ওষুধ কোম্পানির দৌরাত্ম্য: ভুক্তভোগী রোগীরা বাংলাদেশে সব সময়ই হিন্দু মুসলমান সম্প্রীতির সাথে বসবাস করে আসছে — এম নাসের রহমান জনগণ কে নিয়ে চলার দল বিএনপি। বিএনপি পেছন দিয়ে ক্ষমতায় যাওয়ায় বিশ্বাস করে না: বড়লেখায় ডা: জাহিদ বিশ্বের ১০ সুন্দরী চুরি হওয়া স্বর্ণালংকার, নগদ টাকা ও মালামাল উদ্ধার, গ্রে/ফ/তা/র – ১ পুবালি ব্যাংক পিএলসি-এর ৭৩৩তম বুথের শুভ উদ্বোধন

সিলেট বোর্ডে ফলাফল বিপর্যয়

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৮:৫১:০৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
  • / ৭১৫ বার পড়া হয়েছে

মৌলভীবাজার২৪ ডেস্ক: একলাফে পাসের হার কমেছে ১৩.৪০ ভাগ! এবারের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় (এইচএসসি) সিলেট শিক্ষা বোর্ডে ফলাফল বিপর্যয়ের চিত্র তুলে ধরতে এই একটি তথ্যই যেন যথেষ্ট।

ফলাফলের পরিসংখ্যান বলছে, দেশের ৯টি শিক্ষা বোর্ডের মধ্যে ফলাফলে এবার ৬ষষ্ঠ স্থানে অবস্থান করছে সিলেট বোর্ড।

সংশ্লিষ্টদের মতে, ফলাফল বিপর্যয়ের অন্যতম কারণ বন্যা। সঙ্গে মানবিক ও ব্যবসা প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থীদের ফলাফলে অবনতি ঘটায় এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে মোট পাসের হারে। এ দুই বিভাগের শিক্ষার্থীরা আবার বেশিরভাগই খারাপ করেছেন ইংরেজি বিষয়ে।

ফলাফল পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, সিলেট শিক্ষা বোর্ডে সর্বশেষ পাঁচ বছর ধরে এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল ওঠা-নামার মধ্যে রয়েছে। ২০১৮ সালে বোর্ডে পাসের হার ছিল ৬২.১১ ভাগ। ২০১৯ সালে কিছুটা বেড়ে পাসের হার দাঁড়ায় ৬৭.০৫ ভাগে।

এরপর ২০২০ সালে করোনাভাইরাসের প্রকোপে এইচএসসি পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়নি। তখন শিক্ষার্থীদের ‘অটোপাস’ দেওয়া হয়। ফলে পাসের হার ছিল শতভাগ।

করোনার প্রকোপ কমায় ২০২১ সালে সীমিত সিলেবাসে এইচএসসি পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়। তখন সিলেট বোর্ডে পাসের হার ছিল ৯৪.৮০ ভাগ।

সর্বশেষ ২০২২ সালে যে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়, সেটির ফলাফল প্রকাশিত হলো আজ বুধবার। এবার পাসের হার ৮১.৪০ ভাগ।

অর্থাৎ, ২০২১ সালের চেয়ে পাসের হার কমেছে ১৩.৪০ ভাগ।

এবার ৬৬ হাজার ৪৯১ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়ে পাস করেছে ৫৪ হাজার ১২২ জন। অর্থাৎ, ফেল করেছে ১২ হাজার ৩৬৯ জন। অথচ এর আগের বছর (২০২১) ৬৬ হাজার ৬৬১ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ফেল করেছিল ৩ হাজার ৪৬৮ জন।

সিলেট শিক্ষা বোর্ডের দায়িত্বশীলদের মতে, এবার পাসের হার কমে যাওয়ার পেছনে গত বছরের বন্যা দায়ী। এ ছাড়া মানবিক এবং ব্যবসা প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থীদের ফলাফলের অবনতি অনেকাংশে দায়ী। ইংরেজি বিষয়ে এ দুই বিভাগের শিক্ষার্থীদের ফলাফল ভালো হয়নি। এ দুই বিভাগের শিক্ষার্থীরা ফলাফলে পিছিয়ে পড়ায় নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে মোট পাসের হারে।

ফলাফল পর্যালোচনায় দেখা যাচ্ছে, ২০২১ সালে বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের পাসের হার ছিল ৯২.৯৭ ভাগ। এবার সামান্য কমে দাঁড়িয়েছে ৯০.৫০ ভাগে।

ওই বছর মানবিক বিভাগের ৯৬.১৩ ভাগ শিক্ষার্থীই পাস করেছিল। কিন্তু এবার পাস করেছে ৭৯.১৮ ভাগ শিক্ষার্থী। অর্থাৎ, এ বিভাগে পাসের হার কমেছে ১৬.৯৫ ভাগ! ২০২১-এ ব্যবসা প্রশাসনের শিক্ষার্থীদের গড় পাসের হার ছিল ৯০.৯৫ ভাগ। কিন্তু এবার ১০.৭২ ভাগ কমে পাসের হার হয়েছে ৮০.২৩ ভাগ।

ফলাফল বিপর্যয়ের কারণ হিসেবে সিলেট শিক্ষা বোর্ডের সদস্যসচিব কবির আহমদ বলেন, গত বছর ভয়াবহ বন্যার পানি অনেকেরই বই-খাতা ভাসিয়ে নিয়ে গিয়েছিল। অনেকে ঠিকমতো প্রস্তুতিও নিতে পারেনি। যে কারণে ফলাফল কিছুটা খারাপ হয়েছে।

তবে ফলাফল নিয়ে অসন্তুষ্ট নয় বলেও মন্তব্য তাঁর, ‘যে ভয়াবহ বন্যার বিপর্যয় কাটিয়ে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিয়েছে. তাতে অসন্তোষের কিছু নেই।’

সিলেট বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক অরুণ চন্দ্র পাল বলেন, ‘বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই ইংরেজিতে খারাপ করেছে। এ বিষয়টিতে একটু খেয়াল করলেই আগামীতে ফলাফল বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠা সম্ভব।

শিক্ষার্থীরা যাতে ইংরেজিতে ভালো করতে পারে, সে ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

অবশ্য গেল বছরের ফলাফলের সাথে এবারের ফলাফলের তুলনা করতে খানিকটা আপত্তি আছে দায়িত্বশীলদের। যেমনটি বলছিলেন বোর্ডের সদস্যসচিব কবির আহমদ, ‘গত বছর সীমিত পরিসরে কয়েকটি বিষয়ে পরীক্ষা হয়। এর আগের বছর অটোপাস দেওয়া হয়। তাই এবারের ফলাফলের তুলনা করতে হবে ২০১৯ সালের সাথে। ওই বছর পাসের হার ৬৭.০৫ ভাগ ছিল।

এদিকে, পাসের হারে পিছিয়ে পড়লেও সিলেট বোর্ডে গেলবারের চেয়ে এবার জিপিএ ৫ প্রাপ্তদের সংখ্যা বেড়েছে। ২০২১ সালে জিপিএ ৫ পেয়েছিল ৪ হাজার ৭৩১ জন, এবার এ সংখ্যা ৪ হাজার ৮৭১ জন।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

সিলেট বোর্ডে ফলাফল বিপর্যয়

আপডেট সময় ০৮:৫১:০৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

মৌলভীবাজার২৪ ডেস্ক: একলাফে পাসের হার কমেছে ১৩.৪০ ভাগ! এবারের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় (এইচএসসি) সিলেট শিক্ষা বোর্ডে ফলাফল বিপর্যয়ের চিত্র তুলে ধরতে এই একটি তথ্যই যেন যথেষ্ট।

ফলাফলের পরিসংখ্যান বলছে, দেশের ৯টি শিক্ষা বোর্ডের মধ্যে ফলাফলে এবার ৬ষষ্ঠ স্থানে অবস্থান করছে সিলেট বোর্ড।

সংশ্লিষ্টদের মতে, ফলাফল বিপর্যয়ের অন্যতম কারণ বন্যা। সঙ্গে মানবিক ও ব্যবসা প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থীদের ফলাফলে অবনতি ঘটায় এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে মোট পাসের হারে। এ দুই বিভাগের শিক্ষার্থীরা আবার বেশিরভাগই খারাপ করেছেন ইংরেজি বিষয়ে।

ফলাফল পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, সিলেট শিক্ষা বোর্ডে সর্বশেষ পাঁচ বছর ধরে এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল ওঠা-নামার মধ্যে রয়েছে। ২০১৮ সালে বোর্ডে পাসের হার ছিল ৬২.১১ ভাগ। ২০১৯ সালে কিছুটা বেড়ে পাসের হার দাঁড়ায় ৬৭.০৫ ভাগে।

এরপর ২০২০ সালে করোনাভাইরাসের প্রকোপে এইচএসসি পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়নি। তখন শিক্ষার্থীদের ‘অটোপাস’ দেওয়া হয়। ফলে পাসের হার ছিল শতভাগ।

করোনার প্রকোপ কমায় ২০২১ সালে সীমিত সিলেবাসে এইচএসসি পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়। তখন সিলেট বোর্ডে পাসের হার ছিল ৯৪.৮০ ভাগ।

সর্বশেষ ২০২২ সালে যে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়, সেটির ফলাফল প্রকাশিত হলো আজ বুধবার। এবার পাসের হার ৮১.৪০ ভাগ।

অর্থাৎ, ২০২১ সালের চেয়ে পাসের হার কমেছে ১৩.৪০ ভাগ।

এবার ৬৬ হাজার ৪৯১ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়ে পাস করেছে ৫৪ হাজার ১২২ জন। অর্থাৎ, ফেল করেছে ১২ হাজার ৩৬৯ জন। অথচ এর আগের বছর (২০২১) ৬৬ হাজার ৬৬১ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ফেল করেছিল ৩ হাজার ৪৬৮ জন।

সিলেট শিক্ষা বোর্ডের দায়িত্বশীলদের মতে, এবার পাসের হার কমে যাওয়ার পেছনে গত বছরের বন্যা দায়ী। এ ছাড়া মানবিক এবং ব্যবসা প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থীদের ফলাফলের অবনতি অনেকাংশে দায়ী। ইংরেজি বিষয়ে এ দুই বিভাগের শিক্ষার্থীদের ফলাফল ভালো হয়নি। এ দুই বিভাগের শিক্ষার্থীরা ফলাফলে পিছিয়ে পড়ায় নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে মোট পাসের হারে।

ফলাফল পর্যালোচনায় দেখা যাচ্ছে, ২০২১ সালে বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের পাসের হার ছিল ৯২.৯৭ ভাগ। এবার সামান্য কমে দাঁড়িয়েছে ৯০.৫০ ভাগে।

ওই বছর মানবিক বিভাগের ৯৬.১৩ ভাগ শিক্ষার্থীই পাস করেছিল। কিন্তু এবার পাস করেছে ৭৯.১৮ ভাগ শিক্ষার্থী। অর্থাৎ, এ বিভাগে পাসের হার কমেছে ১৬.৯৫ ভাগ! ২০২১-এ ব্যবসা প্রশাসনের শিক্ষার্থীদের গড় পাসের হার ছিল ৯০.৯৫ ভাগ। কিন্তু এবার ১০.৭২ ভাগ কমে পাসের হার হয়েছে ৮০.২৩ ভাগ।

ফলাফল বিপর্যয়ের কারণ হিসেবে সিলেট শিক্ষা বোর্ডের সদস্যসচিব কবির আহমদ বলেন, গত বছর ভয়াবহ বন্যার পানি অনেকেরই বই-খাতা ভাসিয়ে নিয়ে গিয়েছিল। অনেকে ঠিকমতো প্রস্তুতিও নিতে পারেনি। যে কারণে ফলাফল কিছুটা খারাপ হয়েছে।

তবে ফলাফল নিয়ে অসন্তুষ্ট নয় বলেও মন্তব্য তাঁর, ‘যে ভয়াবহ বন্যার বিপর্যয় কাটিয়ে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিয়েছে. তাতে অসন্তোষের কিছু নেই।’

সিলেট বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক অরুণ চন্দ্র পাল বলেন, ‘বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই ইংরেজিতে খারাপ করেছে। এ বিষয়টিতে একটু খেয়াল করলেই আগামীতে ফলাফল বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠা সম্ভব।

শিক্ষার্থীরা যাতে ইংরেজিতে ভালো করতে পারে, সে ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

অবশ্য গেল বছরের ফলাফলের সাথে এবারের ফলাফলের তুলনা করতে খানিকটা আপত্তি আছে দায়িত্বশীলদের। যেমনটি বলছিলেন বোর্ডের সদস্যসচিব কবির আহমদ, ‘গত বছর সীমিত পরিসরে কয়েকটি বিষয়ে পরীক্ষা হয়। এর আগের বছর অটোপাস দেওয়া হয়। তাই এবারের ফলাফলের তুলনা করতে হবে ২০১৯ সালের সাথে। ওই বছর পাসের হার ৬৭.০৫ ভাগ ছিল।

এদিকে, পাসের হারে পিছিয়ে পড়লেও সিলেট বোর্ডে গেলবারের চেয়ে এবার জিপিএ ৫ প্রাপ্তদের সংখ্যা বেড়েছে। ২০২১ সালে জিপিএ ৫ পেয়েছিল ৪ হাজার ৭৩১ জন, এবার এ সংখ্যা ৪ হাজার ৮৭১ জন।