ঢাকা ০২:১৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জুড়ীতে চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নের সরকারি টাকা আত্মসাৎ

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৭:৪৭:১৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ এপ্রিল ২০২২
  • / ৫৬৫ বার পড়া হয়েছে

সিরাজুল ইসলামঃ  মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলায় চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে গত কয়েক বছর থেকে সরকার চা শ্রমিকদেরকে এককালীন প্রতি শ্রমিককে ৫ হাজার টাকা আর্থিক অনুদান দিয়ে যাচ্ছে।

এরই ধারাবাহিকতায় ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে জুড়ী উপজেলার এলবিন টিলা চা বাগানের তালিকাভূক্ত ১শত ৮৫ জন শ্রমিকের নাম অর্ন্তভূক্ত করা হয়। জুড়ী উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের কর্মকতারা চা বাগানের উপস্থিত হয়ে বরাদ্দকৃত অর্থের চেক বিতরণ করেন।

বনামালী ব্যানার্জী, আলতা ব্যানার্জী, বগলু ব্যানার্জী, বিজলী ব্যানার্জী, হরি ব্যানার্জীসহ ৮জন শ্রমিক উপস্থিত না থাকায় বাগান পঞ্চায়েত সভাপতি হরগবিন্দ গোস্বামীর অনুরোধে সমাজ সেবা কর্মকর্তা ৮ জন চা শ্রমিকের চেক পঞ্চায়েত সভাপতিকে হস্থান্তর করেন। চেকগুলো শ্রমিকদের হাতে পৌছে দেয়ার কথা থাকলেও পঞ্চায়েত সভাপতি তা করেননি।

এ নিয়ে কয়েকবার সালিশ বৈঠক করেও শ্রমিকরা চেক ফেরত পাননি। গত ৪ এপ্রিল বলনমালী ব্যানার্জীসহ ৮ জন শ্রমিক পঞ্চায়েত সভাপতি হরগবিন্দ গোস্বামীর বাড়ীতে গিয়ে বরাদ্দকৃত অর্থের চেক ফেরত চান। তখন পঞ্চায়েত সভাপতি শ্রমিকদের চেক ফেরত না দিয়ে বিভিন্ন তালবাহানা শুরু করেন। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। ওই দিন রাত ১০ টায় পঞ্চায়েত সভাপতির নেতৃত্বে সাজু গোষামী, বিদ্যুৎ ঘোষামী, রামু গোষামীসহ ৮/১০জনের একটি দল দা লাটিসোঠা নিয়ে বনামালী ব্যানাজীর বাড়ীতে হামলা চালায়। এসময় তারা বাড়ীর লোকজনকে মারধর করে ও ব্যাপক ভাংচুর চালায়। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় আহত বনামালী ব্যানার্জীর স্ত্রী মমতা ব্যানার্জীকে জুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

এঘটনায় মমতা ব্যানার্জী বাদী হয়ে জুড়ী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।
সরেজমিন জানা যায়, চা শ্রমিকদের জীবন মান উন্নয়নের তালিকায় নাম তালিকাভূক্ত করার জন্য পঞ্চায়েত সভাপতি হরগবিন্দ ঘোস্বামী প্রায় ৩শত চা শ্রমিকের কাছ থেকে ৫শত থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত নিয়েছেন। কিন্তু লিস্টে এসেছে মাত্র ১৮৫ জন শ্রমিকের নাম।

এবিষয়ে মুঠোফোনে যোগাযোগক করলে পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি হরগবিন্দ ঘোস্বামী বলেন, যে ৮জন শ্রমিক চেক না পাওয়ার অভিযোগ করেছে তাহা সত্য নয়। যথাসময়ে তাদের চেক পৌছে দিয়েছি।
জুড়ী উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা সুমন দেবনাথ বলেন, চা শ্রমিকদের জীবন মান উন্নয়নের এককালিন অর্থের চেক আমাদের অফিসের কর্মকর্তাদের মাধ্যমে পৌছে দেয়া হয়েছে। ৮ জন শ্রমিক অনুপস্থিত থাকায় চা বাগান পঞ্চায়েত সভাপতির অনুরোধে চেক গুলো তার কাছে হস্থান্তর করা হয়। পরে তিনি জানতে পারেন চেক গুলো শ্রমিকরা পাননি। তদন্ত সাপেক্ষ্যে পঞ্চায়েত সভাপতির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

জুড়ীতে চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নের সরকারি টাকা আত্মসাৎ

আপডেট সময় ০৭:৪৭:১৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ এপ্রিল ২০২২

সিরাজুল ইসলামঃ  মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলায় চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে গত কয়েক বছর থেকে সরকার চা শ্রমিকদেরকে এককালীন প্রতি শ্রমিককে ৫ হাজার টাকা আর্থিক অনুদান দিয়ে যাচ্ছে।

এরই ধারাবাহিকতায় ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে জুড়ী উপজেলার এলবিন টিলা চা বাগানের তালিকাভূক্ত ১শত ৮৫ জন শ্রমিকের নাম অর্ন্তভূক্ত করা হয়। জুড়ী উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের কর্মকতারা চা বাগানের উপস্থিত হয়ে বরাদ্দকৃত অর্থের চেক বিতরণ করেন।

বনামালী ব্যানার্জী, আলতা ব্যানার্জী, বগলু ব্যানার্জী, বিজলী ব্যানার্জী, হরি ব্যানার্জীসহ ৮জন শ্রমিক উপস্থিত না থাকায় বাগান পঞ্চায়েত সভাপতি হরগবিন্দ গোস্বামীর অনুরোধে সমাজ সেবা কর্মকর্তা ৮ জন চা শ্রমিকের চেক পঞ্চায়েত সভাপতিকে হস্থান্তর করেন। চেকগুলো শ্রমিকদের হাতে পৌছে দেয়ার কথা থাকলেও পঞ্চায়েত সভাপতি তা করেননি।

এ নিয়ে কয়েকবার সালিশ বৈঠক করেও শ্রমিকরা চেক ফেরত পাননি। গত ৪ এপ্রিল বলনমালী ব্যানার্জীসহ ৮ জন শ্রমিক পঞ্চায়েত সভাপতি হরগবিন্দ গোস্বামীর বাড়ীতে গিয়ে বরাদ্দকৃত অর্থের চেক ফেরত চান। তখন পঞ্চায়েত সভাপতি শ্রমিকদের চেক ফেরত না দিয়ে বিভিন্ন তালবাহানা শুরু করেন। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। ওই দিন রাত ১০ টায় পঞ্চায়েত সভাপতির নেতৃত্বে সাজু গোষামী, বিদ্যুৎ ঘোষামী, রামু গোষামীসহ ৮/১০জনের একটি দল দা লাটিসোঠা নিয়ে বনামালী ব্যানাজীর বাড়ীতে হামলা চালায়। এসময় তারা বাড়ীর লোকজনকে মারধর করে ও ব্যাপক ভাংচুর চালায়। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় আহত বনামালী ব্যানার্জীর স্ত্রী মমতা ব্যানার্জীকে জুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

এঘটনায় মমতা ব্যানার্জী বাদী হয়ে জুড়ী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।
সরেজমিন জানা যায়, চা শ্রমিকদের জীবন মান উন্নয়নের তালিকায় নাম তালিকাভূক্ত করার জন্য পঞ্চায়েত সভাপতি হরগবিন্দ ঘোস্বামী প্রায় ৩শত চা শ্রমিকের কাছ থেকে ৫শত থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত নিয়েছেন। কিন্তু লিস্টে এসেছে মাত্র ১৮৫ জন শ্রমিকের নাম।

এবিষয়ে মুঠোফোনে যোগাযোগক করলে পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি হরগবিন্দ ঘোস্বামী বলেন, যে ৮জন শ্রমিক চেক না পাওয়ার অভিযোগ করেছে তাহা সত্য নয়। যথাসময়ে তাদের চেক পৌছে দিয়েছি।
জুড়ী উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা সুমন দেবনাথ বলেন, চা শ্রমিকদের জীবন মান উন্নয়নের এককালিন অর্থের চেক আমাদের অফিসের কর্মকর্তাদের মাধ্যমে পৌছে দেয়া হয়েছে। ৮ জন শ্রমিক অনুপস্থিত থাকায় চা বাগান পঞ্চায়েত সভাপতির অনুরোধে চেক গুলো তার কাছে হস্থান্তর করা হয়। পরে তিনি জানতে পারেন চেক গুলো শ্রমিকরা পাননি। তদন্ত সাপেক্ষ্যে পঞ্চায়েত সভাপতির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।