দায়িত্ব নিচ্ছেন আয়ারুজ্জামান,বিদায় আরিফ
- আপডেট সময় ১১:৩৪:৫৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ নভেম্বর ২০২৩
- / ৪১৫ বার পড়া হয়েছে
ডেস্ক রিপোর্টঃ সিলেট সিটি করপোরেশনে আরিফুল হক চৌধুরী যুগের অবসান হচ্ছে আজ মঙ্গলবার। টানা দুই মেয়াদে মেয়রের দায়িত্ব পালনের পর আজ আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব ছাড়ছেন তিনি। আজকেই মেয়র হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করবেন আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী।
নতুন মেয়র ও তার পরিষদের দায়িত্বভার গ্রহণ উপলক্ষে মঙ্গলবার বিকেলে নগর ভবন প্রাঙ্গণে সুধী সমাবেশের আয়োজন করেছে সিলেট সিটি করপোরেশন।
সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২১ জুন। এতে মেয়র নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। তবে এ নির্বাচনে দলীয় নির্দেশনা মেনে প্রার্থী হননি বর্তমান মেয়র ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরী।
৩ জুলাই মেয়র হিসেবে শপথ নেন আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। শপথের গ্রহণের প্রায় চার মাস পর মেয়রের দায়িত্ব পাচ্ছেন তিনি। নতুন মেয়রের দায়িত্ব গ্রহণ উপলক্ষে বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে নগর ভবন। নগরজুড়ে নতুন মেয়রকে স্বাগত জানিয়ে তোড়ন টানানো হয়েছে।
জানা গেছে, দুপুর আড়াইটার দিকে নগরভবনে মেয়রের কার্যালয়ে বিদায়ী মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী নবনির্বাচিত মেয়র আনোয়ারুজ্জমান চৌধুরীর হাতে দায়িত্ব তুলে দিবেন। এরপর নবনির্বাচিত কাউন্সিলরবৃন্দকে নিয়ে বিকেল ৩টায় নগরভবন প্রাঙ্গনে সুধি সমাবেশে যোগ দিবেন তিনি।
সুধি সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান বিষয়ক মন্ত্রী ইমরান আহমদ।
এর আগে বাদজোহর মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর নেতৃত্বে কাউন্সিলরবৃন্দ হযরত শাহজালালের (র.) মাজার জিয়ারত করবেন। এরপর বিশেষ মোনাজাত শেষে তারা আড়াইটার আগে নগরভবনে পৌঁছাবেন।
সিলেট সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহিমা ইয়াসমিন বলেন, ‘মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন মেয়র ও তার পরিষদকে বরণ করে নেয়া হবে। এ উপলক্ষে নগর ভবন চত্বরে সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। নানা শ্রেণি-পেশার নাগরিকরা এই আয়োজনে উপস্থিত থাকবেন।’
সিলেট পৌরসভাকে ২০০২ সালে সিটি করপোরেশনে উন্নীত করা হয়। সে সময় তৎকালীন পৌর চেয়ারম্যান বদরউদ্দিন আহমদ কামরান মেয়রের দায়িত্ব পান। এরপর ২০০৩ ও ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে আরও দশ বছর মেয়রের দায়িত্ব পালন করেন সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভাপতি কামরান।
২০১৩ সালে কামরানকে পরাজিত করে প্রথমবারের মতো মেয়র নির্বাচিত হন আরিফুল হক চৌধুরী। ২০১৮ সালেও একই প্রতিদ্বন্দ্বীর বিরুদ্ধে জয়লাভ করেন তিনি।
টানা ১০ বছর মেয়রের দায়িত্ব পালনকালে নগরের সড়ক সম্প্রসারণ, ছড়া উদ্ধার, ড্রেনেজ ব্যবস্থার সংস্কার, সৌন্দর্যবর্ধনসহ আরিফুল হকের কিছু কাজ নগরবাসীর প্রশংসা কুড়ায়। আবার অপরিকল্পিত উন্নয়নের জন্য সমালোচিতও হতে হয় তাকে। বিশেষত হাজার কোটি টাকা ব্যয় সত্ত্বেও নগরের জলবদ্ধতা সমস্যা দূর না হওয়ায় সমালোচিত হন আরিফুল হক চৌধুরী।
১০ বছর দায়িত্ব পালনকালে সবসময় সরকারের পক্ষ থেকে সহায়তা পাওয়ার দাবি করে আসা আরিফুল হক গত মাসে নিজের শেষ বাজেটে সিলেটের প্রতি সরকারের বিমাতাসুলভ আচরণের অভিযোগ করেন। নগরের উন্নয়নে সিটি করপোরেশন থেকে দেয়া অনেক প্রকল্প প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পায়নি বলেও অভিযোগ তার।
প্রথমবারের মতো কোন বিদায়ী মেয়র হিসেবে আরিফুল হককে নাগরিক সংবর্ধনা প্রদান করে সিলেট সিটি করপোরেশন।
টানা দুই মেয়াদে মেয়রের দায়িত্ব থাকা অবস্থায় নিজের কার্যক্রম সম্পর্কে আরিফুল হক চৌধুরী সোমবার বলেন, ‘আমি কী করেছি নগরবাসীই তা মূল্যায়ন করবে। আমি দায়িত্ব নেয়ার আগে নগরের চেহারা কেমন ছিলো এবং এখন কেমন হয়েছে তা নগরবাসী ভালো করেই জানেন।’
গত সিটি নির্বাচনের আগে অনেকটাই আলোচনার বাইরে ছিলেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। সাবেক মেয়র বদরউদ্দিন আহমদ কামরানের মৃত্যুতে সিলেটে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী কে হবেন এ নিয়ে ছিলো জল্পনা-কল্পনা। এ অবস্থায় যুক্তরাজ্য থেকে এনে আনোয়ারুজ্জামানকে প্রার্থী করে আওয়ামী লীগ।
বিএনপিহীন এই নির্বাচনে বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়ে মেয়র নির্বাচিত হন তিনি। মঙ্গলবার আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী এবং তার সঙ্গে নির্বাচিত ৪২ সাধারণ কাউন্সিলর ও ১৪ নারী কাউন্সিলর দায়িত্ব গ্রহণ করবেন।
দায়িত্ব গ্রহণরের প্রাক্কালে সোমবার আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘আমি নগরের পরিকল্পিত উন্নয়নে মনোযোগী হবো। উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের মতামতকে গুরুত্ব দেবো।