ঢাকা ০২:২৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মৌলভীবাজারে নারীদের নেতৃত্বে হবে দুর্গাপূজা 

নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৯:৩৭:১৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২২
  • / ৫৩৪ বার পড়া হয়েছে
বিশেষ প্রতিনিধি: মৌলভীবাজার শহরের ‘দূর্গাবাড়ি মন্দিরে’ এবছর  নারীদের নেতৃত্বে হবে ব্যতিক্রমি দুর্গাপূজা উদযাপন।  আয়োজকরা জানান দেবী দূর্গার ন্যায় নারীর অসীম ক্ষমতা এবং নারীর প্রতি সম্মান দেখানো  এমন উদ্যোগের মুখ্য  বিষয়।
এসেছে শরৎ, দুয়ারে কড়া নাড়ছে দেবীদুর্গার আগমনী বার্তা। আর মাত্র কয়েকটা দিন পর সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা।
মৌলভীবাজার শহরের এম সাইফুর রহমান সড়কের ছয় দশকের  ‘দূর্গাবাড়ি মন্দির’। সুচনাকাল থেকে দুর্গাপুজো উপলক্ষে পুরুষদের নিয়ে কমিটি গঠন করা হলেও ৬০ বছর পর এবারই ব্যতিক্রম। পুরুষদের পরিবর্তে ১২৪ জন নারী ও সহযোগী হিসেবে তিন জন পুরুষ সহ মোট   ১২৭ সদস্যবিশিষ্ট পুর্নাঙ্গ  কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সদস্যরা জানান নারীর ক্ষমতায়নের প্রতীক দেবী দূর্গা। বাস্তবে  নারীরা, মায়েরা স্বীয় মেধা, দক্ষতা ও প্রচেষ্টায় নিজের শীর্ষস্থানীয় অবস্থান তুলে ধরতে পারেন। তার বহু দৃষ্টান্ত রয়েছে তার প্রতিফলন এই কমিটি।
শ্রী শ্রী দূর্গা বাড়ি পূজা উদযাপন পরিষদ এর সভাপতি নন্দিতা দেব জানান- নারীর ক্ষমতায়ন, নারী জাগরণ ও নারীদের প্রতি সম্মান জানিয়ে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। আমাদের পুরো কমিটির সার্বিক কার্যক্রমে পুরুষরা সহযোগিতা করছেন।
শ্রী শ্রী দূর্গা বাড়ি পূজা উদযাপন পরিষদ এর সাধারণ সম্পাদক, প্রিয়াঙ্কা রায় জানান-  দেবী দূর্গা আমাদের ধরিত্রী মাতা অথবা নিসর্গ নারীর  অবয়ব। মা আমাদের বাস্তবিক জীবনে দেবী দূর্গা মতো আবির্ভূত হন সংকট মোচনে। দেবীদূর্গা  অনেক হাতের মাধ্যমে অশুর বিনাশ করে সন্তানদের মঙ্গলের জন্য সব করেন। বাস্তব জীবনে আমাদের মায়েরা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত  সন্তানদের মঙ্গলের জন্য কাজ করেন বিরামহীন। মায়েরা-নারীরা যে পরিশ্রম করেন, সবকিছু  সামাল দেন পুরুষরা তা পারেন না। আমাদের এ কমিটি গঠন নারী জাগরণের বহিঃপ্রকাশ।
নারীদের নিয়ে এ কমিটিতে রয়েছেন  শিক্ষক, চিকিৎসক, আইনজীবি, প্রবাসী, গৃহিণী এবং শিক্ষার্থী। এর আগে বিভিন্ন সময় এক দুজন নারীকে কমিটিতে রাখা হলেও এ বছর শুধু নারীদের পূর্ণাঙ্গ  কমিটি হওয়ায় আনন্দিত তারা। তাদের এ কাজে পুরুষরাও  সার্বিক সহযোগিতা করছেন বলে তারা জানান –
কমিটির সদস্য ড সৃজনী দেব জানান- আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর মহালয়ার ভোরে চণ্ডীপাঠ শোনার অপেক্ষায় আমরা । শিশির ভেজা দুর্বা ঘাসের ওপর ঝরে পড়া শিউলি কুড়ানোর সময়টায় মাতৃবন্দনায় মিলিত হবেন ভক্তবৃন্দ।
কমিটির সদস্য অনুরাধা রায় জানান – পূজার  সার্বিক আয়োজন থেকে ব্যবস্থাপনা, সেচ্ছাসেবক এর দায়িত্ব পালন থেকে প্রসাদ বিতরণ সবকিছু করবো আমরা। অন্যান্য বছর শুধু ঘুরে বেড়াতাম, এবছর ঘুরার চেয়ে দায়িত্ব পালন করতে হবে বেশি।
জেলা উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদ সূত্রে জানা যায় সার্বজনীন ও ব্যক্তিগত মিলিয়ে  সারা জেলায় এবছর  সহস্রাধিক  মন্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে।
নারীদের নিয়ে পুজোর কমিটি গঠন, এটা নারী জাগরণের জন্য সহায়ক বলে জানান মৌলভীবাজার  সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা  সাবরিনা রহমান।  তিনি বলেন পুরুষের পাশাপাশি নারীদের এভাবে এগিয়ে আসা উচিত।  আমি নারীদের এই কমিটিকে সাধারণ বরাদ্দের পাশাপাশি বিশেষ বরাদ্দ দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি।
সনাতনী পঞ্জিকা অনুযায়ী, এবার মহালয়া হবে আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর। ১ অক্টোবর মহাষষ্ঠী পূজার মাধ্যমে শুরু হবে দুর্গাপূজার মূল আচার অনুষ্ঠান। ২ অক্টোবর সপ্তমী, ৩ অক্টোবর মহাঅষ্টমী, ৪ অক্টোবর মহানবমী ও ৫ অক্টোবর বিজয়া দশমী। এদিন প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা।
ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

মৌলভীবাজারে নারীদের নেতৃত্বে হবে দুর্গাপূজা 

আপডেট সময় ০৯:৩৭:১৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২২
বিশেষ প্রতিনিধি: মৌলভীবাজার শহরের ‘দূর্গাবাড়ি মন্দিরে’ এবছর  নারীদের নেতৃত্বে হবে ব্যতিক্রমি দুর্গাপূজা উদযাপন।  আয়োজকরা জানান দেবী দূর্গার ন্যায় নারীর অসীম ক্ষমতা এবং নারীর প্রতি সম্মান দেখানো  এমন উদ্যোগের মুখ্য  বিষয়।
এসেছে শরৎ, দুয়ারে কড়া নাড়ছে দেবীদুর্গার আগমনী বার্তা। আর মাত্র কয়েকটা দিন পর সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা।
মৌলভীবাজার শহরের এম সাইফুর রহমান সড়কের ছয় দশকের  ‘দূর্গাবাড়ি মন্দির’। সুচনাকাল থেকে দুর্গাপুজো উপলক্ষে পুরুষদের নিয়ে কমিটি গঠন করা হলেও ৬০ বছর পর এবারই ব্যতিক্রম। পুরুষদের পরিবর্তে ১২৪ জন নারী ও সহযোগী হিসেবে তিন জন পুরুষ সহ মোট   ১২৭ সদস্যবিশিষ্ট পুর্নাঙ্গ  কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সদস্যরা জানান নারীর ক্ষমতায়নের প্রতীক দেবী দূর্গা। বাস্তবে  নারীরা, মায়েরা স্বীয় মেধা, দক্ষতা ও প্রচেষ্টায় নিজের শীর্ষস্থানীয় অবস্থান তুলে ধরতে পারেন। তার বহু দৃষ্টান্ত রয়েছে তার প্রতিফলন এই কমিটি।
শ্রী শ্রী দূর্গা বাড়ি পূজা উদযাপন পরিষদ এর সভাপতি নন্দিতা দেব জানান- নারীর ক্ষমতায়ন, নারী জাগরণ ও নারীদের প্রতি সম্মান জানিয়ে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। আমাদের পুরো কমিটির সার্বিক কার্যক্রমে পুরুষরা সহযোগিতা করছেন।
শ্রী শ্রী দূর্গা বাড়ি পূজা উদযাপন পরিষদ এর সাধারণ সম্পাদক, প্রিয়াঙ্কা রায় জানান-  দেবী দূর্গা আমাদের ধরিত্রী মাতা অথবা নিসর্গ নারীর  অবয়ব। মা আমাদের বাস্তবিক জীবনে দেবী দূর্গা মতো আবির্ভূত হন সংকট মোচনে। দেবীদূর্গা  অনেক হাতের মাধ্যমে অশুর বিনাশ করে সন্তানদের মঙ্গলের জন্য সব করেন। বাস্তব জীবনে আমাদের মায়েরা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত  সন্তানদের মঙ্গলের জন্য কাজ করেন বিরামহীন। মায়েরা-নারীরা যে পরিশ্রম করেন, সবকিছু  সামাল দেন পুরুষরা তা পারেন না। আমাদের এ কমিটি গঠন নারী জাগরণের বহিঃপ্রকাশ।
নারীদের নিয়ে এ কমিটিতে রয়েছেন  শিক্ষক, চিকিৎসক, আইনজীবি, প্রবাসী, গৃহিণী এবং শিক্ষার্থী। এর আগে বিভিন্ন সময় এক দুজন নারীকে কমিটিতে রাখা হলেও এ বছর শুধু নারীদের পূর্ণাঙ্গ  কমিটি হওয়ায় আনন্দিত তারা। তাদের এ কাজে পুরুষরাও  সার্বিক সহযোগিতা করছেন বলে তারা জানান –
কমিটির সদস্য ড সৃজনী দেব জানান- আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর মহালয়ার ভোরে চণ্ডীপাঠ শোনার অপেক্ষায় আমরা । শিশির ভেজা দুর্বা ঘাসের ওপর ঝরে পড়া শিউলি কুড়ানোর সময়টায় মাতৃবন্দনায় মিলিত হবেন ভক্তবৃন্দ।
কমিটির সদস্য অনুরাধা রায় জানান – পূজার  সার্বিক আয়োজন থেকে ব্যবস্থাপনা, সেচ্ছাসেবক এর দায়িত্ব পালন থেকে প্রসাদ বিতরণ সবকিছু করবো আমরা। অন্যান্য বছর শুধু ঘুরে বেড়াতাম, এবছর ঘুরার চেয়ে দায়িত্ব পালন করতে হবে বেশি।
জেলা উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদ সূত্রে জানা যায় সার্বজনীন ও ব্যক্তিগত মিলিয়ে  সারা জেলায় এবছর  সহস্রাধিক  মন্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে।
নারীদের নিয়ে পুজোর কমিটি গঠন, এটা নারী জাগরণের জন্য সহায়ক বলে জানান মৌলভীবাজার  সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা  সাবরিনা রহমান।  তিনি বলেন পুরুষের পাশাপাশি নারীদের এভাবে এগিয়ে আসা উচিত।  আমি নারীদের এই কমিটিকে সাধারণ বরাদ্দের পাশাপাশি বিশেষ বরাদ্দ দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি।
সনাতনী পঞ্জিকা অনুযায়ী, এবার মহালয়া হবে আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর। ১ অক্টোবর মহাষষ্ঠী পূজার মাধ্যমে শুরু হবে দুর্গাপূজার মূল আচার অনুষ্ঠান। ২ অক্টোবর সপ্তমী, ৩ অক্টোবর মহাঅষ্টমী, ৪ অক্টোবর মহানবমী ও ৫ অক্টোবর বিজয়া দশমী। এদিন প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা।