ঢাকা ০৩:১৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মোদির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসেবন শেখ হাসিনা

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৯:২৩:৩৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • / ২৬২ বার পড়া হয়েছে

আগামী ৯-১০ সেপ্টেম্বর বিশ্বের ২০ দেশের শীর্ষ নেতাদের উপস্থিতিতে ভারতের নয়াদিল্লীতে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে জি-২০ সম্মেলন। এ সম্মেলনে অংশ নিতে আজ শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ বিমানের একটি বিশেষ ফ্লাইটে ভারত যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

 

ভারতে পৌঁছে বিকালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসেবন শেখ হাসিনা।

 

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন জানান, প্রধানমন্ত্রীর এ সফরে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের আগে তিনটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হবে। দুই দেশের কৃষি গবেষণা খাতে সহযোগিতা, সাংস্কৃতিক বিনিময় ও টাকা–রুপিতে লেনদেন সুগম করার বিষয়ে তিনটি সমঝোতা স্মারক সই হবে।

 

বৃহষ্পতিবার দুপুরে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমীতে প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও জানান, জি-২০ সম্মেলনে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই প্রতিনিধি দলে এবং প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গীদের মধ্যে থাকবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা, অ্যাম্ব্যাসাডর-অ্যাট-লার্জ, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী, পররাষ্ট্র সচিব (সিনিয়র সচিব), প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তারা, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব ও ঊর্ধ্বতন পর্যায়ের কর্মকর্তা এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিরা।

 

জি-২০ বিশ্বের ২০ টি উল্লেখযোগ্য রাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক সহযোগিতার প্রধান ফোরাম। এই জোটের সদস্য রাষ্ট্রগুলো বিশ্বব্যাপী জিডিপির প্রায় ৮৫ শতাংশ এবং বিশ্ব বাণিজ্যের ৭৫ শতাংশ এবং বিশ্বের জনসংখ্যার প্রায় দুই-তৃতীয়াংশের প্রতিনিধিত্ব করছে। এটি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ইস্যুতে বৈশ্বিক কাঠামো গঠন ও শক্তিশালীকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বাংলাদেশের বন্ধুপ্রতীম নিকটতম প্রতিবেশি রাষ্ট্র ভারত ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি বছরের নভেম্বর পর্যন্ত মেয়াদে জি-২০এর সভাপতির দায়িত্ব পালন করছে।

 

সংবাদ সম্মেলনে ড. মোমেন বলেন, বাংলাদেশসহ মোট নয়টি রাষ্ট্রকে জি-২০ সম্মেলনের সকল সভায় ‘অতিথি রাষ্ট্র’ হিসেবে অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। অন্যান্য দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে মিশর, মরিশাস, নেদারল্যান্ডস, নাইজেরিয়া, ওমান, সিঙ্গাপুর, স্পেন এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত। বাংলাদেশ ও ভারতের অনন্য সম্পর্কের ভিত্তিতে দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ এ আমন্ত্রণ পেয়েছে- যা আমাদের জন্য গর্বের বিষয়।

 

তিনি বলেন, ৯ সেপ্টেম্বর জি-২০ নেতাদের শীর্ষ সম্মেলনের উদ্বোধন হবে। প্রধানমন্ত্রী এই শীর্ষ সম্মেলনের বিভিন্ন অধিবেশনে অংশ নেবেন। এ সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য : ‘এক পৃথিবী, এক পরিবার, এক ভবিষ্যৎ’। এই প্রতিপাদ্যের আওতায় প্রধানমন্ত্রী দুটি অধিবেশনে বক্তব্য দেবেন। তিনি তার বক্তব্যে বর্তমান বিশ্বে, বিশেষ করে গ্লোবাল সাউথে বা বৈশ্বিক দক্ষিণের দেশগুলোতে জলবায়ু পরিবর্তন ও করোনা মহামারী পরবর্তী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের বিষয়গুলো এবং ইউরোপে যুদ্ধের ফলে জ্বালানি-খাদ্য পণ্য-সারের মতো গুরুত্বপূর্ণ পণ্যের বৈশ্বিক সরবরাহ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হওয়ার মতো চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার দিকগুলো তুলে ধরবেন। পাশাপাশি, আর্থ-সামাজিক বিভিন্ন ক্ষেত্রে বর্তমান সরকারের আমলে বাংলাদেশের অর্জিত অভাবনীয় সাফল্যের অভিজ্ঞতাও সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী বিশ্বনেতাদের সামনে উপস্থাপন করবেন।

 

এছাড়া আগামীকাল ৯ সেপ্টেম্বরের ওই দুটি অধিবেশনের মধ্যে সম্মেলনের সাইড লাইনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী অন্যান্য দেশের একাধিক নেতার সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হবেন। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স ও প্রধানমন্ত্রী, আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডন্ট এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে।

 

জি-২০ সম্মেলনের দ্বিতীয় ও শেষ দিন ১০ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী অন্যান্য দেশের নেতাদের সঙ্গে রাজঘাটে মহাত্মা গান্ধীর সমাধিসৌধে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করবেন। এরপর তিনি সম্মেলনের সমাপনী অধিবেশনে অংশ নেবেন। একই দিন তিনি বাংলাদেশ বিমানের বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকায় উদ্দেশ্যে নয়াদিল্লী ছেড়ে আসবেন।

 

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন বলেন, জি-২০ সম্মেলনে ‘অতিথি রাষ্ট্র’ হিসেবে অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ প্রধানমন্ত্রীর গতিশীল নেতৃত্বে গত ১৪ বছরে সরকারের অভাবনীয় সাফল্যের স্বীকৃতি। এটি বাংলাদেশের জন্য একটি অনন্য সাধারণ অভিজ্ঞতা হবে এবং বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ক্ষেত্রেও একটি মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হবে।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

মোদির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসেবন শেখ হাসিনা

আপডেট সময় ০৯:২৩:৩৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩

আগামী ৯-১০ সেপ্টেম্বর বিশ্বের ২০ দেশের শীর্ষ নেতাদের উপস্থিতিতে ভারতের নয়াদিল্লীতে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে জি-২০ সম্মেলন। এ সম্মেলনে অংশ নিতে আজ শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ বিমানের একটি বিশেষ ফ্লাইটে ভারত যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

 

ভারতে পৌঁছে বিকালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসেবন শেখ হাসিনা।

 

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন জানান, প্রধানমন্ত্রীর এ সফরে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের আগে তিনটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হবে। দুই দেশের কৃষি গবেষণা খাতে সহযোগিতা, সাংস্কৃতিক বিনিময় ও টাকা–রুপিতে লেনদেন সুগম করার বিষয়ে তিনটি সমঝোতা স্মারক সই হবে।

 

বৃহষ্পতিবার দুপুরে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমীতে প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও জানান, জি-২০ সম্মেলনে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই প্রতিনিধি দলে এবং প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গীদের মধ্যে থাকবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা, অ্যাম্ব্যাসাডর-অ্যাট-লার্জ, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী, পররাষ্ট্র সচিব (সিনিয়র সচিব), প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তারা, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব ও ঊর্ধ্বতন পর্যায়ের কর্মকর্তা এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিরা।

 

জি-২০ বিশ্বের ২০ টি উল্লেখযোগ্য রাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক সহযোগিতার প্রধান ফোরাম। এই জোটের সদস্য রাষ্ট্রগুলো বিশ্বব্যাপী জিডিপির প্রায় ৮৫ শতাংশ এবং বিশ্ব বাণিজ্যের ৭৫ শতাংশ এবং বিশ্বের জনসংখ্যার প্রায় দুই-তৃতীয়াংশের প্রতিনিধিত্ব করছে। এটি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ইস্যুতে বৈশ্বিক কাঠামো গঠন ও শক্তিশালীকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বাংলাদেশের বন্ধুপ্রতীম নিকটতম প্রতিবেশি রাষ্ট্র ভারত ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি বছরের নভেম্বর পর্যন্ত মেয়াদে জি-২০এর সভাপতির দায়িত্ব পালন করছে।

 

সংবাদ সম্মেলনে ড. মোমেন বলেন, বাংলাদেশসহ মোট নয়টি রাষ্ট্রকে জি-২০ সম্মেলনের সকল সভায় ‘অতিথি রাষ্ট্র’ হিসেবে অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। অন্যান্য দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে মিশর, মরিশাস, নেদারল্যান্ডস, নাইজেরিয়া, ওমান, সিঙ্গাপুর, স্পেন এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত। বাংলাদেশ ও ভারতের অনন্য সম্পর্কের ভিত্তিতে দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ এ আমন্ত্রণ পেয়েছে- যা আমাদের জন্য গর্বের বিষয়।

 

তিনি বলেন, ৯ সেপ্টেম্বর জি-২০ নেতাদের শীর্ষ সম্মেলনের উদ্বোধন হবে। প্রধানমন্ত্রী এই শীর্ষ সম্মেলনের বিভিন্ন অধিবেশনে অংশ নেবেন। এ সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য : ‘এক পৃথিবী, এক পরিবার, এক ভবিষ্যৎ’। এই প্রতিপাদ্যের আওতায় প্রধানমন্ত্রী দুটি অধিবেশনে বক্তব্য দেবেন। তিনি তার বক্তব্যে বর্তমান বিশ্বে, বিশেষ করে গ্লোবাল সাউথে বা বৈশ্বিক দক্ষিণের দেশগুলোতে জলবায়ু পরিবর্তন ও করোনা মহামারী পরবর্তী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের বিষয়গুলো এবং ইউরোপে যুদ্ধের ফলে জ্বালানি-খাদ্য পণ্য-সারের মতো গুরুত্বপূর্ণ পণ্যের বৈশ্বিক সরবরাহ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হওয়ার মতো চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার দিকগুলো তুলে ধরবেন। পাশাপাশি, আর্থ-সামাজিক বিভিন্ন ক্ষেত্রে বর্তমান সরকারের আমলে বাংলাদেশের অর্জিত অভাবনীয় সাফল্যের অভিজ্ঞতাও সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী বিশ্বনেতাদের সামনে উপস্থাপন করবেন।

 

এছাড়া আগামীকাল ৯ সেপ্টেম্বরের ওই দুটি অধিবেশনের মধ্যে সম্মেলনের সাইড লাইনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী অন্যান্য দেশের একাধিক নেতার সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হবেন। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স ও প্রধানমন্ত্রী, আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডন্ট এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে।

 

জি-২০ সম্মেলনের দ্বিতীয় ও শেষ দিন ১০ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী অন্যান্য দেশের নেতাদের সঙ্গে রাজঘাটে মহাত্মা গান্ধীর সমাধিসৌধে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করবেন। এরপর তিনি সম্মেলনের সমাপনী অধিবেশনে অংশ নেবেন। একই দিন তিনি বাংলাদেশ বিমানের বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকায় উদ্দেশ্যে নয়াদিল্লী ছেড়ে আসবেন।

 

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন বলেন, জি-২০ সম্মেলনে ‘অতিথি রাষ্ট্র’ হিসেবে অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ প্রধানমন্ত্রীর গতিশীল নেতৃত্বে গত ১৪ বছরে সরকারের অভাবনীয় সাফল্যের স্বীকৃতি। এটি বাংলাদেশের জন্য একটি অনন্য সাধারণ অভিজ্ঞতা হবে এবং বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ক্ষেত্রেও একটি মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হবে।