ঢাকা ০৫:০২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২৫, ১৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজ
মৌলভীবাজারে জাতীয় গোল্ডকাপ অন্ধু ১৭ বালক/বালিকা টুর্ণামেন্ট ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত সীমান্তে বাংলাদেশীকে কু-পি-য়ে হ-ত্যা করল ভারতীয়রা রংপুরে টেলিমেডিসিন সেন্টার এর দিন ব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্টিত মৌলভীবাজারে ট্রাফিক সপ্তাহ শুরু সিলেট বিভাগের প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের সাথে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের মতবিনিময় সভা শ্রীমঙ্গলে কোকো’র মৃত্যু বার্ষিকীতে দোয়া মাহফিল ও শীতবস্ত্র বিতরণ ট্যাংকলরী পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের শ্রমিক সমাবেশ এলাকাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে বন্ধ থাকা কাজ ফের শুরু হচ্ছে নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন অংশীজন পরামর্শ সভা অনুষ্ঠিত মৌলভীবাজার বিচারিক স্বাধীনতা এবং দক্ষতা শীর্ষক সেমিনার

মনিরুল ইসলামের হাতে গড়া শিল্পকর্ম এখন শুধুই স্মৃতি 

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ১০:১৭:২৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৫
  • / ২৭ বার পড়া হয়েছে
কোটচাঁদপুর (ঝিনাইদহ ) প্রতিনিধিঃ
শিল্পী কাজী মনিরুল ইসলাম (ঝিনু)’র হাতে গড়া শিল্পকর্মগুলো এখন শুধুই স্মৃতি হয়ে গেছে। মঙ্গলবার গভীর রাতে আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে ওই শিল্পকর্মগুলো। যা তিনি দীর্ঘ ৬ বছর ধরে একটু একটু করে কাঠ দিয়ে গড়ে তুলেছিলেন। যার মধ্যে রয়েছে মা হাঁস,বর্জা নৌকা,গাছী,ঈগল পাখী,ডোঙ্গা,পাঁচা,মুক্তি যোদ্ধা, বাইস কোপ,হাঁস পাখি।
জানা যায়, কাজী মনিরুল ইসলাম (ঝিনু)। বয়স (৫০) বছর। তিনি কোন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ছাড়াই মনের ভিতরের ছবি গুলো কাঠের মাধ্যমে প্রকাশ করেছেন কাঠের বিভিন্ন শিল্পকর্ম গড়ে তুলে। যার মধ্যে ছিল মা হাঁস,বর্জা নৌকা,গাছী,ঈগল পাখী,ডোঙ্গা,পাঁচা,মুক্তি যোদ্ধা, বাইস কোপ,হাঁস পাখি। যা তিনি দীর্ঘ ৬ বছর ধরে একটু একটু করে কাঠ দিয়ে গড়ে তুলে ছিলেন। মঙ্গলবার রাতে সেই শিল্প কর্মগুলো রাখার ঘরে আগুন লেগে যায়। পুড়ে ছাই হয়ে যায় শিল্পীর স্বপ্নের সব শিল্প কর্মগুলো। এখন শুধুই স্মৃতি হয়ে গেছে কস্টে গড়া কাঠের সেই শিল্পকর্মগুলো।
শিল্পী কাজী মনিরুল ইসলাম ঝিনু বলেন,সব কিছু একটা ছক ছিল আমার। জীবনের একটা সময় আমি অবসরে যাব। ওই সময় এ কাজগুলো করব। তবে করোনার কারনে একটু এলোমেলো হয়ে যায়। অবসরের আগেই জীবনে অবসর চলে এসেছিলাম।
তিনি বলেন,আমি শারিরীক ভাবে একটু অসুস্থ্য। এ কারনে করোনার ভিতর বাইরে যেতাম  না। এ ছাড়া শিল্প কর্ম আমার ভিতরে ছোট বেলা থেকে ছিল। সেটাই করার চেষ্টা করছিলাম। কাজ করে যাচ্ছি,যদি ভাল কিছু করতে পারি। তাহলে তো একটা ভাল কিছু আশা করতেই পারি।
ঝিনু জানান,অনেক আগে থেকে ফলের বাগানের প্রতি আমার আগ্রহ বেশি। এ কারনে আম আর লিচুর বাগান আছে ৩০ বিঘা। যা থেকে চলে আমার জীবিকা। শিল্পকর্ম নিয়ে তিনি বলেন,এ কাজগুলো করতে কিছু কাঠ বাজার থেকে সংগ্রহ করতে হয়েছে। আর কিছু কাঠ আমার বাগান থেকে কাটা হয়েছে। একটা শিল্প কর্ম শেষ করতে প্রায় ৫/৭ হাজার টাকার ব্যয় হত।
তিনি আরো বলেন, মঙ্গলবার আমি ঢাকাতে ছিলাম। ওইদিন রাতেই ঘটনাটি। তবে কিভাবে ঘটেছে। সেটা তো বলা সম্ভব হচ্ছে না। তবে আমি বৃহস্পতিবার সকালে জিডি করতে থানায় গিয়ে ছিলাম। ওসি সাহেব বাইরে থাকায় করা হয়নি। পরে গিয়ে জিডিটি করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
প্রতিবেশী মোজাম্মেল হক (দব) বলেন,অ‌নেক কষ্ট‌ নি‌য়ে দেখা ছাড়া আর কিছুই করার কোন উপায়  ছিলনা। ফায়ার সা‌র্ভিস যে সময় এ‌সে পৌছা‌ল, তখন কয়লা ছাড়া আর কিছুই অক্ষত ছিলনা  না।
তিনি বলেন,ওই ঘরে যে সমস্ত জিনিসপত্র ছিল,তা সবই ছিল আগুন লাগার মত। তবে না জেনে শুনে কোন মন্তব্য করা ঠিক হবে না কিভাবে আগুন লাগলো।
কোটচাঁদপুর ফায়ার সার্ভিসের (ভারপ্রাপ্ত) স্টেশন অফিসার কুতুব উদ্দিন বলেন, মঙ্গলবার রাত ১২ টা ৫০ মিনিটের সময় আগুন লাগার খবর আসে। আমরা ওখানে পৌছায়  ১২ টা ৫৬ মিনিটে। এরপর ২ টা ইউনিট কাজ করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। তবে কিভাবে আগুন লাগলো,কি সুত্রপাত তা তিনি কিছু বলতে পারেননি।
তিনি বলেন,গভীর রাত হওয়ায় আগুনের সুত্র কিভাবে সেটা বোঝা যায়নি। ভুক্তভোগী তদন্তের আবেদন করলে,তদন্তের পর বিস্তারিত বলা যাবে বলে জানিয়েছেন ওই কর্মকর্তা।
ওই ঘটনায় এখনো পর্যন্ত কেউ কোন জিডি বা অভিযোগ করেননি বলে নিশ্চিত করেছেন,কোটচাঁদপুর থানার ডিউটিরত)(পিএসআই)  হাসান।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উছেন মে বলেন,ঘটনাটি আমি শোনার পর ওনাকে ডেকে ছিলাম। ওনাকে থানায় একটা অভিযোগ করতে বলেছি। আর সমাজ সেবা ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে লিখিত ভাবে বিষয়টি জানানো হবে।
, গরুর ফার্ম,তেলের ব্যবসা সহ বেশ কয়েকটি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন কাজী মনিরুল ইসলাম ঝিনু। করোনা মহামারিতে ব্যবসা ভাল হচ্ছিল না। প্রায় লোকসান হচ্ছিল। এ কারনে অবসরে যাবার পরের কাজটি শুরু করেন ২০১৯সাল থেকে। যা চলমান ছিল। কোন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা না থাকলেও, মনের ভিতরের ছবিগুলো কাঠের মধ্যে ফুটিয়ে তুলতে শুরু করেছিলেন তিনি। আর এ কাজটি করেছিলেন নিজ বাড়িতেই কাঠ দিয়ে গড়া ছোট একটি ঘরে।
তিনি গড়ে তুলেছিলেন শিল্পকর্মগুলো। যা মানুষের মনে অনেকটা জায়গা করে নিয়েছিলেন। এর মধ্যে রয়েছে,মা হাঁস,বর্জা নৌকা,গাছী,ঈগল পাখী,ডোঙ্গা,পাঁচা,মুক্তি যোদ্ধা, বাইস কোপ,হাঁস পাখি। চলমান রয়েছে আরো বেশ কয়েকটি শিল্প কর্ম। যার মধ্যে রয়েছে মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে একটি বড় শিল্পকর্ম। এখন শিল্পীর সেই শিল্প কর্মগুলো শুধু স্মৃতি হয়ে গেছে শিল্পীর কাছে।
ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

মনিরুল ইসলামের হাতে গড়া শিল্পকর্ম এখন শুধুই স্মৃতি 

আপডেট সময় ১০:১৭:২৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৫
কোটচাঁদপুর (ঝিনাইদহ ) প্রতিনিধিঃ
শিল্পী কাজী মনিরুল ইসলাম (ঝিনু)’র হাতে গড়া শিল্পকর্মগুলো এখন শুধুই স্মৃতি হয়ে গেছে। মঙ্গলবার গভীর রাতে আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে ওই শিল্পকর্মগুলো। যা তিনি দীর্ঘ ৬ বছর ধরে একটু একটু করে কাঠ দিয়ে গড়ে তুলেছিলেন। যার মধ্যে রয়েছে মা হাঁস,বর্জা নৌকা,গাছী,ঈগল পাখী,ডোঙ্গা,পাঁচা,মুক্তি যোদ্ধা, বাইস কোপ,হাঁস পাখি।
জানা যায়, কাজী মনিরুল ইসলাম (ঝিনু)। বয়স (৫০) বছর। তিনি কোন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ছাড়াই মনের ভিতরের ছবি গুলো কাঠের মাধ্যমে প্রকাশ করেছেন কাঠের বিভিন্ন শিল্পকর্ম গড়ে তুলে। যার মধ্যে ছিল মা হাঁস,বর্জা নৌকা,গাছী,ঈগল পাখী,ডোঙ্গা,পাঁচা,মুক্তি যোদ্ধা, বাইস কোপ,হাঁস পাখি। যা তিনি দীর্ঘ ৬ বছর ধরে একটু একটু করে কাঠ দিয়ে গড়ে তুলে ছিলেন। মঙ্গলবার রাতে সেই শিল্প কর্মগুলো রাখার ঘরে আগুন লেগে যায়। পুড়ে ছাই হয়ে যায় শিল্পীর স্বপ্নের সব শিল্প কর্মগুলো। এখন শুধুই স্মৃতি হয়ে গেছে কস্টে গড়া কাঠের সেই শিল্পকর্মগুলো।
শিল্পী কাজী মনিরুল ইসলাম ঝিনু বলেন,সব কিছু একটা ছক ছিল আমার। জীবনের একটা সময় আমি অবসরে যাব। ওই সময় এ কাজগুলো করব। তবে করোনার কারনে একটু এলোমেলো হয়ে যায়। অবসরের আগেই জীবনে অবসর চলে এসেছিলাম।
তিনি বলেন,আমি শারিরীক ভাবে একটু অসুস্থ্য। এ কারনে করোনার ভিতর বাইরে যেতাম  না। এ ছাড়া শিল্প কর্ম আমার ভিতরে ছোট বেলা থেকে ছিল। সেটাই করার চেষ্টা করছিলাম। কাজ করে যাচ্ছি,যদি ভাল কিছু করতে পারি। তাহলে তো একটা ভাল কিছু আশা করতেই পারি।
ঝিনু জানান,অনেক আগে থেকে ফলের বাগানের প্রতি আমার আগ্রহ বেশি। এ কারনে আম আর লিচুর বাগান আছে ৩০ বিঘা। যা থেকে চলে আমার জীবিকা। শিল্পকর্ম নিয়ে তিনি বলেন,এ কাজগুলো করতে কিছু কাঠ বাজার থেকে সংগ্রহ করতে হয়েছে। আর কিছু কাঠ আমার বাগান থেকে কাটা হয়েছে। একটা শিল্প কর্ম শেষ করতে প্রায় ৫/৭ হাজার টাকার ব্যয় হত।
তিনি আরো বলেন, মঙ্গলবার আমি ঢাকাতে ছিলাম। ওইদিন রাতেই ঘটনাটি। তবে কিভাবে ঘটেছে। সেটা তো বলা সম্ভব হচ্ছে না। তবে আমি বৃহস্পতিবার সকালে জিডি করতে থানায় গিয়ে ছিলাম। ওসি সাহেব বাইরে থাকায় করা হয়নি। পরে গিয়ে জিডিটি করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
প্রতিবেশী মোজাম্মেল হক (দব) বলেন,অ‌নেক কষ্ট‌ নি‌য়ে দেখা ছাড়া আর কিছুই করার কোন উপায়  ছিলনা। ফায়ার সা‌র্ভিস যে সময় এ‌সে পৌছা‌ল, তখন কয়লা ছাড়া আর কিছুই অক্ষত ছিলনা  না।
তিনি বলেন,ওই ঘরে যে সমস্ত জিনিসপত্র ছিল,তা সবই ছিল আগুন লাগার মত। তবে না জেনে শুনে কোন মন্তব্য করা ঠিক হবে না কিভাবে আগুন লাগলো।
কোটচাঁদপুর ফায়ার সার্ভিসের (ভারপ্রাপ্ত) স্টেশন অফিসার কুতুব উদ্দিন বলেন, মঙ্গলবার রাত ১২ টা ৫০ মিনিটের সময় আগুন লাগার খবর আসে। আমরা ওখানে পৌছায়  ১২ টা ৫৬ মিনিটে। এরপর ২ টা ইউনিট কাজ করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। তবে কিভাবে আগুন লাগলো,কি সুত্রপাত তা তিনি কিছু বলতে পারেননি।
তিনি বলেন,গভীর রাত হওয়ায় আগুনের সুত্র কিভাবে সেটা বোঝা যায়নি। ভুক্তভোগী তদন্তের আবেদন করলে,তদন্তের পর বিস্তারিত বলা যাবে বলে জানিয়েছেন ওই কর্মকর্তা।
ওই ঘটনায় এখনো পর্যন্ত কেউ কোন জিডি বা অভিযোগ করেননি বলে নিশ্চিত করেছেন,কোটচাঁদপুর থানার ডিউটিরত)(পিএসআই)  হাসান।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উছেন মে বলেন,ঘটনাটি আমি শোনার পর ওনাকে ডেকে ছিলাম। ওনাকে থানায় একটা অভিযোগ করতে বলেছি। আর সমাজ সেবা ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে লিখিত ভাবে বিষয়টি জানানো হবে।
, গরুর ফার্ম,তেলের ব্যবসা সহ বেশ কয়েকটি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন কাজী মনিরুল ইসলাম ঝিনু। করোনা মহামারিতে ব্যবসা ভাল হচ্ছিল না। প্রায় লোকসান হচ্ছিল। এ কারনে অবসরে যাবার পরের কাজটি শুরু করেন ২০১৯সাল থেকে। যা চলমান ছিল। কোন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা না থাকলেও, মনের ভিতরের ছবিগুলো কাঠের মধ্যে ফুটিয়ে তুলতে শুরু করেছিলেন তিনি। আর এ কাজটি করেছিলেন নিজ বাড়িতেই কাঠ দিয়ে গড়া ছোট একটি ঘরে।
তিনি গড়ে তুলেছিলেন শিল্পকর্মগুলো। যা মানুষের মনে অনেকটা জায়গা করে নিয়েছিলেন। এর মধ্যে রয়েছে,মা হাঁস,বর্জা নৌকা,গাছী,ঈগল পাখী,ডোঙ্গা,পাঁচা,মুক্তি যোদ্ধা, বাইস কোপ,হাঁস পাখি। চলমান রয়েছে আরো বেশ কয়েকটি শিল্প কর্ম। যার মধ্যে রয়েছে মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে একটি বড় শিল্পকর্ম। এখন শিল্পীর সেই শিল্প কর্মগুলো শুধু স্মৃতি হয়ে গেছে শিল্পীর কাছে।