এ্যাডজুটেন্ট আসাদ মিলন এর মনস্তাত্ত্বিক কলাম

- আপডেট সময় ০৬:৫৫:১৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ মার্চ ২০২৫
- / ৮১ বার পড়া হয়েছে

এ্যাডজুটেন্ট আসাদ মিলন এর মনস্তাত্ত্বিক কলাম
♦️ওয়েট<ওজন<ব্যাক্তিত্ব♦️
নভোচারী সুনিতা উইলিয়াম ও বুচ উইলমোর ৮ দিনের মহাকাশ ভ্রমণের জন্য গিয়েছিল কিন্তু তারা নয় মাস সেখানে অবস্থান করে।এরফলে তারা এক অনন্য অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়। সে অভিজ্ঞতা হচ্ছে তারা নয় মাস মহাশূন্যে ভেসে ছিল কারণ সেখানে মাধ্যাকর্ষণ শক্তি শূন্য ছিল।আমরা জানি কোন বস্তুকে অপর কোন বস্তু যে শক্তিতে আকর্ষণ করে সেই শক্তি হলো মাধ্যাকর্ষণ শক্তি।ভূপৃষ্ঠ থেকে যত উপরে ওঠা যায় একজন ব্যক্তির ওজন পর্যায়ক্রমে কমে গিয়ে শূন্য হয়ে যায়।’আসাদ মিলন কথনে’ আজকের মূল আলোচিত বিষয় হচ্ছে ওয়েট বা ওজন।এতক্ষন সায়েন্টিফিক ভাবে বিষয়টি তুলে ধরলাম কিন্তু ‘আসাদ মিলন কথনের’ উপস্থাপনা হচ্ছে এই ওয়েট বা ওজন ব্যক্তির জন্য সামাজিক সম্পর্ক স্থাপনে কিরুপ প্রযোজ্য তা উপস্থাপন করা।আমরা জানি নিউটনের তৃতীয় সূত্র অনুযায়ী প্রত্যেক ক্রিয়ারই একটি সমান ও বিপরীত প্রতিক্রিয়া আছে তেমনি একজন ব্যক্তির আচরণ প্রতিফলিত হবে যেভাবে তিনি সেভাবে মূল্যায়িত হবেন। একটি ঘটনা উল্লেখ করতে পারি, অনেক আগে এক বন্ধুর সাথে পার্কে বেড়াতে গিয়েছিলাম সে তার গার্লফ্রেন্ডের সাথে দেখা করবে বলে হঠাৎ দুজনের মধ্যে কোন একটি বিষয় নিয়ে বাদানুবাদ শুরু হল। গার্লফ্রেন্ড তাকে বলল তোমার সাথে আমি আর সম্পর্কই রাখবো না,তোমার কোনো ওয়েট নাই।আমি পরবর্তীতে বন্ধুকে বললাম বন্ধু তোর ওজন কত, বন্ধু হেসে বলল ৭৮ কেজি। তাহলে যে তোর গার্লফ্রেন্ড বললো তোর কোন ওয়েট নাই। সে অট্টহাসি দিয়ে বলল, দোস্ত মেয়ে এখন ছাগল বেধে হাতি খুঁজতেছে এজন্য আমাকে একটা অপবাদ দিয়ে সম্পর্ক শেষ করতে যাচ্ছে।মনে হয় হাতির সন্ধান পাইছে।
প্রেমের সম্পর্ক থেকে শুরু করে অন্যান্য সামাজিক সম্পর্কেও ওয়েট বা ওজন পরবর্তীতে যাকে আমরা ব্যক্তিত্ব হিসেবে চিহ্নিত করতে পারি একটা গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখে। সম্পর্ক গড়া এবং সম্পর্ককে মর্যাদার সাথে অগ্রগতি করার জন্য একজন ব্যক্তির ন্যূনতম আচরণগত প্রটোকলকেই ইন জেনারেল সেন্স ওয়েট বা ওজন হিসেবে সমাজে চিহ্নিত করা হয়।ওয়েট বা ওজন একজন ব্যক্তি কিভাবে অর্জন করতে পারে সে বিষয়গুলো যদি আলোচনা করা যায় তাহলে দেখা যাবে ব্যক্তির শিক্ষাগত যোগ্যতা,জ্ঞানের গভীরতা, পারিবারিক শিষ্টাচারের চর্চা ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব গঠনে কাজ করে। এই বিষয়গুলোর অনুপস্থিতি একজন ব্যক্তিকে মর্যাদাপূর্ণভাবে সামাজিক সম্পর্কগুলো চর্চা করতে ব্যাহত করে। তখন সেই ব্যক্তিকে ওয়েট লেস বলা হয়।তবে লেখক হিসেবে আমি ‘আসাদ মিলন কথনে’ যে বিষয়টি গুরুত্ব দিতে চাই তা হলো একজন ব্যক্তির সামাজিক সম্পর্ক রক্ষা ও এগিয়ে নেওয়ার জন্য যেমন ব্যক্তিত্ব চর্চা প্রয়োজন আছে কিন্তু সব বিষয়ে ব্যক্তিত্ব বিষয়টিকে সামনে এনে আমরা যাতে মানব সম্পর্ককে জটিল না করি সে বিষয়ে সচেতন দৃষ্টি রাখা প্রয়োজন। ব্যক্তিত্ব বা ওয়েটের কারণে নিজের প্রাধিকারের জন্য ছাড় না দেওয়ার মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে আবার ব্যক্তিত্ব বা ওজনকেও একেবারে এভয়েড করা যাবে না। সম্পর্কে নিজের প্রভাব সুসংগত করার জন্য ওজন চর্চা প্রয়োজন আছে। যদিও প্রেমের ক্ষেত্রে একটি প্রবাদ আছে সেটি হলো ‘যদি থাকে মনে থাকুক না দেশের কোন কোণে’।আবার, যদি ভালো লাগে নয়নে কি আসে যায় ব্যক্তিত্বের ওজনে। একজন ব্যক্তির মধ্যে যখন ব্যক্তিত্বের জোরালো অনুপস্থিতি থাকে তখন অন্যপক্ষ তাকে খুব বেশি আমলে নিতে চায় না তার কথাকে মূল্যায়ন করতে চায় না। এজন্য ব্যক্তিকে তার কার্যক্রমে সুস্থির হতে হবে।
পরিশেষে ‘আসাদ মিলন কথন’ এর উচ্চারণ,
“যার আছে আকর্ষণীয় ওজন ওয়েট ব্যাক্তিত্ব,
সমাজের সব শ্রেণির মানুষের পাবে সে ভক্তি শ্রদ্ধা আজন্ম”।
লেখক : সার্কেল এ্যাডজুটেন্ট, র্যাব-৫ জয়পুরহাট ক্যাম্প।
