প্রশাসন, পুলিশ আর ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে আওয়ামীলীগ দেশে রাম রাজত্ব চালিয়েছে”- নাসের রহমান

- আপডেট সময় ১২:০৮:৩০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
- / ১ বার পড়া হয়েছে

বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য এম নাসের রহমান বলেন, আওয়ামীলীগ কখনোই জনগণের কল্যাণের রাজনীতি করেনি। জনগনের ভোটের প্রতি তাদের কোন তোয়াক্কা ছিল না।
ভারতের সাহায্যে যেনতেন ভাবে ক্ষমতায় আসে। তাদের ভোটার ছিলো প্রশাসন, পুলিশ আর ম্যাজিস্ট্রেট। এই তিনটা রাস্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে আওয়ামীলীগ দেশে সাড়ে পনেরো বছরের রাম রাজত্ব চালিয়েছে। জনগণ তাদের কখনোই ভোট দেয়নি। কারণ কোন ভাল মানুষ আওয়ামীলীগের রাজনীতির করার কথা নয়। কারো মনে যদি, কুটিলতা, বদমাসি, হটকারি, মানুষকে ঠকানি, এসব মন মানসিকতা থাকে তাহলে তারাই আওয়ামীলীগ করবে। এগুলোর চারটির একটি গুণও যদি না থাকে, তাহলে আওয়ামলীগ করতে পারবে না। তারা সবসময় মুখেমুখেই বলেছিলো জনগণ, কিন্তু কোন সময়ই জনগণের স্বার্থে তারা রাজনীতি করেনি। তাইতো জনগণের দৌড়ানি খেয়ে ভারতে পালিয়েছে। এখন কই সব বাটপারের দল।
এই আওয়ামীলীগের নাম পরিবর্তন হয়ে এখন জনগণ দিয়েছে বাংলাদেশ বাটপার লীগ। তাদের বি.এ.এল নামের সাথে তাদের চরিত্র প্রকাশ পায়। এই দলের নামের সাথে বাংলা ভাষারই কোন সম্পর্ক নাই। আওয়ামী উর্দু শব্দ, এর অর্থ জনগণ আর লীগ ইংরেজী শব্দ। তাদের নামের মাঝেই গন্ডগোল।
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে মৌলভীবাজার সদর উপজেলার চাঁদনীঘাট ইউনিয়নের পশ্চিম শাখার সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন এম নাসের রহমান।
নাসের রহমান বলেন, আওয়ামীলীগ মারা গেছে। এটার লাশও এখন খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
পরে এটি বেওয়ারিশ হিসেবে একসময় দাফন করা হবে। ফ্যাসিস্ট এই দলটি ছাত্র জনতার বিপ্লবে, মারা গেছে ৫ই আগস্ট আর দাফন হবে ভারতে। সম্প্রতি এক নাবালক উপদেষ্টা বলেছে, আওয়ামীলীগের যারা অন্যায় অবিচার করেনি তারা মাফ চেয়ে রাজনীতি করতে পারবে। এখন বলেন, তাদের নেত্রী খুনি হাসিনা চৌদ্দশ মানুষ হত্যা করেছে, দেড় হাজার মানুষকে গুম খুন করেছে। লক্ষ লক্ষ হাজার কোটি টাকা পাচার করছে।
এখন কে আওয়ামলীগকে মাফ করবে? কারা মাফ করবে? দেশের জনগনের চাওয়া একটাই, আওয়ামীলীগের একমাত্র জায়গা হলো ফাঁসির কাস্ট, আর না হলে ফায়ারিং স্কোয়ার্ড।
তিনি বলেন, এই দেশে আওয়ামীলীগ আর ফেরার কোন সুযোগ নেই। এই দলটি ফ্যাসিস্ট। আওয়ামীলীগ মানেই দেশের মানুষের সম্পদ লুটেরা, চোর, বাটপার। তবে একটা শর্তে তাদের রাজনীতি করার সুযোগ দেয়া যেতে পারে। যদি তাদের দলটির নাম পরিবর্তন করে, বাংলাদেশ বাটপারলীগ রাখে। তাহলে রাজনীতি করার এই একমাত্র সুযোগ জনগন দিতে পারে, এছাড়া আর কোন সুযোগ নেই।
এলাকার উন্নয়ন নিয়ে তিনি বলেন, চাঁদনীঘাটে শহর বাইপাস ব্রিজ তো আমার জন্যে কোন বিষয়ই না। এই মনু নদীর বাঁধের জন্য নাকি আওয়ামীলীগ তেরশো কোটি টাকা খরচ করেছে। যেখানে তিনশো কোটি টাকার কাজ হলেই বেশি হবে। এই তেরশো কোটি টাকা কোথায় গেল? মাটির নিচে তো আর যায়নি। সব লুটপাট করেছে এরা। বিএনপির আমলে আমি নতুন ব্রিজে একটা ব্রিজ করে দিয়েছিলাম, এখন এখানে বড় বাজার হয়েছে। এখন শহর বাইপাস ব্রিজও হবে। এসব ব্রিজ আমার জন্য তো ওয়ানটুর ব্যাপার।
নাসের রহমান বলেন, বিএনপির আমলে আমরা মৌলভীবাজারে কাজ করার মতো জায়গা বাকি রাখিনি। এখন খুঁজতেছি বাকি কি কি কাজ করা যায়। আগে রাস্তাগুলো মেইটেনেন্স করতে হবে। আগে যে রাস্তা বানিয়ে দিয়েছিলাম, এগুলো তো সংস্কারই করেনি। এগুলো এখন ঠিক করতে হবে।
তিনি বলেন, মৌলভীবাজারে ভূয়া এমপি যারা হয়েছিলো, এগুলো তো জনগণের ভোটে হয়নি। এজন্য এদের কোন দায়বদ্ধতা ছিল না। এরা টাকা কামানোর ধান্ধায় ছিলো। এক রাতের ভোটের ভূয়া এমপির আগে ছিলো টিনশেডের ঘর, এখন নাকি পাঁচতালা দুইটা দালান বানিয়েছেন। আলাদিনের চেরাগ পেলেন না কি? এসব জনগনের সম্পদ লুটপাট আর চুরির টাকা। বিএনপি দেশের মানুষের উন্নয়ন নিয়ে কাজ করে। আর ওই বাটপারলীগ তাদের পকেটের উন্নয়ন নিয়ে কাজ করেছিলো।
নাসের বলেন, বাংলাদেশ বাটপারলীগ তাদের পকেটের উন্নয়ন করতে দেশের লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা ইন্ডিয়ায়, লন্ডনে, আমেরিকায়, কানাডায়, অস্টেলিয়ায় পাচার করে নিয়ে গেছে। আর এই চোরদের বিচারের জন্য দেশের জনগন ঐক্যবদ্ধ। খুনি হাসিনার বিচারের রায় জনগণ চায়, হাসিনার ফাঁসি। তার অপরাধের মাত্র এতোটাই একবার নয় কয়েশোবার ফাঁসি হওয়া উচিত। তার এক হাজারবার ফাঁসি হওয়া উচিত। আর তাকে জীবিত অবস্থায় আয়নাঘরের চেয়ারে ঘুরানো দরকার। সে মানুসিক বিকারগ্রস্থ সাইকো।
চাঁদনীঘাট ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক রুহেল বকসের সভাপতিত্বে ও সদর উপজেলার যুগ্ম আহ্বায়ক মারুফ আহমদের সঞ্চালনায় সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব আব্দুর রহিম রিপন। বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মো. ফখরুল ইসলাম, বকসি মিছবাউর রহমান, মুজিবুর রহমান মজনু, সাবেক সহ-সভাপতি আয়াছ আহমেদ, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অলিউর রহমান। সম্মেলনের উদ্বোধন করেন মৌলভীবাজার সদর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক বদরুল আলম।
