জানা যায়,এর আগে কোটচাঁদপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আব্দুর রশিদ টেন্ডার বিহীন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পুরাতন বিভিন্ন
মালামাল বিক্রি করে দেন। পরে বিক্রি করেন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের গাড়ি রাখার গ্যারেজ,সহ পাশে ড্রাইভার থাকার ঘর।
এবার বিক্রি করলেন,কমপ্লেক্সের ভিতরের পুরাতন মসজিদ ভবন ও মসজিদের বিভিন্ন সরঞ্জামাদি। এরমধ্যে ৯৫ হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন পুরাতন মসজিদ ভবন। ভবনটি কিনেছেন কোটচাঁদপুর বাসস্ট্যান্ডপাড়ার টিটো রহমান।
এক হাজার টাকা করে ১৫ টি সিলিং ফ্যান। যার প্রতিটিই কিনেছেন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সংশ্লিষ্টরা। এ ছাড়া ২০ হাজার টাকা দামে ২ টি এসি বিক্রি হয়েছে। যা কিনেছেন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ক্যাশিয়ার ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসের ফরহাদ হোসেন। শুধুমাত্র স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মূল্যবান কাঠ কিনেছেন সর্দার ফার্মেসীর মালিক সোহরাব হোসেন সর্দার। আর এ কাঠগুলো কিনেছেন মাত্র ২২ হাজার টাকায়।
কাঠসহ এ সব সরঞ্জামাদি বিক্রি নিয়ে অভিযোগ তুলেছেন মসজিদে নামাজ পড়তে আসা মুসল্লিরা। তারা বলেন,এ সব বিক্রের ব্যাপারে কোন দিন কেউ আমাদের জানাননি। জানালে হয়তো আরো বেশি দামে এ সব বিক্রি করা সম্ভব হত।
এ ব্যাপারে মসজিদের মুসল্লি ঠান্ডু রহমান,ইদ্রিস আলী, শফিকুল ইসলাম বলেন, তিনি কারোর কোন কথা রাখেন না। তিনার যা ইচ্ছে হয়,তাই তিনি করে থাকেন।
তারা বলেন, এ মসজিদ বিক্রি হবে, আমরা শুনেছিলাম,তবে কবে, কিভাবে বিক্রি হবে। তা কেউ কখনও আমাদের জানাননি।
এ প্রসঙ্গে মসজিদের পুরাতন ভবনের ক্রেতা টিটো রহমান বলেন,৪/৫ দিন ধরে রশিদ স্যার আমাকে মসজিদের পুরাতন ভবনটি কেনার কথা বলেছে। এছাড়া ভবনটি দেখতে বেশ কয়েকটি পার্টি ও এসেছেন বলে তিনি আমাকে জানান। পরে তিনি আমাকে ভবনটি নিতে বলেন। দাম হিসেবে চান এক লাখ টাকা। ওই সময় আমি বলি স্যার ৫ হাজার টাকা কম দিবো। এরপর বলেন,মসজিদের টাকা কম দেয়া যাবে না। পরে কোন কাজ দিয়ে তোমাকে পুষিয়ে দিবো। এভাবে কথা বলে স্যারকে আমি টাকা দিয়ে দিয়েছি।
বিষয়টি নিয়ে কথা হয় কমপ্লেক্সের ক্যাশিয়ার আব্দুর রউফের সঙ্গে। তিনি বলেন,এটা স্থানীয় ভাবে স্যার বিক্রি করেছেন। এর কাগজপত্র কি আছে, তা স্যার জানেন। আপনারা স্যারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
মসজিদের পৃরাতন ভবন বিক্রি নিয়ে কোটচাঁদপুর উপজেলার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মাওলানা তাজুল ইসলাম ও শের আলী বলেন, ধর্মীয় বিধান অনুযায়ী মসজিদের কোন কিছু বিক্রি করা ঠিক না। এটা মানুষ নিয়ে গিয়ে বিভিন্ন কাজে লাগাতে পারে। সে ক্ষেত্রে এটার অসম্মান করা হবে। তবে মসজিদ ভেঙ্গে, অন্য মসজিদ গড়ার কাজে লাগানো যেতে পারে।
এ ব্যাপারে কোটচাঁদপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আব্দুর বলেন,যা বিক্রি করা হয়েছে, তা মসজিদ কমিটির সঙ্গে বসে আলাপ আলোচনা করে বিক্রি করা হয়েছে। মসজিদ কমিটিতে কারা আছেন,এমন প্রশ্নে তিনি বলেন,স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তার, প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের নিয়ে এ কমিটি গঠিত। তাদের সিদ্ধান্তে সব বিক্রি করা হয়েছে।
তিনি বলেন, যে দামে ওই সব বিক্রি করা যায়, তা বাজার অনুযায়ী উচিত মূল্যে বিক্রি করা হয়েছে।
এদিকে ওই কর্মকর্তা একের পর এক টেন্ডার বিহীন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বিভিন্ন সরঞ্জামাদি বিক্রি করলেও দেখার কেউ নাই। বিষয়টি নিয়ে ফুসে উঠেছেন এলাবাসী সহ মুসল্লিরা। তারা এ ঘটনার সুষ্ট তদন্তের দাবি ও জানিয়েছেন।