ঢাকায় আসছেন মার্কিন উপ সহকারী মন্ত্রী মিরা,নিরাপত্তা সংলাপে অংশ নিতে
- আপডেট সময় ০৩:৪৩:০৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ অগাস্ট ২০২৩
- / ৩৫২ বার পড়া হয়েছে
বাংলাদেশ সফরে আসছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের রাজনৈতিক সামরিকবিষয়ক আঞ্চলিক নিরাপত্তার ডেপুটি অ্যাসিসট্যান্ট সেক্রেটারি (উপসহকারী মন্ত্রী) মিরা কে রেসনিক। অন্য দেশের সামরিক বাহিনীর কাছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম বিক্রি নিয়ে কাজ করা এই কর্মকর্তা ঢাকায় অনুষ্ঠেয় নবম নিরাপত্তা সংলাপে অংশ নেবেন। সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে তার বাংলাদেশে আসার কথা রয়েছে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এই কর্মকর্তার সফরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ঢাকাস্থ কূটনৈতিক সূত্র। পররাষ্ট্র দপ্তরে যোগদানের আগে মিরা কে রেসনিক মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকার পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটির জ্যেষ্ঠ সদস্য হিসেবে কাজ করেছেন।
জানা যায়, আগামী ৪-৫ সেপ্টেম্বর দুই দিনের সফরে তার ঢাকায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে। ঢাকা সফরকালে মিরা কে রেসনিক সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে বৈঠক করবেন। সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গেও বৈঠকের কথা রয়েছে তার।
নাম না প্রকাশ করার শর্তে এক কূটনীতিক জানান, ঢাকা সফরে নাগরিক সমাজ ও সাংবাদিকদের সঙ্গেও বৈঠকের কথা রয়েছে মিরা কে রেসনিকের।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রে ঢাকা-ওয়াশিংটন অষ্টম নিরাপত্তা সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। তাতে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন। আর যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্র দপ্তরের অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ ও আন্তর্জাতিক নিরাপত্তাবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি বনি জেনকিনস।
ঢাকায় এবার দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক পর্যায়ে নবম নিরাপত্তা সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশের পক্ষে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উত্তর আমেরিকা অনুবিভাগের মহাপরিচালক খন্দকার মাসুদুল আলম নেতৃত্ব দেবেন। এতে যোগ দেবেন মিরা কে রেসনিক। বৈঠকে দুই দেশের নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষাবিষয়ক সার্বিক আলোচনা হবে।
গত সপ্তাহে ঢাকায় বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রে মধ্যকার দশম প্রতিরক্ষা সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রের ইন্দো-প্যাসিফিক কমান্ডের কৌশলগত পরিকল্পনা ও নীতিবিষয়ক পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল টমাস জে জেমস বাংলাদেশ সফর করেন। সংলাপে বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে দুদেশের প্রতিরক্ষা ও সামরিক সহযোগিতা, প্রযুক্তি, প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম, দুর্যোগ মোকাবিলা, শান্তিরক্ষা কার্যক্রম এবং প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা, প্রশিক্ষণ, পরিদর্শন, যৌথ অনুশীলন ও মোতায়েন, কর্মশালা ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা হয়। এ ছাড়া দুই দেশের মধ্যে জেনারেল সিকিউরিটি অব মিলিটারি ইনফরমেশন অ্যাগ্রিমেন্ট (জিএসওএমআইএ) চুক্তি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
ফোর্সেস গোল ২০৩০ বাস্তবায়নে সামরিক বাহিনীকে যুগোপযোগী করে গড়ে তুলতে চাইছে বাংলাদেশ। সমরাস্ত্র সংগ্রহে একক দেশনির্ভরতা কাটাতে অন্যান্য উৎসের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র থেকেও অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র সংগ্রহের চেষ্টা চলছে। এ জন্য ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্র থেকে সমরাস্ত্র ক্রয়ের প্রস্তাব দেয়া হয় বাংলাদেশকে।
কূটনৈতিক সূত্র জানায়, অ্যাডভান্সড মিলিটারি হার্ডওয়্যার কিনতে প্রতিরক্ষা চুক্তি জিএসওএমআইএ লাগবে বলে বাংলাদেশকে জানিয়ে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তি করার বিষয়ে নীতিগতভাবে সম্মত ঢাকা। বর্তমানে প্রস্তাবিত চুক্তির খসড়া নিয়ে কাজ করছে দুই দেশ। বাংলাদেশকে ঋণের মাধ্যমে অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র দিতে প্রস্তুত বলেও জানিয়েছে ওয়াশিংটন।
সমরাস্ত্র সংগ্রহের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ তিনটি বিষয় মাথায় রেখে কাজ করছে। প্রথমটি হলো দাম। যে সক্ষমতা রয়েছে, তার মধ্যে থেকেই অস্ত্র সংগ্রহ করবে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় হলো অস্ত্রের গুণগত মান। এ জায়গাটিতে জোর দেবে বাংলাদেশ। সাশ্রয়ী মূল্যে ভালো মানের অস্ত্র সংগ্রহে ভূমিকা পালন করবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। আর সর্বশেষ হলো কৌশলগত দিক বিবেচনা। ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে কৌশলগত দিক বিবেচনায় সমরাস্ত্র সংগ্রহ করবে বাংলাদেশ।
মিরা কে রেসনিক বছরে ৪০ বিলিয়ন ডলারের বেশি প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম বিক্রির দায়িত্ব পালন করে থাকেন। এ ছাড়া বছরে সাড়ে ৬ বিলিয়ন ডলারের নিরাপত্তা সহযোগিতার বিষয়টিও দেখভাল করেন এই কর্মকর্তা।