ঢাকা ০৮:৪৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২১ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজ
সিলেট-১ আসনের সাথেই থাকছে নগরের ২৫, ২৬ ও ২৭ নম্বর ওয়ার্ড এম সাইফুর রহমানের ১৬তম মৃত্যুবার্ষিকীতে আরিফুল হক চৌধুরীর উদ্যোগে কর্মসূচি শ্রীমঙ্গলে অনিয়মের দায়ে ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে জরিমানা মৌলভীবাজার জেলার ৬৭ টি ইউনিয়নকে দুর্নীতিমুক্ত রাখতে হবে জেলা প্রশাসক ইসরাইল হোসেন মৌলভীবাজারে ছাত্রশিবিরের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ শ্রীমঙ্গল ব্যবসায়ী সমিতির নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করলো হাইকোর্ট তারেক রহমানের কাছে বিচার চাইলেন,বহিষ্কৃত জেলা স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা মামনুন কুলাউড়ায় ভারতীয় বিড়ি জব্দ,গ্রে/ফ/তা/র -১ মৌলভীবাজারে আন্তঃজেলা মোটরসাইকেল চোর চক্রের ৩ সদস্য গ্রেফতার, ৫টি মোটরসাইকেল উদ্ধার জাতীয় অর্থনীতির স্থপতি এম. সাইফুর রহমানের স্মরণসভা শুক্রবার,আসছেন জাতীয় নেতৃবৃন্দরা

নেতাদের ড্রয়িংরুমে বন্দী সিলেটের রাজনীতি

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৯:২৩:৪৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৮ এপ্রিল ২০২২
  • / ৫২১ বার পড়া হয়েছে

সিলেটে দলের স্থায়ী কার্যালয় ছাড়াই চলছে বড় রাজনৈতিক দলগুলোর কার্যক্রম। শীর্ষ নেতাদের বাসার ড্রয়িংরুম বা ব্যক্তিগত অফিসই হয়ে উঠেছে দলীয় কার্যালয়। তাই নেতৃত্বের পরিবর্তন ঘটলে স্থান পরিবর্তন হয় দলীয় কার্যালয়েরও।

বহু বছর ধরে নেতা-কর্মীদের প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসলেও এখনো স্থায়ী কার্যালয় করতে পারেনি আওয়ামী লীগ, বিএনপি কিংবা জাতীয় পার্টির মতো রাজনৈতিক দলগুলো।

তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, দলের শীর্ষ নেতারা রাজনীতিকে নিজেদের ড্রয়িংরুমে বন্দী করে রাখতে স্থায়ী কার্যালয়ের ব্যাপারে অনাগ্রহী। এতে দিন দিন দলের মধ্যে গ্রুপিং বাড়ার সুযোগ তৈরি হচ্ছে বলেও অভিমত তাদের। একটি স্থায়ী কার্যালয় করতে পারেনি আওয়ামী লীগ। দলীয় সভার ভেন্যুর জন্য বেছে নিতে হচ্ছে হোটেল কিংবা জেলা পরিষদের অডিটোরিয়াম।

দলীয় কার্যালয় না থাকায় প্রতিদিন সন্ধ্যা হলেই নেতা-কর্মীদের আড্ডা জমে জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী ও মহানগর সভাপতি মাসুক উদ্দিন আহমদের বাসা এবং জেলার সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন খানের তেলিহাওরস্থ ব্যক্তিগত অফিসে। কার্যালয় না থাকায় নেতা-কর্মীদের দলীয় ও ব্যক্তিগত কাজে দৌঁড়াতে হয় নেতাদের বাসা ও অফিসে।

২০১৮ সালের সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের পরাজয়ের কারণ হিসেবে কেন্দ্র থেকে যে কয়েকটি কারণ চিহ্নিত করা হয়েছিল তার মধ্যে অন্যতম ছিল দুর্বল সাংগঠনিক অবস্থা ও দলীয় কার্যালয় না থাকা। এরপর কেন্দ্রের চাপে ওই বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর নগরীর চালিবন্দরে ইব্রাহিম স্মৃতি সংসদে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের অস্থায়ী কার্যালয়ের উদ্বোধন করা হয়। সিটি করপোরেশনের মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ভবনের একটি ফ্লোরে ওই স্মৃতি সংসদ করেছিলেন কামরানপুত্র আরমান আহমদ শিপলু।

উদ্বোধনের পর হাতেগোনা কয়েকটি দলীয় কর্মসূচি পালিত হয় ওই কার্যালয়ে। ২০১৯ সালের ৫ ডিসেম্বর সম্মেলনে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে পরিবর্তন আসলে অস্থায়ী কার্যালয়টিও অকার্যকর হয়ে পড়ে।একই অবস্থা বিএনপিরও। জেলা বিএনপির কার্যালয়ের কোনো সাইনবোর্ড নেই দীর্ঘদিন ধরে। ইলিয়াস আলী আহ্বায়ক থাকাবস্থায় উপশহরস্থ তার বাসাই ছিল দলীয় কার্যালয়। পরবর্তীতে আবুল কাহের শামীম-আলী আহমদের কমিটি আসলে শামীমের বাসা ও আলী আহমদের অফিসকে কেন্দ্র করেই ছিল নেতা-কর্মীদের আনাগোনা। বিভিন্ন হোটেল ও কমিউনিটি সেন্টার ভাড়া করে দলীয় সভার আয়োজন করা হতো। আহ্বায়ক আবদুল কাইয়ূম জালালী পংকীর ব্যক্তিগত অফিসে অস্থায়ী কার্যালয়ের সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে চলছে মহানগর বিএনপির কার্যক্রম।

এর আগে বিভিন্ন সময় আরিফুল হক চৌধুরীর বাসার সামনের বাংলোকেও দলীয় কার্যালয় বানিয়ে কার্যক্রম চালানো হয়। দলের নেতৃত্বের পরিবর্তন আসলেই স্থানান্তর ঘটে সাইনবোর্ডেরও।

সিলেটে জাতীয় পার্টির প্রভাবশালী প্রত্যেক নেতার বাসাই যেন একেকটি কার্যালয়। সর্বশেষ জেলা জাতীয় পার্টির সাবেক সদস্যসচিব নগরীর সুরমা মার্কেটে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পাশে দলীয় কার্যালয়ের সাইনবোর্ড টানিয়েছিলেন। কিন্তু ওই কার্যালয়ে নিজ বলয়ের নেতা-কর্মী ছাড়া দলীয় কোনো কর্মসূচির আয়োজন করতে পারেননি।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

নেতাদের ড্রয়িংরুমে বন্দী সিলেটের রাজনীতি

আপডেট সময় ০৯:২৩:৪৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৮ এপ্রিল ২০২২

সিলেটে দলের স্থায়ী কার্যালয় ছাড়াই চলছে বড় রাজনৈতিক দলগুলোর কার্যক্রম। শীর্ষ নেতাদের বাসার ড্রয়িংরুম বা ব্যক্তিগত অফিসই হয়ে উঠেছে দলীয় কার্যালয়। তাই নেতৃত্বের পরিবর্তন ঘটলে স্থান পরিবর্তন হয় দলীয় কার্যালয়েরও।

বহু বছর ধরে নেতা-কর্মীদের প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসলেও এখনো স্থায়ী কার্যালয় করতে পারেনি আওয়ামী লীগ, বিএনপি কিংবা জাতীয় পার্টির মতো রাজনৈতিক দলগুলো।

তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, দলের শীর্ষ নেতারা রাজনীতিকে নিজেদের ড্রয়িংরুমে বন্দী করে রাখতে স্থায়ী কার্যালয়ের ব্যাপারে অনাগ্রহী। এতে দিন দিন দলের মধ্যে গ্রুপিং বাড়ার সুযোগ তৈরি হচ্ছে বলেও অভিমত তাদের। একটি স্থায়ী কার্যালয় করতে পারেনি আওয়ামী লীগ। দলীয় সভার ভেন্যুর জন্য বেছে নিতে হচ্ছে হোটেল কিংবা জেলা পরিষদের অডিটোরিয়াম।

দলীয় কার্যালয় না থাকায় প্রতিদিন সন্ধ্যা হলেই নেতা-কর্মীদের আড্ডা জমে জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী ও মহানগর সভাপতি মাসুক উদ্দিন আহমদের বাসা এবং জেলার সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন খানের তেলিহাওরস্থ ব্যক্তিগত অফিসে। কার্যালয় না থাকায় নেতা-কর্মীদের দলীয় ও ব্যক্তিগত কাজে দৌঁড়াতে হয় নেতাদের বাসা ও অফিসে।

২০১৮ সালের সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের পরাজয়ের কারণ হিসেবে কেন্দ্র থেকে যে কয়েকটি কারণ চিহ্নিত করা হয়েছিল তার মধ্যে অন্যতম ছিল দুর্বল সাংগঠনিক অবস্থা ও দলীয় কার্যালয় না থাকা। এরপর কেন্দ্রের চাপে ওই বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর নগরীর চালিবন্দরে ইব্রাহিম স্মৃতি সংসদে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের অস্থায়ী কার্যালয়ের উদ্বোধন করা হয়। সিটি করপোরেশনের মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ভবনের একটি ফ্লোরে ওই স্মৃতি সংসদ করেছিলেন কামরানপুত্র আরমান আহমদ শিপলু।

উদ্বোধনের পর হাতেগোনা কয়েকটি দলীয় কর্মসূচি পালিত হয় ওই কার্যালয়ে। ২০১৯ সালের ৫ ডিসেম্বর সম্মেলনে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে পরিবর্তন আসলে অস্থায়ী কার্যালয়টিও অকার্যকর হয়ে পড়ে।একই অবস্থা বিএনপিরও। জেলা বিএনপির কার্যালয়ের কোনো সাইনবোর্ড নেই দীর্ঘদিন ধরে। ইলিয়াস আলী আহ্বায়ক থাকাবস্থায় উপশহরস্থ তার বাসাই ছিল দলীয় কার্যালয়। পরবর্তীতে আবুল কাহের শামীম-আলী আহমদের কমিটি আসলে শামীমের বাসা ও আলী আহমদের অফিসকে কেন্দ্র করেই ছিল নেতা-কর্মীদের আনাগোনা। বিভিন্ন হোটেল ও কমিউনিটি সেন্টার ভাড়া করে দলীয় সভার আয়োজন করা হতো। আহ্বায়ক আবদুল কাইয়ূম জালালী পংকীর ব্যক্তিগত অফিসে অস্থায়ী কার্যালয়ের সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে চলছে মহানগর বিএনপির কার্যক্রম।

এর আগে বিভিন্ন সময় আরিফুল হক চৌধুরীর বাসার সামনের বাংলোকেও দলীয় কার্যালয় বানিয়ে কার্যক্রম চালানো হয়। দলের নেতৃত্বের পরিবর্তন আসলেই স্থানান্তর ঘটে সাইনবোর্ডেরও।

সিলেটে জাতীয় পার্টির প্রভাবশালী প্রত্যেক নেতার বাসাই যেন একেকটি কার্যালয়। সর্বশেষ জেলা জাতীয় পার্টির সাবেক সদস্যসচিব নগরীর সুরমা মার্কেটে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পাশে দলীয় কার্যালয়ের সাইনবোর্ড টানিয়েছিলেন। কিন্তু ওই কার্যালয়ে নিজ বলয়ের নেতা-কর্মী ছাড়া দলীয় কোনো কর্মসূচির আয়োজন করতে পারেননি।