ঢাকা ০৯:২৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কোটচাঁদপুর সবার পরিচিত ডুলি পাগল এখন পড়ে আছে রাস্তার পাশে

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৮:৪৮:০৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ৯ মার্চ ২০২৪
  • / ২৮৮ বার পড়া হয়েছে
কোটচাঁদপুর প্রতিনিধিঃ  জহুরা খাতুন বয়স ৫৮ বছর। সবাই তাকে ডুলি পাগলি বলে চিনেন। ভিক্ষা করে জীবিকা চালত,থাকত সে মানুষের ঘরের বারান্দায়।
অসুস্থ্য হয়ে পড়ায় এখন তাঁর জায়গা হয়েছে কোটচাঁদপুর পৌরসভার সলেমানপুর ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সড়কের পাশের একটি ঝুপড়িতে। সরকারের কোন সুযোগ সুবিধা আজও জোটেনি তাঁর কপালে।
ভুক্তভোগী জহুরা বলেন,ঝিনাইদহের কালিগঞ্জের তাঁর বিয়ে হয়েছিল। স্বামী মৃত খালেক হোসেন। ওই সংসারে একটি কন্যা সন্তানও হয় তাদের। এরপর হঠাৎ করে মারা যান স্বামী। সেটাও ৩০ বছর পার হয়ে গেছে।
সেই থেকে আশ্রয় নেন কোটচাঁদপুরের সলেমানপুর দাস পাড়ায়। থাকতেন মানুষের বারান্দায়। জীবিকার জন্য করতেন ভিক্ষা। তা দিয়ে নিজে খেতেন আর মেয়েকে মানুষ করতেন। এভাবে মেয়েটি বড় করে স্থানীয়দের সহায়তায় বিয়ে দেন । ওই সংসারে মেয়ের দুইটি বাচ্চা আছেন। আছেন তাঁর জামাই। হঠাৎ করে ওই মেয়েটি গেল দুই বছর আগে মারা যান।
ভেঙ্গে পড়েন জহুরা খাতুন। বয়সের ভারে কিছুটা ভারসাম্যহীন হয়ে গেছে সে। সম্প্রতি অনেক অসুস্থ্য জহুরা। ভিক্ষা করার সামথ্য হারিয়েছে এখন। ঠাই হয়েছে কোটচাঁদপুর পৌরসভার সলেমানপুর ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সড়কের পাশের একটি ঝুপড়িতে।  যা বানিয়েছেন ওই এলাকার ৪ জন নারী । যার মধ্যে রয়েছেন,রুমা বেগম,রাহেলা বেগম,সাজেদা বেগম ও পারভিনা বেগম।
ওই ৪ নারী  তাঁর অবস্থা দেখে মানুষের কাছ থেকে বাঁশ টিন চেয়ে বানিয়েছেন ঝুপড়ি ঘরটি। সামর্থ্য না থাকলেও খাওয়া আর ওষুধ খরচ চালাচ্ছেন তারাই ভাগাভাগি করে। তবে এভাবে বেশিদিন চালানো তাদের পক্ষেও সম্ভব হবে না বলে জানিয়েছেন তারা।
এ ব্যাপারে রুমা বেগম বলেন,জহুরা ওর নাম। এলাকার মানুষ সবাই ঢুলি পাগলি বললেই চিনেন। সে কোটচাঁদপুরের মানুষ না। বিয়ে হয়েছিল কালিগঞ্জের কোন এক গ্রামে।
স্বামী মারা যাবার পর থেকে কোটচাঁদপুর আসেন। সে প্রথম দিকে আমাদের বাসায় থাকতো। এ ছাড়া এ পাড়ার অনেকের বাড়ির বারান্দায় বসবাস করত। গেল ২/৩ মাস ধরে সে আর চলতে পারছিল না। যেখানে সেখানেই প্রস্রব পায়খানা করছিলেন। এ কারনে ঘরে রাখা কস্টের ব্যাপার ছিল।
তাই আমরা কয়জন মিলে মানুষের কাছ থেকে বাঁশ টিন আর কিছু টাকা নিয়ে রাস্তার পাশের ওই জমিতে ঝুপড়ী বানিয়ে দিয়েছি। এখন ওখানেই থাকছেন। খাবার আর ওষুধ সহ সব দেখা শোনা করছি আমরাই।
তিনি বলেন,আমার সাধ আছে তাঁর জন্য করার। তবে সামর্থ্য নাই। এভাবে বেশিদিন চালানো হয়তো আমাদের পক্ষেও অসম্ভব হয়ে যাবে।
জহুরা কোটচাঁদপুরের বাসিন্দা না। তবে দীর্ঘদিন ধরে থাকায় ভোটার কার্ড এই ঠিকানায় হয়েছে। সে অনুযায়ী জহুরা খাতুন( ৫৮),পিতা- ইপা মন্ডল,মাতা নেছারুন খাতুন, কোটচাঁদপুরের সলেমানপুর দাস পাড়ায় এখন ঠিকানা।
সে শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্দী। আর স্বামী মারা গেছেন ৩০ বছর হল। এরপরও সরকারের কোন সুযোগ সুবিধা আজও জোটেনি তাঁর কপালে।
ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

কোটচাঁদপুর সবার পরিচিত ডুলি পাগল এখন পড়ে আছে রাস্তার পাশে

আপডেট সময় ০৮:৪৮:০৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ৯ মার্চ ২০২৪
কোটচাঁদপুর প্রতিনিধিঃ  জহুরা খাতুন বয়স ৫৮ বছর। সবাই তাকে ডুলি পাগলি বলে চিনেন। ভিক্ষা করে জীবিকা চালত,থাকত সে মানুষের ঘরের বারান্দায়।
অসুস্থ্য হয়ে পড়ায় এখন তাঁর জায়গা হয়েছে কোটচাঁদপুর পৌরসভার সলেমানপুর ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সড়কের পাশের একটি ঝুপড়িতে। সরকারের কোন সুযোগ সুবিধা আজও জোটেনি তাঁর কপালে।
ভুক্তভোগী জহুরা বলেন,ঝিনাইদহের কালিগঞ্জের তাঁর বিয়ে হয়েছিল। স্বামী মৃত খালেক হোসেন। ওই সংসারে একটি কন্যা সন্তানও হয় তাদের। এরপর হঠাৎ করে মারা যান স্বামী। সেটাও ৩০ বছর পার হয়ে গেছে।
সেই থেকে আশ্রয় নেন কোটচাঁদপুরের সলেমানপুর দাস পাড়ায়। থাকতেন মানুষের বারান্দায়। জীবিকার জন্য করতেন ভিক্ষা। তা দিয়ে নিজে খেতেন আর মেয়েকে মানুষ করতেন। এভাবে মেয়েটি বড় করে স্থানীয়দের সহায়তায় বিয়ে দেন । ওই সংসারে মেয়ের দুইটি বাচ্চা আছেন। আছেন তাঁর জামাই। হঠাৎ করে ওই মেয়েটি গেল দুই বছর আগে মারা যান।
ভেঙ্গে পড়েন জহুরা খাতুন। বয়সের ভারে কিছুটা ভারসাম্যহীন হয়ে গেছে সে। সম্প্রতি অনেক অসুস্থ্য জহুরা। ভিক্ষা করার সামথ্য হারিয়েছে এখন। ঠাই হয়েছে কোটচাঁদপুর পৌরসভার সলেমানপুর ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সড়কের পাশের একটি ঝুপড়িতে।  যা বানিয়েছেন ওই এলাকার ৪ জন নারী । যার মধ্যে রয়েছেন,রুমা বেগম,রাহেলা বেগম,সাজেদা বেগম ও পারভিনা বেগম।
ওই ৪ নারী  তাঁর অবস্থা দেখে মানুষের কাছ থেকে বাঁশ টিন চেয়ে বানিয়েছেন ঝুপড়ি ঘরটি। সামর্থ্য না থাকলেও খাওয়া আর ওষুধ খরচ চালাচ্ছেন তারাই ভাগাভাগি করে। তবে এভাবে বেশিদিন চালানো তাদের পক্ষেও সম্ভব হবে না বলে জানিয়েছেন তারা।
এ ব্যাপারে রুমা বেগম বলেন,জহুরা ওর নাম। এলাকার মানুষ সবাই ঢুলি পাগলি বললেই চিনেন। সে কোটচাঁদপুরের মানুষ না। বিয়ে হয়েছিল কালিগঞ্জের কোন এক গ্রামে।
স্বামী মারা যাবার পর থেকে কোটচাঁদপুর আসেন। সে প্রথম দিকে আমাদের বাসায় থাকতো। এ ছাড়া এ পাড়ার অনেকের বাড়ির বারান্দায় বসবাস করত। গেল ২/৩ মাস ধরে সে আর চলতে পারছিল না। যেখানে সেখানেই প্রস্রব পায়খানা করছিলেন। এ কারনে ঘরে রাখা কস্টের ব্যাপার ছিল।
তাই আমরা কয়জন মিলে মানুষের কাছ থেকে বাঁশ টিন আর কিছু টাকা নিয়ে রাস্তার পাশের ওই জমিতে ঝুপড়ী বানিয়ে দিয়েছি। এখন ওখানেই থাকছেন। খাবার আর ওষুধ সহ সব দেখা শোনা করছি আমরাই।
তিনি বলেন,আমার সাধ আছে তাঁর জন্য করার। তবে সামর্থ্য নাই। এভাবে বেশিদিন চালানো হয়তো আমাদের পক্ষেও অসম্ভব হয়ে যাবে।
জহুরা কোটচাঁদপুরের বাসিন্দা না। তবে দীর্ঘদিন ধরে থাকায় ভোটার কার্ড এই ঠিকানায় হয়েছে। সে অনুযায়ী জহুরা খাতুন( ৫৮),পিতা- ইপা মন্ডল,মাতা নেছারুন খাতুন, কোটচাঁদপুরের সলেমানপুর দাস পাড়ায় এখন ঠিকানা।
সে শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্দী। আর স্বামী মারা গেছেন ৩০ বছর হল। এরপরও সরকারের কোন সুযোগ সুবিধা আজও জোটেনি তাঁর কপালে।