স্মার্ট মৌলভীবাজার গড়ার প্রত্যয় নিয়ে স্মার্ট আগামীর পরিকল্পনা
- আপডেট সময় ১২:৫৭:৫৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ জানুয়ারী ২০২৪
- / ৪৬৬ বার পড়া হয়েছে
অপার সম্ভাবনার এক অনন্য জনপদ প্রিয় মৌলভীবাজার-৩ [মৌলভীবাজার সদর-রাজনগর] নির্বাচনী এলাকা। নদী-হাওর-পাহাড়ের মিশেলে নৈসর্গিক সৌন্দর্যে সমৃদ্ধ এ জনপদের মানুষজনও মেধায় মননে, ভ্রাতৃত্ববোধে অনন্য। শিক্ষা, চিকিৎসা, যাতায়াতের আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্পন্ন একটি জনপদ আমাদের সকলেরই স্বপ্ন। কিন্তু যোগ্য নেতৃত্বের অভাবে এই এলাকা নানা দিক দিয়ে আজও রয়ে গেছে পিছিয়ে। নেতৃত্বের পুরোনো ধ্যান-ধারণার আবর্ত থেকে বেরিয়ে কাজের ক্ষেত্রে মানুষের আকাক্সক্ষাকে গুরুত্ব দিলে আমরা এগিয়ে যাবো বলে আমি বিশ্বাস করি। এখানে মেডিকেল কলেজ, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, আইসিটি সেন্টার, ফোর লেন রাস্তাসহ গ্রামীণ রাস্তাঘাট-সেতু-কালভার্ট নির্মাণ ও রাজনগরে পৌরসভা প্রতিষ্ঠা এখন সময়ের দাবি। এছাড়া পর্যটন শিল্পে বৈপ্লবিক উন্নয়নসহ সন্ত্রাস-মাদক নির্মূল, সাইবার ক্রাইম প্রতিরোধ, দুর্নীতিমুক্ত প্রাতিষ্ঠানিক সেবা, সামাজিক মূল্যবোধ ও গণতান্ত্রিক মনোভাব তৈরি, পরিবেশ রক্ষা, আত্মিক উন্নতি, মানবাধিকার সংরক্ষণ ও জ্ঞানভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণ অতি জরুরি।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ইতোমধ্যে ১০০ পৃষ্ঠার নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছে। ইশতেহার যঃঃঢ়ং://িি.িধষনফ.ড়ৎম ওয়েভ সাইটে পাওয়া যাবে। উল্লেখযোগ্য কয়েকটি পয়েন্ট এখানে তুলে ধরছি। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ জনগণের ভোটে নির্বাচিত হলে
২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট সরকার, স্মার্ট অর্থনীতি এবং স্মার্ট সমাজ গঠনের মাধ্যমেই মূলত ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ে তোলা হবে।
রাষ্ট্র পরিচালনার সকল ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, সুশাসন ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের চর্চা আরও সুদৃঢ় করা হবে।
আইনের শাসন, মৌলিক মানবাধিকার, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সাম্য, স্বাধীনতা এবং সুবিচার নিশ্চিত করা হবে।
গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও অবাধ তথ্যপ্রবাহ নিশ্চিত করার ধারা অব্যাহত রাখা হবে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অব্যাহত থাকবে।
সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ রোধ করা এবং সর্বস্তরে গণতান্ত্রিক চর্চার প্রসার ঘটানো।
২০২৮ সালের মধ্যে দারিদ্র্যের হার ১১ শতাংশে নামিয়ে আনা হবে।
২০৩১ সালের মধ্যে চরম দারিদ্র্যের অবসান এবং ২০৪১ সাল নাগাদ দারিদ্র্র্যের হার তিন শতাংশে নামিয়ে আনা হবে।
প্রতিটি গ্রামে আধুনিক নগর সুবিধা সম্প্রসারণ করা হবে।
শিক্ষাখাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি এবং দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সন্তানদের উচ্চশিক্ষা লাভের সুযোগ আরও প্রসারিত করা হবে।
আস্সালামু আলাইকুম/আদাব
শ্রদ্ধেয় মুরব্বীগণ, প্রিয় তরুণ প্রজন্মের ভাই ও বোনেরা, মৌলভীবাজার-৩ [মৌলভীবাজার সদর-রাজনগর] নির্বাচনী এলাকার সম্মানিত নাগরিকবৃন্দ ও ভোটারগণ আমার শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও শুভেচ্ছা গ্রহণ করুন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে অর্জিত প্রিয় বাংলাদেশ জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সোনালি অধ্যায় অতিক্রম করছে। লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ আজ সমৃদ্ধি ও অগ্রযাত্রায় উন্নয়নের মহাসড়কে রয়েছে। এ উন্নয়ন সাধিত হচ্ছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু-কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদৃঢ় ও কল্যাণকামী নেতৃত্বে। মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে স্বাধীনতা সংগ্রামে শহীদ ও জাতির সূর্য সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাগণের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করছি। আমি গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবসহ বন্ধবন্ধু পরিবারের সকল শহীদকে। শ্রদ্ধা নিবেদন করছি জেল হত্যাকাণ্ডে শহীদ জাতীয় ৪ নেতার প্রতি।
প্রিয় ভাই ও বোনেরা
মৌলভীবাজার-৩ আসনটি এই জনপদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি আসন। বিল-ঝিল, হাওর-বাওর, নদ-নদী, পাহাড়-পর্বত ছাড়াও চা-শিল্প, আগর-আতর, প্রবাসী ও পর্যটনের জেলা হিসেবে পরিচিত এই মৌলভীবাজার। দিগন্তজোড়া ধু ধু মাঠÑ মাঠের পরে গ্রামÑ নিসর্গ সৌন্দর্যের লীলাভূমি মৌলভীবাজার সময়পোযোগী ও আধুনিক করে সাজাতে হলে দরকার উন্নয়নের একটি মহাপরিকল্পনা। সেই মহাপরিকল্পনাকে সামনে রেখে নিরন্তর কাজ করার মধ্য দিয়ে একটি স্মার্ট জেলা গঠনে আমি আপনাদের নিকট অঙ্গীকারবদ্ধ।
সম্মানিত নাগরিকবৃন্দ
এই সংসদীয় আসনে মোট ভোটার রয়েছেন ৪ লক্ষ ৫৬ হাজার ১৪৩ জন। এরমধ্যে পুরুষ ২ লক্ষ ৩১ হাজার ৭৫৭ এবং নারী ২ লক্ষ ২৪ হাজার ৩৮৬ জন ভোটার রয়েছেন। বসবাসরত মোট জনসংখ্যা প্রায় সাড়ে ৬ লাখ। এখানে বিভিন্ন ধর্ম-বর্ণ, চা-জনগোষ্ঠী ও নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর বসবাসও রয়েছে। এতো বিশাল জনবল থাকার পরও বাংলাদেশের অন্যান্য স্থান কেন শুধু সিলেট বিভাগের বাকি তিনটি জেলার দিকে তাকালে সহজেই চোখে পড়বে আমাদের মৌলভীবাজার শিক্ষা, সংস্কৃতি, উন্নয়ন ও আধুনিকতায় কতখানি পিছিয়ে? সর্বাত্মক উন্নয়নের মাধ্যমে মৌলভীবাজারের মতো একটি জনপদকে এগিয়ে নিতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা তাঁর প্রতিনিধি হিসেবে আমাক মনোনয়ন দিয়েছেন। এতে আমার মধ্যে যে দায়বোধ তৈরি হয়েছে তা আপনাদের সহযোগিতা ছাড়া পূরণ করা অসম্ভব। আমার থিওরি হলো, কথা কম, কাজ বেশি। আগামী পাঁচ বছরে আপনারা এর প্রমাণ পাবেনÑ কথা দিলাম।
সড়ক যোগাযোগ ও নিরাপত্তা
মানুষের জীবনধারণ ও স্বপ্নের সাথে আমাদের সড়ক ও যানবাহন ওতপ্রোতভাবে জড়িত। আমাদের সড়ক-মহাসড়কে নিয়মের বাইরে বেড়েছে যানবাহন কিন্তু প্রশস্ত হয়নি রাস্তাঘাট। ফলে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে চলতে হচ্ছে সকল শ্রেণি-পেশার মানুষকে। এজন্য আ লিক মহাসড়কগুলো যেমন ৪ লেনসহ গ্রামীণ রাস্তাঘাট-সেতু-কালভার্ট নির্মাণ প্রয়োজন, তেমনি নিরাপদ যাত্রার জন্য আধুনিক বাস তথা যানবাহনও প্রয়োজন। আমাকে নির্বাচিত করলে শ্রীমঙ্গল-মৌলভীবাজার-শেরপুর চার লেনে উন্নীত করা হবে। এতে সময় বাঁচবে, কমবে দুর্ঘটনা। কুশিয়ারা খেয়াঘাটে ব্রিজ নির্মাণ করা হবে। শ্রীমঙ্গল-মৌলভীবাজার-রাজনগর ফে ুগঞ্জ-সিলেট সড়ক প্রশস্ত করে যথাশীঘ্র এই রুটে ভালো মানের বাস সার্ভিস চালু করা হবে। ফলে কম সময়ে এই অ লের মানুষ স্বাচ্ছন্দ্যে যাতায়াত করতে পারবেন। মৌলভীবাজার জেলা শহরকে যানজটমুক্ত রাখতে দুটি শহর বাইপাস রাস্তা নির্মাণ করা হবে। একটি শেরপুর সড়ক থেকে কুলাউড়া সড়ক। অন্যটি কুলাউড়া সড়ক থেকে মনু-ব্যারেজ হয়ে শমশেরনগর রোড টাচ্ করে শহরের কোর্ট রোড পর্যন্ত। সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে চালকদের প্রশিক্ষণ ও যোগ্য ব্যক্তিরা যেনো লাইসেন্স পেতে পারেন তা নিশ্চিত করা হবে।
টিআর কাবিখা
প্রতি অর্থ-বছরে মৌলভীবাজার ও রাজনগর নির্বাচনী এলাকার প্রতিটি ইউনিয়নে সম-হারে গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ [টিআর] এবং গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার [কাবিখা] কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে। এক্ষেত্রে সকল প্রকারের দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি প্রতিরোধ করা হবে।
শিক্ষা ও স্বাস্থ্য
স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় শিক্ষার মান বৃদ্ধি এবং সহপাঠক্রমিক কার্যক্রমের আওতায় খেলাধুলা ও সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চার পাশাপাশি শিক্ষার প্রসারের জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামোগত উন্নয়ন করা হবে। একটি মেডিকেল কলেজ, একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, একটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও আইসিটি ট্রেনিং সেন্টার প্রতিষ্ঠা করা হবে। মৌলভীবাজার সরকারি কলেজ ও রাজনগর ডিগ্রি কলেজকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে। এছাড়া জাতীয় মানের স্কুল, কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হবে। গ্রামীণ এলাকায় স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে পর্যাপ্ত কমিনিউটি ক্লিনিক এবং মা ও শিশু হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা হবে। মৌলভীবাজার সদর হাসপাতাল, রাজনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ দুটি উপজেলার শিক্ষা ও স্বাস্থ্য বিভাগের উন্নয়ন সমানভাবে গুরুত্ব দিয়ে করা হবে।
নাগরিক সেবা ও অধিকার নিশ্চিত করা
ইতোমধ্যে মৌলভীবাজার ও রাজনগরের মানুষের দাবি-দাওয়া ও আকাক্সক্ষার কথা ভেবে এই দুই উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়ন, প্রতিটি ওয়ার্ডÑ এমনকি প্রতিটি গ্রাম থেকে তথ্য সংগ্রহ করেছি। গ্রাম থেকে শহরÑ শহর থেকে গ্রামের দুরত্ব কমে যাবে, শুধু চোখে পড়বে উন্নয়ন। মৌলভীবাজার জেলাকে ঐতিহ্য এবং আধুনিকতার সম্মিলনে প্রাণ প্রকৃতি ও পরিবেশ সমুন্নত রেখে সবার জন্য বাসযোগ্য একটি অত্যাধুনিক জেলা গড়ে তোলা হবে।
জলাশয়কে রক্ষা ও আমাদের আশীর্বাদ হিসেবে তৈরি করা
মনু-নদ, কুশিয়ারা, লাগাটা ও কাউয়াদীঘি হাওর মৌলভীবাজার সদর ও রাজনগরকে নিয়ন্ত্রণ করে। তাই এ দুটি হাওর-নদী মাস্টারপ্ল্যানের আওতায় নিয়ে আসবো। মনু নদের মনু সেচ প্রকল্পের আওতায় যতগুলো ক্যানেল রয়েছে সেগুলো ভরাট হয়ে গেছে, ভরাট ক্যানেলগুলোকে বাধ্যতামুলকভাবে খনন করা হবে। একই সাথে কাউয়াদীঘি হাওর ও হাওর সংলগ্ন সবকটি বিল, ছড়া, খাল ইত্যাদি খনন করে দুই উপজেলার মানুষের উপকার নিশ্চিত করা হবে। উল্লেখ্য যে, কাউয়াদীঘি হাওরকে নিয়ে করা হবে বৃহৎ পরিকল্পনা। হাওরের বিল জরুরি ভিত্তিতে খনন করে মাছের স্থায়ী অভয়াশ্রম গড়ে তোলা হবে। একইসাথে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার জন্য হিজল-করচ-তমালসহ বিভিন্ন জলজ গাছের চারা রোপণ করা হবে। এছাড়া কুশিয়ারাসহ অন্যান্য ছোট-বড় নদী হাওরসহ সদর উপজেলার কোদালীছড়া ও খাঞ্জার হাওরকে খননের আওতায় এনে কৃষি মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করা হবে।
পর্যটনের বিকাশ
পর্যটনের জন্য পছন্দের একটি জেলা মৌলভীবাজার। তাই জেলা শহরকে প্রাধান্য দিয়ে গড়ে তোলা হবে নতুন নতুন পর্যটন কেন্দ্র। একইসাথে মৌলভীবাজার সদর ও রাজনগরে পর্যটকদের জন্য তৈরি করা হবে ইকো রিসোর্ট ও ইকো কটেজ। মনু নদকে দখল-দূষণ থেকে রক্ষা করে শহর অংশের দু’পারকে আধুনিকীকরণ করা হবে। উন্নয়নের সকল কর্মযজ্ঞকে একত্র করে এই এলাকায় হাওরকেন্দ্রিক পর্যটনের বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। এতে করে বাঁচবে প্রাণিকূল, অগ্রসর হবে হাওরকেন্দ্রিক মানুষের জীবন ও অর্থনীতি। বর্ষিজোড়া ইকোপার্ক, বেরি লেক, অন্তেহরী, মাথিউরা, মনু তীর, কুশিয়ারা তীরকে পর্যটন শিল্প বিকাশে অধিক গুরুত্ব দেব। সম্ভাব্য নতুন নতুন স্থানকে পর্যটনকেন্দ্রে পরিণত করবো। ঐতিহাসিক বাড়ি, স্থান, স্থাপনা, দীঘি সংরক্ষণ ও সৌন্দর্য বর্ধন করা হবে। সার্বিকভাবে মৌলভীবাজার রাজনগরকে পর্যটনবান্ধব করে গড়ে তোলা হবে। আমাদের এই অ লের প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় ছিল, কিন্তু অধিক পরিমাণে পাহাড়-টিলা, গাছ, বনভূমি ধ্বংসের ফলে প্রাকৃতিক ভারসাম্য হুমকির মুখে। আপনারা লক্ষ্য করবেন শীতের সময় শীত নেই, বর্ষার সময় বৃষ্টি নেই। প্রাণ-প্রকৃতি ও পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে প্রয়োজন প্রচুর বনায়ন। এজন্য কোনো জায়গা খালি না রেখে প্রচুর পরিমাণে ফলজ, বনজ ও ঔষধি গাছ রোপণ করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
চা শ্রমিকদের জীবন মান-উন্নয়ন
চা শ্রমিক ভাই-বোনদের জীবনমান যেমন উন্নত করতে হবে, তেমনি চা বাগান ও চা বাগানের লেক ঘিরে পর্যটকদের আকর্ষণ বৃদ্ধি করতে হবে। চা বাগানের লেকের সৌন্দর্য, লেকে ফোটা পদ্ম-শাপলা বিভিন্ন জাতের দেশি বিদেশি পাখির কলকাকলীতে মুগ্ধ হবেন ভ্রমণপিপাসুরা। চা শ্রমিকদের মৌলিক অধিকার [খাদ্য, স্বাস্থ্য, চিকিৎসা, বাসস্থান, বস্ত্র] নিশ্চিতের পাশাপাশি তাদেরকে উন্নত জীবন দিতে কাজ করে যাব গুরুত্ব দিয়ে। জননেত্রী শেখ হাসিনা চা শ্রমিকদের জন্য আমাকে বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন তাই তাদেরকে গুরুত্ব দেওয়া হবে আলাদাভাবে।
প্রাণ-প্রকৃতি রক্ষা
পাহাড়-টিলা, গাছ-গাছালি আমাদের প্রাকৃতিক সম্পদ। অবাধে গাছ কাটা পাহাড়-টিলা কাটা বন্ধ করা হবে, রক্ষা করা হবে আমাদের বনভূমি। পাশাপাশি পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমোদনবিহীন সব ধরণের কাজ ও প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হবে। কোনো উন্নয়ন কাজ যেনো পরিবেশ বিরোধী না হয় তাই সব প্রকল্পের শুরুতেই পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমোদনকে গুরুত্ব দেওয়া হবে। আমাদের মাস্টারপ্লানে জাতীয় পর্যায় থেকে পরিবেশ বিশেষজ্ঞ ও গবেষকদের যুক্ত করে তাদের মতামত নেওয়া হবে। বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল রক্ষা ও সৃষ্টিতে বনবিভাগকে শক্তিশালী করা হবে এবং জনসচেতনতার জন্য মাস্টারপ্লান গ্রহণ করা হবে।
নারী জাগরণ ও নারীর ক্ষমতায়ন
জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নারী জাগরণের ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে আজ নারীরা অধিষ্ঠিত। আমাদের এই অ লে নারীদের অগ্রসর করার লক্ষ্যে বিভিন্ন সচেতনতামূলক কার্যক্রম ও সেমিনার করা হবে। তাদের চাকরি ব্যবসাসহ সবক্ষেত্রে সহযোগিতা ও প্রণোদনা দেওয়া হবে। নারী নির্যাতন, যৌন-হয়রানি, যৌতুক, বাল্যবিবাহ বন্ধসহ নানা বাস্তবমুখী উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
নতুন নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি ও সহযোগিতা
নারী উদ্যোক্তা ও বিভিন্ন ধরণের খামারিরা পাবেন নানা ধরণের সহযোগিতা। গ্রামে গ্রামে গড়ে তুলতে হবে পণ্য উৎপাদনের ব্যবস্থা ও ছোট ছোট খামার। এজন্য তাদের যথাযথ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। তাদের উৎপাদিত পণ্যের প্রসার ঘটানোর জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। শীতলপাটি, নকশীকাঁথা, কুটিরশিল্প ও মৃৎ শিল্পের অতীত ঐতিহ্য আবার ফিরিয়ে নিয়ে আসতে সচেষ্ট থাকবো। টাকার অভাবে কেউ যেন উদ্যোক্তা হওয়ার যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও পিছিয়ে না পড়ে তার জন্য আলাদা তহবিল গঠন করা হবে। তবে প্রান্তিক পর্যায়ে আমি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিব। বিশেষ করে কৃষি, মৎস্য, পোল্ট্রি ও ডেইরি ফার্ম ইত্যাদি কাজে উদ্যোক্তাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। কেননা, তাদের অগ্রসর করা মানে গ্রামীণ অর্থনীতি ভীত মজবুত হওয়া। তাদের চাহিদা মাফিক সব ধরনের সুযোগ সুবিধা তারা পাবেন। আমাদের অনেক পতিত জমি খালি পড়ে থাকে এগুলোকে কাজে লাগানোÑ বেশি করে সবজি ও অন্যান্য চাষাবাদ করাÑ বেশি বেশি করে হাঁস মোরগ লালন পালনের উপর গুরুত্বারোপÑ প্রত্যেক পুকুরে মাছের চাষ ইত্যাদি কাজে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
খেলাধুলা ও সাংস্কৃতি চর্চা
সম্প্রতি শারীরিক খেলাধুলা প্রায় নিশ্চিহ্ন হওয়ার পথে। মাঠে মাঠে খেলাধুলা না থাকায় তরুণ ও যুবসমাজ বিপথে চালিত হচ্ছে। প্রত্যেক এলাকায় খেলার মাঠের সংস্কার ও নতুন মাঠ তৈরিতে অধিক গুরুত্ব দেয়া হবে। খেলাধুলা ও বৈকালিক বিনোদনের মাধ্যমে পারষ্পরিক সৌহার্দ্য আন্তরিকতা ও নেতৃত্ব গড়ে ওঠে। তাছাড়া শিশু-কিশোরদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ ঘটে যা আজকের বাস্তবতায় খুরই দরকারি। শিল্পকলা একাডেমি, শিশু একাডেমি, পাবলিক লাইব্রেরি, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, ক্রীড়া পরিষদ এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও গতিশীল ও যুগোপযোগী করার ব্যাপারে আমার উদ্যোগ থাকবে। শিল্প-সাহিত্য ও সংস্কৃতির বিকাশে নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ ও পৃষ্ঠপোষকতা করা হবে। প্রয়োজনে অডিটোরিয়াম ও মুক্তম তৈরিসহ বিভিন্ন ধরণের উন্নয়ন ও ইতিবাচক কর্মযজ্ঞ সারা বছর চলমান রাখা হবে। শিশু-কিশোরদের সর্বোচ্চ গুরুত্ব প্রদান করা হবে। তাদের প্রতিভা বিকাশ, শারীরিক ও মানসিক গড়নের লক্ষ্য আধুনিক ও বিজ্ঞানসম্মত উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। একই সাথে মৌলভীবাজার সদর ও রাজনগরে শিশুদের বিনোদনের জন্য শিশু পার্ক নেই। এই দুটি উপজেলায় শিশু পার্ক প্রতিষ্ঠা করা হবে।
প্রশিক্ষণ সেন্টার প্রতিষ্ঠা, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও প্রবাসীদের আয় বৃদ্ধি
বেকারত্ব দূরীকরণের লক্ষ্যে প্রশিণের মাধ্যমে তাদেরকে দক্ষ ও যোগ্য করে গড়ে তুলে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে। আইসিটি প্রশিক্ষণ সেন্টারের মাধ্যমে তথ্য প্রযুক্তিতে দক্ষ জনবল তৈরি করা হবে। আমাদের ভাই-বোন ও ছেলেমেয়েরা মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে যান লক্ষ লক্ষ টাকা খবচ করে, কিন্তু দক্ষতা না থাকায় মাসে ২৫Ñ৩০ হাজার টাকার বেশি আয় করতে পারেন না। যা এই সময়ের জন্য যথেষ্ট না। আমার লক্ষ্য নিজস্ব অর্থায়নে একটি প্রশিক্ষণ সেন্টার প্রতিষ্ঠা করে বিদেশ গমনেচ্ছুদের আধুনিক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ জনশক্তি হিসেবে তৈরি করে দেশের বাইরে পাঠানো। এতে তারা আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সক্ষম হবে এবং প্রতি মাসে ৮০ থেকে ১ লক্ষ টাকা বা তারও বেশি আয় করতে পারবে। এতে পরিবারে স্বচ্ছলতা আসবে এবং সবার মুখে হাসি ফুটবে। প্রবাসীদের জমিজমা নিয়ে অনেক বিরোধ থাকে। প্রায়ই তারা বিচারহীনতার শিকার হন। এমন কি আর্থিক প্রয়োজনে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকও অনেক সময় এগিয়ে আসে না। এসব বিষয় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সুরাহা করা হবে।
সবার জন্য সমান অধিকার
সকল নাগরিক আমার দৃষ্টিতে সমান হবেন। ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের জমি, বসতভিটা, উপাসনালয়, বনা ল, জলাভূমি ও অন্যান্য সম্পদের সুরক্ষার ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হবে। সকল ধর্ম-বর্ণের মানুষ সমান গুরুত্ব পাবেন। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জমি ও বন এলাকায় অধিকার সংরক্ষণের জন্য এবং ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জনগণকে সমাজের ও উন্নয়নের মূল স্রোতে আনার জন্য সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিসহ বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে। অনগ্রসর ও অনুন্নত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও চা-শ্রমিকদের সন্তানদের শিক্ষা ও চাকরি ক্ষেত্রে বিশেষ কোটা এবং সুযোগ-সুবিধা অব্যাহত আছে, আগামীতে এ সুযোগ বৃদ্ধি করা হবে। ক্ষমতার অপব্যবহার, স্বজনপ্রীতি, পেশী শক্তির দৌরাত্ম ও দুর্বিত্তায়ন নির্মূলে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের প্রতি বিশেষ দৃষ্টি
আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে যারা জীবন বাজি রেখে স্বাধীনতার লাল সূর্য ছিনিয়ে এনেছেন তাঁরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। কিন্তু অনেক মুক্তিযোদ্ধা আছেন যারা অস্বচ্ছল এবং বিভিন্ন্ভাবে সমাজে অবহেলার শিকার। যে স্বপ্নকে সামনে রেখে তারা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন সেই স্বপ্নের সমাজ প্রতিষ্ঠা করা অত্যন্ত জরুরি। মুক্তিযোদ্ধাগণের ত্যাগ ও স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে আমি নিরলসভাবে কাজ করে যাবো। এছাড়া অনেক শহীদ পরিবার আছেন যারা নানা সমস্যায় জর্জরিত তাদের সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধির জন্য আমার চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
দুর্নীতি প্রতিরোধ
আমি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলে আমার উন্নয়ন কাজের হিসাব সকল নাগরিককে অবগত করে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করবো। আমার কাছে কোনো ধরণের অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি ঠাঁই পাবে না। সরকারি অফিসগুলোতে দুর্নীতি ধরা পড়লে সাথে সাথে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। প্রয়োজনে আপনাদের সাথে নিয়ে দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলবো। এই কাজে সাংবাদিক ভাইদের সহযোগিতা নেব এবং মুক্ত সাংবাদিকতার পরিবেশ তৈরিতে সহযোগিতা করব। পাশাপাশি প্রেসকাবের বিষয়ে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।
প্রাণপ্রিয় এলাকাবাসী
আমি আপনাদেরই সন্তান, এই জনপদেই আমার জন্ম, বেড়ে ওঠা শৈশব-কৈশোর লেখাপড়া সবকিছু। মাঝে কিছু সময় লেখাপড়া ও উচ্চচশিক্ষা, পরবর্তীতে ব্যবসায়িক কাজে দেশ বিদেশের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করছিলাম, এখন আমি এলাকার কল্যাণে আপনাদেরই সন্তান হিসেবে আবার ফিরে এসেছি। এই ফিরে আসাটা শুধু দেওয়ার, বিনিময়ে শুধু সহযোগিতা ও ভালবাসা চাই। আপনাদের সুখ-দুঃখের সাথে আমার জীবন ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। মৌলভীবাজার আমার আনন্দ-বেদনা, হাসি-কান্নার মমতামাখা গর্বের জেলা। এই অপরূপ জেলার বাসিন্দা ও সন্তান হিসেবে আমার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি হচ্ছে ঐতিহ্য ও আধুনিকতার সমন্বয়ে অত্যাধুনিক মৌলভীবাজার গড়ে তোলা। এ লক্ষ্যে আমার নিজস্ব চিন্তা চেতনা, স্বপ্ন-ভাবনা ও প্রত্যাশার কাঠামো আপনাদের সমীপে তুলে ধরলাম। আপনাদের সহযোগিতা পেলে তা আরও বাস্তব, প্রায়োগিক জনবান্ধব করে গড়ে তোলা সম্ভব হবে ইনশাআল্লাহ।
পরিশেষে
আমি একান্তভাবে আশা করি, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আগামী ৭ জানুয়ারি ২০২৪ খ্রি. তারিখে মৌলভীবাজার ৩ (মৌলভীবাজার সদর-রাজনগর) আসনে নৌকা প্রতীকে আপনাদের মহামূল্যবান ভোটটি দিয়ে আমাকে আপনাদের সেবা করার সুযোগ দিবেন।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু
মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান
সংসদীয় আসন ২৩৭
মৌলভীবাজার ৩ (মৌলভীবাজার সদর-রাজনগর)