ঢাকা ০৬:৫৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আনারসের বাম্পার ফলন, হিমাগার না থাকায় খতিগ্রস্ত চাষি

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৫:৩২:১১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ মার্চ ২০২৩
  • / ৫১০ বার পড়া হয়েছে

শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধিঃ মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের চায়ের পরেই রয়েছে আনারসের খ্যাতি সারা দেশে। জেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় সারাবছরই কমবেশি আনারস পৌছে যায়। আর এবার দেশজোড়া খ্যাতি সেই আনারসের এবার বাম্পার ফলন হয়েছে বলে জানিয়েছেন চাষি ও কৃষি বিভাগ।

দেশে মূলত সিলেট, মৌলভীবাজার, টাঙ্গাইল, চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামে ব্যাপক আকারে আনারস চাষ হয়।

শ্রীমঙ্গলে উৎপাদিত আনারস দেশখ্যাত। রসে ভরপুর সুস্বাদু শ্রীমঙ্গলের আনারসের চাহিদা রয়েছে সারা দেশে। উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানায়, পাহাড়ি উঁচু-নিচু টিলায় ষাটের দশক থেকে আনারস চাষ শুরু হয়। এখানকার উষ্ণ ও আদ্র জলবায়ু আনারস চাষের জন্য খুবই উপযোগী। উপজেলার মোহাজেরাবাদ, বিষামণি, হোসেনাবাদ, বালিশিরা, ডলুছড়া,সাতগাঁও, নন্দরানী ও মাইজদীর পাহাড়ি এলাকার প্রায় ৩১০ হেক্টর জমিতে আনারসের চাষ হয়েছে। উপজেলার বিষামণি এলাকার আনারস বাগান মালিক বিল্লাল মিয়া জানান, এবার তার ফলন ভালো হওয়ায় একটু আগেই আনারস গুলো উত্তোলন করে বিক্রি করেছেন তিনি। নানা প্রতিক‚লতার কারণে দিন দিন আনারস চাষ কমে যাচ্ছে। আনারসের পরিবর্তে চাষিরা এখন লেবু চাষের দিকে বেশি ঝুঁকে পড়ছেন।

শ্রীমঙ্গলের মাটি,আবহাওয়া ও জলবায়ু আনারস চাষের বিশেষ উপযোগী হওয়ায় এখানে উঁচুনিচু পাহাড়ি টিলায় প্রচুর আনারসের চাষ হয়। বেগুনবাড়ী আনারস বাগান মালিক ইরেশ পাল জানান, আগাম বৃষ্টি হওয়াতে এবার আনারসের ফলন খুব ভালো হয়েছে। বৃষ্টির পানি পেয়ে আনারসের ফলন ভালো হওয়াদে আমরা চাষিরা অনেক খুশি। আনারস চাষিরা অভিযোক করে জানান, আনারস সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় পঁচনশীল এ ফল যখন একসঙ্গে পাকতে শুরু করে তখন কৃষকদের নাম মাত্র মূল্যে অনেক সময় ফল বিক্রি করে দিতে হয়।

এছাড়াও অনেক আনারস পঁেচ নষ্ট হয়। আনারস সংরক্ষণের জন্য শ্রীমঙ্গলে একটি হিমাগার স্থাপন জরুরী। জমির উব্রতা হ্রাস, সার ও চারার দাম বৃদ্ধি, শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি- সব মিলিয়ে আনারসের উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে অন্যাান্য বছরের তুলনায় বেশি। তবুও তারা শ্রীমঙ্গলের ঐতিহ্যবাহী আনারসের আবাদ ধরে রাখার চেষ্টা করছেন।

শ্রীমঙ্গল উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তা উজ্জল সূত্রধর জানান, শ্রীমঙ্গলে এবার ৩১০ হেক্টর জমিতে হানি কুইন ও জায়ান্ট কিউ দুই ধরনের আনারসের চাষ বেশি হয়েছে। আমরা এর উৎপাদন লক্ষমাত্রা নির্ধারন করেছি।

তিনি আরো জানান, আনারসের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য চাষিদের বিভিন্ন ধরনের সহযোগীতা ও প্রশিক্ষণ কৃষি অফিস থেকে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও অনেক কৃষক আমাদের কাছে অভিযোক করেছেন যে আনারস পঁেচ নষ্ট হয়ে তারা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। আনারস সংরক্ষণের জন্য শ্রীমঙ্গলে একটি হিমাগার স্থাপন জরুরী। কৃষকদের আমরা বলেছি শ্রীমঙ্গল উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর থেকে মন্ত্রনালয়ে চিঠি পাঠিয়েছি শ্রীমঙ্গলে একটি হিমাগার স্থাপনের জন্য।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আনারসের বাম্পার ফলন, হিমাগার না থাকায় খতিগ্রস্ত চাষি

আপডেট সময় ০৫:৩২:১১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ মার্চ ২০২৩

শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধিঃ মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের চায়ের পরেই রয়েছে আনারসের খ্যাতি সারা দেশে। জেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় সারাবছরই কমবেশি আনারস পৌছে যায়। আর এবার দেশজোড়া খ্যাতি সেই আনারসের এবার বাম্পার ফলন হয়েছে বলে জানিয়েছেন চাষি ও কৃষি বিভাগ।

দেশে মূলত সিলেট, মৌলভীবাজার, টাঙ্গাইল, চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামে ব্যাপক আকারে আনারস চাষ হয়।

শ্রীমঙ্গলে উৎপাদিত আনারস দেশখ্যাত। রসে ভরপুর সুস্বাদু শ্রীমঙ্গলের আনারসের চাহিদা রয়েছে সারা দেশে। উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানায়, পাহাড়ি উঁচু-নিচু টিলায় ষাটের দশক থেকে আনারস চাষ শুরু হয়। এখানকার উষ্ণ ও আদ্র জলবায়ু আনারস চাষের জন্য খুবই উপযোগী। উপজেলার মোহাজেরাবাদ, বিষামণি, হোসেনাবাদ, বালিশিরা, ডলুছড়া,সাতগাঁও, নন্দরানী ও মাইজদীর পাহাড়ি এলাকার প্রায় ৩১০ হেক্টর জমিতে আনারসের চাষ হয়েছে। উপজেলার বিষামণি এলাকার আনারস বাগান মালিক বিল্লাল মিয়া জানান, এবার তার ফলন ভালো হওয়ায় একটু আগেই আনারস গুলো উত্তোলন করে বিক্রি করেছেন তিনি। নানা প্রতিক‚লতার কারণে দিন দিন আনারস চাষ কমে যাচ্ছে। আনারসের পরিবর্তে চাষিরা এখন লেবু চাষের দিকে বেশি ঝুঁকে পড়ছেন।

শ্রীমঙ্গলের মাটি,আবহাওয়া ও জলবায়ু আনারস চাষের বিশেষ উপযোগী হওয়ায় এখানে উঁচুনিচু পাহাড়ি টিলায় প্রচুর আনারসের চাষ হয়। বেগুনবাড়ী আনারস বাগান মালিক ইরেশ পাল জানান, আগাম বৃষ্টি হওয়াতে এবার আনারসের ফলন খুব ভালো হয়েছে। বৃষ্টির পানি পেয়ে আনারসের ফলন ভালো হওয়াদে আমরা চাষিরা অনেক খুশি। আনারস চাষিরা অভিযোক করে জানান, আনারস সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় পঁচনশীল এ ফল যখন একসঙ্গে পাকতে শুরু করে তখন কৃষকদের নাম মাত্র মূল্যে অনেক সময় ফল বিক্রি করে দিতে হয়।

এছাড়াও অনেক আনারস পঁেচ নষ্ট হয়। আনারস সংরক্ষণের জন্য শ্রীমঙ্গলে একটি হিমাগার স্থাপন জরুরী। জমির উব্রতা হ্রাস, সার ও চারার দাম বৃদ্ধি, শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি- সব মিলিয়ে আনারসের উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে অন্যাান্য বছরের তুলনায় বেশি। তবুও তারা শ্রীমঙ্গলের ঐতিহ্যবাহী আনারসের আবাদ ধরে রাখার চেষ্টা করছেন।

শ্রীমঙ্গল উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তা উজ্জল সূত্রধর জানান, শ্রীমঙ্গলে এবার ৩১০ হেক্টর জমিতে হানি কুইন ও জায়ান্ট কিউ দুই ধরনের আনারসের চাষ বেশি হয়েছে। আমরা এর উৎপাদন লক্ষমাত্রা নির্ধারন করেছি।

তিনি আরো জানান, আনারসের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য চাষিদের বিভিন্ন ধরনের সহযোগীতা ও প্রশিক্ষণ কৃষি অফিস থেকে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও অনেক কৃষক আমাদের কাছে অভিযোক করেছেন যে আনারস পঁেচ নষ্ট হয়ে তারা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। আনারস সংরক্ষণের জন্য শ্রীমঙ্গলে একটি হিমাগার স্থাপন জরুরী। কৃষকদের আমরা বলেছি শ্রীমঙ্গল উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর থেকে মন্ত্রনালয়ে চিঠি পাঠিয়েছি শ্রীমঙ্গলে একটি হিমাগার স্থাপনের জন্য।