পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের প্রহসনের নির্বাচন বাতিলের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন

- আপডেট সময় ১০:১৭:০১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
- / ১৩ বার পড়া হয়েছে

স্টাফ রিপোর্টার : ফ্যাসিবাদী পতিত সরকারের দোসরদের ইন্ধনে ঠিক আগের মতই ভোট নিয়ে তামাশা করে নিজেদের পছন্দের লোকদের বিজয়ী করতে নানা কুট কৌশল করা হয়েছে। মৌলভীবাজার জেলা অটোটেম্পু, অটোরিকশা, মিশুক, সিএনজি সড়ক পরিবহণ শ্রমিক ইউনিয়ন (রেজিঃ নং ২৩৫৯) এর গত ২২ ফেব্রুয়ারির প্রহসনের নির্বাচন বাতিল ও পুণঃনির্বাচনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
২৪ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবে এক জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচনে ঘটে যাওয়া নানা অনিয়ম, দুর্নীতির বিষয় লিখিত ও মৌখিক বক্তব্য তুলে ধরেন। সংবাদ সম্মেলনে জেলা সদর ছাড়াও বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসা বিপুল সংখ্যক শ্রমিক, ভোটার ও প্রার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে শ্রমিকদের পক্ষে মো: সুলতান মিয়া লিখিত বক্তব্য পাঠ করে বলেন, গেল জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ প্রার্থীর পক্ষে প্রকাশ্যে কাজ করায় শ্রমিকদল থেকে বহিস্কৃত পতিত আওয়ামীলীগ সরকারের মৌলভীবাজার-৩ আসনের এমপি জিল্লুর রহমানের আর্শিবাদপুষ্ট ও আওয়ামীলীগের মদদপুষ্ট আজিজুল হক সেলিমসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে। তারা জানান সুযোগ সন্ধানী দলবাজ আজিজুল হক সেলিম নিজের অবস্থান ধরে রাখতে ও শ্রমিকদের টাকা আত্মসাৎ করতে একছত্র প্রভাব খাটিয়ে নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্যদের যোগসাজসে নানা অনিয়ম ও নির্বাচনী আচরণ বহির্ভুত কর্মকান্ড ঘটিয়েছেন। যা অত্যন্ত দু:খজন ও নিন্দনীয়। সেলিম শ্রমিক না হয়েও প্রভাব খাটিয়ে দীর্ঘদিন থেকে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রেখেছেন। আজীবন ক্ষমতায় থাকতে তার অনুগত ছাড়া কাউকে কমিটিতে স্থান না দিতে সবসময়ই কুট কৌশলের আশ্রয় নেন। শ্রমিক সংগঠনের চাঁদা ও শ্রমিক কার্ড ইস্যু ও নবায়ন বাবত বিশাল আয় দীর্ঘদিন থেকে তিনি লুটেপুটে খাচ্ছেন।
লিখত বক্তব্যে তারা বলেন আমরা পরিবহণ শ্রমিক ইউনিয়ন এর ভুক্তভোগী সদস্যবৃন্দ। ২২ ফেব্রুয়ারি সংগঠনের প্রহসনের নির্বাচন বাতিল ও পুনঃনির্বাচনের দাবিতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছি। অত্যন্ত দুঃখের সাথে জানাচ্ছি ২২ ফেব্রুয়ারি জেলার সদর, শ্রীমঙ্গল, বড়লেখা ও কুলাউড়া উপজেলায় অনুষ্ঠিত পরিবহণ শ্রমিক ইউনিয়ন এর নির্বাচনে সভাপদি পদ ছাড়া ১২টি পদের প্রতিটিতে একাধিক প্রার্থী অংশগ্রহণ করেন। নির্বাচনে সভাপতি প্রার্থী (বিনা প্রতিন্ধিতায় নির্বাচিত) আজিজুল হক সেলিম প্রভাব খাটিয়ে নির্বাচন কমিশনার ও নির্বচন সচিবসহ অন্যান্যদের যোগসাজসে নানা অনিয়ম ও নির্বাচনী আচরণ বহির্ভুত কর্মকান্ড ঘটিয়েছেন। পোলিং এজেন্ট হিসাবে অপ্রাপ্ত বয়স্ক স্কাউট সদস্য নিয়োগ। ভোটার বহির্ভুত লোকজনকে দিয়ে ভোট প্রদান করানো। ভোটার তালিকা নিয়ে বিভ্রান্তি। ভোট গণনার আগেই জোরপূর্বক রেজাল্টশীটে এজেন্টদের স্বাক্ষর নিয়ে তাদেরকে কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া। তার পছন্দের প্রার্থীদেরকে বিজয়ী দেখানো। রেজাল্টশীটে ভোটারের চেয়ে বেশী ভোট কাস্ট দেখানো। এমন নানা অনিয়ম-দূর্ণীতির কারণে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা প্রতিবাদ জানালেও নির্বাচনী দায়িত্বশীলরা তা আমলে নেননি। এসব অনিয়ম-দূর্ণীতির দায়ে কয়েকজনকে হাতেনাতে আটক করে নির্বাচন কর্মকর্তা ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে সোপর্দ করা হলেও কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। কুলাউড়া উপজেলা কেন্দ্রে অনিয়ম-দূর্ণীতি প্রমানীত হওয়ায় শ্রমিকদের বিক্ষোভের মুখে নির্বাচন কর্মকর্তা নির্বাচন বন্ধ রাখেন। ভোট কারচুপিসহ এসব অনিয়ম-দূর্নীতি ও নির্বাচন কর্মকর্তাদের স্বেচ্ছাচারিতা এবং পক্ষপাতিত্বের কারণে ওইদিন (২২ এপ্রিল) বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা জেলা শহরে বিক্ষোভ মিছিল করে নির্বাচন বাতিল পূর্বক পূন:রায় সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি জানালে জেলা নির্বাচন কমিশনার নির্বাচনের ফলাফল স্থগিত রাখেন। কিন্তু তারা যেকোন সময় ওই বেআইনী নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করতে পারেন বলে আমরা আশঙ্কা করছি। ২৩ ফেব্রুয়ারী বিভাগীয় শ্রম দপ্তর, শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার বরাবর লিখিত অভিযোগে ওই প্রহসনের নির্বাচন বাতিল করে পুণরায় সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি জানানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন শ্রমিক নেতা মো: মিলন মিয়া, মো: জিবান হোসেন, সুহেল মিয়া সহ শতাধিক পরিবহন শ্রমিকরা।
