ঢাকা ০৮:১৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

কোটচাঁদপুর পল্লীতে নিজের জন্য গড়া কবরের উপরে বসবাস করছেন নুর ইসলাম দম্পতি

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৮:০৭:৪৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ জুন ২০২২
  • / ২৩২ বার পড়া হয়েছে

মোঃ মঈন উদ্দিন খান: নিজেদের জন্য গড়া কবরের উপরই বসবাস করছেন নুর ইসলাম ফকির আর সালেহার ফকির দম্পতি। মৃত্যুর পর ওইস্থানে কবর হবে,স্বজনদের কাছে এমন ইচ্ছে প্রকাশও করেছেন  তারা। এ স্থাপনাটি গড়ে উঠেছে কোটচাঁদপুর উপজেলার জিয়েল গাড়ির মাঠে।

জানা যায়, নুর ইসলাম ফকির( ৭০)। সে উপজেলার দোড়া ইউনিয়নের দয়ারামপুর গ্রামের মৃত আলিম উদ্দিনের ছেলে। পিতা -মাতার মোট ১১ জন ছেলে মেয়ে। যার মধ্যে রয়েছে ৭ টি ছেলে আর ৪ টি মেয়ে। এরমধ্যে নুর ইসলাম সবার বড়। ছোট বেলা থেকে তিনি ছিলেন লালন ভক্ত। ভালবাসতেন লালনকে। সে থেকে হাঠা ফকিরের পথে।

ছেলে বেলা কেটেছে দয়ারামপুর গ্রামে। লেখা পড়া করেছেন দয়ারাম প্রাথমিক বিদ্যালয়। এরপর পাঁচলিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়। তবে তিনি মাধ্যমিকের গন্ডি পেরুেত পারেননি।

এরমধ্যে তিনি বসেন বিয়ের পিড়িতে। জোরালো হয় ফকিরি পথে হাটা। বেশ ভুষা পাল্টাতে থাকেন নুর ইসলাম। মুখে দাড়ি,পরনে সাদা মার্কিন কাপড় আর হাতে তামার রিং। এসবের কারনে বাধা আসতে থাকে ফকিরিতিতে।
ওই সময় এসে আস্থানা গাড়েন দোড়ার জিয়েল গাড়ির মাঠে। বর্তমানে সেখানে গড়ে তুলেছেন ফকিরদের জন্য আশ্রম।

এ ব্যাপারে ফকির নুর ইসলাম বলেন,লালন ফকিরকে ভালবেসে এ ফকিরি পথে আসা। এ পথে আসায় অনেক বাধা বিপত্তি মোকাবিলা করতে হয়েছে আমাকে। গ্রাম ছেড়ে বসবাস করতে হয়েছে মাঠে। এ কারনে বাকি জীবনটা চাই এ পথে কাটিয়ে দিতে। এ সব ভেবে পৈত্রিক সম্পতির কিছু অংশ জুড়ে গড়ে তুলেছি কবর। আর বাকি অংশে রয়েছে আমার বসত ভিটা।কিছু দিনের মধ্যে আমি ওই কবর স্থানটি ফকিরদের নামে উৎস্বর্গ করে দিবো। যাতে করে আমার অবর্তমানে জায়গাটা নস্ট না হয়।

তিনি বলেন,আর ওই কবর স্থানটিই হবে আমার স্ত্রী সালেহার ফকির আর আমার শেষ স্থান। যা ইতোমধ্যে আমার স্বজন সহ সাধু ভাইদের কাছে জানিয়েছি।

তিনি বলেন,সংসার জীবনে আমরা দুই কন্যা সন্তানের জনক। ইতোমধ্যে তাদেরকে পাত্রস্থও করা হয়েছে।গাজা প্রসঙ্গে বলেন,ফকিরদের আশ্রম মানে, মানুষ বুঝত গাঁজার আড্ডা। কিন্তু মানুষের ওই ধারনা এখানে মিথ্যা প্রমানিত করা হয়েছে। স্পষ্ট বলা আছে, এখানে ও সব চলবে না। এখানে হবে একটু গান-বাজনা, সাধু সেবা। আসলে গাঁজা ভাল জিনিস না।এটা মানুষের মাঝে মানুষ কে ছোট করে দেন। এ কারনে এটা থেকে নিজে সরে এসেছি আগে। ছাড়তে উৎবুদ্ধ করছি সাধু ভাইদেরকেও।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

কোটচাঁদপুর পল্লীতে নিজের জন্য গড়া কবরের উপরে বসবাস করছেন নুর ইসলাম দম্পতি

আপডেট সময় ০৮:০৭:৪৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ জুন ২০২২

মোঃ মঈন উদ্দিন খান: নিজেদের জন্য গড়া কবরের উপরই বসবাস করছেন নুর ইসলাম ফকির আর সালেহার ফকির দম্পতি। মৃত্যুর পর ওইস্থানে কবর হবে,স্বজনদের কাছে এমন ইচ্ছে প্রকাশও করেছেন  তারা। এ স্থাপনাটি গড়ে উঠেছে কোটচাঁদপুর উপজেলার জিয়েল গাড়ির মাঠে।

জানা যায়, নুর ইসলাম ফকির( ৭০)। সে উপজেলার দোড়া ইউনিয়নের দয়ারামপুর গ্রামের মৃত আলিম উদ্দিনের ছেলে। পিতা -মাতার মোট ১১ জন ছেলে মেয়ে। যার মধ্যে রয়েছে ৭ টি ছেলে আর ৪ টি মেয়ে। এরমধ্যে নুর ইসলাম সবার বড়। ছোট বেলা থেকে তিনি ছিলেন লালন ভক্ত। ভালবাসতেন লালনকে। সে থেকে হাঠা ফকিরের পথে।

ছেলে বেলা কেটেছে দয়ারামপুর গ্রামে। লেখা পড়া করেছেন দয়ারাম প্রাথমিক বিদ্যালয়। এরপর পাঁচলিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়। তবে তিনি মাধ্যমিকের গন্ডি পেরুেত পারেননি।

এরমধ্যে তিনি বসেন বিয়ের পিড়িতে। জোরালো হয় ফকিরি পথে হাটা। বেশ ভুষা পাল্টাতে থাকেন নুর ইসলাম। মুখে দাড়ি,পরনে সাদা মার্কিন কাপড় আর হাতে তামার রিং। এসবের কারনে বাধা আসতে থাকে ফকিরিতিতে।
ওই সময় এসে আস্থানা গাড়েন দোড়ার জিয়েল গাড়ির মাঠে। বর্তমানে সেখানে গড়ে তুলেছেন ফকিরদের জন্য আশ্রম।

এ ব্যাপারে ফকির নুর ইসলাম বলেন,লালন ফকিরকে ভালবেসে এ ফকিরি পথে আসা। এ পথে আসায় অনেক বাধা বিপত্তি মোকাবিলা করতে হয়েছে আমাকে। গ্রাম ছেড়ে বসবাস করতে হয়েছে মাঠে। এ কারনে বাকি জীবনটা চাই এ পথে কাটিয়ে দিতে। এ সব ভেবে পৈত্রিক সম্পতির কিছু অংশ জুড়ে গড়ে তুলেছি কবর। আর বাকি অংশে রয়েছে আমার বসত ভিটা।কিছু দিনের মধ্যে আমি ওই কবর স্থানটি ফকিরদের নামে উৎস্বর্গ করে দিবো। যাতে করে আমার অবর্তমানে জায়গাটা নস্ট না হয়।

তিনি বলেন,আর ওই কবর স্থানটিই হবে আমার স্ত্রী সালেহার ফকির আর আমার শেষ স্থান। যা ইতোমধ্যে আমার স্বজন সহ সাধু ভাইদের কাছে জানিয়েছি।

তিনি বলেন,সংসার জীবনে আমরা দুই কন্যা সন্তানের জনক। ইতোমধ্যে তাদেরকে পাত্রস্থও করা হয়েছে।গাজা প্রসঙ্গে বলেন,ফকিরদের আশ্রম মানে, মানুষ বুঝত গাঁজার আড্ডা। কিন্তু মানুষের ওই ধারনা এখানে মিথ্যা প্রমানিত করা হয়েছে। স্পষ্ট বলা আছে, এখানে ও সব চলবে না। এখানে হবে একটু গান-বাজনা, সাধু সেবা। আসলে গাঁজা ভাল জিনিস না।এটা মানুষের মাঝে মানুষ কে ছোট করে দেন। এ কারনে এটা থেকে নিজে সরে এসেছি আগে। ছাড়তে উৎবুদ্ধ করছি সাধু ভাইদেরকেও।