ঢাকা ১১:৩২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫, ১৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজ
হযরত শাহ্ আজম রহ. দরগাহ্ শরীফের পীর ছাহেবের ৪তম মৃ ত্যু বার্ষিকী বাংলাদেশ আনজুমানে তালামীযে ইসলামিয়ার অভিষেক অনুষ্ঠান পালিত রাজনগর উপজেলা বিএনপির সম্মেলন ও কাউন্সিল পরিদর্শনে এম নাসের রহমান নবগঠিত রেড ক্রিসেন্ট মৌলভীবাজার ইউনিটের পরিচিতি সভা সাবেক জেলা আমিরেে কবর জিয়ারত ও পরিবারের সদস্যদের সাথে সাক্ষাৎ করলেন আমীরে জামায়াত কবর জিয়ারতের মধ্য দিয়ে সদর উপজেলা বিএনপির নতুন কমিটির পথচলা উপজেলা শ্রমিকদলের আহবায়ক কমিটি গঠন আবারও শ্রীমঙ্গল সীমান্ত এলাকায় পুশ-ইন জামেয়া ইসলামীয়া আলিম মাদ্রাসায় সিরাজুল ইসলাম মতলিবের স্মরণে আলোচনা সভা নবনির্বাচিত উপজেলা বিএনপি নেতৃবৃন্দকে ফুলেল শুভেচ্ছা ও মিষ্টিমুখ করাল জেলা বিএনপি

বন্যায় টমেটোর চারার ক্ষয়ক্ষতি দেড় কোটি টাকা

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৯:৫৪:৫৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / ৩৬৯ বার পড়া হয়েছে

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে ‘গ্রাফটিং পদ্ধতিতে টমেটোর চারা উৎপাদনের। বন্যায় পানিতে ১২০শতক জায়গার ফলনকৃত দেড় কোটি টাকার গ্রাফটিং পদ্ধতিতে টমেটোর চারা তলিয়ে যায়। ফলে ব্যাংকের ঋণের টাকা পরিশোধের চিস্তায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। চারা উৎপাদনের কাজে নিয়োজিত থাকা শতাধিক শ্রমিক রয়েছেন বেকার।
আদমপুর ইউনিয়নের জালালপুর গ্রামে ‘গ্রাফটিং পদ্ধতিতে টমেটোর চারা উৎপাদনে’ সফল উদ্যোক্তা আং করিমের ক্ষতির সংবাদ জানতে পেরে উপজেলা প্রশাসন কৃষি জমি পরিদর্শন করেন।
জানা যায়, টানা বর্ষন ও ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ধলাই নদীর ১৪টি স্থানে প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙ্গে ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। বন্যায় উপজেলার ১৪৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে এবং লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েন। বন্যার পানিতে কৃষি, মৎস্য, রাস্তা-ঘাট ও ঘরবাড়ি সহ কয়েকশত কোাট টাকার ক্ষতি ধান ও সবজী ক্ষেতসহ মৌসুমী ফসলের চারা বিনষ্ট হয়েছে। বৃহৎ মৌসুমী সবজী চারা উৎপাদনকারীদের মধ্যে শান্তিতে জাতিসংঘ পদকপ্রাপ্ত অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য আং করিম চাকরির সময়সীমা পার হওয়ার পর চলে আসেন অবসরে। কর্মঠ উদ্যামী করিম চাকুরী থেকে অবসর নিলেও কাজ থেকে তার অবসর নেননি আজও।

 

আং করিম নিজ আর্থায়নে ও কৃষি বিভাগের পরামর্শক্রমে তিনি হয়ে উঠেন উপজেলার একজন ‘গ্রাফটিং পদ্ধতিতে টমেটোর চারা উৎপাদনে’ সফল উদ্যোক্তা। এক সময় আং করিম নিজে একাই গ্রাফটিং পদ্ধতিতে টমেটোর চারা উৎপাদন করা শুরু করেন। এখন তিনি নিজে স্বাবলম্বীতো হয়ে প্রায় শতাধিক মানুষের কর্মসংস্থানও গড়ে তুলেন। প্রায় অর্ধশত কৃষক রয়েছেন গ্রাফটিং করা চারা ব্যবহার করে টমেটোর চাষ করছেন। অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য আং করিম জানান, সাম্প্রতিক বন্যায় জীবন শেষ করে দিয়েছে। প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বেকার হয়ে পড়েছে আমার কৃষি খেতে কাজ করা শতাধিক শ্রমিক। প্রায় দেড় কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। ব্যাংক ঋণসহ বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে এখন অসহায়ের মতো বসে আছি। ঋণের চিন্তায় রাতে ঘুম আসেনা।

 

তিনি আরো জানান, এই গ্রাফটিং করা টমেটো গাছ পানি সহনীয়। ভারি বৃষ্টিতেও এই টমেটোগাছ নষ্ট হয় না। তাই বাজারে গ্রাফটিং চারার চাহিদা বেশী। চারা নিজ জেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের আরো আট থেকে দশটি জেলায় সরবরাহ করেছিলাম। অনেকেই মৌসুম শুরুর আগেই চারার সংখ্যা জানিয়ে অর্ডার দিয়েছিলেন। বন্যায় চারা বিনষ্ট হয়ে যাওয়ায় তাদেরকে সময়মতো সরবরাহ করতেও পারবো না। চারা উৎপাদন করবোতো দুরের কথা এখন বেকার সময় পার করছি।

আদমপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. আবদাল হোসেন জানান, ইউনিয়ন পরিষদ থেকে টমেটো চাষীকে সব ধরনের সহযোগীতা করা হবে।  উপজেলা নির্বাহী অফিসার জয়নাল আবেদীন জানান, টমেটো চাষী আং করিমের ক্ষতি হওয়া গ্রাফটিং করা চারার খামারগুলো পরিদর্শন করেছি। উপজেলা প্রশাসন থেকে সার্বিক সহযোগীতা করা হবে।

 

উল্লেখ্য,সাবেক এ সেনা সদস্য আং করিম ২০০২ সালে অবসরে এসে টমেটো চাষ শুরু করলে উৎপাদনে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলেন। টমেটো চাষে সফল চাষী হিসেবে তিনি ২০০৫ সালে পেয়েছিলেন জাতীয় কৃষি পুরষ্কার। এরপর থেকে এই উৎসাহকে কাজে লাগিয়ে হয়েছেন তিনি সফল কৃষক।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

বন্যায় টমেটোর চারার ক্ষয়ক্ষতি দেড় কোটি টাকা

আপডেট সময় ০৯:৫৪:৫৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৪

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে ‘গ্রাফটিং পদ্ধতিতে টমেটোর চারা উৎপাদনের। বন্যায় পানিতে ১২০শতক জায়গার ফলনকৃত দেড় কোটি টাকার গ্রাফটিং পদ্ধতিতে টমেটোর চারা তলিয়ে যায়। ফলে ব্যাংকের ঋণের টাকা পরিশোধের চিস্তায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। চারা উৎপাদনের কাজে নিয়োজিত থাকা শতাধিক শ্রমিক রয়েছেন বেকার।
আদমপুর ইউনিয়নের জালালপুর গ্রামে ‘গ্রাফটিং পদ্ধতিতে টমেটোর চারা উৎপাদনে’ সফল উদ্যোক্তা আং করিমের ক্ষতির সংবাদ জানতে পেরে উপজেলা প্রশাসন কৃষি জমি পরিদর্শন করেন।
জানা যায়, টানা বর্ষন ও ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ধলাই নদীর ১৪টি স্থানে প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙ্গে ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। বন্যায় উপজেলার ১৪৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে এবং লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েন। বন্যার পানিতে কৃষি, মৎস্য, রাস্তা-ঘাট ও ঘরবাড়ি সহ কয়েকশত কোাট টাকার ক্ষতি ধান ও সবজী ক্ষেতসহ মৌসুমী ফসলের চারা বিনষ্ট হয়েছে। বৃহৎ মৌসুমী সবজী চারা উৎপাদনকারীদের মধ্যে শান্তিতে জাতিসংঘ পদকপ্রাপ্ত অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য আং করিম চাকরির সময়সীমা পার হওয়ার পর চলে আসেন অবসরে। কর্মঠ উদ্যামী করিম চাকুরী থেকে অবসর নিলেও কাজ থেকে তার অবসর নেননি আজও।

 

আং করিম নিজ আর্থায়নে ও কৃষি বিভাগের পরামর্শক্রমে তিনি হয়ে উঠেন উপজেলার একজন ‘গ্রাফটিং পদ্ধতিতে টমেটোর চারা উৎপাদনে’ সফল উদ্যোক্তা। এক সময় আং করিম নিজে একাই গ্রাফটিং পদ্ধতিতে টমেটোর চারা উৎপাদন করা শুরু করেন। এখন তিনি নিজে স্বাবলম্বীতো হয়ে প্রায় শতাধিক মানুষের কর্মসংস্থানও গড়ে তুলেন। প্রায় অর্ধশত কৃষক রয়েছেন গ্রাফটিং করা চারা ব্যবহার করে টমেটোর চাষ করছেন। অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য আং করিম জানান, সাম্প্রতিক বন্যায় জীবন শেষ করে দিয়েছে। প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বেকার হয়ে পড়েছে আমার কৃষি খেতে কাজ করা শতাধিক শ্রমিক। প্রায় দেড় কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। ব্যাংক ঋণসহ বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে এখন অসহায়ের মতো বসে আছি। ঋণের চিন্তায় রাতে ঘুম আসেনা।

 

তিনি আরো জানান, এই গ্রাফটিং করা টমেটো গাছ পানি সহনীয়। ভারি বৃষ্টিতেও এই টমেটোগাছ নষ্ট হয় না। তাই বাজারে গ্রাফটিং চারার চাহিদা বেশী। চারা নিজ জেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের আরো আট থেকে দশটি জেলায় সরবরাহ করেছিলাম। অনেকেই মৌসুম শুরুর আগেই চারার সংখ্যা জানিয়ে অর্ডার দিয়েছিলেন। বন্যায় চারা বিনষ্ট হয়ে যাওয়ায় তাদেরকে সময়মতো সরবরাহ করতেও পারবো না। চারা উৎপাদন করবোতো দুরের কথা এখন বেকার সময় পার করছি।

আদমপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. আবদাল হোসেন জানান, ইউনিয়ন পরিষদ থেকে টমেটো চাষীকে সব ধরনের সহযোগীতা করা হবে।  উপজেলা নির্বাহী অফিসার জয়নাল আবেদীন জানান, টমেটো চাষী আং করিমের ক্ষতি হওয়া গ্রাফটিং করা চারার খামারগুলো পরিদর্শন করেছি। উপজেলা প্রশাসন থেকে সার্বিক সহযোগীতা করা হবে।

 

উল্লেখ্য,সাবেক এ সেনা সদস্য আং করিম ২০০২ সালে অবসরে এসে টমেটো চাষ শুরু করলে উৎপাদনে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলেন। টমেটো চাষে সফল চাষী হিসেবে তিনি ২০০৫ সালে পেয়েছিলেন জাতীয় কৃষি পুরষ্কার। এরপর থেকে এই উৎসাহকে কাজে লাগিয়ে হয়েছেন তিনি সফল কৃষক।