ঢাকা ০৩:৫২ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫, ২৩ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজ
কমলগঞ্জে পবিত্র আশুরা অনুষ্ঠান পালিত উলুয়াইল ইসলামিয়া আলিম মাদরাসায় পবিত্র আশুরা উপলক্ষে আলোচনা,মিলাদ ও দোয়া মাহফিল চুরি হওয়া ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা উদ্ধার,চক্রের ৪ সদস্য গ্রেফতার জালালাবাদ প্রদেশ বাস্তবায়ন সংগ্রাম পরিষদ মৌলভীবাজার জেলা কমিটির ঈদ পূনর্মিলনী সভা অনুষ্ঠিত কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজের ৫তলা ভবন নির্মাণ কাজের উদ্বোধন সোমবার আসছেন বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দ হাওর রক্ষা আন্দোলনের মানববন্ধন ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত বিএনপি নেতা আসাহিদ আহমদ’কে পৌর ও সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সংবর্ধনা মৌলভীবাজারে ডিবির বিশেষ অভিযান বিদেশী মদসহ যুবক আ/ট/ক কমিটিতে আওয়ামীলীগের দোসরদের কোনোভাবে স্থান দেয়ার সুযোগ নেই’ বিএনপির কর্মী সমাবেশে… ময়ূন

নয় মাসে লাউয়াছড়া ন্যাশনাল পার্কে ১০ বন্যপ্রাণীর মৃত্যু

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৮:৩৩:৫৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৫ অক্টোবর ২০২২
  • / ৪৮২ বার পড়া হয়েছে

মৌলভীবাজার২৪ ডেস্ক:  লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান হয়ে যাওয়া সড়ক রেলপথ ও বিদ্যুতের গ্রিড লাইন দিন দিন বন্যপ্রাণীর মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেক বিরল প্রজাতির বানর হুনুমান অজগর উল্লুক বাঁদুর ট্রেনে কাটা পড়ে অথবা সড়কে মারা যাচ্ছে। বিদ্যুতের তারে জড়িয়েও মাঝেমধ্যে অনেক বন্যপ্রাণী মারা যায়। জাতীয় উদ্যান হয়ে যাওয়া রেলপথ, সড়ক ও বিদ্যুতের জাতীয় গ্রিড লাইন বাইরে নিয়ে যাওয়ার দীর্ঘদিনের দাবি বাস্থবায়নে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ উদাসীন।

বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ, মৌলভীবাজারের তথ্যমতে- গত জানুয়ারি থেকে নয় মাসে লাউয়াছড়ায় সড়কে ও বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে ১০টি বন্যপ্রাণী প্রাণ হারায়। বনের ভেতর দিয়ে রেলপথ ও সড়ক যাওয়ার কারণে বন্যপ্রাণীর অভয়াশ্রম লাউয়াছড়া এখন বন্যপ্রাণীর জন্য এমন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।

সচেতন পরিবেশবিদরা মনে করেন, লাউয়াছড়ায় হয়ে যাওয়া ৭ কিলোমিটার রেলপথ ও পাকা সড়কে যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণ এখন জরুরি হয়ে পড়েছে। পাশাপাশি আঞ্চলিক সড়ক বনের বাইরে নিয়ে গেলে আরও কল্যাণকর। তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, বন্যপ্রাণী অধ্যাদেশ ১৯৭৪ এর ২ ও ৩ ধারা মতে ১৯৯৬ সালের ৭ জুলাই দেশের উত্তরপূর্বাঞ্চলের মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ ও শ্রীমঙ্গল উপজেলার মধ্যবর্তী পশ্চিম ভানুগাছ সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ১ হাজার ২৫০ হেক্টর (৩০৮৮ একর) এলাকা জাতীয় উদ্যান তথা ন্যাশনাল পার্ক (প্রকৃতির জন্য সংরক্ষিত এলাকা) ঘোষণা করে তৎকালীন সরকার। সেখানের বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণে নেওয়া হয়েছিল সেই উদ্যোগ। কিন্তু ১৯৯৭ সালে মাগরছড়া গ্যাসকুপে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের কারণে বন ও বন্যপ্রাণীর সীমাহীন ক্ষতি হয়- যা এখনো পুষিয়ে ওঠা যায়নি এমন অভিমত বন গবেষকদের।

রাজধানী ঢাকা থেকে প্রায় ১৭১ কিলোমিটার দূরের এই বনে ফেব্রুয়ারি মাসে সর্বোচ্চ ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং জুনে ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বিদ্যমান থাকে।

বনবিভাগ জানায়, লাউয়া ছড়ায় ৪৬০ প্রজাতির জীববৈচিত্র্য রয়েছে। ২৪৬ প্রজাতির পাখি, ৬ প্রজাতির শরীসৃপ ও ৪ প্রজাতির উভচর প্রাণীর বিচরণ এই বনে। এছাড়া এই ক’বছরে ১৬৭ প্রজাতির বন্যপ্রাণী অবমুক্ত করা হয়েছে।

বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) শ্যামল কুমার মিত্র জানান, গত ৮ মাসে এই বনের দুইটি বানর, একটি মুখপুড়া হনুমান, ১টি চশমাপরা হনুমান, একটি উল্টো লেজি বানর একটি গন্ধগোকুল, একটি বেজি ও একটি মেচোবাঘ দুর্ঘটনায় মারা যায়। এরমধ্যে মুখপুড়া হনুমান বিদ্যুতের গ্রিড লাইনে আর বাকি সবগুলো সড়কে প্রাণ হারায়।

বন্যপ্রাণীর নিরাপত্তার জন্য আমরা বনের ভেতর গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণে নানা কর্মসূচি শুরু করেছি। আমরা চাই লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে এলাকায় বাস ট্রেনের গতি কোন অবস্থায় ২০ কিলোমিটারের বেশি হবে না এবং আমরা তা নিশ্চিত করতে চাই।

বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) রেজাউল করিম চৌধুরী লাউয়াছড়া থেকে সড়কপথ সরানোর জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

নয় মাসে লাউয়াছড়া ন্যাশনাল পার্কে ১০ বন্যপ্রাণীর মৃত্যু

আপডেট সময় ০৮:৩৩:৫৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৫ অক্টোবর ২০২২

মৌলভীবাজার২৪ ডেস্ক:  লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান হয়ে যাওয়া সড়ক রেলপথ ও বিদ্যুতের গ্রিড লাইন দিন দিন বন্যপ্রাণীর মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেক বিরল প্রজাতির বানর হুনুমান অজগর উল্লুক বাঁদুর ট্রেনে কাটা পড়ে অথবা সড়কে মারা যাচ্ছে। বিদ্যুতের তারে জড়িয়েও মাঝেমধ্যে অনেক বন্যপ্রাণী মারা যায়। জাতীয় উদ্যান হয়ে যাওয়া রেলপথ, সড়ক ও বিদ্যুতের জাতীয় গ্রিড লাইন বাইরে নিয়ে যাওয়ার দীর্ঘদিনের দাবি বাস্থবায়নে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ উদাসীন।

বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ, মৌলভীবাজারের তথ্যমতে- গত জানুয়ারি থেকে নয় মাসে লাউয়াছড়ায় সড়কে ও বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে ১০টি বন্যপ্রাণী প্রাণ হারায়। বনের ভেতর দিয়ে রেলপথ ও সড়ক যাওয়ার কারণে বন্যপ্রাণীর অভয়াশ্রম লাউয়াছড়া এখন বন্যপ্রাণীর জন্য এমন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।

সচেতন পরিবেশবিদরা মনে করেন, লাউয়াছড়ায় হয়ে যাওয়া ৭ কিলোমিটার রেলপথ ও পাকা সড়কে যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণ এখন জরুরি হয়ে পড়েছে। পাশাপাশি আঞ্চলিক সড়ক বনের বাইরে নিয়ে গেলে আরও কল্যাণকর। তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, বন্যপ্রাণী অধ্যাদেশ ১৯৭৪ এর ২ ও ৩ ধারা মতে ১৯৯৬ সালের ৭ জুলাই দেশের উত্তরপূর্বাঞ্চলের মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ ও শ্রীমঙ্গল উপজেলার মধ্যবর্তী পশ্চিম ভানুগাছ সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ১ হাজার ২৫০ হেক্টর (৩০৮৮ একর) এলাকা জাতীয় উদ্যান তথা ন্যাশনাল পার্ক (প্রকৃতির জন্য সংরক্ষিত এলাকা) ঘোষণা করে তৎকালীন সরকার। সেখানের বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণে নেওয়া হয়েছিল সেই উদ্যোগ। কিন্তু ১৯৯৭ সালে মাগরছড়া গ্যাসকুপে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের কারণে বন ও বন্যপ্রাণীর সীমাহীন ক্ষতি হয়- যা এখনো পুষিয়ে ওঠা যায়নি এমন অভিমত বন গবেষকদের।

রাজধানী ঢাকা থেকে প্রায় ১৭১ কিলোমিটার দূরের এই বনে ফেব্রুয়ারি মাসে সর্বোচ্চ ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং জুনে ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বিদ্যমান থাকে।

বনবিভাগ জানায়, লাউয়া ছড়ায় ৪৬০ প্রজাতির জীববৈচিত্র্য রয়েছে। ২৪৬ প্রজাতির পাখি, ৬ প্রজাতির শরীসৃপ ও ৪ প্রজাতির উভচর প্রাণীর বিচরণ এই বনে। এছাড়া এই ক’বছরে ১৬৭ প্রজাতির বন্যপ্রাণী অবমুক্ত করা হয়েছে।

বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) শ্যামল কুমার মিত্র জানান, গত ৮ মাসে এই বনের দুইটি বানর, একটি মুখপুড়া হনুমান, ১টি চশমাপরা হনুমান, একটি উল্টো লেজি বানর একটি গন্ধগোকুল, একটি বেজি ও একটি মেচোবাঘ দুর্ঘটনায় মারা যায়। এরমধ্যে মুখপুড়া হনুমান বিদ্যুতের গ্রিড লাইনে আর বাকি সবগুলো সড়কে প্রাণ হারায়।

বন্যপ্রাণীর নিরাপত্তার জন্য আমরা বনের ভেতর গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণে নানা কর্মসূচি শুরু করেছি। আমরা চাই লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে এলাকায় বাস ট্রেনের গতি কোন অবস্থায় ২০ কিলোমিটারের বেশি হবে না এবং আমরা তা নিশ্চিত করতে চাই।

বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) রেজাউল করিম চৌধুরী লাউয়াছড়া থেকে সড়কপথ সরানোর জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।