চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সাত ইউপি সদস্যদের অভিযোগ
- আপডেট সময় ১০:১৭:১৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২২
- / ৮৯৬ বার পড়া হয়েছে
বিশেষ প্রতিনিধি: মৌলভীবাজার কুলাউড়া উপজেলার ১০ নং হাজীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ওয়াদুদ বখস কর্তৃক সরকারী সম্পদ আত্মসাৎ, স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম, দুর্নীতি, ইউনিয়নের নির্বাচিত সদস্যদের সাথে খারাপ আচরণ ও ক্ষমতার অপব্যবহারের কারণে তার বিরুদ্ধে ৭ ইউপি সদস্য অনাস্থা প্রস্তাব আনয়ন করেছে তারা তার বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য জেলা প্রশাসক বরাবর ইউপি সদস্যরা একটি আবেদন প্রেরণ করে।
রোববার (২৮ আগষ্ট) সকালে জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান এর নিকট এ অভিযোগ পত্রটি দাখিল করেন।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ হাসান বলেন, অভিযোগ পত্রটি যাচাই-বাছাই করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভিযোগকারীরা হলেন হাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৬নং ওয়ার্ড’র সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যান (১) নুর আহমদ চৌধুরী বুলবুল ,প্যানেল চেয়ারম্যান(২) আব্দুল মজিদ,প্যানেল চেয়ারম্যান ১,২ও ৩নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত সদস্য সেলিনা আক্তার,২র্নং ওয়াড সদস্য শাইস্তা মিয়া,৭নং ওয়ার্ড সদস্য আব্দুল মুনিম,৩ নং ওয়ার্ড সদস্য মো: মোস্তাফিজুর রহমান, ৭,৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত সদস্য সেলীনা আক্তার।
তারা অভিযোগ পত্রে বলেন, চেয়ারম্যান ওয়াদুদ বখস নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে তিনি অত্যন্ত বেপরোয়া হয়ে উঠেন। তিনি এলাকার সকল প্রকার অনৈতিক ও অপরাধজনক কর্মকান্ডের সহিত ইতিপূর্বেও জড়িত ছিলেন এবং বর্তমানেও আছেন। তাঁর বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে সন্ত্রাসীমূলক কার্যকলাপ, চাঁদাবাজি সহ অন্য অপরাধের অভিযোগ বিদ্যমান। আমরা অত্র ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচত সদস্যবৃন্দের সহিত তিনি কোনরূপ সমন্বয়, পরামর্শ ব্যতিরেকে সম্পূর্ণ মনগড়াভাবে ইচ্ছামাফিক পরিষদ চালাচ্ছেন। সাধারণ জনগনের সহিত দূর্ব্যবহার, ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃক প্রদত্ত বিভিন্ন সনদ প্রদানে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ফি ছাড়াও অতিরিক্ত টাকা আদায়, সরকারি সম্পদ আত্মসাৎ, বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ না করিয়ে অর্থ উত্তোলন করা আত্মসাৎ, ইউনিয়ন পরিষদের নিজস্ব একাউন্টে টাকা জমা না রেখে বেশিরভাগ অংশের সমুদয় টাকা তিনি ভোগ করে আসতেছেন। এছাড়াও সরকার কর্তৃক নির্ধারিত বিভিন্ন সনদ এবং কাগজাতের ফি সংক্রান্ত তালিকা জনসাধারণের জ্ঞাতার্থে প্রদর্শনের বিধান থাকা সত্ত্বেও বর্ণিত ওয়াদুদ বখস তা প্রদর্শন না করে জনসাধারনের নিকট হতে অতিরিক্ত টাকা আত্মসাতের হীন মানসে উক্তরূপ হীন কার্যকলাপ অব্যাহত রেখে চলেছেন। তিনি আমরা নিম্ন স্বাক্ষরকারীগনের সহিত ভিন্ন ভিন্ন তারিখ ও সময়ে ইউনিয়ন পরিধানে জনসম্মুখে অসদাচরন ও অকথ্য ভাষা প্রয়োগ করে আমাদেরকে বিভিন্নভাবে হেয় প্রতিপন্ন করে আসতেছেন। যার কারনে আমাদের মান-ইজ্জতের উপর ব্যাপক প্রভাব প্রতিফলিত হচ্ছে। বর্ণিত অবস্থাধীনে, চেয়ারম্যান ওয়াদুদ বখস্ সবিভিন্ন অনিয়ম, অপকর্ম, দূর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতার বিষয় নিয়ে উপরিউক্ত সদস্যগণ ১৬ আগস্ট এক সভার আয়োজন করে তার উপর অনাস্থা প্রস্তাব গ্রহণ করেন।সাথে সাথে চেয়ারম্যান ওয়াদুদ বখস’র বিভিন্ন অনিয়ম, অপকর্ম, দূর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতার বিষয়ের কিছু নিম্নোক্ত বিবরণ প্রকাশ করেনঃ (১) জন্ম নিবন্ধনে সরকারি ফি ৫০ টাকা নির্ধারিত থাকলেও তিনি বাংলা জন্ম নিবন্ধন সনদে ২০০/ইংরেজী জন্ম নিবন্ধন সনদে ২০০ মোট ৪০০টাকা আদায় করছেন আমরা তাতে আপত্তি জানালেও তিনি না শোনে তাঁর মনগড়া সিদ্ধান্তে জনগনের কাছ থেকে আদায় করছেন। যা নিয়ে জনমনে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
তিনি বলেন, এই সনদ মানুষ তাঁর অফিস থেকে নিতে বাধ্য হয়ে উক্ত টাকা দিতে হবে। তিনি না দিলে এ সনদের জন্য মানুষের অনেক কাজ আটকে থাকবে। তাই তিনি যা চাইবেন তা জনগন দিতে বাধ্য। (২) নাগরিকত্ব সনদে ২০০ টাকা, উত্তরাধিকারী সনদে ৫০০ টাকা, ব্রিক্স ফিল্ডের জন্য ট্রেড লাইসেন্স ২৩,০০০ টাকা, বিভিন্ন ধরনের ট্রেড লাইসেন্স ৫০০-৫০০০ টাকা আদায় করছেন। (৩)এলজিএসপি’র প্রকল্প তিনি একক সিদ্ধান্তে গ্রহণ করেন এবং লোক দেখানোর জন্য সামান্য কাজ করিনো দুই তৃতীয়াংশ অর্থ আত্মসাৎ করেন। (৫)টিসিবি কার্ডধারীদের কার্ড নিজের কাছে রেখে মালামাল অধিক মূল্যে তিনি অবাধে বিক্রি করেন। তাঁ সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের কারণে কেউ মুখ খোলে কথা বলে না। তিনি সদস্যগণের নিকট হইতে ১০/১৫ টাকা চাউলের কার্ডের তালিকা নিয়ে পরবর্তীতে তিনি তাহা পরিবর্তন করে বয়স, বিধবা এবং পঙ্গু ভাতা লোকজনদের নিজের ইচ্ছা মাফিক তালিকাভুক্ত করেন। (৬) ইউনিয়ন পরিষদের সম্মুখে মাটি ভরাট দ্বিতীয় কিস্তির ১,৫০,০০০/- টাকা তিনি মাটি ভরাট না করে সম্পূর্ণ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। (৭)জনসাধারণের নিকট হইতে বিভিন্ন ধরনের ট্যক্স, ফি, যানবাহান ফি ইত্যাদি আদায় ও তার কোন হিসাব প্রদান করেন নাই কিংবা ইউনিয়ন পরিষদের একাউন্টে টাকা জমা প্রদান করেন নাই।