ঢাকা ০৩:৪২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঈদ মৌসুমে শ্রীমঙ্গল উপজেলায় পর্যটনে খড়া

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৭:৪০:১৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৩
  • / ৩৬৪ বার পড়া হয়েছে

শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধিঃ  ঈদ মৌসুমে দেশের পর্যটন শিল্প সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো যখন বিশাল প্রস্তুতি নেয়। দেশ জুড়ে থাকে নানা আয়োজন আর পর্যটক বরনের বিশাল প্রস্তুতি। কিন্ত এই বিশাল প্রস্তুতি থাকার পরেও যখন পর্যটকরা নানাবিধ কারনে ভ্রমনে নিরুৎসাহিত হন তখন পর্যটন শিল্পের ব্যাবসায়ীদের চরম হতাশা কাজ করে। এবার ঈদ মৌসুমে মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার ৫৯ টি হোটেল রিসোর্টে পর্যটকদের নেই আগাম বুকিং। প্রতিবছর উপজেলার হোটেল রিসোর্ট কটেজগুলোতে যেখানে ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ আগাম বুকিং হয় এবছর সেখানে আগাম বুকিং ৩০ শতাংশ। পর্যটন শিল্প সংশ্লিষ্ট ব্যাবসায়ীরা মনে করছেন অতিরিক্ত গরমে পর্যটকরা বেড়াতে আসতে নিরুৎসাহিত হচ্ছেন। সেই সাথে পর্যটনে নতুন নতুন সংযোজন কিংবা সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি না হওয়াও একটি বড় কারন।

ট্যুর অপারেটর এবং ট্যুর গাইড তাপস দাশ বলেন, আমরা বহুদিন থেকেই এ শিল্পে কাজ করছি, কিন্ত করোনা যেভাবে পর্যটন শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, তারপর শুধুই ঘুরে দাঁড়ানোর প্রাণপণ লড়াই। কিন্ত ইতিমধ্যেই ট্যুরিস্ট গাইড অনেকেই এই পেশা ছেড়ে দিয়েছেন। আর এই ভরা মৌসুমে যেভাবে পর্যটক শূন্য হচ্ছে এখানকার পর্যটন কেন্দ্র গুলো। আমরা এর ভবিষ্যত নিয়ে শঙ্কিত। তিনি আরো বলেন ৯৬ সালের পরথেকে দেশি বিদেশি পর্যটকদের আনাগোনা বৃদ্ধি পায় এ উপজেলায়, কিন্ত দীর্ঘদিন পর্যটন কেন্দ্র গুলোর সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি না হওয়া এবং নানাবিধ জটিলতায় এখানে আসতে পর্যটকরা উৎসাহ হারাচ্ছেন।

শ্রীমঙ্গল পর্যটন শিল্প সংশ্লিষ্ট হোটেল গ্রীনভিউ এর পরিচালক মোঃ মিছবা উদ্দিন বলেন, আমরা যারা এখানে বিনিয়োগ করেছি আমাদের অনেকেরই রয়েছে ব্যাংক লোন। কিন্ত আমরা একটি স্বপ্ন নিয়েই এ ব্যাবসায় যুক্ত হয়েছি, কিন্ত এখানকার পর্যটন শিল্পে পর্যটকদের আগ্রহ যেভাবে হারাচ্ছে এভাবে চলতে থাকলে আমাদের ভবিষ্যত কি হবে সেটাই আমাদের চিন্তার কারন। আর দেশের প্রশাসন আর সরকার যদি এই শিল্পের জন্য নানাবিধ উদ্যোগ গ্রহণ আর এই শিল্প কেন্দ্রিক স্থানগুলোকে ঢেলে সাজানো না হয় তাহলে এই জেলায় পর্যটন শিল্প স্থবির হয়ে পড়বে ক্ষতিগ্রস্ত হবে এখানকার শত শত ব্যাবসায়ীরা আর সরকার হারাবে রাজস্ব।

শ্রীমঙ্গল পর্যটন সেবা সংস্থার সহ সভাপতি সেলিম আহমেদ জানান, ঈদ মৌসুম মানে পর্যটন শিল্পের জন্য বিশাল প্রস্তুতি, আমরা আমাদের প্রতিষ্ঠানে নিত্য নতুন সংযোজন করেছি সেই সাথে রয়েছে পর্যটক বরনের নানা আয়োজন। কিন্ত প্রতিবছর যেখানে অগ্রিম বুকিং হয় শতভাগ সেখানে এবার ৩০ শতাংশ এর নিচে। এতে করে চরম লোকশানের মুখে পড়বে এখানকার পর্যটন শিল্প ব্যাবসায়ীরা। করোনার ক্ষতিগ্রস্ত এই শিল্প এখনও পরিপূর্ণ ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি তারপর আবার আবহাওয়া পরিস্থিতি অতিরিক্ত গরম এখানকার পর্যটন পরিস্থিতিকে ভাবিয়ে তুলেছে। এখন দেশের সরকারি উদ্যোগ আর সহায়তার মাধ্যমেই বাঁচাতে হবে এই শিল্পের সাথে জড়িত ব্যাবসায়ীদের।

ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রদীপ কুমার চক্রবতী ( ট্যুরিস্ট পুলিশ ) বলেন, ঈদে মৌলভীবাজার জেলায় একটা বিশাল সংখ্যক পর্যটক বেড়াতে আসেন, তাই পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে আমাদের ট্যুরিস্ট পুলিশের পক্ষ থেকে একটি কুইক রেসপন্স টিম তৈরি করা হয়েছে, সেই সাথে বাদ দেওয়া হয়েছে কর্মকর্তাগণের ছুটিও। আমরা সার্বক্ষণিক পর্যটক নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে কাজ করছি, সেই সাথে ঈদের জন্য রয়েছে আমাদের বাড়তি প্রস্তুতিও।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

ঈদ মৌসুমে শ্রীমঙ্গল উপজেলায় পর্যটনে খড়া

আপডেট সময় ০৭:৪০:১৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৩

শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধিঃ  ঈদ মৌসুমে দেশের পর্যটন শিল্প সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো যখন বিশাল প্রস্তুতি নেয়। দেশ জুড়ে থাকে নানা আয়োজন আর পর্যটক বরনের বিশাল প্রস্তুতি। কিন্ত এই বিশাল প্রস্তুতি থাকার পরেও যখন পর্যটকরা নানাবিধ কারনে ভ্রমনে নিরুৎসাহিত হন তখন পর্যটন শিল্পের ব্যাবসায়ীদের চরম হতাশা কাজ করে। এবার ঈদ মৌসুমে মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার ৫৯ টি হোটেল রিসোর্টে পর্যটকদের নেই আগাম বুকিং। প্রতিবছর উপজেলার হোটেল রিসোর্ট কটেজগুলোতে যেখানে ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ আগাম বুকিং হয় এবছর সেখানে আগাম বুকিং ৩০ শতাংশ। পর্যটন শিল্প সংশ্লিষ্ট ব্যাবসায়ীরা মনে করছেন অতিরিক্ত গরমে পর্যটকরা বেড়াতে আসতে নিরুৎসাহিত হচ্ছেন। সেই সাথে পর্যটনে নতুন নতুন সংযোজন কিংবা সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি না হওয়াও একটি বড় কারন।

ট্যুর অপারেটর এবং ট্যুর গাইড তাপস দাশ বলেন, আমরা বহুদিন থেকেই এ শিল্পে কাজ করছি, কিন্ত করোনা যেভাবে পর্যটন শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, তারপর শুধুই ঘুরে দাঁড়ানোর প্রাণপণ লড়াই। কিন্ত ইতিমধ্যেই ট্যুরিস্ট গাইড অনেকেই এই পেশা ছেড়ে দিয়েছেন। আর এই ভরা মৌসুমে যেভাবে পর্যটক শূন্য হচ্ছে এখানকার পর্যটন কেন্দ্র গুলো। আমরা এর ভবিষ্যত নিয়ে শঙ্কিত। তিনি আরো বলেন ৯৬ সালের পরথেকে দেশি বিদেশি পর্যটকদের আনাগোনা বৃদ্ধি পায় এ উপজেলায়, কিন্ত দীর্ঘদিন পর্যটন কেন্দ্র গুলোর সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি না হওয়া এবং নানাবিধ জটিলতায় এখানে আসতে পর্যটকরা উৎসাহ হারাচ্ছেন।

শ্রীমঙ্গল পর্যটন শিল্প সংশ্লিষ্ট হোটেল গ্রীনভিউ এর পরিচালক মোঃ মিছবা উদ্দিন বলেন, আমরা যারা এখানে বিনিয়োগ করেছি আমাদের অনেকেরই রয়েছে ব্যাংক লোন। কিন্ত আমরা একটি স্বপ্ন নিয়েই এ ব্যাবসায় যুক্ত হয়েছি, কিন্ত এখানকার পর্যটন শিল্পে পর্যটকদের আগ্রহ যেভাবে হারাচ্ছে এভাবে চলতে থাকলে আমাদের ভবিষ্যত কি হবে সেটাই আমাদের চিন্তার কারন। আর দেশের প্রশাসন আর সরকার যদি এই শিল্পের জন্য নানাবিধ উদ্যোগ গ্রহণ আর এই শিল্প কেন্দ্রিক স্থানগুলোকে ঢেলে সাজানো না হয় তাহলে এই জেলায় পর্যটন শিল্প স্থবির হয়ে পড়বে ক্ষতিগ্রস্ত হবে এখানকার শত শত ব্যাবসায়ীরা আর সরকার হারাবে রাজস্ব।

শ্রীমঙ্গল পর্যটন সেবা সংস্থার সহ সভাপতি সেলিম আহমেদ জানান, ঈদ মৌসুম মানে পর্যটন শিল্পের জন্য বিশাল প্রস্তুতি, আমরা আমাদের প্রতিষ্ঠানে নিত্য নতুন সংযোজন করেছি সেই সাথে রয়েছে পর্যটক বরনের নানা আয়োজন। কিন্ত প্রতিবছর যেখানে অগ্রিম বুকিং হয় শতভাগ সেখানে এবার ৩০ শতাংশ এর নিচে। এতে করে চরম লোকশানের মুখে পড়বে এখানকার পর্যটন শিল্প ব্যাবসায়ীরা। করোনার ক্ষতিগ্রস্ত এই শিল্প এখনও পরিপূর্ণ ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি তারপর আবার আবহাওয়া পরিস্থিতি অতিরিক্ত গরম এখানকার পর্যটন পরিস্থিতিকে ভাবিয়ে তুলেছে। এখন দেশের সরকারি উদ্যোগ আর সহায়তার মাধ্যমেই বাঁচাতে হবে এই শিল্পের সাথে জড়িত ব্যাবসায়ীদের।

ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রদীপ কুমার চক্রবতী ( ট্যুরিস্ট পুলিশ ) বলেন, ঈদে মৌলভীবাজার জেলায় একটা বিশাল সংখ্যক পর্যটক বেড়াতে আসেন, তাই পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে আমাদের ট্যুরিস্ট পুলিশের পক্ষ থেকে একটি কুইক রেসপন্স টিম তৈরি করা হয়েছে, সেই সাথে বাদ দেওয়া হয়েছে কর্মকর্তাগণের ছুটিও। আমরা সার্বক্ষণিক পর্যটক নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে কাজ করছি, সেই সাথে ঈদের জন্য রয়েছে আমাদের বাড়তি প্রস্তুতিও।