ঢাকা ১২:৪০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জমি নিয়ে হয়রানির ক্ষোভে চাচাতো ভাইকে হত্য

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৮:০৮:২৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ মে ২০২৪
  • / ১৫৮ বার পড়া হয়েছে

রাজধানীর খিলগাঁও থানা এলাকার সিপাহীবাগ আইসক্রিম ফ্যাক্টরির গলি থেকে অজ্ঞাত এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় মনির হোসেন (২৫) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মনির নিহতের সম্পর্কের চাচাতো ভাই, পেশায় নরসুন্দর ও সেলুন মালিক। এ ঘটনায় প্রথম দিকে নিহতের পরিচয় না মিললেও পরে পুলিশ জানতে পারে নিহতের নাম হাবিবুর রহমান রুবেল (৩১)। গ্রেফতারের সময় হত্যায় ব্যবহৃত বিদ্যুতের তার ও হাতুড়ি উদ্ধার করেছে পুলিশ।

মনির পুলিশের কাছে দেওয়া প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, পারিবারিক জমি নিয়ে বিরোধ ছিল নিহত রুবেলের সাথে। রুবেল তাকে নানাভাবে হয়রানি করতেন। এছাড়া নানা কারণে রাগে ক্ষোভে তিনি রুবেলকে হত্যা করেছেন।

শনিবার (৪ মে) দুপুরে রাজধানীর খিলগাঁও থানায় এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান খিলগাঁও জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) মো. রাশেদুল ইসলাম।

তিনি বলেন, নিহত রুবেল মনিরকে হয়রানি শুধু করতেন না। তিনি তার আয় করা টাকাও জোর করে  নিয়ে নিতেন। তার কাছে টাকা না পেলে মনিরের দোকান বন্ধ রাখতে বাধ্য করতেন। ফলে মনিরের মনে ক্ষোভ তৈরি হয়। সেই ক্ষোভ থেকে ক্ষিপ্ত হয়ে রুবেলকে হত্যার পরিকল্পনা করেন তিনি। টাকা না পেলে ঝগড়া বিবাদে জড়াতেন। কিছুদিন আগেও টাকা না দেওয়ায় ১৫ দিন সেলুন বন্ধ রাখতে বাধ্য করেন। পরবর্তীতে ১২ হাজার টাকা দেওয়ার পর সেলুন খুলতে দেন। সব কিছু মিলিয়ে মনির ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। তিনি রুবেলকে শায়েস্তা করার জন্য সুযোগ খুঁজছিলেন। গত ১ মে রাতে রুবেল চুল কাটাতে আসেন। তখন মনির সব কর্মচারীকে ছুটি দিয়ে রুবেলের চুল কাটতে শুরু করেন। চুল কাটার এক পর্যায়ে সুযোগ বুঝে রুবেলকে বৈদ্যুতিক তারের শক দেন। এতে রুবেল অচেতন হয়ে গেলে মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য হাতুড়ি দিয়ে মাথায় আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করেন। পরে কমিশনার গলি এলাকার একটি তোষকের দোকান থেকে তোষক এনে মরদেহটি তার সেলুনে থাকা বস্তায় ভরে তোষকে পেচিয়ে পাশের গলিতে ফেলে দেন।

এডিসি রাশেদুল আরও বলেন, নিহত রুবেল কোনো কাজ করতেন না। স্থানীয় পর্যায়ে প্রভাব খাটিয়ে চলতেন তিনি। ফলে গ্রামের বাড়িতে আসামি মনিরের পরিবারের সঙ্গে জমিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিরোধ থাকায় ঢাকায় বসে তিনি নানাভাবে হয়রানি করতেন। রুবেলের টাকার দরকার হলেই নানাভাবে হয়রানি করে টাকা নিত।

পুলিশ জানায়, গত ২ মে সকাল সাড়ে ৭টার দিকে খিলগাঁও থানার সিপাহীবাগ আইসক্রিম ফ্যাক্টরির গলি থেকে অজ্ঞাত এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তার আগে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে তথ্য পেয়ে পুলিশ গিয়ে মরদেহটি উদ্ধার করে। কিন্তু প্রথমে পরিচয় পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে নিহতের স্ত্রী শারমিন আক্তার মরদেহটি শনাক্ত করেন এবং নিহতের নাম হাবিবুর রহমান রুবেল বলে জানান। এছাড়াও রুবেল তার স্বামী বলেও জানান পুলিশকে। রুবেল ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার গোপালপুর এলাকার প্রয়াত আব্দুল ওহাবের ছেলে। তারা খিলগাঁও থানার উত্তর মেরাদিয়া পুরাতন কমিশনার রোড এলাকায় বসবাস করতেন। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহত রুবেলের মা মিনু বেগম বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

 

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

জমি নিয়ে হয়রানির ক্ষোভে চাচাতো ভাইকে হত্য

আপডেট সময় ০৮:০৮:২৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ মে ২০২৪

রাজধানীর খিলগাঁও থানা এলাকার সিপাহীবাগ আইসক্রিম ফ্যাক্টরির গলি থেকে অজ্ঞাত এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় মনির হোসেন (২৫) নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মনির নিহতের সম্পর্কের চাচাতো ভাই, পেশায় নরসুন্দর ও সেলুন মালিক। এ ঘটনায় প্রথম দিকে নিহতের পরিচয় না মিললেও পরে পুলিশ জানতে পারে নিহতের নাম হাবিবুর রহমান রুবেল (৩১)। গ্রেফতারের সময় হত্যায় ব্যবহৃত বিদ্যুতের তার ও হাতুড়ি উদ্ধার করেছে পুলিশ।

মনির পুলিশের কাছে দেওয়া প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, পারিবারিক জমি নিয়ে বিরোধ ছিল নিহত রুবেলের সাথে। রুবেল তাকে নানাভাবে হয়রানি করতেন। এছাড়া নানা কারণে রাগে ক্ষোভে তিনি রুবেলকে হত্যা করেছেন।

শনিবার (৪ মে) দুপুরে রাজধানীর খিলগাঁও থানায় এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান খিলগাঁও জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) মো. রাশেদুল ইসলাম।

তিনি বলেন, নিহত রুবেল মনিরকে হয়রানি শুধু করতেন না। তিনি তার আয় করা টাকাও জোর করে  নিয়ে নিতেন। তার কাছে টাকা না পেলে মনিরের দোকান বন্ধ রাখতে বাধ্য করতেন। ফলে মনিরের মনে ক্ষোভ তৈরি হয়। সেই ক্ষোভ থেকে ক্ষিপ্ত হয়ে রুবেলকে হত্যার পরিকল্পনা করেন তিনি। টাকা না পেলে ঝগড়া বিবাদে জড়াতেন। কিছুদিন আগেও টাকা না দেওয়ায় ১৫ দিন সেলুন বন্ধ রাখতে বাধ্য করেন। পরবর্তীতে ১২ হাজার টাকা দেওয়ার পর সেলুন খুলতে দেন। সব কিছু মিলিয়ে মনির ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। তিনি রুবেলকে শায়েস্তা করার জন্য সুযোগ খুঁজছিলেন। গত ১ মে রাতে রুবেল চুল কাটাতে আসেন। তখন মনির সব কর্মচারীকে ছুটি দিয়ে রুবেলের চুল কাটতে শুরু করেন। চুল কাটার এক পর্যায়ে সুযোগ বুঝে রুবেলকে বৈদ্যুতিক তারের শক দেন। এতে রুবেল অচেতন হয়ে গেলে মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য হাতুড়ি দিয়ে মাথায় আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করেন। পরে কমিশনার গলি এলাকার একটি তোষকের দোকান থেকে তোষক এনে মরদেহটি তার সেলুনে থাকা বস্তায় ভরে তোষকে পেচিয়ে পাশের গলিতে ফেলে দেন।

এডিসি রাশেদুল আরও বলেন, নিহত রুবেল কোনো কাজ করতেন না। স্থানীয় পর্যায়ে প্রভাব খাটিয়ে চলতেন তিনি। ফলে গ্রামের বাড়িতে আসামি মনিরের পরিবারের সঙ্গে জমিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিরোধ থাকায় ঢাকায় বসে তিনি নানাভাবে হয়রানি করতেন। রুবেলের টাকার দরকার হলেই নানাভাবে হয়রানি করে টাকা নিত।

পুলিশ জানায়, গত ২ মে সকাল সাড়ে ৭টার দিকে খিলগাঁও থানার সিপাহীবাগ আইসক্রিম ফ্যাক্টরির গলি থেকে অজ্ঞাত এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তার আগে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে তথ্য পেয়ে পুলিশ গিয়ে মরদেহটি উদ্ধার করে। কিন্তু প্রথমে পরিচয় পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে নিহতের স্ত্রী শারমিন আক্তার মরদেহটি শনাক্ত করেন এবং নিহতের নাম হাবিবুর রহমান রুবেল বলে জানান। এছাড়াও রুবেল তার স্বামী বলেও জানান পুলিশকে। রুবেল ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার গোপালপুর এলাকার প্রয়াত আব্দুল ওহাবের ছেলে। তারা খিলগাঁও থানার উত্তর মেরাদিয়া পুরাতন কমিশনার রোড এলাকায় বসবাস করতেন। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহত রুবেলের মা মিনু বেগম বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।