৩ সেপ্টেম্বর দেশের চা শ্রমিকদের সাথে প্রধানমন্ত্রীর ভিডিও কনফারেন্স
- আপডেট সময় ০৪:৪৪:২৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ অগাস্ট ২০২২
- / ৩৪৮ বার পড়া হয়েছে
মৌলভীবাজার২৪ ডেস্কঃ দেশের চা-শ্রমিকদের সাথে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিডিও কনফারেন্স ৩ সেপ্টেম্বর শনিবার।
মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং বিষয়টি নিশ্চিত করে।দৈনিক মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে লাগাতার ১৯ দিনের লাগাতার আন্দোলন শেষে শনিবার (২৭ আগস্ট) প্রধানমন্ত্রী নিজ বাসভবনে চা বাগান মালিকদের সাথে বৈঠক করেন। সেদিন আড়াই ঘন্টাব্যাপী মিটিং শেষে প্রধানমন্ত্রী দেশের চা শ্রমিকদের মজুরী ১২০ টাকা থেকেও বাড়িয়ে ১৭০ টাকা নির্ধারণ করে দেন।
পাশাপাশি সেদিন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমেদ কায়কাউয়াস গণমাধ্যম কর্মীদের ব্রিফিংকালে শিগগির প্রধানমন্ত্রী দেশের চা শ্রমিকদের সাথে ভিডিও কনফারেন্স করবেন বলে জানিয়েছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় এই ভিডিও কনফারেন্সের আয়োজন করা হচ্ছে।
মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষ অথবা শ্রীমঙ্গল বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের সভাকক্ষে এই ভিডিও কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
জানা গেছে দেশের চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের কথা সরাসরি শুনতে চান। যার আলোকে এই প্রোগ্রাম সাজানো হচ্ছে।
এদিকে ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী তাদের কথা শুনবেন এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে মঙ্গলবার দুপুরের পর থেকে চা শ্রমিকদের আনন্দের শেষ নেই। চা শ্রমিকদের একমাত্র রেজিস্টার্ড সংগঠন বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন তাদের প্রস্তুতি শুরু করেছে।
বিশেষ করে ক্যাজুয়াল চা শ্রমিকদের সুযোগ সুবিধা বাড়ানো, চাকুরী স্থায়ী করনে জটিলতা নিরসন চা শ্রমিকদের স্থায়ী বাসস্থান, নারী চা শ্রমিকদের মাতৃত্বজনিত ছুটি বাড়ানো, সকল চা শ্রমিকের ক্যাজুয়াল লিভ চালু, চা শ্রমিকদের ৫ টি গুরুত্বপূর্ণ দাবির বিষয়েও প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চান শ্রমিক নেতারা।
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নিপেন পাল বলেন আমরা আগামী বৃহস্পতিবার সভা আহবান করেছি। চা শ্রমিক ইউনিয়নের শ্রীমঙ্গল কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বেলা ১১ টায় এই সভা আহবান করা হয়েছে। যেহেতু চাইলেই তো আর সবসময় একজন প্রধানমন্ত্রীকে পাওয়া যাবে না। তাই আমাদের দাবিগুলো যাতে গোছালো ভাবে উপস্থাপন করতে পারি সে লক্ষণীয় এই সভা আহবান করা হয়েছে। সভায় চা শ্রমিক ইউনিউনের সাধারণ সম্পাদক বলেন কেন্দ্রীয় কমিটির সকল নেতৃবৃন্দ ছাড়াও ৯ টি ভ্যালি থেকে সভাপতি সহ আরও ৩ জন করে প্রতিনিধি অংশগ্রহণ নেবেন। সেখানে বিস্তারিত আলাপ করে কে কে প্রধানমন্ত্রীর উদ্দ্যেশ বক্তব্য রাখবেন, কারা কারা সভায় যাবেন সবকিছু চূড়ান্ত করা হবে।
তিনি বলেন, দেশের চা বাগানগুলোতে চা জনগোষ্ঠীর ৯-১০ লাখ লোক বসবাস করে। তারা এখনো অনেক বৈষম্যের শিকার । প্রথমত চা শ্রমিকদের স্থায়ী বসতভিটা ঘরবাড়ি নেই। শতাধিক বছর বসবাসের পরও ভুমির মালিকানা দেওয়া হয়না । নারী চা শ্রমিকেরা অন্যান্য সেক্টরের মতো মাতৃত্ত্বজনিত (৬ মাস)ছুটি পায় না ।ক্যাজুয়াল লিভ নেই।
তিনি আরও বলেন, দেশের চা বাগানলোতে ৮০-৮৫টি জাতি গোষ্ঠীর নাগরিকদের বসবাস।তাদের প্রত্যেকের আলাদা আলাদা ভাষা ও সংস্কৃতি রয়েছে। কিন্ত মাত্র ১০-১৫ টি জাতি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর স্বীকৃতি পেয়েছে। অন্যরা পায়নি।
নিপেন পাল বলেন, শ্রম আইনের ৩২ ধারা অনুযায়ী অবসরে যাওয়ার পর চা শ্রমিকদের বাসস্থান ছেড়ে দিতে হয়। এছাড়া চা শ্রমিকের সন্তানেরা পড়ালেখা বা সরকারি চাকুরীর ক্ষেত্রে কোনো কোটা সুবিধা পায় না। তাই আমাদের দাবি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মতো আনুপাতিক হারে চা শ্রমিকদের জন্য সকল সেক্টরে কোটা সুবিধা চালু করা ।সর্বোপরি যতদিন পর্যন্ত মহান জাতীয় সংসদে আনুপাতিক হারে চা শ্রমিক জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব না যাবে ততদিন এদেশের চা শ্রমিকদের সমস্যাগুলো পুরোপুরি সমাধান হবে না।
তিনি বলেন, যেহেতু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের সাথে কথা বলবেন আমরা এই দাবিগুলো উনার কাছে তুলে ধরার প্রস্তুতি নিচ্ছি।
উল্লেখ্য দেশের ৭৩ টি ফাঁড়ি বাগানসহ ২৪১ টি চা বাগান নিয়ে গঠিত ৭ টি ভ্যালিতে বসবাসরত চা জনগোষ্ঠীর নাগরিক অন্তত ৯-১০ লাখ হবে। শুধু ভোটার হবে ৪-৫ লাখ। অথচ চা বাগানগুলোতে কর্মরত স্থায়ী শ্রমিকের সংখ্যা এক লাখের মতো। আরও ৪০-৫০ হাজার হবে ক্যাজুয়াল শ্রমিক কাজ করছেন বাগানগুলোতে । এই ক্যাজুয়াল শ্রমিকেরা শুধু দৈনিক মজুরি ব্যতিত কোনো সুযোগ সুবিধা পায় না। প্রধানমন্ত্রী মজুরি নির্ধারণ করে দেওয়ার পর একজন স্থায়ী শ্রমিক অন্যান্য সুযোগ সুবিধাসহ ৩ টাকার মতো পেলেও ক্যাজুয়াল শ্রমিকেরা পাবে শুধু ১৭০ টাকা মজুরি।