ঢাকা ০৫:২৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজ
মোবাইল চুরির অপবাদ সইতে না পেরে তরুণের আ*ত্ম*হ*ত্যা জুড়ীতে ধর্মীয় আচার-প্রার্থনা-আনন্দ-উৎসবের মধ্য দিয়ে বড়দিন উদযাপিত আ গু ন নেভাতে ট্রাকচাপায় প্রাণ গেল সিলেটে কর্মরত ফায়ার ফাইটারের সুবিধাবঞ্চিত শীতার্তদের পাশে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি সোশ্যাল সার্ভিসেস ক্লাব কম সরবরাহে বাড়ছে দাম জানুয়ারির প্রথমার্ধে লন্ডন যাচ্ছেন খালেদা জিয়া বৈষম্যহীন,দুর্নীতিমুক্ত,সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বন্ধনকে আরও মজবুত করার আহ্বান রাষ্ট্রপতির কোটচাঁদপুর বিএনপি থেকে দুই নেতাকে অব্যহতি সাংবাদিক তুরাব হ ত্যা : রি মা ন্ডে কী তথ্য দিলেন দস্তগীর? দলকে তৃণমুল পর্যায়ে আরো শক্তিশালী করতে হবে – জেলা বিএনপির আহবায়ক ময়ুন

জুড়ীতে ধর্মীয় আচার-প্রার্থনা-আনন্দ-উৎসবের মধ্য দিয়ে বড়দিন উদযাপিত

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৪:১৮:৪৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪
  • / ৩৮ বার পড়া হয়েছে

জুড়ী প্রতিনিধিঃ ধর্মীয় আচার, সম্মিলিত প্রার্থনা ও আনন্দ-উৎসবের মধ্য দিয়ে বিশ্ব শান্তি কামনায় ‘বড়দিন’ উদযাপন করেছে মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার খ্রিস্টান সম্প্রদায়। পরিবর্তিত বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা ও উন্নতি কামনায় প্রার্থনা করা হয়। সেইসঙ্গে সাম্য ও ন্যায়ের কথা বলা হয়।

যিশু খ্রিস্টের আগমনী দিন ‘বড়দিন’ উপলক্ষে জুড়ী উপজেলার ১৭ টি গির্জা ও খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের বাড়িঘর সাজানো হয় ক্রিসমাস ট্রি, প্রতীকী গোয়ালঘর ও আলোকসজ্জায়। এলবিনটিলা পুঞ্জি, লাহুন পুঞ্জি, ফুলতলা চা বাগান, আদাবাড়ি পুঞ্জি, কুচাইতল পুঞ্জি, কুচাই চা বাগান, শিকড়িবস্তি, গোবিন্দপুর চা বাগান, জামকান্দি, দূর্গাপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের ঘরে ঘরে ছিল উৎসবমুখর পরিবেশ। এদিকে বড়দিন উপলক্ষে সকল জায়গায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। গির্জাগুলোতে বাড়ানো হয় নিরাপত্তা। বিভিন্ন এলাকায় পুলিশের চেকপোস্টও বসানো হয়। ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে জুড়ী উপজেলার ১৪টি গির্জায় উদযাপিত হয় বড়দিন।

মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) রাত থেকেই শুরু হয় বড়দিনের প্রার্থনা। যিশুখ্রিস্টের আদর্শ ও শিক্ষা অনুসরণের আহ্বান জানানো হয় প্রার্থনায়। একই সঙ্গে সবার জন্য শান্তি ও আনন্দের বার্তা দেওয়া হয়। এলবিনটিলা খাসিয়া পুঞ্জির গির্জায় অনুষ্ঠিত এই প্রার্থনা পরিচালনা করেন ফাদার রিপন রোজারিও।

বড়দিন উপলক্ষে বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) সরেজমিনে এলবিনটিলা খাসিয়া পুঞ্জি ও কুচাইতল খাসিয়া পুঞ্জি এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, গির্জা ও বিভিন্ন উপাসনালয়ে বর্ণিল আলোকসজ্জার পাশাপাশি ক্রিসমাস ট্রি ও প্রতীকী গোশালা তৈরি করা হয়। বিভিন্ন চিত্রের মাধ্যমে যিশুর জন্মের সুদীর্ঘ ইতিহাস তুলে ধরা হয়। প্রার্থনা ও কীর্তনের পাশাপাশি আয়োজন করা হয় ধর্মীয় গানের আসরের। এসব চিত্রে মেরি, যোসেফ, শিশু যিশু, স্বর্গদূত, মেষপালক এবং বেথলেহেমের সেই সময়কার দৃশ্যপট তুলে ধরা হয়। সব গির্জাতেই বড়দিনের প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়। শিশুদের হাতে সান্তা ক্লজ তুলে দেন উপহারসামগ্রী। সকলের মধ্যে বিতরণ করা হয় খাবার। দিনটি উপলক্ষে অনেক খ্রিস্টান পরিবারে কেক তৈরি ও বিশেষ খাবারের আয়োজন করা হয়। বড়দিনকে ঘিরে খ্রিস্টপল্লীর ঘরে ঘরে ক্রিসমাস ট্রিসহ সাজানো হয় বর্ণিল সাজে।

বড়দিন উপলক্ষে সকল গির্জা ও আশপাশের এলাকায় এবং খ্রিস্টপল্লীতে নিরাপত্তা জোরদার করে পুলিশ ও বিজিবি। এছাড়া, বড়দিনে কোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে প্রতিটি গির্জায় অতিরিক্ত পুলিশ ও বিজিবি মোতায়ন করা হয়। গির্জার আশপাশে চেকপোস্ট বসানো হয়।

খ্রিস্টধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব বড়দিন। চারদিকে ছিলো উৎসব-উৎসব আমেজ। মঙ্গলবার রাত থেকেই নানা আয়োজনে যিশু খ্রিষ্টের জন্মদিন পালন শুরু করে পরদিন বুধবার সারা দিনরাত ধর্মীয় আচার-প্রার্থনা ও আনন্দ-উৎসবের মধ্য দিয়ে চলে নানা আয়োজন। বড়দিন উপলক্ষে গির্জা, বাড়িঘর সাজানো হয়েছিল রঙিন বাতি, বেলুন আর ফুল দিয়ে।

এলবিনটিলা খাসিয়া পুঞ্জির মন্ত্রী কন্যা রিকা লামিন বলেন, বড়দিন উপলক্ষে আমরা আমাদের বাড়িঘর পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন করি এবং সাজাই। বড়দিনে আমরা কীর্তন এবং উপাসনা করি, কেক কাটি এবং বাড়িতে অতিথিদের আপ্যায়ন করি। বড়দিনের আনন্দ সবার সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিতে আমাদের নানান আয়োজন থাকে। এই দিনে প্রভু যীশু খ্রিস্ট পৃথিবীতে এসেছেন সব জীবের কল্যাণের জন্য। তার এই আগমনকে বরণ করতে আমরা সারারাত কীর্তন ও প্রার্থনা করি। পাশাপাশি দিনটি আনন্দের সঙ্গে উদযাপনের জন্য আমরা সবার বাড়ি বাড়ি যাই, খাওয়া দাওয়া করি ও নিজেদের মধ্যে আনন্দ ভাগাভাগি করে নেই। মঙ্গলবার রাত থেকেই শুরু হয়েছে বড়দিনের প্রার্থনা। যা বুধবার সারা দিনরাত চলে। যিশুখ্রিস্টের আদর্শ ও শিক্ষা অনুসরণের আহ্বান জানানো হয় প্রার্থনায়। একই সঙ্গে সবার জন্য শান্তি ও আনন্দের বার্তা দেওয়া হয়।

রাংবা বালাং এসোসিয়েশন জুড়ী উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মাইকেল নংরুম বলেন, বড়দিন মানেই আমাদের ত্রাণকর্তা ও মুক্তিদাতা যীশু খ্রিস্টের আগমন। এই আগমনকে কেন্দ্র করে আমরা বাহ্যিক ও আধ্যাত্মিকভাবে প্রস্তুতি নিয়েছি যাতে আমরা সবার সঙ্গে ভালোবাসা বিনিময় করতে পারি। বড়দিন উপলক্ষে আমরা বেশ কয়েকদিন প্রার্থনারত ছিলাম। আমাদের লক্ষ্য হলো দেশ ও প্রতিবেশির শান্তির জন্য প্রার্থনা করা।

বড়দিন আধ্যাত্মিক ও বাহ্যিক দুই ধরনের শিক্ষা দেয় জানিয়ে ফাদার রিপন রোজারিও বলেন, আমরা বাহ্যিক ও আধ্যাত্মিক দুই ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি। আধ্যাত্মিকভাবে আমরা দীর্ঘ একটি মাস ধ্যান প্রার্থনা করেছি। আমরা আমাদের প্রার্থনার মধ্য দিয়ে দেশ, জাতি ও সবার মঙ্গল কামনা করেছি। পাশাপাশি বাহ্যিক প্রস্তুতি হিসেবে আমরা গির্জা, বাড়িঘর সাজিয়েছি। প্রভু যিশুর পৃথিবীতে আগমনের যে আনন্দ তা সবার মাঝে ছড়িয়ে যাবে এটাই প্রার্থনা করি।

তিনি আরও বলেন, বড়দিন আয়োজনে আমরা আগে কখনো আশঙ্কা বোধ করিনি, এবারও করছি না। জুড়ীতে খুব সুন্দর ও আনন্দঘন পরিবেশে বড়দিন উদযাপিত হচ্ছে।

এদিকে বড়দিন উপলক্ষে বিভিন্ন গির্জা পরিদর্শনকালে বিজিবি-৫২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. মেহেদী হাসান পিপিএম বলেন- খ্রিস্টধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব বড়দিনে কোনো রকম অপ্রীতিকর ঘটনা যেন না ঘটে সেজন্য বিজিবি সর্বদা তৎপর রয়েছে। সীমান্ত এলাকার সকল গির্জা, উপাসনালয় ও খ্রিস্টপল্লীতে রাখা হয়েছে বিশেষ নজরদারি। পুলিশ ও অন্যান্য বাহিনীর সাথে বিজিবিরও পর্যাপ্ত জনবল আছে নিরাপত্তায়। সকলের সহযোগিতায় বড়দিন উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপন হচ্ছে।

বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, আমাদের সংবিধানে সব ধর্ম ও বর্ণের মানুষের সমান অধিকার সুনিশ্চিত করা হয়েছে। এই দেশ আমাদের সবার। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে এদেশ সব মানুষের নিরাপদ আবাসভূমি।

 

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

জুড়ীতে ধর্মীয় আচার-প্রার্থনা-আনন্দ-উৎসবের মধ্য দিয়ে বড়দিন উদযাপিত

আপডেট সময় ০৪:১৮:৪৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪

জুড়ী প্রতিনিধিঃ ধর্মীয় আচার, সম্মিলিত প্রার্থনা ও আনন্দ-উৎসবের মধ্য দিয়ে বিশ্ব শান্তি কামনায় ‘বড়দিন’ উদযাপন করেছে মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার খ্রিস্টান সম্প্রদায়। পরিবর্তিত বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা ও উন্নতি কামনায় প্রার্থনা করা হয়। সেইসঙ্গে সাম্য ও ন্যায়ের কথা বলা হয়।

যিশু খ্রিস্টের আগমনী দিন ‘বড়দিন’ উপলক্ষে জুড়ী উপজেলার ১৭ টি গির্জা ও খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের বাড়িঘর সাজানো হয় ক্রিসমাস ট্রি, প্রতীকী গোয়ালঘর ও আলোকসজ্জায়। এলবিনটিলা পুঞ্জি, লাহুন পুঞ্জি, ফুলতলা চা বাগান, আদাবাড়ি পুঞ্জি, কুচাইতল পুঞ্জি, কুচাই চা বাগান, শিকড়িবস্তি, গোবিন্দপুর চা বাগান, জামকান্দি, দূর্গাপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের ঘরে ঘরে ছিল উৎসবমুখর পরিবেশ। এদিকে বড়দিন উপলক্ষে সকল জায়গায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। গির্জাগুলোতে বাড়ানো হয় নিরাপত্তা। বিভিন্ন এলাকায় পুলিশের চেকপোস্টও বসানো হয়। ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে জুড়ী উপজেলার ১৪টি গির্জায় উদযাপিত হয় বড়দিন।

মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) রাত থেকেই শুরু হয় বড়দিনের প্রার্থনা। যিশুখ্রিস্টের আদর্শ ও শিক্ষা অনুসরণের আহ্বান জানানো হয় প্রার্থনায়। একই সঙ্গে সবার জন্য শান্তি ও আনন্দের বার্তা দেওয়া হয়। এলবিনটিলা খাসিয়া পুঞ্জির গির্জায় অনুষ্ঠিত এই প্রার্থনা পরিচালনা করেন ফাদার রিপন রোজারিও।

বড়দিন উপলক্ষে বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) সরেজমিনে এলবিনটিলা খাসিয়া পুঞ্জি ও কুচাইতল খাসিয়া পুঞ্জি এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, গির্জা ও বিভিন্ন উপাসনালয়ে বর্ণিল আলোকসজ্জার পাশাপাশি ক্রিসমাস ট্রি ও প্রতীকী গোশালা তৈরি করা হয়। বিভিন্ন চিত্রের মাধ্যমে যিশুর জন্মের সুদীর্ঘ ইতিহাস তুলে ধরা হয়। প্রার্থনা ও কীর্তনের পাশাপাশি আয়োজন করা হয় ধর্মীয় গানের আসরের। এসব চিত্রে মেরি, যোসেফ, শিশু যিশু, স্বর্গদূত, মেষপালক এবং বেথলেহেমের সেই সময়কার দৃশ্যপট তুলে ধরা হয়। সব গির্জাতেই বড়দিনের প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়। শিশুদের হাতে সান্তা ক্লজ তুলে দেন উপহারসামগ্রী। সকলের মধ্যে বিতরণ করা হয় খাবার। দিনটি উপলক্ষে অনেক খ্রিস্টান পরিবারে কেক তৈরি ও বিশেষ খাবারের আয়োজন করা হয়। বড়দিনকে ঘিরে খ্রিস্টপল্লীর ঘরে ঘরে ক্রিসমাস ট্রিসহ সাজানো হয় বর্ণিল সাজে।

বড়দিন উপলক্ষে সকল গির্জা ও আশপাশের এলাকায় এবং খ্রিস্টপল্লীতে নিরাপত্তা জোরদার করে পুলিশ ও বিজিবি। এছাড়া, বড়দিনে কোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে প্রতিটি গির্জায় অতিরিক্ত পুলিশ ও বিজিবি মোতায়ন করা হয়। গির্জার আশপাশে চেকপোস্ট বসানো হয়।

খ্রিস্টধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব বড়দিন। চারদিকে ছিলো উৎসব-উৎসব আমেজ। মঙ্গলবার রাত থেকেই নানা আয়োজনে যিশু খ্রিষ্টের জন্মদিন পালন শুরু করে পরদিন বুধবার সারা দিনরাত ধর্মীয় আচার-প্রার্থনা ও আনন্দ-উৎসবের মধ্য দিয়ে চলে নানা আয়োজন। বড়দিন উপলক্ষে গির্জা, বাড়িঘর সাজানো হয়েছিল রঙিন বাতি, বেলুন আর ফুল দিয়ে।

এলবিনটিলা খাসিয়া পুঞ্জির মন্ত্রী কন্যা রিকা লামিন বলেন, বড়দিন উপলক্ষে আমরা আমাদের বাড়িঘর পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন করি এবং সাজাই। বড়দিনে আমরা কীর্তন এবং উপাসনা করি, কেক কাটি এবং বাড়িতে অতিথিদের আপ্যায়ন করি। বড়দিনের আনন্দ সবার সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিতে আমাদের নানান আয়োজন থাকে। এই দিনে প্রভু যীশু খ্রিস্ট পৃথিবীতে এসেছেন সব জীবের কল্যাণের জন্য। তার এই আগমনকে বরণ করতে আমরা সারারাত কীর্তন ও প্রার্থনা করি। পাশাপাশি দিনটি আনন্দের সঙ্গে উদযাপনের জন্য আমরা সবার বাড়ি বাড়ি যাই, খাওয়া দাওয়া করি ও নিজেদের মধ্যে আনন্দ ভাগাভাগি করে নেই। মঙ্গলবার রাত থেকেই শুরু হয়েছে বড়দিনের প্রার্থনা। যা বুধবার সারা দিনরাত চলে। যিশুখ্রিস্টের আদর্শ ও শিক্ষা অনুসরণের আহ্বান জানানো হয় প্রার্থনায়। একই সঙ্গে সবার জন্য শান্তি ও আনন্দের বার্তা দেওয়া হয়।

রাংবা বালাং এসোসিয়েশন জুড়ী উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মাইকেল নংরুম বলেন, বড়দিন মানেই আমাদের ত্রাণকর্তা ও মুক্তিদাতা যীশু খ্রিস্টের আগমন। এই আগমনকে কেন্দ্র করে আমরা বাহ্যিক ও আধ্যাত্মিকভাবে প্রস্তুতি নিয়েছি যাতে আমরা সবার সঙ্গে ভালোবাসা বিনিময় করতে পারি। বড়দিন উপলক্ষে আমরা বেশ কয়েকদিন প্রার্থনারত ছিলাম। আমাদের লক্ষ্য হলো দেশ ও প্রতিবেশির শান্তির জন্য প্রার্থনা করা।

বড়দিন আধ্যাত্মিক ও বাহ্যিক দুই ধরনের শিক্ষা দেয় জানিয়ে ফাদার রিপন রোজারিও বলেন, আমরা বাহ্যিক ও আধ্যাত্মিক দুই ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি। আধ্যাত্মিকভাবে আমরা দীর্ঘ একটি মাস ধ্যান প্রার্থনা করেছি। আমরা আমাদের প্রার্থনার মধ্য দিয়ে দেশ, জাতি ও সবার মঙ্গল কামনা করেছি। পাশাপাশি বাহ্যিক প্রস্তুতি হিসেবে আমরা গির্জা, বাড়িঘর সাজিয়েছি। প্রভু যিশুর পৃথিবীতে আগমনের যে আনন্দ তা সবার মাঝে ছড়িয়ে যাবে এটাই প্রার্থনা করি।

তিনি আরও বলেন, বড়দিন আয়োজনে আমরা আগে কখনো আশঙ্কা বোধ করিনি, এবারও করছি না। জুড়ীতে খুব সুন্দর ও আনন্দঘন পরিবেশে বড়দিন উদযাপিত হচ্ছে।

এদিকে বড়দিন উপলক্ষে বিভিন্ন গির্জা পরিদর্শনকালে বিজিবি-৫২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. মেহেদী হাসান পিপিএম বলেন- খ্রিস্টধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব বড়দিনে কোনো রকম অপ্রীতিকর ঘটনা যেন না ঘটে সেজন্য বিজিবি সর্বদা তৎপর রয়েছে। সীমান্ত এলাকার সকল গির্জা, উপাসনালয় ও খ্রিস্টপল্লীতে রাখা হয়েছে বিশেষ নজরদারি। পুলিশ ও অন্যান্য বাহিনীর সাথে বিজিবিরও পর্যাপ্ত জনবল আছে নিরাপত্তায়। সকলের সহযোগিতায় বড়দিন উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপন হচ্ছে।

বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, আমাদের সংবিধানে সব ধর্ম ও বর্ণের মানুষের সমান অধিকার সুনিশ্চিত করা হয়েছে। এই দেশ আমাদের সবার। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে এদেশ সব মানুষের নিরাপদ আবাসভূমি।