ঢাকা ১১:২১ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৮ জুন ২০২৫, ২৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ব্রেকিং নিউজ
যদি সৎ নেতৃত্ব আসে তাহলে পাঁচ বছরে দেশ বদলে যাবে : ডা: শফিকুর রহমান পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে মৌলভীবাজার২৪ ডট কমের সম্পাদকের শুভেচ্ছা সম্মানিত সিলেট বিভাগীয় প্রবাসী ঐক্য পরিষদের ঈদ পূণমিলনী” জাতিকে সঠিক পথে পরিচালনার সক্ষমতা যাদের রয়েছে, তারা হলেন আলিম-উলামা – ডাঃ শফিকুর রহমান মৌলভীবাজার সড়ক দুর্ঘটনায় নি হ ত ২ আ হ ত ১ মৌলভীবাজার সরকারি কলেজে ছাত্রশিবিরের কোরবানির মাংস বিতরণ নিজ গ্ৰামে আমীরে জামায়াত ডা: শফিকুর রহমানের ঈদুল আজহা উদযাপন মৌলভীবাজার পৌর ঈদগাহে মুসল্লিদের ঢল তিনটি জামাত অনুষ্ঠিত জুড়ীতে বন্যার পানিতে পড়ে স্কুল শিক্ষার্থীর মৃ ত্যু এপ্রিলের প্রথমার্ধে যেকোনো দিন নির্বাচন -প্রধান উপদেষ্টা

মরে গেছে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের বাংলাদেশের একমাত্র বিরল উদ্ভিদ‘আফ্রিকান টিকওক’

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৩:৪২:৫৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২২
  • / ৩৯০ বার পড়া হয়েছে

কমলগঞ্জ প্রতিনিধি: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের প্রধান প্রবেশ পথে কালের সাক্ষী হিসাবে দাড়িয়ে ছিলো দেশের একমাত্র বিরল উদ্ভিদ আফ্রিকান টিকওক। লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের ১৬৭ প্রজাতির উদ্ভিদের মধ্যে আফ্রিকান টিকওক প্রজাতির উদ্ভিদ একটি।

বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, এই বনে দুইটি আফ্রিকান উদ্ভিদ ছিলো। রেললাইনের অপারে থাকা প্রথম উদ্ভিদটি পূর্বেই ঝড়ে পরে গেছে, তখন একমাত্র বিরল উদ্ভিদ হিসাবে দাড়িয়ে ছিলো প্রধান প্রবেশ পথে থাকা অপর আরেকটি আফ্রিকান টিকওক। সম্প্রতি উদ্ভিদটির পাতা ঝড়ে পরে গেলে বন বিভাগের নজরে আসে, লাউয়াছড়া বন বিটের বর্তমান বিট কর্মকর্তা আনিসুর রহমান ও একই উদ্যানের সাবেক বন বিট কর্মকর্তা মামুন অর রশিদ এর সাথে আলাপকালে জানা যায়, বৃষ্টি মৌসুমে হঠাৎ বিরল প্রজাতির উদ্ভিদটির পাতা আকষ্মিকভাবে ঝরে পরে যায় এবং গাছটির গুড়ায় পচন সৃষ্টি হয়। যা দেখে উনার ধারনা করছেন উদ্ভিদটি মারা গেছে।

সরেজমিন লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে থাকা বিরল উদ্ভিদটির নিকটে গিয়ে দেখা যায়, গাছটির সম্পূর্ণ পাতা ঝড়ে পরে গেছে এবং গুড়ার মধ্যে পচন দেখা দিয়েছে। প্রায় ৮ফিট গোলাকার আফ্রিকান টিকওক উদ্ভিদটির সঠিক বয়স জানতে না পারলেও ধারনা করা হচ্ছে, গাছটির বয়স প্রায় ৭০বছরের কাছাকাছি এবং এর উচ্চতা প্রায় ৮০ফিটের মতো।লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে আগত পর্যটকদের আর্কষন ছিলো এই বিরল উদ্ভিদটি।

কমলগঞ্জ জীববৈচিত্র্য রক্ষা কমিটির সভাপতি ও শিক্ষক মনজুর আহমেদ আজাদ মান্না জানান, ‘আফ্রিকান টিকওক গাছটি প্রায় শত বছরের পুরনো। কয়েকশত ফুট উপরে ডালপালা মেলে দাড়িয়ে আছে, কালের সাক্ষী হয়ে ছিল এই আফ্রিকান টিকওক গাছটি। গাছটি মারা যাওয়ায় খুব খারাপ লাগছে। বিরল উদ্ভিদ আফ্রিকান টিকওক গাছটি সম্পর্কে সঠিক তথ্য পাওয়া না গেলেও ধারনা করা হচ্ছে-কোন ব্রিটিশ নাগরিক উদ্ভিদটিকে লাউয়াছড়া বনে রোপণ করেছিলেন।

গাছটি মারা যাওয়ায় ইকো ট্যুরিষ্ট গাইড ও পরিবেশ কর্মী মো. আহাদ মিয়া জানান, ‘জাতীয় উদ্যান ভ্রমনে আসা পর্যটকদের এই গাছ সম্পর্কে ব্রিফিং করলে উনারা খুবই আকৃষ্ট হতেন এবং গাছের সাথে ছবি তুলে রাখতেন স্মৃতি হিসেবে, কিন্তু একমাত্র বিরল গাছটি মারা যাওয়ায় আমরা ট্যুরিষ্ট গাইডরা খুবই কষ্ট পেয়েছি।’

আফ্রিকান উদ্ভিদটি মারা যাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ মৌলভীবাজার এর বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন,‘লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে দুটি আফ্রিকান টিকওক উদ্ভিদ ছিলো, একটি গাছ অনেক আগেই মারা গেছে, বর্তমানে যে একমাত্র গাছটি ছিলো সেটিও প্রায় মারা যাওয়ার পথে, গাছটির পাতা ঝরে পড়া দেখে তিনি বাংলাদেশ বন গবেষনা ইনিস্টিউট (বিএফআরআই) কে অবগত করেন। গাছটি মারা যাওয়ার কারন হিসেবে অনেকেই ধারণা করছেন গাছটির বয়স, কেননা একটা সময় উদ্ভিদ কিংবা প্রাণীর জীবন চক্রের প্রাকৃতিক ভাবে সমাপ্তি ঘটে।’

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

মরে গেছে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের বাংলাদেশের একমাত্র বিরল উদ্ভিদ‘আফ্রিকান টিকওক’

আপডেট সময় ০৩:৪২:৫৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২২

কমলগঞ্জ প্রতিনিধি: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের প্রধান প্রবেশ পথে কালের সাক্ষী হিসাবে দাড়িয়ে ছিলো দেশের একমাত্র বিরল উদ্ভিদ আফ্রিকান টিকওক। লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের ১৬৭ প্রজাতির উদ্ভিদের মধ্যে আফ্রিকান টিকওক প্রজাতির উদ্ভিদ একটি।

বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, এই বনে দুইটি আফ্রিকান উদ্ভিদ ছিলো। রেললাইনের অপারে থাকা প্রথম উদ্ভিদটি পূর্বেই ঝড়ে পরে গেছে, তখন একমাত্র বিরল উদ্ভিদ হিসাবে দাড়িয়ে ছিলো প্রধান প্রবেশ পথে থাকা অপর আরেকটি আফ্রিকান টিকওক। সম্প্রতি উদ্ভিদটির পাতা ঝড়ে পরে গেলে বন বিভাগের নজরে আসে, লাউয়াছড়া বন বিটের বর্তমান বিট কর্মকর্তা আনিসুর রহমান ও একই উদ্যানের সাবেক বন বিট কর্মকর্তা মামুন অর রশিদ এর সাথে আলাপকালে জানা যায়, বৃষ্টি মৌসুমে হঠাৎ বিরল প্রজাতির উদ্ভিদটির পাতা আকষ্মিকভাবে ঝরে পরে যায় এবং গাছটির গুড়ায় পচন সৃষ্টি হয়। যা দেখে উনার ধারনা করছেন উদ্ভিদটি মারা গেছে।

সরেজমিন লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে থাকা বিরল উদ্ভিদটির নিকটে গিয়ে দেখা যায়, গাছটির সম্পূর্ণ পাতা ঝড়ে পরে গেছে এবং গুড়ার মধ্যে পচন দেখা দিয়েছে। প্রায় ৮ফিট গোলাকার আফ্রিকান টিকওক উদ্ভিদটির সঠিক বয়স জানতে না পারলেও ধারনা করা হচ্ছে, গাছটির বয়স প্রায় ৭০বছরের কাছাকাছি এবং এর উচ্চতা প্রায় ৮০ফিটের মতো।লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে আগত পর্যটকদের আর্কষন ছিলো এই বিরল উদ্ভিদটি।

কমলগঞ্জ জীববৈচিত্র্য রক্ষা কমিটির সভাপতি ও শিক্ষক মনজুর আহমেদ আজাদ মান্না জানান, ‘আফ্রিকান টিকওক গাছটি প্রায় শত বছরের পুরনো। কয়েকশত ফুট উপরে ডালপালা মেলে দাড়িয়ে আছে, কালের সাক্ষী হয়ে ছিল এই আফ্রিকান টিকওক গাছটি। গাছটি মারা যাওয়ায় খুব খারাপ লাগছে। বিরল উদ্ভিদ আফ্রিকান টিকওক গাছটি সম্পর্কে সঠিক তথ্য পাওয়া না গেলেও ধারনা করা হচ্ছে-কোন ব্রিটিশ নাগরিক উদ্ভিদটিকে লাউয়াছড়া বনে রোপণ করেছিলেন।

গাছটি মারা যাওয়ায় ইকো ট্যুরিষ্ট গাইড ও পরিবেশ কর্মী মো. আহাদ মিয়া জানান, ‘জাতীয় উদ্যান ভ্রমনে আসা পর্যটকদের এই গাছ সম্পর্কে ব্রিফিং করলে উনারা খুবই আকৃষ্ট হতেন এবং গাছের সাথে ছবি তুলে রাখতেন স্মৃতি হিসেবে, কিন্তু একমাত্র বিরল গাছটি মারা যাওয়ায় আমরা ট্যুরিষ্ট গাইডরা খুবই কষ্ট পেয়েছি।’

আফ্রিকান উদ্ভিদটি মারা যাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ মৌলভীবাজার এর বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন,‘লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে দুটি আফ্রিকান টিকওক উদ্ভিদ ছিলো, একটি গাছ অনেক আগেই মারা গেছে, বর্তমানে যে একমাত্র গাছটি ছিলো সেটিও প্রায় মারা যাওয়ার পথে, গাছটির পাতা ঝরে পড়া দেখে তিনি বাংলাদেশ বন গবেষনা ইনিস্টিউট (বিএফআরআই) কে অবগত করেন। গাছটি মারা যাওয়ার কারন হিসেবে অনেকেই ধারণা করছেন গাছটির বয়স, কেননা একটা সময় উদ্ভিদ কিংবা প্রাণীর জীবন চক্রের প্রাকৃতিক ভাবে সমাপ্তি ঘটে।’