ঢাকা ১০:৫০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কমলগঞ্জে টেণ্ডার ছাড়াই কাজ…নানা অনিয়মের অভিযোগ

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০১:৪৪:২৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১২ অগাস্ট ২০২২
  • / ৩৮৫ বার পড়া হয়েছে

কমলগঞ্জ প্রতিনিধি: কোন ধরণের টেণ্ডার ছাড়াই কমলগঞ্জ উপজেলার হাজী মো: উস্তওয়ার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় শমশেরনগরে কয়েক লক্ষাধিক টাকার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বিদ্যালয়ের দোকান কৌঠা থেকে জামানত গ্রহণ করে উন্নয়ন ও সংস্কারমূলক কাজ করানো হয়। নিম্নমানের এসব কাজে নিজেরাই বিল ভাউচার বানিয়ে ছয়নয় করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও বড় ধরণের উৎকোচের বিনিময়ে জাল সনদে একজন লাইব্রেরিয়ান নিয়োগেরও গুঞ্জন উঠেছে। তবে পূর্বের প্রধান শিক্ষকের সময়ে লাইব্রেরিয়ান নিয়োগ হয়েছে বলে দাবি করেছেন প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান প্রধান শিক্ষক।

জানা যায়, হাজী মো: উস্তওয়ার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, শমশেরনগর এর সম্মুখে ১৩টি দোকান কৌঠা রয়েছে। এই দোকান কৌঠার ভাড়াটিয়ারা ৪০ হাজার টাকা হারে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জামানত দিয়ে ব্যবসা করছিলেন। ২০১৯ সালে মার্কেটের দোকানগুলি সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়। সে সময়ে দশটি দোকান কক্ষের ভাড়াটিয়াদের কাছ থেকে আরও এক লক্ষ ১০ হাজার টাকা হারে, একটি থেকে ৫০ হাজার ও দু’টি কক্ষ থেকে ২ লক্ষ টাকাসহ নতুনভাবে প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা জামানত গ্রহণ করে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এরপর কোন ধরণের টেণ্ডার ছাড়াই প্রায় ১৩ লক্ষাধিক টাকা ব্যয় দেখিয়ে বিদ্যালয় মার্কেটের সংস্কার কাজ করানো হয়। পরে বিভিন্নভাবে কাজের বিল ভাউচার তৈরি করে কমিটিতে সাবমিট করে পার পেয়ে যান। এসব কাজ দেখিয়ে তৎকালীন সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক ফাণ্ডের টাকা থেকে ছয়নয় করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
কমলগঞ্জ এলজিইডি অফিসের প্রাক্তন উপসহকারী প্রকৌশলী মামুন আহমদ বলেন, ১০ লক্ষাধিক টাকার কাজ হলেও টেণ্ডারের মাধ্যমে করার নিয়ম রয়েছে।

বিদ্যালয় মার্কেটের দু’জন ব্যবসায়ী বলেন, ২০১৯ সালে আয়ুব আলী সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর আমাদের কাছ থেকে নতুনভাবে আরও ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা হারে জামানত নেয়া হয়। দু’টি দোকান থেকে ২ লক্ষ টাকা হারে নেয়া হয়েছে। তবে মার্কেটের যে সংস্কার কাজ হয়েছে তা অতি নিম্নমানেরই ছিল।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির দু’জন প্রাক্তন সদস্য জানান, টেণ্ডার ছাড়া এতো টাকার কাজ কোনভাবেই যুক্তিযুক্ত নয়। পূর্বের সভাপতি আয়ুব আলী ও প্রধান শিক্ষকসহ তিন, চারজনের একটি সিন্ডিকেট চক্র টেণ্ডার না দিয়ে ওই কাজ দেখিয়ে ইচ্ছেমতো বিল-ভাউচার তৈরি করে বেশ কিছু টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। তাছাড়া সম্প্রতি সময়েও প্রবাসী দম্পত্তি একটি ভবনের সংস্কার কাজের জন্য ৪ লক্ষ টাকা অনুদান দিয়েছেন। সেখানেও কোন টেণ্ডার ছাড়া তাদের ইচ্ছেমতো কাজ করছেন। এছাড়াও উৎকোচের বিনিময়ে ২০১৩ সালেও একজন লাইব্রেরীয়ান নিয়োগ করা হয়।

অভিযোগ বিষয়ে হাজী মো: উস্তওয়ার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় শমশেরনগর এর প্রধান শিক্ষক নূরে আলম সিদ্দিকী টেণ্ডার ছাড়া কাজের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আগের কাজ পর্যবেক্ষণ কমিটি পরিদর্শন করেছেন। কোথাও কোন অনিয়ম হয়নি। বর্তমানে প্রবাসীর নিজস্ব অর্থায়নে কাজ হচ্ছে। আমি প্রধান শিক্ষক হওয়ার আগেই লাইব্রেরিয়ান নিয়োগ হয়েছে ২০০০ সালে। ভোটার তালিকা নিয়ে অভিভাবকের অভিযোগের প্রেক্ষিতে শিক্ষা কর্মকর্তা তদন্ত করেছেন বলে তিনি মন্তব্য করেন।

এব্যাপারে কমলগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শামছুন্নাহার পারভীন জানান, বিদ্যালয়ে উন্নয়নের জন্য প্রবাসীর অনুদান থেকে কাজ হচ্ছে।
নোট: ছবি সংযুক্ত।

 

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

কমলগঞ্জে টেণ্ডার ছাড়াই কাজ…নানা অনিয়মের অভিযোগ

আপডেট সময় ০১:৪৪:২৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১২ অগাস্ট ২০২২

কমলগঞ্জ প্রতিনিধি: কোন ধরণের টেণ্ডার ছাড়াই কমলগঞ্জ উপজেলার হাজী মো: উস্তওয়ার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় শমশেরনগরে কয়েক লক্ষাধিক টাকার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বিদ্যালয়ের দোকান কৌঠা থেকে জামানত গ্রহণ করে উন্নয়ন ও সংস্কারমূলক কাজ করানো হয়। নিম্নমানের এসব কাজে নিজেরাই বিল ভাউচার বানিয়ে ছয়নয় করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও বড় ধরণের উৎকোচের বিনিময়ে জাল সনদে একজন লাইব্রেরিয়ান নিয়োগেরও গুঞ্জন উঠেছে। তবে পূর্বের প্রধান শিক্ষকের সময়ে লাইব্রেরিয়ান নিয়োগ হয়েছে বলে দাবি করেছেন প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান প্রধান শিক্ষক।

জানা যায়, হাজী মো: উস্তওয়ার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, শমশেরনগর এর সম্মুখে ১৩টি দোকান কৌঠা রয়েছে। এই দোকান কৌঠার ভাড়াটিয়ারা ৪০ হাজার টাকা হারে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জামানত দিয়ে ব্যবসা করছিলেন। ২০১৯ সালে মার্কেটের দোকানগুলি সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়। সে সময়ে দশটি দোকান কক্ষের ভাড়াটিয়াদের কাছ থেকে আরও এক লক্ষ ১০ হাজার টাকা হারে, একটি থেকে ৫০ হাজার ও দু’টি কক্ষ থেকে ২ লক্ষ টাকাসহ নতুনভাবে প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা জামানত গ্রহণ করে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এরপর কোন ধরণের টেণ্ডার ছাড়াই প্রায় ১৩ লক্ষাধিক টাকা ব্যয় দেখিয়ে বিদ্যালয় মার্কেটের সংস্কার কাজ করানো হয়। পরে বিভিন্নভাবে কাজের বিল ভাউচার তৈরি করে কমিটিতে সাবমিট করে পার পেয়ে যান। এসব কাজ দেখিয়ে তৎকালীন সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক ফাণ্ডের টাকা থেকে ছয়নয় করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
কমলগঞ্জ এলজিইডি অফিসের প্রাক্তন উপসহকারী প্রকৌশলী মামুন আহমদ বলেন, ১০ লক্ষাধিক টাকার কাজ হলেও টেণ্ডারের মাধ্যমে করার নিয়ম রয়েছে।

বিদ্যালয় মার্কেটের দু’জন ব্যবসায়ী বলেন, ২০১৯ সালে আয়ুব আলী সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর আমাদের কাছ থেকে নতুনভাবে আরও ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা হারে জামানত নেয়া হয়। দু’টি দোকান থেকে ২ লক্ষ টাকা হারে নেয়া হয়েছে। তবে মার্কেটের যে সংস্কার কাজ হয়েছে তা অতি নিম্নমানেরই ছিল।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির দু’জন প্রাক্তন সদস্য জানান, টেণ্ডার ছাড়া এতো টাকার কাজ কোনভাবেই যুক্তিযুক্ত নয়। পূর্বের সভাপতি আয়ুব আলী ও প্রধান শিক্ষকসহ তিন, চারজনের একটি সিন্ডিকেট চক্র টেণ্ডার না দিয়ে ওই কাজ দেখিয়ে ইচ্ছেমতো বিল-ভাউচার তৈরি করে বেশ কিছু টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। তাছাড়া সম্প্রতি সময়েও প্রবাসী দম্পত্তি একটি ভবনের সংস্কার কাজের জন্য ৪ লক্ষ টাকা অনুদান দিয়েছেন। সেখানেও কোন টেণ্ডার ছাড়া তাদের ইচ্ছেমতো কাজ করছেন। এছাড়াও উৎকোচের বিনিময়ে ২০১৩ সালেও একজন লাইব্রেরীয়ান নিয়োগ করা হয়।

অভিযোগ বিষয়ে হাজী মো: উস্তওয়ার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় শমশেরনগর এর প্রধান শিক্ষক নূরে আলম সিদ্দিকী টেণ্ডার ছাড়া কাজের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আগের কাজ পর্যবেক্ষণ কমিটি পরিদর্শন করেছেন। কোথাও কোন অনিয়ম হয়নি। বর্তমানে প্রবাসীর নিজস্ব অর্থায়নে কাজ হচ্ছে। আমি প্রধান শিক্ষক হওয়ার আগেই লাইব্রেরিয়ান নিয়োগ হয়েছে ২০০০ সালে। ভোটার তালিকা নিয়ে অভিভাবকের অভিযোগের প্রেক্ষিতে শিক্ষা কর্মকর্তা তদন্ত করেছেন বলে তিনি মন্তব্য করেন।

এব্যাপারে কমলগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শামছুন্নাহার পারভীন জানান, বিদ্যালয়ে উন্নয়নের জন্য প্রবাসীর অনুদান থেকে কাজ হচ্ছে।
নোট: ছবি সংযুক্ত।