ঢাকা ০৩:১৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজ
দল নেই নির্বাচনে,তবুও সিলেটে প্রার্থী তারা শ্রীমঙ্গলে প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনী অনু্ষ্টিত এমপি-মন্ত্রীদের সন্তান ও আত্মীয়রা প্রার্থী হতে পারবেন না উপজেলা নির্বাচনে কোটচাঁদপুর জেলা প্রশাসক এস এম রফিকুল ইসলামের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত  ঝিনাইদহে প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনীর উদ্বোধন লাখাইয় প্রাণীসম্পদ সেবা সপ্তাহ এর শুভ উদ্ধোধন করেন ইউএনও নাহিদা সুলতানা পৌরসভার উদ্যাগে ৩ কোটি টাকার রাস্তা ও ড্রেন নির্মাণ কাজের ভিত্তি প্রস্তুর স্থাপন হাওর পাড়ে কৃষকের স্বস্তিতে ‘কৃষক ছাউনি’ সঙ্গীতশিল্পী পাগল হাসান সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত দুইদিন বন্ধ থাকবে ডাউকি ইমিগ্রেশন

তীব্র জ্বালানী সংকটে পড়েছে মৌলভীবাজারে চলাচলকারী হাজার হাজার যানবাহন

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৯:১৮:২৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ জুলাই ২০২২
  • / ৭০২ বার পড়া হয়েছে

মৌলভীবাজার২৪ ডেস্ক: চলতি মাসের নির্ধারিত বরাদ্দ শেষ হওয়ায় মৌলভীবাজারের ৩টি সিএনজি গ্যাস স্টেশনে সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে জালালাবাদ গ্যাস কর্তৃপক্ষ। যানবাহনে সিএনজি গ্যাস ভরতে না পেয়ে তীব্র জ্বালানী সংকটে পড়েছে মৌলভীবাজারে চলাচলকারী হাজার হাজার যানবাহন। গত কয়েকদিন ধরে মৌলভীবাজার ও রাজনগর উপজেলায় প্রধান তিনটি সিএনজি স্টেশন বন্ধ থাকায় এই অবস্থা তৈরী হয়েছে। জালালাবাদ গ্যাস কর্তৃপক্ষের সাথে চুক্তি অনুযায়ী চলতি মাসের গ্যাস বরাদ্দের পরিমাণ শেষ হওয়ায় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে।

মৌলভীবাজার শহরের কুসুমবাগ এলাকার মেসার্স সাজ্জাদুর রহমান সিএনজি ফিলিং স্টেশন, শহরের শমসেরনগর রোডের এমএফ সিএনজি ফিলিং স্টেশন এবং রাজনগরের ডেলটা সিএনজি এন্ড ফিলিং স্টেশন ক্রমান্বয়ে বন্ধ করে দিয়েছে জালালাবাদ গ্যাস টিএনটি সিস্টেম লিমিটেড।

সিএনজি এন্ড ফিলিং স্টেশন মালিকরা জানান, শুধুমাত্র মৌলভীবাজারের স্টেশনগুলোর সাথে কর্তৃপক্ষ এই ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। সিলেট, সুনামগঞ্জ ও হবিগঞ্জের স্টেশনগুলো বরাদ্দ পাচ্ছে।

এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জালালাবাদ গ্যাস কর্তৃপক্ষের সিলেট ও মৌলভীবাজারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা জানান, সরকার নির্ধারিত লোড আমাদেরকে মেনে চলতে হবে। সরবরাহ বন্ধকৃত প্রতিষ্ঠানগুলোর ২০ জুলাই বরাদ্দের পরিমাণ শেষ হয়েছে। এর আগে এসব প্রতিষ্ঠানগুলোকে সতর্ক করা হয়েছে যাতে বরাদ্দের ভেতরে তারা সরবরাহ করে।

বরাদ্দের পরিমাণ বাড়ানো হবে কিনা এ প্রশ্নের জবাবে তাঁরা জানান, বতমানে সরকার সবক্ষেত্রেই গ্যাস সরবরাহ সীমিত করছে। তাই এখন বাড়ানোর বিষয়ে কিছু বলা যাবে না। তবে চলতি মাস শেষ হলে পুনরায় তারা বরাদ্দকৃত গ্যাস পাবে এবং যানবাহনে সরবরাহ করতে পারবেন।এদিকে স্টেশন মালিকরা জানান, বরাদ্দ বাড়ানোর জন্য বারবার আবেদন করার পরও বরাদ্দ বাড়াচ্ছে না জালালাবাদ কর্তৃপক্ষ। ফলে হাজার হাজার চালক গ্যাস না পেয়ে পড়েছেন দুর্ভোগে। হাজার হাজার যানবাহন গ্যাস না থাকায় সড়কের পাশে অবস্থান করছে।

জানা যায়, মেসার্স সাজ্জাদুর রহমান সিএনজি ফিলিং সেটশনটি ২০১২ সালে ১ লক্ষ ৬২ হাজার ২৪০ কিউবিক মিটার বরাদ্দ নিয়ে ২০১৪ সালে প্রতিষ্ঠানটি যানবাহনে গ্যাস সরবরাহ চালু করে। কিন্তু প্রতিবছরই যানবাহন বেড়ে যাওয়ায় এই বরাদ্দে স্টেশন চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না বলে তাদের দাবি। তারা বরাদ্দ বাড়াতে কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছে। কিন্তু বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে জালালাবাদ কর্তৃপক্ষ বরাদ্দ বাড়ায়নি।

মেসার্স সাজ্জাদুর রহমান সিএনজি ফিলিং সেটশন এর প্রোপাইটর ইফতেখার আহমেদ জানান, ২০১২ সালে যে চুক্তি হয়েছিলো তা দিয়ে আমি ২০১৪ সালে স্টেশনটি চালু করি। ওইসময়ে যানবাহনের সংখ্যার জন্য এই বরাদ্দ সঠিক ছিল। এখন প্রায় ১০ বছর পেরিয়ে গেছে। যানবাহন কয়েকগুণ বেড়েছে। চাহিদাও প্রায় দ্বিগুণের চেয়ে বেশি হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে বরাদ্দ আরো বাড়ানোর জন্য আমি ২০১৫ সাল থেকে কিছুদিন পর পর আবেদন করছি কিন্তু বরাদ্দ বাড়ানো হয়না। ফলে গত ১৮ জুলাই গ্যাস বরাদ্দের পরিমাণ শেষ হওয়ায় কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে।

এদিকে শহরের শমসেরনগর রোডের এমএফ সিএনজি ফিলিং স্টেশনটির বরাদ্দের পরিমাণ ছিল ১ লক্ষ ৪৮ হাজার কিউবিক মিটার। তাঁদের বরাদ্দের পরিমাণ শেষ হওয়ায় ২০ জুলাই দুপুর থেকে তাঁরাও গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেয়।

এমএফ সিএনজি ফিলিং স্টেশনের প্রোপাইটর ফরহাদ আলী ইমন জানান, বরাদ্দ বাড়ানোর জন্য গত জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে আমিসহ সিলেট বিভাগের সিএনজি এন্ড ফিলিং স্টেশনের মালিকগণ ৫শ’ টাকা দিয়ে ফরম কিনে আবেদন করেছি। পরবর্তীতে আমাদেরকে জানানো হয় বরাদ্দ বাড়ানো হবে না।

অন্যদিকে রাজনগর উপজেলার একমাত্র স্টেশন ডেলটা সিএনজি এন্ড ফিলিং স্টেশনটির বরাদ্দের পরিমাণ ছিল ১ লক্ষ ৬২ হাজার ২৪০ কিউবিক মিটার। তাঁদেরও বরাদ্দের পরিমাণ শেষ হওয়ায় ২২ জুলাই সকাল ১১টা থেকে তাঁরাও গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেয়।

এই তিনটি স্টেশন ছাড়াও মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল রোডে মাজ সিএনজি ফিলিং স্টেশন ও রহমান সিএনজি ফিলিং স্টেশন চালু রয়েছে। কিন্তু দুটি স্টেশন যানবাহনের চাপ সামলাতে পারছেনা। একদিকে সিএনজি অটোরিক্সা, গণপরিবহন ও প্রাইভেট যানবাহনের কারণে এই দুটি স্টেশনে প্রতিদিনই সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। যানবাহন চালক ও স্টেশনের কমরত স্টাফের সাথে ঝগড়া-বিবাদও হচ্ছে। গ্যাস নিতে কয়েক ঘন্টা অপেক্ষা করার কারণে যানবাহনের চালকের দিনপ্রতি আয়ও কমেছে।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

তীব্র জ্বালানী সংকটে পড়েছে মৌলভীবাজারে চলাচলকারী হাজার হাজার যানবাহন

আপডেট সময় ০৯:১৮:২৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ জুলাই ২০২২

মৌলভীবাজার২৪ ডেস্ক: চলতি মাসের নির্ধারিত বরাদ্দ শেষ হওয়ায় মৌলভীবাজারের ৩টি সিএনজি গ্যাস স্টেশনে সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে জালালাবাদ গ্যাস কর্তৃপক্ষ। যানবাহনে সিএনজি গ্যাস ভরতে না পেয়ে তীব্র জ্বালানী সংকটে পড়েছে মৌলভীবাজারে চলাচলকারী হাজার হাজার যানবাহন। গত কয়েকদিন ধরে মৌলভীবাজার ও রাজনগর উপজেলায় প্রধান তিনটি সিএনজি স্টেশন বন্ধ থাকায় এই অবস্থা তৈরী হয়েছে। জালালাবাদ গ্যাস কর্তৃপক্ষের সাথে চুক্তি অনুযায়ী চলতি মাসের গ্যাস বরাদ্দের পরিমাণ শেষ হওয়ায় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে।

মৌলভীবাজার শহরের কুসুমবাগ এলাকার মেসার্স সাজ্জাদুর রহমান সিএনজি ফিলিং স্টেশন, শহরের শমসেরনগর রোডের এমএফ সিএনজি ফিলিং স্টেশন এবং রাজনগরের ডেলটা সিএনজি এন্ড ফিলিং স্টেশন ক্রমান্বয়ে বন্ধ করে দিয়েছে জালালাবাদ গ্যাস টিএনটি সিস্টেম লিমিটেড।

সিএনজি এন্ড ফিলিং স্টেশন মালিকরা জানান, শুধুমাত্র মৌলভীবাজারের স্টেশনগুলোর সাথে কর্তৃপক্ষ এই ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। সিলেট, সুনামগঞ্জ ও হবিগঞ্জের স্টেশনগুলো বরাদ্দ পাচ্ছে।

এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জালালাবাদ গ্যাস কর্তৃপক্ষের সিলেট ও মৌলভীবাজারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা জানান, সরকার নির্ধারিত লোড আমাদেরকে মেনে চলতে হবে। সরবরাহ বন্ধকৃত প্রতিষ্ঠানগুলোর ২০ জুলাই বরাদ্দের পরিমাণ শেষ হয়েছে। এর আগে এসব প্রতিষ্ঠানগুলোকে সতর্ক করা হয়েছে যাতে বরাদ্দের ভেতরে তারা সরবরাহ করে।

বরাদ্দের পরিমাণ বাড়ানো হবে কিনা এ প্রশ্নের জবাবে তাঁরা জানান, বতমানে সরকার সবক্ষেত্রেই গ্যাস সরবরাহ সীমিত করছে। তাই এখন বাড়ানোর বিষয়ে কিছু বলা যাবে না। তবে চলতি মাস শেষ হলে পুনরায় তারা বরাদ্দকৃত গ্যাস পাবে এবং যানবাহনে সরবরাহ করতে পারবেন।এদিকে স্টেশন মালিকরা জানান, বরাদ্দ বাড়ানোর জন্য বারবার আবেদন করার পরও বরাদ্দ বাড়াচ্ছে না জালালাবাদ কর্তৃপক্ষ। ফলে হাজার হাজার চালক গ্যাস না পেয়ে পড়েছেন দুর্ভোগে। হাজার হাজার যানবাহন গ্যাস না থাকায় সড়কের পাশে অবস্থান করছে।

জানা যায়, মেসার্স সাজ্জাদুর রহমান সিএনজি ফিলিং সেটশনটি ২০১২ সালে ১ লক্ষ ৬২ হাজার ২৪০ কিউবিক মিটার বরাদ্দ নিয়ে ২০১৪ সালে প্রতিষ্ঠানটি যানবাহনে গ্যাস সরবরাহ চালু করে। কিন্তু প্রতিবছরই যানবাহন বেড়ে যাওয়ায় এই বরাদ্দে স্টেশন চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না বলে তাদের দাবি। তারা বরাদ্দ বাড়াতে কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছে। কিন্তু বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে জালালাবাদ কর্তৃপক্ষ বরাদ্দ বাড়ায়নি।

মেসার্স সাজ্জাদুর রহমান সিএনজি ফিলিং সেটশন এর প্রোপাইটর ইফতেখার আহমেদ জানান, ২০১২ সালে যে চুক্তি হয়েছিলো তা দিয়ে আমি ২০১৪ সালে স্টেশনটি চালু করি। ওইসময়ে যানবাহনের সংখ্যার জন্য এই বরাদ্দ সঠিক ছিল। এখন প্রায় ১০ বছর পেরিয়ে গেছে। যানবাহন কয়েকগুণ বেড়েছে। চাহিদাও প্রায় দ্বিগুণের চেয়ে বেশি হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে বরাদ্দ আরো বাড়ানোর জন্য আমি ২০১৫ সাল থেকে কিছুদিন পর পর আবেদন করছি কিন্তু বরাদ্দ বাড়ানো হয়না। ফলে গত ১৮ জুলাই গ্যাস বরাদ্দের পরিমাণ শেষ হওয়ায় কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে।

এদিকে শহরের শমসেরনগর রোডের এমএফ সিএনজি ফিলিং স্টেশনটির বরাদ্দের পরিমাণ ছিল ১ লক্ষ ৪৮ হাজার কিউবিক মিটার। তাঁদের বরাদ্দের পরিমাণ শেষ হওয়ায় ২০ জুলাই দুপুর থেকে তাঁরাও গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেয়।

এমএফ সিএনজি ফিলিং স্টেশনের প্রোপাইটর ফরহাদ আলী ইমন জানান, বরাদ্দ বাড়ানোর জন্য গত জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে আমিসহ সিলেট বিভাগের সিএনজি এন্ড ফিলিং স্টেশনের মালিকগণ ৫শ’ টাকা দিয়ে ফরম কিনে আবেদন করেছি। পরবর্তীতে আমাদেরকে জানানো হয় বরাদ্দ বাড়ানো হবে না।

অন্যদিকে রাজনগর উপজেলার একমাত্র স্টেশন ডেলটা সিএনজি এন্ড ফিলিং স্টেশনটির বরাদ্দের পরিমাণ ছিল ১ লক্ষ ৬২ হাজার ২৪০ কিউবিক মিটার। তাঁদেরও বরাদ্দের পরিমাণ শেষ হওয়ায় ২২ জুলাই সকাল ১১টা থেকে তাঁরাও গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেয়।

এই তিনটি স্টেশন ছাড়াও মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল রোডে মাজ সিএনজি ফিলিং স্টেশন ও রহমান সিএনজি ফিলিং স্টেশন চালু রয়েছে। কিন্তু দুটি স্টেশন যানবাহনের চাপ সামলাতে পারছেনা। একদিকে সিএনজি অটোরিক্সা, গণপরিবহন ও প্রাইভেট যানবাহনের কারণে এই দুটি স্টেশনে প্রতিদিনই সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। যানবাহন চালক ও স্টেশনের কমরত স্টাফের সাথে ঝগড়া-বিবাদও হচ্ছে। গ্যাস নিতে কয়েক ঘন্টা অপেক্ষা করার কারণে যানবাহনের চালকের দিনপ্রতি আয়ও কমেছে।