ব্রেকিং নিউজ
পি আর পদ্ধতি হলো ফ্যাসিবাদের পুনর্বাসনের প্রজেক্ট- বিএনপি সদস্য সচিব রিপন

নিজস্ব সংবাদ :
- আপডেট সময় ০৯:১২:৪৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৫
- / ২ বার পড়া হয়েছে

বিশেষ প্রতিনিধি: ্ মৌলভীবাজার মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আব্দুর রহিম রিপন বলেছেন, ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনের ঘোষনা দেয়া হয়েছে। সেই নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ ও প্রলম্বিত করতে বলা হচ্ছে সংস্কার। দেশের জনগণ এখনোও ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট দেয়া শিখতে পারেনি।
সেই ইভিএম পদ্ধতি জনগণ যেখানে প্রত্যাখান করেছে সেখানে পিআর পদ্ধতির নিয়ে একটা গোষ্ঠী কথা বলছে। পিআর পদ্ধতিতে আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ নেপালে ভোট হয়েছিল। সেই পদ্ধতিতে নির্বাচন হবার পর দশ মাসে তিন বার সরকার বদল হয়েছে। একটি দেশকে সংকটের দিকে নেয়া হয়েছে। পিআর পদ্ধতি হলো ফ্যাসিবাদের পুনর্বাসনের একটা প্রজেক্ট। এই পিআর পদ্ধতি হলো একটা অচল পদ্ধতি।
বুধবার (১৩ আগস্ট) দুপুরে কুলাউড়ার কাদিপুর ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গণে ইউনিয়ন বিএনপির সম্মেলন ও কাউন্সিলে প্রথম অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। রিপন বলেন, ২০১৪ সালে আমরা দেখেছি, বিনা ভোটের নির্বাচন।
১৫৪ টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। সেই নির্বাচনকে দেশের জনগণ কুত্তা মার্কা নির্বাচন হিসেবে অভিহিত করেছে। ২০১৮ সালের নির্বাচনকেও জনগণ লাইলাতুল নির্বাচন হিসেবে অভিহিত করেছে। সেখানে রাতের অন্ধকারে ভোট হয়েছে। কিন্তু ব্যতিক্রম হয়েছিল কুলাউড়ায়। একটি দুস্কৃতিকারীকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছিল কিন্তু আমাদের দলের সুযোগ সুবিধা নিয়ে সে আমাদের দলের সাথে বেঈমানী করেছে।
২০২৪ সালে আমি ও ডামি নির্বাচন হয়েছে। এটা তাদের ভেতরের নির্বাচন। আমরা দেশের নির্বাচন নিয়ে আন্দোলন করেছি। বিগত দেড় দশক ধরে এই আন্দোলন আমরা চালিয়েছি। আমাদের এই আন্দোলনের মাধ্যমে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। এই আন্দোলনে বেগমান হয়েছিল যখন দেশের আপামর জনগণ, ছাত্র-জনতা মাঠে নেমেছিল।

জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আব্দুর রহিম রিপন বলেন, সুষ্ঠু ভোটাধিকারের মাধ্যমে রাষ্ট্রের মালিকানা জনগণের হাতে বুঝিয়ে দেয়া হলো আমাদের দাবি। সেই দাবির জন্য আমাদের দলের আন্দোলন চলমান আছে। দেশের জনগণ বিগত দেড় দশক ধরে জনগণ ভোট বঞ্চিত, নির্বাচন বঞ্চিত। আগামী নির্বাচনে আপনাদের কাঙ্খিত নেতৃত্ব বাছাই হবে দেশের রাষ্ট্র পরিচালনায় পরিবর্তন আসবে সেই নির্বাচন বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ পছন্দ করবে। সেই নির্বাচনের প্রেক্ষাপটের আগ মুহুর্তে আমরা আমাদের দলকে সুসংগঠিত এবং গোছাতে যে দায়িত্ব আমাদের দেয়া হয়েছে তারই ধারাবাহিকতায় ভোটাধিকারের মাধ্যমে আজকের এই কাউন্সিল। ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচন দেখে বুঝা যাচ্ছে জাতীয় নির্বাচনের জন্য আমরা কতটুকু আগ্রহী। তিনি বলেন, বাংলাদেশের যে গুপ্ত সংগঠন রয়েছে যাদের কথা এবং কাজের কোন মিল নেই। যারা বলে সংস্কার, পিআর বলে নির্বাচন পেছাতে চায় তারাই সবার আগে তিনশত আসনে প্রার্থী দিয়েছে। আমরা বলতে চাই, দীর্ঘ দেড় দশক আন্দোলন সংগ্রামে যে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি হলেন আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
ঐক্যবদ্ধ করে বাংলাদেশকে গতিশীল পথে ফ্যাসিবাদমুক্ত অবস্থায় আমাদের উত্তীর্ণ করেছেন। কাদিপুর ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক দেলোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে ও ইউনিয়ন বিএনপির সমন্বয়ক ও উপজেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য বদরুজ্জামান সজলের পরিচালনায় প্রধান বক্তা ছিলেন জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট আবেদ রাজা।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি শওকতুল ইসলাম শকু, উপজেলা বিএনপির আহবায়ক রেদওয়ান খান, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক বদরুল হোসেন খান, যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল জলিল জামাল, বিএনপি নেতা জয়নাল আবেদীন বাচ্চু, সাইফুল আলম চৌধুরী, শামীম আহমদ চৌধুরী, আজিজুর রহমান মনির, আলমগীর হোসেন ভুঁইয়া, সুফিয়ান আহমদ, তারু খান, আব্দুল মুক্তাদির মনু, হারুন আহমদ, হাবিবুর রহমান ছালাম, আব্দুল মুহিত বাবলু প্রমুখ।
এর আগে সকালে উৎসবমুখর পরিবেশে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ায় উৎসবের আমেজ দেখা দেয় নেতাকর্মীদের মাঝে। পরে ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডের বিএনপির সভাপতি সম্পাদকসহ অতিথিদের নিয়ে জাতীয়, দলীয় পতাকা উত্তোলন ও পায়রা উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন উপজেলা বিএনপির আহবায়ক রেদওয়ান খান। পরিবেশন করা হয় দলীয় সংগীত।
সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে উৎসবমুখর পরিবেশে গোপন ব্যালটের মাধ্যমে ৪৬৬ জন কাউন্সিলাররা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে তাদের পছন্দের নেতা নির্বাচিত করেন। বিকেল সাড়ে ৩টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয় এবং বিকেল সাড়ে পাঁচটায় ভোটগ্রহণ শেষ হয়। কাউন্সিলে সভাপতি পদে মো. মুক্তার ২১৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। নিকটতম প্রতিদ্বন্ধি রফিক মিয়া ফাতু পান ১৮৮,আব্দুর নুর হীরা পান ১৩০ ভোট। সাধারণ সম্পাদক পদে শফিকুর রহমান ২২৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন।
নিকটতম প্রতিদ্বন্ধি লুৎফুর রহমান পান ২০২ ভোট, তাজুল ইসলাম পান ১৩ ভোট। সাংগঠনিক সম্পাদক পদে তাজ উদ্দিন রিপন ২০৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। নিকটতম প্রতিদ্বন্ধি ছালেহ আহমদ ১৮৯, ইঞ্জিনিয়ার তারেক পান ৫১ ভোট।

ট্যাগস :