ঢাকা ০৯:২০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মেরামত হয়নি ঝিনাইদহ ও কোটচাঁদপুরের সংযোগ সাঁকো

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৮:১৮:৪২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৫ অক্টোবর ২০২২
  • / ১৯৮ বার পড়া হয়েছে
মোঃ মঈন উদ্দিন খান : এক মাসেও মেরামত হয়নি ঝিনাইদহের সুতি দূর্গাপুর আর কোটচাঁদপুরের তালসার গ্রামের সংযোগ সাঁকোটি। এতে করে ভেঙ্গে পড়েছে তিন গ্রামের মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা। লেখা-পড়া বন্ধ হবার উপক্রম হয়েছে ৪০ শিক্ষার্থী। সাঁকো মেরামত সহ সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিদের নিকট স্থায়ী সমাধান চেয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
সুতী গ্রামের মফিজ উদ্দিন ও মানিক মিয়া বলেন,২০০৭ সালে তিন গ্রামের মানুষের স্বেচ্ছা শ্রম ও আর্থিক সহায়তায় সাকোটি নির্মান করা হয়। এতে করে পাশের উপজেলা কোটচাঁদপুরের সঙ্গে আমাদের  যোগাযোগ ব্যবস্থা সহ সব ধরনের সুযোগ সুবিধা প্রতিষ্টিত হয়।
বিশেষ করে তালসার গ্রামের সঙ্গে সংযোগ হওয়ায় আমরা অনেক উপকৃত হয়েছিলাম। ওই গ্রামে রয়েছে তিনটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান,একটি বাজার। ওই সব প্রতিষ্টানে আমাদের ছেলে মেয়েরা লেখা-পড়া করতে যেত।
তারা বলেন, এ পারের প্রায় ৪০ জন ছাত্র ছাত্রী ওই সব প্রতিষ্টানে যেতেন। আর এ পারের মানুষ প্রতিনিয়ত তাদের প্রয়োজন মেটাতে তালসার বাজার যান।
এ ছাড়া সাঁকোটি দিয়ে পার হত গোপালপুর,হাজি ডাঙ্গা,মধুহাটি সহ বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ। সাঁকোটি ভেঙ্গে যাওয়ায় এখন বিপাকে সবাই।
তারা দ্রুত সাকোটি মেরামত চান। এছাড়া এ সমস্যার দীর্ঘ মেয়াদি সমাধানেরও দাবী করেছেন সংশ্লিষ্টদের নিকট।
তালসার জিটি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী রিংকি খাতুন ও পপি বিশ্বাস বলেন,আগে আমরা সাঁকো পার হয়ে পায়ে হেটে কলেজে যেতাম। কোন খরচ লাগতো না। এখন সাকো ভেঙ্গে যাওয়ায় প্রায় ১ কিলোমিটার রাস্তা হেটে যেতে হয়। এরপর ভ্যানে করে কলেজে যায়। এতে করে প্রতিদিন কলেজে যেতে ৪০/৫০ টাকা খরচ হয়। যা আমাদের পক্ষে বহন করা অসম্ভব।
এছাড়া পায়ে হাটা রাস্তা দিয়ে যাবার সময় আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি ।
কারন হিসেবে তারা বলেন, ওই রাস্তার পুরোটাই মাঠ। এতে করে আমাদের অভিভাবকরা কলেজে পড়ানো নিয়ে ও সংশয়ে আছে। আমরা সাঁকো মেরামত সহ এর স্থায়ী সমাধানের  জন্য  সংশ্লিষ্টদের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
ওই কলেজের অধ্যক্ষ আব্বাস আলী বলেন, এ কলেজে মোট ৩১ জন ছাত্র-ছাত্রী সাঁকো পার হয়ে পড়তে আসেন। যার মধ্যে একাদশ শ্রনীর ১২ জন,দ্বাদশে ৭ জন,৫ জন ডিগ্রী আর ৭ জন কারিগরি শাখার। এ ছাড়া পাশের মাধ্যমিক বিদ্যালয়েও ১০/১২ জন ছাত্র/ছাত্রী আসেন বলে জেনেছি। সাঁকো ভেঙ্গে যাওয়ায় তারা বিপাকেই পড়েছেন।
তিনি বলেন,আমি সাকো মেরামতের জন্য, আমার কলেজের শিক্ষকদের কাছে কিছু আর্থিক সহায়তা চেয়েছি। তারা দিলে এ মাসের মধ্যে তাদের সাকো মেরামতের কাজটি করার চেষ্টা করবো।
অন্য কোথাও কোন সহায়তা চেয়েছেন কিনা,এমন প্রশ্নে তিনি বলেন,না আমি বিষয়টি নিয়ে তেমন কাউকে বলিনি।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার মধুহাটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলতাফ পারভেজের বলেন,আমি সাকো ভেঙ্গে পড়ার ঘটনা শুনেছি। আমি ওই এলাকার মানুষদের আমার কাছে আসার জন্য,গিয়ে বলে এসেছি। তারা আমার সঙ্গে কেউ কোন যোগাযোগ করেনি। বিষয়টি নিয়ে কাজ করার ইচ্ছে আমার আছে। ইতোমধ্যে আমি এ ঘটনাটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট উপস্থাপন ও করেছি।তিনি বাইরে থাকায় কাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি।
কোটচাঁদপুরের কুশনা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান শাহাদুজ্জামান সবুজ বলেন,খবর পেয়ে আমি এলাকায় গিয়েছিলাম। সাকো মেরামতের উদ্যেগ নিতে হবে।
বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কাউকে জানানো হয়েছে কিনা,এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, না তেমন কাউকে বলা হয়নি।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খান মাসুম বিল্লাহ বলেন, আমি জানতাম না। এখন জানলাম। আমি এলাকায় যাবো। খোঁজ খবর নিয়ে দেখি কি করা যায়।
ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

মেরামত হয়নি ঝিনাইদহ ও কোটচাঁদপুরের সংযোগ সাঁকো

আপডেট সময় ০৮:১৮:৪২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৫ অক্টোবর ২০২২
মোঃ মঈন উদ্দিন খান : এক মাসেও মেরামত হয়নি ঝিনাইদহের সুতি দূর্গাপুর আর কোটচাঁদপুরের তালসার গ্রামের সংযোগ সাঁকোটি। এতে করে ভেঙ্গে পড়েছে তিন গ্রামের মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা। লেখা-পড়া বন্ধ হবার উপক্রম হয়েছে ৪০ শিক্ষার্থী। সাঁকো মেরামত সহ সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিদের নিকট স্থায়ী সমাধান চেয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
সুতী গ্রামের মফিজ উদ্দিন ও মানিক মিয়া বলেন,২০০৭ সালে তিন গ্রামের মানুষের স্বেচ্ছা শ্রম ও আর্থিক সহায়তায় সাকোটি নির্মান করা হয়। এতে করে পাশের উপজেলা কোটচাঁদপুরের সঙ্গে আমাদের  যোগাযোগ ব্যবস্থা সহ সব ধরনের সুযোগ সুবিধা প্রতিষ্টিত হয়।
বিশেষ করে তালসার গ্রামের সঙ্গে সংযোগ হওয়ায় আমরা অনেক উপকৃত হয়েছিলাম। ওই গ্রামে রয়েছে তিনটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান,একটি বাজার। ওই সব প্রতিষ্টানে আমাদের ছেলে মেয়েরা লেখা-পড়া করতে যেত।
তারা বলেন, এ পারের প্রায় ৪০ জন ছাত্র ছাত্রী ওই সব প্রতিষ্টানে যেতেন। আর এ পারের মানুষ প্রতিনিয়ত তাদের প্রয়োজন মেটাতে তালসার বাজার যান।
এ ছাড়া সাঁকোটি দিয়ে পার হত গোপালপুর,হাজি ডাঙ্গা,মধুহাটি সহ বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ। সাঁকোটি ভেঙ্গে যাওয়ায় এখন বিপাকে সবাই।
তারা দ্রুত সাকোটি মেরামত চান। এছাড়া এ সমস্যার দীর্ঘ মেয়াদি সমাধানেরও দাবী করেছেন সংশ্লিষ্টদের নিকট।
তালসার জিটি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী রিংকি খাতুন ও পপি বিশ্বাস বলেন,আগে আমরা সাঁকো পার হয়ে পায়ে হেটে কলেজে যেতাম। কোন খরচ লাগতো না। এখন সাকো ভেঙ্গে যাওয়ায় প্রায় ১ কিলোমিটার রাস্তা হেটে যেতে হয়। এরপর ভ্যানে করে কলেজে যায়। এতে করে প্রতিদিন কলেজে যেতে ৪০/৫০ টাকা খরচ হয়। যা আমাদের পক্ষে বহন করা অসম্ভব।
এছাড়া পায়ে হাটা রাস্তা দিয়ে যাবার সময় আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি ।
কারন হিসেবে তারা বলেন, ওই রাস্তার পুরোটাই মাঠ। এতে করে আমাদের অভিভাবকরা কলেজে পড়ানো নিয়ে ও সংশয়ে আছে। আমরা সাঁকো মেরামত সহ এর স্থায়ী সমাধানের  জন্য  সংশ্লিষ্টদের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
ওই কলেজের অধ্যক্ষ আব্বাস আলী বলেন, এ কলেজে মোট ৩১ জন ছাত্র-ছাত্রী সাঁকো পার হয়ে পড়তে আসেন। যার মধ্যে একাদশ শ্রনীর ১২ জন,দ্বাদশে ৭ জন,৫ জন ডিগ্রী আর ৭ জন কারিগরি শাখার। এ ছাড়া পাশের মাধ্যমিক বিদ্যালয়েও ১০/১২ জন ছাত্র/ছাত্রী আসেন বলে জেনেছি। সাঁকো ভেঙ্গে যাওয়ায় তারা বিপাকেই পড়েছেন।
তিনি বলেন,আমি সাকো মেরামতের জন্য, আমার কলেজের শিক্ষকদের কাছে কিছু আর্থিক সহায়তা চেয়েছি। তারা দিলে এ মাসের মধ্যে তাদের সাকো মেরামতের কাজটি করার চেষ্টা করবো।
অন্য কোথাও কোন সহায়তা চেয়েছেন কিনা,এমন প্রশ্নে তিনি বলেন,না আমি বিষয়টি নিয়ে তেমন কাউকে বলিনি।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার মধুহাটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলতাফ পারভেজের বলেন,আমি সাকো ভেঙ্গে পড়ার ঘটনা শুনেছি। আমি ওই এলাকার মানুষদের আমার কাছে আসার জন্য,গিয়ে বলে এসেছি। তারা আমার সঙ্গে কেউ কোন যোগাযোগ করেনি। বিষয়টি নিয়ে কাজ করার ইচ্ছে আমার আছে। ইতোমধ্যে আমি এ ঘটনাটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট উপস্থাপন ও করেছি।তিনি বাইরে থাকায় কাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি।
কোটচাঁদপুরের কুশনা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান শাহাদুজ্জামান সবুজ বলেন,খবর পেয়ে আমি এলাকায় গিয়েছিলাম। সাকো মেরামতের উদ্যেগ নিতে হবে।
বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কাউকে জানানো হয়েছে কিনা,এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, না তেমন কাউকে বলা হয়নি।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খান মাসুম বিল্লাহ বলেন, আমি জানতাম না। এখন জানলাম। আমি এলাকায় যাবো। খোঁজ খবর নিয়ে দেখি কি করা যায়।