মৌলভীবাজারে বিএনপির নেতাকর্মীদের ধরপাকড় অভিযান
- আপডেট সময় ০৬:৫৯:২৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ নভেম্বর ২০২৩
- / ১০৫৩ বার পড়া হয়েছে
ষ্টাফ রিপোর্টঃ মৌলভীবাজারে বিএনপি নেতাকর্মীদের ধরপাকড় অভিযান জোরদার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। মৌলভীবাজার পৌরসভার দুইবারের সাবেক মেয়র জেলা বিএনপির প্রভাবশালী নেতা ফয়জুল করিম ময়ুনের বাসায় অভিযান চালায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
ফয়জুল করিম ময়ুন জানান, গত রাত সাড়ে ১২ টার দিকে ৩০/ ৪০ জন পুলিশ আমার বাসার চারপাশ ঘিরে রাখে। এরপর বাসায় ঢুকে আমার খোঁজে তল্লাশি চালায়। এসময় আমি বাসায় ছিলাম না। আমার স্ত্রী সন্তানরা বাসায় ছিলেন।
ময়ুনকে পুলিশ না পেয়ে এর পরপরই জেলা বিএনপির সহ সাধারণ সম্পাদক ও জেলা কৃষক দলের আহবায়ক শামীম আহমেদ চেয়ারম্যানের বাসায় যায়। তার বাসার চারপাশ ঘিরে বাসায় ঢুকে তাকে তন্নতন্ন করে খুঁজে ।
শামীম আহমেদ জানান, রাত ১টার দিকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা আমার বাসায় ঢুকে। প্রতি রুমে তল্লাশি চালায়। এসময় আমি বাসায় ছিলাম না। আমার স্ত্রী সন্তানরা ছিল।
এদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সারা জেলার বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর ব্যাপক ধরপাকড় বাড়িয়েছে । সেকারণে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা গ্রেপ্তার আতঙ্কে রয়েছেন। গ্রেপ্তার এড়াতে বাসা বা ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন তারা।
বিএনপির স্থানীয় নেতাদের দাবি, চলমান আন্দোলন দমাতে মিথ্যা সাজানো মামলায় এরই মধ্যে সারাজেলায় অর্ধশতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এরই মধ্যে শ্রীমঙ্গলে একটি,কুলাউড়া উপজেলায় দুটি বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় কিছু নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত নামা চারশতাধিক বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে।
ওদিকে আজ সোমবার বেলা তিনটা পর্যন্ত মৌলভীবাজার সদর উপজেলায় কামালপুর ইউনিয়ন বিএনপি নেতা কাবুল মেম্বার, জেলা যুবদলের সহ সাংস্কৃতিক সম্পাদক শামীম আহমদ, সহ সাধারণ সম্পাদক সায়েদ আহমদ,যুবনেতা সুজন আহমেদ ও সাবেক ছাত্রদল নেতা জিপুকে তাদের বাড়ী থেকে আটক করেছে পুলিশ।
এছাড়াও জেলা বিএনপির ও অঙ্গসংগঠনের সিনিয়র নেতৃবৃন্দর বাসাবাড়িতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রেখেছে।
জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ সভাপতি ফয়জুল করিম ময়ুন বলেন, ‘কেন্দ্রীয় কর্মসুচীর অংশ হিসেবে আমাদের নেতাকর্মীরা রাজপথে শান্তি পূর্ণ আন্দোলন করছে। সেখানে পুলিশ আবার মামলা দিচ্ছে, নেতাকর্মীদের ঘরবাড়ি ছাড়া করছে।
ময়ুন আরও বলেন, ‘পুলিশ যখন যা বলছে তাই সত্য। পুলিশের সরকার, তারা যেভাবে পারবে সরকারকে টিকিয়ে রাখবে, এটাই বাস্তবতা।’ আমাদের জেলায় দিন রাত যখন তখন পুলিশ নেতাকর্মীদের বাসা বাড়ীতে অভিযানে যাচ্ছে। একই সঙ্গে ডিবি পুলিশও সাদা পোষাকে অভিযান চালাচ্ছে। ফলে বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা গ্রেপ্তার আতঙ্কে বাসা বাড়ী থেকে পালিয়ে রয়েছে।জানিয়ে বিএনপির এই প্রভাবশালী নেতা বলেন, ‘চলমান আন্দোলনকে দমিয়ে রাখতে বিএনপিসহ সমমনা বিরোধী দলকে দমনপীড়ন, নেতা-কর্মীদের ধরপাকড় এবং মিথ্যা সাজানো গায়েবী মামলা দিয়ে আসামি করা হচ্ছে। আমরা জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক এমপি এম নাসের রহমানের নির্দেশনায় এরই মধ্যে আইনজীবি ফোরামের আইনজীবিদের দিয়ে আটক বিএনপি নেতাকর্মীদের আইনগত সহায়তা দিতে সেল গঠন করেছি। তাদের মাধ্যমে গ্রেফতারকৃতদের আইনি সহায়তা দিচ্ছি।
মৌলভীবাজার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি হারুনুর রশিদ চৌধুরী বিষয়ে নিশ্চিত করে জানান জনগণের জানমাল রক্ষার্থে পুলিশ সর্বাত্মক কাজ করে যাচ্ছে। মহাসড়ক বা
শহরে কোনো ধরনের নাশকতা সৃষ্টি করলে সে যেই হোক তাকেই আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।
মৌলভীবাজার জেলার পুলিশ সুপার মোঃ মনজুর রহমান পিপিএম গণমাধ্যম কর্মীদের জানিয়েছেন,’ দুষ্কৃতিকারী যারা সাধারণ নাগরিকদের জানমালের ক্ষতি করার চেষ্টা করবে, তাদেরকে সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে প্রতিহত করা হবে।
বিএনপি- জামায়াতের ডাকা এই অবরোধকালীন সময়ে মৌলভীবাজার জেলা পুলিশ সবসময় তৎপর, আমরা মানুষের জানমাল রক্ষায় সতর্কতার সাথে কাজ করে যাচ্ছি। আমরা কোন দুষ্কৃতিকারীকে মৌলভীবাজার জেলায় তাদের অপকর্ম করতে দেবো না।
পুলিশ সুপার মৌলভীবাজার জেলাবাসীর উদ্দেশ্যে বলেন, “আপনারা নির্ভয়ে রাস্তাঘাটে বের হবেন, আপনাদের স্বাভাবিক কাজকর্ম করবেন। মৌলভীবাজার জেলা পুলিশের প্রতিটি সদস্য আপনাদের পাশে আছে। আমাদের লক্ষ্য থাকবে যেন মৌলভীবাজার জেলার সম্মানিত নাগরিকগণ স্বাভাবিকভাবে যাকে তাদের কাজকর্ম করতে পারেন।