ঢাকা ০২:১০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজ
বড়লেখায় দুর্বৃত্তদের হামলায় দুই ভাই নি হ ত মনিপুরি সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণে তারুণ্যের নবযাত্রা স্মৃতিসৌধে তারেক রহমান, সাভারে নেতাকর্মীদের জনসমুদ্র খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ‘বড়দিন’ পালিত ২০০ কোটি টাকার আর্থিক প্রতারণার মামলায় সুকেশ চন্দ্রশেখর মৌলভীবাজারে ডেভিল হান্ট ফেইজ- ২ তে ৫ নেতা গ্রে ফ তা র তারেক রহমানকে বরণ করতে মৌলভীবাজারের নেতাকর্মীরা ঢাকায় সিলেট ওসমানী বিমানবন্দরে অবতরণ করেছে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বহনকারী ফ্লাইট তারেক রহমানের নিরাপদ স্বদেশ আগমন কামনায় মৌলভীবাজারে দোয়া মাহফিল কমলগঞ্জে সীমান্তবর্তী এলাকায় বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দিলো ৪৬ বিজিবি

দেনার দায়ে নবজাতককে বিক্রি করলেন মা, ক্লিনিক মালিকের ৬ মাসের কারাদণ্ড ও সহযোগীতাকারী আটক

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৯:৫৪:১৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ অক্টোবর ২০২৫
  • / ১৫০ বার পড়া হয়েছে

মোঃ মঈন উদ্দিন খানঃ দেনার টাকা পরিশোধ করতে সিজারের মাধ্যমে সদ্যপ্রসূত সন্তানকে (ছেলে) দত্তক দিতে বাধ্য হয়েছেন মা সুমাইয়া খাতুন। বিনিময়ে মিলেছে হাসপাতালের বিল পরিশোধ ও কিছু নগদ (৬৫ হাজার) টাকা। আর এতে সহযোগিতা করেন ক্লিনিকের আয়া ইসমোতারা। এ ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার দুপুরে ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার নেপার মোড়ের পিয়ারলেস প্রাইভেট হাসপাতালে।

 

সুমাইয়া খাতুন ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার যাদবপুর ইউনিয়নের আনছার মোড়ের সাত্তার আলীর ছেলে মৃত আলামিনের স্ত্রী।বিষয়টি জানাজানি হলে বুধবার(১আক্টবর) বিকালে পিয়ারলেস প্রাইভেট হাসপাতালে মহেশপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খাদিজা আক্তার ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের টিএসও হেলেনা আক্তার নিপার নেতৃত্বে গঠিত ভ্রাম্যমান আদালত অভিযান চালাই।

 

অভিযানে পিয়ারলেস প্রাইভেট হাসপাতালের কাগজপত্রে ত্রুটি  ও হাসপাতালের পরিবেশ ভালো না থাকায় মালিক সেলিম রেজা বাবুকে ৬ মাসের কারাদণ্ড  ও শিশু সন্তার বিক্রির সহযোগিতাকারী পিয়ারলেস প্রাইভেট হাসপাতালের আয়া ইসমোতারাকে পুলিশ আটক করেছে।

সুমাইয়া খাতুনের পরিবারের সদস্যরা জানান, ৪ মাসের গর্ভবতী থাকা অবস্থায় হৃদ রোগে আক্রান্ত হয়ে সুমাইয়া খাতুনের স্বামী আলামীন মারা যায়। এর পর থেকে সুমাইয়া  জীবনে নেমে আসে চরম সংকট। স্বামী কিবা পিতা কোন বাড়িতেই ঠাই মেলেনি তার। অবশেষে  বৃদ্ধা নানীর বাড়িতে ঠাই হয় তার। দিন দিন পেটের সন্তান বড় হতে থাকে।

 

মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টম্বর) দুপুরে প্রস্বব বেদনা উঠলে এক প্রতিবেশির মাধ্যমে স্থানীয় এক ক্লিনিকে সিজার অপারেশনের মাধ্যমে ছেলে সন্তান জন্মদেন সুমাইয়া। পরে অভাবের তাড়নায় সদ্যপ্রসূত সন্তানকে দত্তক দিতে বাধ্য হয়েছেন তিনি। বিনিময়ে মিলেছে হাসপাতালের বিল পরিশোধ ও কিছু নগদ (৬৫ হাজার) টাকা।

নবজাতকের মা সুমাইয়া খাতুন জানান, স্বামীর মৃত্যুর পর গর্ভবস্থায় না পেয়েছি স্বামীর বাড়িতে ঠাই না পেয়েছি বাবার বাড়িতে ঠাই। নানীর বাড়িতে থেকে পেটের সন্তাকে বড় করেছি। গর্ভবতী অবস্থায় এমনিতে লোকের কাছে ধারদেনা করে  করে কোনোমতে চলেছি। ক্লিনিকের খরচ সন্তার মানুষ করা আমার পক্ষে সম্ভব না। সে কারণে নবজাতক সন্তাকে দত্তক দিতে বাধ্য হয়েছি। তিনি আরও বলেন যারা দত্তক নিয়েছে তাদেরকে আমি চিনি না, শুধু শুনেছি তাদের বাড়ি কুমিল্লায়।এ ঘটনায় পিয়ারলেস প্রাইভেট হাসপাতালের মালিক সেলিম রেজা বাবু জানান, সিজারের পর রোগীর দেখাশোনা ছাড়া আমার করার কিছু নেই। রোগী যদি কারও সাথে আপস করে সন্তন দিয়ে দেয় সেটার জন্য আমি দায়ী নই।

মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের (টি এইচ ও) হেলেনা আক্তার নিপা জানান, আমরা আপনাদের মাধ্যমে বিষয়টি জানার পর পিয়ারলেস প্রাইভেট হাসপাতালে অভিযান চালিয়েছি। অভিযানে ক্লিনিক মালিকের জেল দেওয়া হয়েছে আর শিশু বিক্রির সহযোগিতাকারী নার্সের বিরুদ্ধে মামলা হচ্ছে।
মহেশপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খাদিজা আক্তার জানান, ক্লিনিকের কাগজপত্রে ত্রুটি  ও হাসপাতালের পরিবেশ ভালো না থাকায় পিয়ারলেস প্রাইভেট হাসপাতালের মালিক সেলিম রেজা বাবুকে ৬ মাসের কারাদণ্ড  ও শিশু বিক্রির সহযোগিতাকারী নার্সকে আটক করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে মামলা হচ্ছে।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

দেনার দায়ে নবজাতককে বিক্রি করলেন মা, ক্লিনিক মালিকের ৬ মাসের কারাদণ্ড ও সহযোগীতাকারী আটক

আপডেট সময় ০৯:৫৪:১৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ অক্টোবর ২০২৫

মোঃ মঈন উদ্দিন খানঃ দেনার টাকা পরিশোধ করতে সিজারের মাধ্যমে সদ্যপ্রসূত সন্তানকে (ছেলে) দত্তক দিতে বাধ্য হয়েছেন মা সুমাইয়া খাতুন। বিনিময়ে মিলেছে হাসপাতালের বিল পরিশোধ ও কিছু নগদ (৬৫ হাজার) টাকা। আর এতে সহযোগিতা করেন ক্লিনিকের আয়া ইসমোতারা। এ ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার দুপুরে ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার নেপার মোড়ের পিয়ারলেস প্রাইভেট হাসপাতালে।

 

সুমাইয়া খাতুন ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার যাদবপুর ইউনিয়নের আনছার মোড়ের সাত্তার আলীর ছেলে মৃত আলামিনের স্ত্রী।বিষয়টি জানাজানি হলে বুধবার(১আক্টবর) বিকালে পিয়ারলেস প্রাইভেট হাসপাতালে মহেশপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খাদিজা আক্তার ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের টিএসও হেলেনা আক্তার নিপার নেতৃত্বে গঠিত ভ্রাম্যমান আদালত অভিযান চালাই।

 

অভিযানে পিয়ারলেস প্রাইভেট হাসপাতালের কাগজপত্রে ত্রুটি  ও হাসপাতালের পরিবেশ ভালো না থাকায় মালিক সেলিম রেজা বাবুকে ৬ মাসের কারাদণ্ড  ও শিশু সন্তার বিক্রির সহযোগিতাকারী পিয়ারলেস প্রাইভেট হাসপাতালের আয়া ইসমোতারাকে পুলিশ আটক করেছে।

সুমাইয়া খাতুনের পরিবারের সদস্যরা জানান, ৪ মাসের গর্ভবতী থাকা অবস্থায় হৃদ রোগে আক্রান্ত হয়ে সুমাইয়া খাতুনের স্বামী আলামীন মারা যায়। এর পর থেকে সুমাইয়া  জীবনে নেমে আসে চরম সংকট। স্বামী কিবা পিতা কোন বাড়িতেই ঠাই মেলেনি তার। অবশেষে  বৃদ্ধা নানীর বাড়িতে ঠাই হয় তার। দিন দিন পেটের সন্তান বড় হতে থাকে।

 

মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টম্বর) দুপুরে প্রস্বব বেদনা উঠলে এক প্রতিবেশির মাধ্যমে স্থানীয় এক ক্লিনিকে সিজার অপারেশনের মাধ্যমে ছেলে সন্তান জন্মদেন সুমাইয়া। পরে অভাবের তাড়নায় সদ্যপ্রসূত সন্তানকে দত্তক দিতে বাধ্য হয়েছেন তিনি। বিনিময়ে মিলেছে হাসপাতালের বিল পরিশোধ ও কিছু নগদ (৬৫ হাজার) টাকা।

নবজাতকের মা সুমাইয়া খাতুন জানান, স্বামীর মৃত্যুর পর গর্ভবস্থায় না পেয়েছি স্বামীর বাড়িতে ঠাই না পেয়েছি বাবার বাড়িতে ঠাই। নানীর বাড়িতে থেকে পেটের সন্তাকে বড় করেছি। গর্ভবতী অবস্থায় এমনিতে লোকের কাছে ধারদেনা করে  করে কোনোমতে চলেছি। ক্লিনিকের খরচ সন্তার মানুষ করা আমার পক্ষে সম্ভব না। সে কারণে নবজাতক সন্তাকে দত্তক দিতে বাধ্য হয়েছি। তিনি আরও বলেন যারা দত্তক নিয়েছে তাদেরকে আমি চিনি না, শুধু শুনেছি তাদের বাড়ি কুমিল্লায়।এ ঘটনায় পিয়ারলেস প্রাইভেট হাসপাতালের মালিক সেলিম রেজা বাবু জানান, সিজারের পর রোগীর দেখাশোনা ছাড়া আমার করার কিছু নেই। রোগী যদি কারও সাথে আপস করে সন্তন দিয়ে দেয় সেটার জন্য আমি দায়ী নই।

মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের (টি এইচ ও) হেলেনা আক্তার নিপা জানান, আমরা আপনাদের মাধ্যমে বিষয়টি জানার পর পিয়ারলেস প্রাইভেট হাসপাতালে অভিযান চালিয়েছি। অভিযানে ক্লিনিক মালিকের জেল দেওয়া হয়েছে আর শিশু বিক্রির সহযোগিতাকারী নার্সের বিরুদ্ধে মামলা হচ্ছে।
মহেশপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খাদিজা আক্তার জানান, ক্লিনিকের কাগজপত্রে ত্রুটি  ও হাসপাতালের পরিবেশ ভালো না থাকায় পিয়ারলেস প্রাইভেট হাসপাতালের মালিক সেলিম রেজা বাবুকে ৬ মাসের কারাদণ্ড  ও শিশু বিক্রির সহযোগিতাকারী নার্সকে আটক করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে মামলা হচ্ছে।