পর্যটন শিল্প বিকাশে শ্রীমঙ্গলে ‘খাসি কমিউনিটি ট্যুরিজম’ এর উদ্বোধন
- আপডেট সময় ০২:৩০:১১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪
- / ১৬৩ বার পড়া হয়েছে
মৌলভীবাজার২৪ ডেস্কঃ পর্যটন শিল্পকে বিকশিত করতে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে ‘খাসি কমিউনিটি ট্যুরিজম’ এর উদ্বোধন করা হয়েছে।
শ্রীমঙ্গলে প্রথমবারের মতো খাসি কমিউনিটি ট্যুরিজমের অংশ হিসেবে এটি যুক্ত হলো। উপজেলার ৬নং হোসেনাবাদ খাসিয়া পুঞ্জিতে মঙ্গলবার বিকালে খাসি কমিউনিটি ট্যুরিজমের উদ্বোধন করেন শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আবু তালেব।
এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, ট্যুরিষ্ট পুলিশের শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ জোনের অফিসার ইনচার্জ মোঃ কামরুল হাসান চৌধুরী, উপজেলা প্রশাসনিক কর্মকর্তা মৃনাল কান্তি দাশ, প্রকৌশলী ইউসুফ হোসেন খাঁন, সমাজসেবা কর্মকর্তা অসিম কুমার ধর, ৬নং হোসেনাবাদ খাসিয়া পুঞ্জির মান্ত্রী (খাসি নেতা) ওয়েল সুরং, হাজারীবাগ খাসিয়া পান পুঞ্জির মান্ত্রী প্রিচিংলী সুংঙ সচিয়াংসহ স্থানীয় খাসিয়া ও গনমাধ্যমকর্মীরা।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আবু তালেব নয়া দিগন্তসহ গনমাধ্যমকে বলেন, শ্রীমঙ্গল হচ্ছে পর্যটনের জন্য অপার সম্ভাবনাময়ী ও নানান ভাবে সম্মৃদ্ধশালী একটা এলাকা। বিশেষ করে বিভিন্ন জাতী গোষ্টির বসবাস এখানে। গেজেটেড ২৬টি জাতী ছাড়াও আরো অনেক জাতী-গোষ্টি রয়েছে শ্রীমঙ্গলে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কমিউিনিটি ট্যুরিজমের কোন ব্যবস্থা ছিল না। আজ উদ্বোধন হওয়ায় পর্যটন শিল্পে নতুন সংযোজন হলো খাসি কমিউিনিটি ট্যুরিজমের।
তিনি বলেন, খাসিয়াদের প্রধান আয়ের উৎসই হচ্ছে খাসিয়া পান। কিন্তু বিভিন্ন কারনে পানের দাম কমে যাওয়ায় প্রত্যান্ত এলাকার খাসিয়া জনগোষ্টি অর্থ সংকটে ভোগে থাকেন। এসব বিষয় বিবেচনা করে এই কমিউিনিটি ট্যুরিজম যদি নিশ্চিত করতে পারি, তাহলে তাদের ইনকামের একটা ব্যবস্থা হবে। পরিবেশের সাথে ভারসাম্য রেখে পরিচালনা করলে তারা অর্থনৈতিকভাবে সম্মৃদ্ধশালী হবে।
তিনি খাসিয়াদের প্রশংসা করে বলেন, পাহাড়ে বসবাস করলেও এখানকার খাসিয়া ছেলে মেয়েরা অনেক স্মার্ট। তারা বাংলা, হিন্দির পাশাপাশি ইংরেজিতে কথা বলতে পারে। সেজন্য উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে পরিক্ষামূলক ভাবে এখানে ইকো সিস্টেমে ঘর নির্মান করে দেওয়া হবে।
এছাড়া যারা এখানে বেড়াতে আসবে বা রাত্রী যাপন করবে তারা উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে আসতে হবে। যাতে তাদের পরিচয় আমরা নিশ্চিত হতে পারি, এবং এই কমিউনিটি যাতে তাদের দ্বারা সাফারার না হয় বা কোন ধরনের ক্রাইম যাতে সংগঠিত করতে না পারে। এছাড়া তাদের পরিবেশ যাতে নষ্ট না হয় সেটা নিশ্চিত করে আমরা এখানে টুরিষ্ট পাঠাব। পরিক্ষামূলক ভাবে যদি সফল হওয়া যায়, তাহলে সরকারী উদ্যোগে আরো কিছু করে দিব, যেখানে তাদেরও ইনভেস্ট থাকবে। তাদের ইনভেস্ট থাকলে সার্ভিসের প্রতি তাদের আগ্রহ থাকবে।
এক প্রশ্নে জনাবে তিনি বলেন, যাতায়াতের সড়কটি মসৃন না হলেও আমরা জেলাপ্রশাসকের সাথে কথা বলে কিছু কিছু সড়কের অংশবিশেষ এবং একটা কালভার্ট মেরামতের ব্যবস্থা করব। সব কিছু এক সাথে করা যাবে না, এতে কিছুটা সময় লাগবে। চমৎকার এই পাহাড়ের পুঞ্জিতে ট্যুরিস্টরা আসলে প্রাকৃতিক দারুন ফিল পাবে নিশ্চিত।
উল্লেখ্য, ৬নং হোসেনাবাদ খাসিয়া পুঞ্জি শ্রীমঙ্গল শহর থেকে প্রায় ১৩ কিলোমিটার দক্ষিন-পূর্ব দিকে অবস্থিত। ভারতের সীমানা ঘেষা প্রায় ১০০ একরের ছোট্ট এই পুঞ্জি প্রায় ৪৫ বছর আগে হোসেনাবাদ চা বাগানের তৎকালিন মালিকের কাছ থেকে লিজ নিয়ে বসতি শুরু করেন খাসিয়ারা। তখন থেকেই বিভিন্ন বনজ গাছের পাশাপাশি সুপারি গাছে খাসিয়া পান চাষ করেন তারা। বর্তমানে ২২টি পরিবার রয়েছে এই পুঞ্জিতে। যার লোক সংখ্যা দু’শর কাছাকাছি বলে নয়া দিগন্তকে জানান খাসিয়া মান্ত্রী।