ঢাকা ০৪:৩০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কমলগঞ্জে অর্ধশতাধিক গাছ চুরি

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০১:০০:৪১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২২
  • / ২৯৩ বার পড়া হয়েছে

কমলগঞ্জ প্রতিনিধি: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) বিভিন্ন সড়ক ধারে লাগানো সামাজিক বনায়নের অর্ধশতাধিক মূল্যবান গাছ চুরি হয়েছে। গত দু’তিনদিনে মাধবপুর বাজার থেকে পাত্রখোলা সড়কের পাশ থেকে বড় আকৃতির বারোটি, আদমপুর থেকে নইনারপার সড়কের ধারে সাতটি আকাশমনি ও মেহগনি এবং গত কয়েকমাসে পতনঊষারের নয়াবাজার-চৈত্রঘাট সড়ক থেকে আরও একাধিক গাছ চুরির ঘটনা ঘটেছে।

এতে সরকারের লক্ষাধিক টাকার রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে। তবে মাধবপুর বাজার থেকে পাত্রখোলা সড়ক থেকে কাটা ২০ খণ্ড গাছ উদ্ধার করেছে বনবিভাগ। এবিষয়ে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

প্রত্যক্ষদর্শী রুশম মিয়া, আমান মিয়া, কাসেম আহমদ, শ্রীগোবিন্দপুর চা বাগান পঞ্চায়েত সভাপতি মিলন নায়েক বলেন, মাধবপুর-পাত্রখোলা সড়কের পাশ থেকে গত দু’তিন দিনে একই এলাকার বাবুল পাশী, দ্বিপেন পাশি, সিপেন পাশি, সুজন ভর, রাম নারায়ন ভর বড় বড় সাইজের বারোটি আকাশমনি গাছ কেটে খণ্ডাংশ করে নিয়ে গেছে। বারোটি মূল্যবান গাছের কাঠের মূল্য প্রায় দু’লক্ষাধিক টাকা হবে বলে তারা দাবি করেন। তবে খবর পেয়ে ভানুগাছের একটি স’মিল থেকে বনবিভাগ কয়েক টুকরো কাঠ আটক করেছে।

এদিকে উপজেলার আদমপুর বাজার থেকে নইনারপার বাজার সড়ক ধার থেকে গতকাল শুক্রবার ভোরে আকাশমনি ও মেহগনি প্রজাতির সাতটি বড় সাইজের গাছ কেটে নিয়েছে দুবৃত্তরা। এই সাতটি গাছের বাজার মূল্য প্রায় দু’লক্ষাধিক টাকা হবে বলে স্থানীয়রা জানান। আদমপুর ইউপি চেয়ারম্যান আবদাল হোসেন গাছ চুরির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, গাছ চোরদের উপদ্রব মারাত্মকভাবে বেড়েছে। মূল্যবান গাছ কেটে নেয়ায় পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে এবং সরকারও রাজস্ব বঞ্ছিত হচ্ছে। গত কয়েক সপ্তাহে এই সড়ক থেকে প্রায় ৩০টি গাছ চুরি হয়েছে এবং এ নিয়ে উপজেলা আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায়ও উত্থাপন করা হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।

পতনঊষার ইউপি চেয়ারম্যান অলি আহমদ খান জানান, ইউনিয়নের এলজিইডি’র নয়াবাজার-চৈত্রঘাট সড়ক ধার থেকে গত কয়েক মাসে প্রায় শতাধিক গাছ চুরির ঘটনা ঘটেছে। এ বিষয়ে স্থানীয় শমশেরনগর ফাঁড়ির পুলিশ প্রশাসন ছাড়াও উপজেলা আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় উপস্থাপন করেছি। তারপরও গাছ চুরি রোধ হচ্ছে না বলে তিনি জানান।

এ বিষয়ে কমলগঞ্জ উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী জাহিদুল ইসলাম জানান, সড়ক থেকে গাছ চুরির বিষয়টি খুবই দু:খজনক। তবে বিগত আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় এমপি মহোদয়ের উপস্থিতিতে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছি। তাছাড়া উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকেও অবহিত করেছি।

কমলগঞ্জের রাজকান্দি বনরেঞ্জ এর ফরেস্টার নজরুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে বুধবার ভানুগাছের একটি স’মিল থেকে রাস্তার পাশ থেকে কেটে আনা আকাশমনি গাছের ২০ খণ্ড উদ্ধার করা হয়েছে। গাছগুলো এলজিইডি ও ইউনিয়ন পরিষদের। এব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

এব্যাপারে কমলগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) আব্দুর রাজ্জাক বলেন, রাস্তার পাশে গাছ চুরির বিষয়টি কেউ আমাদের অবহিত করেনি। আমাদের পুলিশ সদস্যরা রাতে নিয়মিত টহল দেয়। পুলিশ আসার পর একটি প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় গাছ চুরি হয়। অথচ এলাকার কেউ আমাদের জানাতে চায় না। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে বলে তিনি জানান।

কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিফাত উদ্দীনের মোবাইল ফোনে কয়েক দফা ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

কমলগঞ্জে অর্ধশতাধিক গাছ চুরি

আপডেট সময় ০১:০০:৪১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২২

কমলগঞ্জ প্রতিনিধি: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) বিভিন্ন সড়ক ধারে লাগানো সামাজিক বনায়নের অর্ধশতাধিক মূল্যবান গাছ চুরি হয়েছে। গত দু’তিনদিনে মাধবপুর বাজার থেকে পাত্রখোলা সড়কের পাশ থেকে বড় আকৃতির বারোটি, আদমপুর থেকে নইনারপার সড়কের ধারে সাতটি আকাশমনি ও মেহগনি এবং গত কয়েকমাসে পতনঊষারের নয়াবাজার-চৈত্রঘাট সড়ক থেকে আরও একাধিক গাছ চুরির ঘটনা ঘটেছে।

এতে সরকারের লক্ষাধিক টাকার রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে। তবে মাধবপুর বাজার থেকে পাত্রখোলা সড়ক থেকে কাটা ২০ খণ্ড গাছ উদ্ধার করেছে বনবিভাগ। এবিষয়ে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

প্রত্যক্ষদর্শী রুশম মিয়া, আমান মিয়া, কাসেম আহমদ, শ্রীগোবিন্দপুর চা বাগান পঞ্চায়েত সভাপতি মিলন নায়েক বলেন, মাধবপুর-পাত্রখোলা সড়কের পাশ থেকে গত দু’তিন দিনে একই এলাকার বাবুল পাশী, দ্বিপেন পাশি, সিপেন পাশি, সুজন ভর, রাম নারায়ন ভর বড় বড় সাইজের বারোটি আকাশমনি গাছ কেটে খণ্ডাংশ করে নিয়ে গেছে। বারোটি মূল্যবান গাছের কাঠের মূল্য প্রায় দু’লক্ষাধিক টাকা হবে বলে তারা দাবি করেন। তবে খবর পেয়ে ভানুগাছের একটি স’মিল থেকে বনবিভাগ কয়েক টুকরো কাঠ আটক করেছে।

এদিকে উপজেলার আদমপুর বাজার থেকে নইনারপার বাজার সড়ক ধার থেকে গতকাল শুক্রবার ভোরে আকাশমনি ও মেহগনি প্রজাতির সাতটি বড় সাইজের গাছ কেটে নিয়েছে দুবৃত্তরা। এই সাতটি গাছের বাজার মূল্য প্রায় দু’লক্ষাধিক টাকা হবে বলে স্থানীয়রা জানান। আদমপুর ইউপি চেয়ারম্যান আবদাল হোসেন গাছ চুরির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, গাছ চোরদের উপদ্রব মারাত্মকভাবে বেড়েছে। মূল্যবান গাছ কেটে নেয়ায় পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে এবং সরকারও রাজস্ব বঞ্ছিত হচ্ছে। গত কয়েক সপ্তাহে এই সড়ক থেকে প্রায় ৩০টি গাছ চুরি হয়েছে এবং এ নিয়ে উপজেলা আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায়ও উত্থাপন করা হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।

পতনঊষার ইউপি চেয়ারম্যান অলি আহমদ খান জানান, ইউনিয়নের এলজিইডি’র নয়াবাজার-চৈত্রঘাট সড়ক ধার থেকে গত কয়েক মাসে প্রায় শতাধিক গাছ চুরির ঘটনা ঘটেছে। এ বিষয়ে স্থানীয় শমশেরনগর ফাঁড়ির পুলিশ প্রশাসন ছাড়াও উপজেলা আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় উপস্থাপন করেছি। তারপরও গাছ চুরি রোধ হচ্ছে না বলে তিনি জানান।

এ বিষয়ে কমলগঞ্জ উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী জাহিদুল ইসলাম জানান, সড়ক থেকে গাছ চুরির বিষয়টি খুবই দু:খজনক। তবে বিগত আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় এমপি মহোদয়ের উপস্থিতিতে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছি। তাছাড়া উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকেও অবহিত করেছি।

কমলগঞ্জের রাজকান্দি বনরেঞ্জ এর ফরেস্টার নজরুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে বুধবার ভানুগাছের একটি স’মিল থেকে রাস্তার পাশ থেকে কেটে আনা আকাশমনি গাছের ২০ খণ্ড উদ্ধার করা হয়েছে। গাছগুলো এলজিইডি ও ইউনিয়ন পরিষদের। এব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

এব্যাপারে কমলগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) আব্দুর রাজ্জাক বলেন, রাস্তার পাশে গাছ চুরির বিষয়টি কেউ আমাদের অবহিত করেনি। আমাদের পুলিশ সদস্যরা রাতে নিয়মিত টহল দেয়। পুলিশ আসার পর একটি প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় গাছ চুরি হয়। অথচ এলাকার কেউ আমাদের জানাতে চায় না। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে বলে তিনি জানান।

কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিফাত উদ্দীনের মোবাইল ফোনে কয়েক দফা ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।