পাশাপাশি কবরে চিরনিদ্রায় দুই ভাই

- আপডেট সময় ০১:০৬:৫৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ জুন ২০২৫
- / ৯০ বার পড়া হয়েছে

একসঙ্গে দুই ছেলেকে হারিয়ে শোকে ভেঙে পড়েছেন বাবা-মা। তাঁদের বুকফাটা আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে মহুবন্দ এলাকার পরিবেশ। কান্না, বিলাপ আর আর্তনাদে যেন থমকে গেছে চারপাশ। আশপাশের মানুষ শান্তনা দিতে এসে থেমে যাচ্ছেন। তারাও নীরবে চোখ মুছছেন বারবার।
গত শনিবার (৭ জুন) বিকেলে কোরবানির মাংস শ্বশুরবাড়িতে পৌঁছে দিতে গিয়ে মর্মান্তিক এক দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই নিহত হন সৌদি প্রবাসী সাহেদ হোসেন সুমন (২৬)। এসময় তার ছোটভাই রুমন আহমদ (২০) গুরুতর আহত হন। ওইদিন রাত সাড়ে ৯টার দিকে সিলেট ওসমাসী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রুমনও শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন। এরপর থেকে বাবা-মা আর স্বজনদের কান্না যেন থামছেই না। নিহত দুই ভাই মৌলভীবাজারের বড়লেখা পৌরসভার মহুবন্দ গ্রামের আলাউদ্দিনের ছেলে। সুমন সম্প্রতি সৌদি থেকে দেশে ফিরে বিয়ে করেছিলেন।
রোববার বিকেলে সরেজমিন মহুবন্দ গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, সুমন ও রুমনকে শেষবারের মতো দেখতে ভীড় করেছেন প্রতিবেশীরা। দুই ছেলেকে হারিয়ে ভেঙে পড়েছে পুরো পরিবার। তাদের বাবা বিলাপ করে কাঁদছিলেন। মা বার বার মূর্ছা যাচ্ছিলেন। সুমনকে হারিয়ে তার স্ত্রীও যেন বাকরুদ্ধ। প্রতিবেশিরা তাদের শান্তনা দিতে এসে নিজেরাই চোখের জল ফেলছেন। বা-মা আর স্বজনদের কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছে মহুবন্দ এলাকার পরিবেশ।
রোববার (৮ জুন) বিকেল সাড়ে ৫টায় ইয়াকুবনগর ঈদগাহ মাঠে দুই ভাইয়ের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের ঢল নামে। জানাজা শেষে স্থানীয় কবরস্থানে তাদের দাফন করা হয়।
জানা গেছে; গত শনিবার (৭ জুন) ঈদের বিকেলে কোরবানির মাংস শ্বশুরবাড়িতে পৌঁছে দিতে ছোট ভাই রুমনকে সঙ্গে নিয়ে মোটরসাইকেলযোগে দক্ষিণভাগে রওয়ানা দেন সাহেদ। বড়লেখা-কুলাউড়া আঞ্চলিক সড়কের কাঠালতলী কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সামনে পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি প্রাইভেট কারের সঙ্গে তাদের মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন সাহেদ। গুরুতর আহত হন রুমন। স্থানীয়রা রুমনকে উদ্ধার করে প্রথমে বড়লেখা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। কিন্তু রাত সাড়ে ৯টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রুমনও শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন।
